ওভাল অফিসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর খালি হাতে হোয়াইট হাউস ছাড়লেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তা সত্ত্বেও নিজ দেশের জনগণের কাছ থেকে অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছেন তিনি। দেশের স্বার্থে নতজানু না-হওয়ার কারণে প্রশংসায় ভেসেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের প্রক্রিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে ওভাল অফিসে সাক্ষাৎ করেন ট্রাম্প ও জেলেনস্কি। এ সময় বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন দুই প্রেসিডেন্ট।
শুধু ট্রাম্পই নন; যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তর্কে জড়ান। জেলেনস্কি ওভাল অফিসের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়াও জেলেনস্কি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেননি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভ্যান্স।
এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চুক্তি সইয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তবে চুক্তি না-হলেও ইউক্রেনের জনসাধারণের মন জয় করেছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। হোয়াইট হাউস থেকে খালি হাতে ফিরলেও, দেশের স্বার্থে আপস না করায় প্রশংসায় ভেসেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: খনিজ চুক্তি সই না করেই হোয়াইট হাউস ছাড়লেন জেলেনস্কি
জেলেনস্কিকে ‘সিংহের’ সাথে তুলনা করে ইউক্রেনীয় নারী নাতালিয়া সেরহিয়েনকো (৬৭) বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সিংহের মতো লড়াই করেছেন। তাদের মধ্যে উতপ্ত বাক্যবিনিময় হলেও ইউক্রেনের স্বার্থ রক্ষা করেছেন তিনি।’
ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের প্রধান ওলেহ সিনিহুবভ জেলেনস্কির প্রশংসা করে বলেছেন, ‘আমাদের নেতা চাপের মুখেও ইউক্রেন ও ইউক্রেনীয়দের স্বার্থ রক্ষায় দৃঢ়তা বজায় রেখেছেন। ... নিরাপত্তার নিশ্চয়তাসহ আমরা শান্তি চাই।’
ওভাল অফিসের বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যা হয়েছে; সেটিকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পুরোপরি অসম্মান হিসেবেই দেখছেন কিয়েভের বাসিন্দা ৩৭ বছর বয়সী আর্তেম ভাসিলিভ। তিনি বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি, কিন্তু আমাদের যোদ্ধা, সৈনিক ও দেশবাসীর প্রতি পাচ্ছি পুরোপুরি অবজ্ঞা।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে ইউক্রেনের জনগণের সীমাহীন দুর্ভোগ ও কষ্ট বুঝতে পারছেন না বলে তার সমালোচনা করেন ভাসিলিভ। ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘এটা (ইউক্রেনীয়দের কষ্ট) তিনি বুঝতে অক্ষম, তিনি কেবল একজন ব্যবসায়ী। তার কাছে টাকাই সবচেয়ে মূল্যবান।’
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের খারসন শহরের প্রধান আলেকজান্ডার প্রোকুদিন বলেছেন, ‘এই ঘটনা প্রেসিডেন্ট ও আমাদের সবাইকে আরও শক্তিশালী করেছে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই এই সংকট কাটিয়ে উঠব।’