সম্প্রতি তিউনিসিয়া সফরে গেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরব, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা বিষয়ক শীর্ষ উপদেষ্টা মাসাদ বুলোস। এ সময় তাকে গাজা উপত্যকার ক্ষুধার্ত শিশুদের ছবি দেখিয়েছেন তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ। এর মাধ্যমে গাজা উপত্যকার ভয়াবহ পরিস্থিতিকে তিনি গোটা মানবজাতিকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৩ জুলাই) লিবিয়ায় তার প্রথম সরকারি সফর শুরু করেন মাসাদ। ওই উদ্দেশ্যে বর্তমানে তিউনিসিয়ায় অবস্থান করছেন তিনি। সেখানে দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ওই ছবি দেখানো হয়। লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তিউনিসিয়ান সংবাদমাধ্যম কার্থেজের বরাত দিয়ে তারা জানিয়েছে, দেশটির রাজধানী তিউনিসের কার্থেজ প্রাসাদে উপদেষ্টা মাসাদকে ওই ছবি দেখান প্রেসিডেন্ট সাইদ। এ নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করে ওই সংবাদমাধ্যমটি।
ভিডিওতে দেখা গেছে, ট্রাম্পের উপদেষ্টা বুলোসকে প্রেসিডেন্ট বলছেন, ‘এখন আমি আপনার সঙ্গে এবং আপনার উদ্দেশে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলব, যা আমাদের এবং সমগ্র বিশ্বকে উদ্বেগে ফেলেছে।’
অধিকৃত ফিলিস্তিনে একটি শিশু ধুলোবালি খাচ্ছে আর কাঁদছে—এমন একটি ছবি দেখিয়ে সাইদ বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আপনি এই ছবিগুলোর বিষয়ে ভালো করেই জানেন। অনেকগুলো ছবির মধ্যে এটি একটি। একবিংশ শতাব্দীতে এসে সে বালি খায়, কারণ সে আর কিছুই খেতে পায়নি।’
এরপর হাড্ডিসার আরেকটি শিশুর ছবি দেখিয়ে সাইদ বলেন, ‘এই শিশুটি প্রায় মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে, কারণ সে কিছু খেতে পায়নি।’
সাইদ ট্রাম্পের উপদেষ্টাকে আরও বেশ কয়েকটি ছবি দেখিয়ে বলেন, ‘এটি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। এটা সমগ্র মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।’
এ সময় মার্কিন উপদেষ্টাকে নীরবে মাথা নেড়ে এসব শুনতে দেখা যায়। এদিকে, বুধবার শতাধিক মানবাধিকার সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, গাজা উপত্যকায় একটি ‘গণ দুর্ভিক্ষ’ ছড়িয়ে পড়ছে। কারণ চলতি বছরের মার্চ মাসের শুরুর দিকে গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল।
এরপর মে মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনের আওতায় (জিএইচএফ) ত্রাণ দেওয়া শুরু হয়। যা ২০ লাখ গাজাবাসীর জন্য খুবই অপ্রতুল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, মার্চে মানবিক সহায়তা বন্ধের পর থেকে শতাধিক ফিলিস্তিনি ক্ষুধায় প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ৮০ জনই শিশু। এর মধ্যে গত সোমবার অপুষ্টিতে ভুগে ১৫টি শিশু মারা গেছে।
তাছাড়া, জিএইচএফ-এর পরিচালিত ত্রাণকেন্দ্র থেকে খাবার আনতে গিয়ে এ পর্যন্ত এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে দ্য মিডল ইস্ট আই।