বৃহস্পতিবার জুম প্লাটফর্মে আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ এন্ড বাংলাদেশ ইকোনমি’শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম এবং রিসার্স এন্ড পলিসি ইনটিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর কারনে বিশ্বের ব্যবসা-বাণিজ্য বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বাংলাদেশও তা থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। কোভিড-১৯ শেষ হবার পর আমরা আবার ঘুড়ে দাঁড়াবো, আমরা সেটা পারবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিবর্তিত এবং প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যে অনেক কিছু হবে। চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। জাপান চীন থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে।’
‘নিজেরে সক্ষমতা ও যোগ্যতা দিয়ে বিশ্ববাণিজ্যে জায়গা করে নেয়ার সময় এসেছে। সময় নষ্ট না করে দ্রুত এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে,’ যোগ কনে বাণিজ্যমন্ত্রী।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এবং পরবর্তী সময়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্ব একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
টিপু মুনশি বলেন, ‘সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে টাস্ক ফোর্স কাজ করে যাচ্ছে। আগামী এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম এফটিএ স্বাক্ষর করবে ভূটানের সাথে। এর পর পর্যায়ক্রমে বেশ কিছু দেশের সাথে এফটিএ স্বাক্ষর করবে। ইন্দোনেশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের সাথে আলোচনা অনেক এগিয়ে গেছে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরী পোশাক খাত ঘুড়ে দাঁড়াচ্ছে। রপ্তানি বাজারে শুধু তৈরি পোশাকের উপর নির্ভর করে থাকলে আমাদের চলবে না।
তিনি আরও বলেন, দেশের আইটি, ঔষধ, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, লাইট ইঞ্জনিয়ারিং, সিরামিক, বৈদ্যুতিক সামগ্রী রপ্তানির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য সরকার আন্তরিকতার সাথে অগ্রধিকার দিয়ে কাজ করছে, সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।
টিপু মুনশি জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয অতিসম্প্রতি এক্সপোর্ট কম্পেটেটিভনেস ফর জবস ইসিফোরজে প্রকল্পের আওতায় চট্রগ্রামের মিরসরাই ইকোনমিক জোনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে বেজার ১০ একর জমির উপর এবং গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্ক-এ ৫ একর জমির উপর দু’টি টেকনোলজি সেন্টার গড়ে তোলার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এ টেকনোলজি সেন্টারে আধুনিক ডিজাইন ও প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা সম্ভব হবে। অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
‘আশা করা যায় এ বছরের শেষে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে দেশিয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সুযোগ আসতে পারে। এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশ সরকার সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে,’ যোগ করেন তিনি।
ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম এর প্রেসিডেন্ট সাইফ ইসলাম দিলালের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক।
বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের গেষ্ট অফ অনার বিল্ড-এর চেয়ারম্যান আবুল কাশের খান এবং ডিসিসিআই এর প্রেসিডেন্ট সামস মাহমুদ।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও র্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. আবু ইউসুফ।