মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে কমিশন কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
এসময় বিইআরসি চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা গ্যাসের দাম বাড়ানোর কোনো কারণ পাইনি।’
সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে এবার কমিশন গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেনি বলে যে ধারণা সৃষ্টি হয়েছে সে বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি সরাসরি কোনো উত্তর দেননি।
তিনি বলেন, গ্যাস বিতরণকারী কোম্পানিগুলো এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানির হিসাব কষে গ্যাসের দাম বাড়ানোর আবেদন করেছিল। কিন্তু বর্তমান এলএনজির সরবরাহ মাত্র ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। দ্বিতীয়ত, এলএনজি আমদানিতে এনবিআর সম্পূরক শুল্ক ছাড় দিচ্ছে।
‘এ কারণে আমরা গ্যাসের দাম বৃদ্ধি অনুমোদন করিনি,’ যোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্য কমিশনাররাও উপস্থিত ছিলেন।
কমিশন সদস্য মোহাম্মদ আবদুল আজিজ জানান, এলএনজি আমদানির কারণে সৃষ্ট ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার বিতরণকারী কোম্পানিগুলোকে তিন হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেবে।
জাতীয় পর্যায়ে যখন এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হবে তখন কমিশন দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান তিনি।
এর আগে, রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানি, একটি সরবরাহ কোম্পানি ও একটি এলএনজি বাজারজাতকরণ কোম্পানিসহ আট প্রতিষ্ঠানের সবগুলোই আবাসিক ও বাণিজ্যিক খাত ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে বিদ্যমান গ্যাসের দাম গড়ে ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধির জন্য বিইআরসির কাছে আবেদন করেছিল।
বিদ্যুৎকেন্দ্র, সার কারখানা, সিএনজি স্টেশন, শিল্প কারখানা ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ওপর এ দাম বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল।
দাম বাড়াতে চাওয়া বিতরণ কোম্পানিগুলোর মধ্যে ছিল তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, বাখারাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড, পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এবং সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড।
শুনানির সময়, গ্যাস খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তি দেখায়, উচ্চমূল্যে আমদানিকৃত এলএনজি ব্যয়ের কারণে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব জমা দিতে হয় তাদের, কারণ এতে তাদের খরচ যথেষ্ট পরিমাণে বেড়ে যাবে।
গত ১৮ আগস্ট থেকে গ্রাহক পর্যায়ে এলএনজি সরবরাহ শুরু করে পেট্রোবাংলা। কর্মকর্তারা জানিয়েছে, বর্তমানে এলএনজি থেকে প্রতিদিন ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। মাস দুয়েকের মধ্যে এটি প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ করতে পারবে। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী বছর থেকে এলএনজি থেকে প্রতিদিন এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে।