তিনি বলেন, ‘এটা অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যেগ। এর ফলে ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তারল্য সংকট মোকাবিলা করা সহজ হবে। এতে করোনাভাইরাসের ফলে চাপে থাকা ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ শিল্প পর্যন্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে সফট লোন পেতে সক্ষম হবে।”
শেখ ফজলে ফাহিম আরও বলেন, “দেশের এ চ্যালেঞ্জিং মুহূর্তে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে এ প্রদক্ষেপ উদ্যেক্তাদের সাহস যোগাবে। আমি সারা দেশের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের রাজনৈতিক ও আর্থিক খাতের নেতৃত্বের প্রতি এমন সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
বাংলাদেশ ব্যাংক গত রবিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, কোনো ব্যাংক চাইলে বিধিবদ্ধ তারল্য সংরক্ষণ বা এসএলআরের উদ্বৃত্ত ট্রেজারি বন্ড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে বিক্রি করতে পারবে। এর বিপরীতে নির্ধারিত মেয়াদ পর্যন্ত সুদ পাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। কোনো ব্যাংক নগদ টাকার সংকটে থাকলে তাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তারল্য ব্যবস্থাপনায় যাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়, সে লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে সরকারি সিকিউরিটিজ ক্রয় জোরদারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে ‘সহজে বিনিময়যোগ্য সম্পদ (এসএলআর)’ সংরক্ষণের পর অতিরিক্ত সরকারি সিকিউরিটিজ থাকলে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বাজারমূল্যে বিক্রি করতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেট ম্যানেজমেন্ট বিভাগ সরকারি সিকিউরিটিজের সেকেন্ডারি মার্কেট উন্নয়নের পাশাপাশি মুদ্রানীতির উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে সরকারি সিকিউরিটিজ ক্রয় এবং প্রয়োজনে তা সেকেন্ডারি মার্কেটে বিক্রি করে। বাজারমূল্যে ওই লেনদেন করা হয়, বলে এতে জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গত ডিসেম্বর ভিত্তিক তথ্যানুযায়ী, ব্যাংকগুলোর কাছে মোট তারল্যের পরিমাণ ছিল তিন লাখ ১০ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিধিবদ্ধ তারল্য সংরক্ষণের পরিমাণ ছিল দুই লাখ পাঁচ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা। এ হিসাবে উদ্বৃত্ত ছিল এক লাখ পাঁচ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর এ উদ্বৃত্ত অর্থের বড় অংশই ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করা আছে। বর্তমানে ২, ৫, ১০, ১৫ ও ২০ বছর মেয়াদি বন্ড রয়েছে। আর স্বল্পমেয়াদি ৯১, ১৮২ ও ৩৬৪ দিন মেয়াদি বিল রয়েছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিকে সুসংগত রাখার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নতুন পদক্ষেপটি সহায়তা করবে।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব সৃষ্ট সংকট থেকে অর্থনীতিকে রক্ষার জন্য ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের খোলা বাজার থেকে মোট ১০০ বিলিয়ন রুপি (এক দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার) বন্ড কেনার ঘোষণা দেয়ার পরে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক খুব কমই ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে টি-বিল এবং বন্ড কিনে থাকে।