মেলার সবচেয়ে বেশি উচ্চতার নান্দনিক ডিজাইনের দৃষ্টিনন্দন প্যাভিলিয়ন দুটিতে সহস্রাধিক মডেলের ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করছে ওয়ালটন।
তিনতলা বিশিষ্ট ওয়ালটনের প্যাভিলিয়ন দুটির প্রতিটির আয়তন সাড়ে ৭ হাজার বর্গফুট করে। মেলার প্রধান ফটক থেকেই দর্শনার্থীদের চোখে পড়বে ২৬ এবং ২৯ নম্বর প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন দুটি। ১০০ ফুট চওড়া রাস্তার দুই পাশে মুখোমুখি প্যাভিলিয়ন দুটি দাঁড়িয়ে। এগুলোর ডিজাইন ও নির্মাণে রয়েছে নতুনত্ব। যা সহজেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ওয়ালটনের উভয় প্যাভিলিয়নের ডিজাইনে দেশীয় শিল্প ও ঐতিহ্যের সাথে সবুজকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। প্রবেশ দ্বারে ব্যবহার করা হয়েছে নান্দনিক টেরাকোটা। তবে মেলায় আগত বিপুল দর্শনার্থীদের চাপ বিবেচনায় এ ক্ষেত্রে মাটির বদলে ব্যবহার করা হয়েছে কাঠ।
উভয় প্যাভিলিয়নের বিভিন্ন ফ্লোরে যাতায়াতের জন্য থাকছে সুপরিসর লিফট। ওয়ালটনের তৈরি এ লিফট মেলায় প্রদর্শন এবং বিক্রি করা হবে। পাশাপাশি ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য উভয় প্যাভিলিয়নে রয়েছে ৬ ফুট করে চওড়া সিঁড়ি।
উভয় প্যাভিলিয়নের বাইরে মুখোমুখি স্থাপন করা হয়েছে ১৬ বাই ১২ ফুটের দুটি বিশালাকার এলইডি টিভি। যেখানে ওয়ালটন পণ্যের অত্যাধুনিক উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং করপোরেট ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হচ্ছে। এতে করে মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীরা ওয়ালটন পণ্যের উৎপাদন ও ব্যবহার সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান পাচ্ছেন।
মেলায় আসা ক্রেতা-দর্শনার্থদের জন্য ওয়ালটনের প্যাভিলিয়নে রয়েছে চমৎকার দুটি সেলফি জোন। প্রয়োজনীয় তথ্য ও সেবা দিতে থাকছে হেল্প ডেস্ক। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ওয়ালটন পণ্য রপ্তানি সংক্রান্ত তথ্য প্রদান এবং বিদেশি ক্রেতা-দর্শনার্থীদের তথ্য ও সেবা দিতে রয়েছে আন্তর্জাতিক ব্যবসা ইউনিট (আইবিইউ) কর্নার। করপোরেট ক্লায়েন্টদের জন্য আছে করপোরেট কর্নার। অনলাইন ক্রেতাদের সেবা দেবে ই-প্লাজা ডেস্ক।
প্রকৌশলী শাদী মোহাম্মদ রুম্মান জানান, ওয়ালটনের সুবিশাল প্যাভিলয়ন দুটি নির্মাণ কাজে অনুসরণ করা হয়েছে গ্রিন টেকনোলজি মেথড। এর এক পাশের দেয়াল সম্পূর্ণরূপে কৃত্রিম ঘাস দিয়ে সাজানো হয়েছে। রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা। কাঠামো নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা ও বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থাপনে ব্যবহার করা হয়েছে ফায়ার রেজিস্ট্যান্ট ক্যাবলস, স্টিলের কাঠামো, এসিপি (এ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট প্যানেল) বোর্ড, গ্লাস ইত্যাদি। মেলা শেষে এসব উপাদান দীর্ঘস্থায়ী কাঠামো নির্মাণেও কাজে লাগবে। স্টিল ও এসিপি বোর্ডগুলোর ৯০ শতাংশই পরবর্তীতে ব্যবহারযোগ্য। প্যাভিলিয়নে বাইরে থাকছে সবুজের সমারোহ।
২৬ নম্বর প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়নের নিচতলায় প্রদর্শন করা হচ্ছে ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর ও কম্প্রেসর। এক পাশে রয়েছে গোছানো স্মার্ট রান্নাঘর। যা সাজানো হয়েছে ওয়ালটনের বিভিন্ন গৃহস্থালী পণ্য দিয়ে। দ্বিতীয় তলায় থাকছে এয়ারকন্ডিশনার, লিফট এবং হোম অ্যাপ্লায়েন্স।
২৯ নম্বর প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়নের নিচতলা সাজানো হয়েছে টেলিভিশন এবং ইলেকট্রিক অ্যাপ্লায়েন্স দিয়ে। দ্বিতীয় তলায় থাকছে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ-কম্পিউটার ইত্যাদি প্রযুক্তিপণ্যের সমাহার। উভয় প্যাভিলিয়নের তৃতীয় তলায় থাকছে সুবিশাল স্টোর।
বাণিজ্য মেলায় ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক মো. হুমায়ূন কবীর বলেন, ওয়ালটন বাংলাদেশের শীর্ষ ব্র্যান্ড। যে কারণে এর প্রতি সবার বাড়তি আকর্ষণ থাকে। এবার শীর্ষ গ্লোবাল ব্র্যান্ড হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। বাণিজ্য মেলায় প্যাভিলিয়নের ডিজাইন এবং অত্যাধুনিক পণ্যের সমাহার দেখে দর্শনার্থীরা বিষয়টি সহজেই অনুধাবন করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, সেরা ভ্যাটদাতার পুরস্কার চালু হওয়ার পর থেকে প্রতিবছর মেলায় সেরা ভ্যাটদাতার সম্মান পাচ্ছে ওয়ালটন। এছাড়া প্রায় প্রতিবছরই সেরা প্যাভিলিয়নের পুরস্কার পেয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।