মূলত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনে পরীক্ষামূলকভাবে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
মঙ্গলবার কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায় এমভি সেঁজুতি। জাহাজটিতে চার কন্টেইনার ভারতীয় পণ্য রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব পাইলটের নেতৃত্বে টাগ বোটের সহায়তায় জাহাজটি বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের ১ নম্বর জেটিতে (বার্থ) আনা হয় বেলা ১টা ৪০ মিনিটে।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এ কন্টেইনারগুলো সড়কপথে আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে ত্রিপুরায় যাবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জানান, চারটি কন্টেইনারে ভারতীয় পণ্য নিয়ে এমভি সেঁজুতি চট্টগ্রাম বন্দরে মঙ্গলবার ভিড়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বিদ্যমান বার্থিং নীতিমালা অনুযায়ী (ফার্স্ট কাম, ফার্স্ট সার্ভ) জাহাজ বার্থিং করা হবে। বন্দরের ট্যারিফ শিডিউল অনুযায়ী ট্রানজিট কনটেইনারগুলোর বিপরীতে সকল চার্জ ও ফি আদায় করা হবে।
এমভি সেঁজুতির স্থানীয় এজেন্ট ম্যাংগো শিপিং লাইনের ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এমভি সেঁজুতি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে এনসিটিতে পৌঁছেছে। গ্যান্ট্রি ক্রেনের সাহায্যে কনটেইনার খালাসের প্রক্রিয়া চলছে। এরপর বন্দর, কাস্টমস, সড়ক ও জনপথ বিভাগের মাশুল পরিশোধ শেষে চারটি ট্রেইলরে (লরি) সড়কপথে কনটেইনারগুলো আখাউড়া হয়ে ত্রিপুরা ও আসাম পাঠিয়ে দেয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে উভয় দেশ নৌপথে পণ্য পরিবহনের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। ২০১৮ সালের অক্টোবরে দিল্লিতে আরেকটি চুক্তিতে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য সরবরাহ করতে সম্মত হয় দুই দেশ।
পরীক্ষামূলক পণ্য পরিবহন শুরু হওয়ার ফলে বাংলাদেশ হয়ে নৌ, রেল, সড়ক ও একাধিক পথে আটটি রুটে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে পণ্য পাঠাতে পারবে ভারত। চুক্তি অনুযায়ী ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনে সাত প্রকারের মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের জন্য তারা ট্যারিফও পাবে।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, চারটি কন্টেইনারের মধ্যে দুই কন্টেইনার রড ত্রিপুরার জিরানিয়ার এস এম কর্পোরেশনের। বাকি দুই কন্টেইনার ডাল যাবে আসামে। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বন্দর ও সড়কপথ ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য তাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পরিবহনের কার্যক্রম শুরু করল।
সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার খিদিরপুরে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের (বর্তমান নাম শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী বন্দর) গেট নম্বর ৭ থেকে এমভি সেঁজুতি নামে পণ্যবাহী জাহাজে করে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জন্য দুই টিইইউ’স টিএমটি ইস্পাত এবং দুই টিইইউ’স আসামের করিমগঞ্জের জন্য ডাল বোঝাই করা হয়েছে। এরপর জাহাজটি হলদিয়া যায়। সেখান থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে।