বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মুইনুল ইসলাম মাদরাসা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন এ অভিযোগ করেন তিনি।
এ সময় আল্লামা শফীর মৃত্যু নিয়ে মিথ্যাচার, হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও হেফাজত নেতাদের জড়িয়ে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান জুনায়েদ বাবুনগরী।
হেফাজতের নতুন আমির বাবুনগরী, কাসেমী মহাসচিব
তিনি বলেন, ‘আল্লামা শাহ আহমদ শফির মৃত্যুর তিন মাস পর কুচক্রি একটি মহল তার মৃত্যুকে অস্বাভাবিক আখ্যা দিয়ে একটি মিথ্যা মামলাও দায়ের করেছে।’
মিথ্যাচার ও মামলার ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক চক্রান্ত’ এবং দেশের স্থিতিশীল অবস্থা বিনষ্ট করার প্রচেষ্টা উল্লেখ করে বাবুনগরী আরও বলেন, ‘আল্লামা শাহ আহমদ শফির জীবদ্দশায় মাদরাসার তৎকালীন শিক্ষা পরিচালক আল্লামা মুফতী নূর আহমদ দা.বা. কে পাশ কাটিয়ে সহকারী শিক্ষা পরিচালক মাওলানা আনাস মাদানী দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদের হয়রানি করে আসছিলেন। সে একক সিদ্ধান্তে ছাত্রদের ভর্তি ফরম এবং দাওরায়ে হাদিস ছাত্রদের বোর্ড পরীক্ষার প্রবেশপত্র আটকে রাখে। অনেক ছাত্রের বোর্ডিংয়ের খাবার এবং আবাসিক সিটও অন্যায়ভাবে বাতিল করা হয়।’
পুলিশি বাধায় পণ্ড হেফাজতের ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি
‘তার (মাওলানা আনাস মাদানী) অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারি কর্মকাণ্ডে অতিষ্ট হয়ে আল্লামা আহমদ শফি রহ. এর মৃত্যুর দু’দিন আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সর্বস্তরের ছাত্ররা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিক্ষুদ্ধ ছাত্ররা তাদের সুনির্দিষ্ট দাবি তৎকালীন মুঈনে মুহতামিম আল্লামা শেখ আহমদ সাহেবের মাধ্যমে আল্লামা শাহ আহমদ শফি রহ. কাছে পেশ করেন। পরে তিনি শূরা আহ্বান করে মাওলানা আনাস মাদানীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেন এবং ছাত্রদের দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দেন,’ বলেন তিনি।
কিন্তু পরদিন ১৭ সেপ্টেম্বর সকল সদস্যের সিদ্ধান্ত অমান্য করে মাওলানা আনাস মাদানী অনির্দিষ্টকালের জন্য মাদরাসা বন্ধ করে দেয়ার পায়তারা করলে, পুনরায় ছাত্ররা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে বলে জানান বাবুনগরী।
হেফাজতের মহাসচিব কাসেমী মারা গেছেন
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পরে শিক্ষার্থীদের বাকি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ১৯ সেপ্টেম্বর পুনরায় শূরার অধিবেশন আহ্বান করেন আল্লামা শফি এবং এ ঘোষণার পর মাদরাসায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসে।
কিন্তু এরইমধ্যে আল্লামা আহমদ শফি রহ. অসুস্থ হয়ে পড়লে শূরার সদস্য এবং সিনিয়র আসাতিযায়ে কেরামের উপস্থিতিতে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হেফাজতকে লালন করে অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়া যাবে না: সরকারকে সেলিম
পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হেফাজতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ডা. নুরুল আফছার আজাহারী।
হেফাজত আমির আহমদ শফী মারা গেছেন
এ সময় আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, আল্লামা মোহাম্মদ ইয়াহইয়া, আল্লামা নোমান ফয়জী, আল্লামা তাজুল ইসলাম, আল্লামা মোহাম্মদ শোয়াইব, আল্লামা মুফতী কেফায়েতুল্লাহ, আল্লামা মুফতী জসিম উদ্দীনসহ হেফাজতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী এবং আলেম ওলামারা উপস্থিত ছিলেন।