করোনারি এনজিওপ্লাস্টির পর ফলোআপ হিসেবে সোমবার রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে ম্যাডামকে কিছু পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। তিনি ইকো, ইসিজি, ইউএসজি, এক্স-রে এবং আরও কিছু রক্ত পরীক্ষা করিয়েছেন।’
বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, খালেদার অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে ফলোআপ টেস্ট করার কথা ছিল, যা প্রায় ১০ সপ্তাহ আগে ১১ জুন করা হয়েছিল।
জাহিদ বলেন, ‘আমরা সঠিক সময়ে এটা করতে পারিনি, তাই, জরুরি ভিত্তিতে নিয়মিত চেক-আপ হিসাবে আজ (সোমবার) তাকে ওই পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। কিছু পরীক্ষা আজ করা হয়েছে এবং কিছু পরীক্ষা রিপোর্ট পর্যালোচনা করার পর করা হবে।’
বুধবারের মধ্যে সব পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী এই চিকিৎসক।
জাহিদ বলেন, এ লক্ষ্যে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া তার বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বিএনপি চেয়ারপার্সনকে আরও পর্যবেক্ষণ করবেন এবং সর্বশেষ পরীক্ষার রিপোর্ট পরীক্ষা করে তার চিকিৎসার পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবেন।
জাহিদ বলেন, খালেদা জিয়ার লিভার, ফুসফুস, বাত, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ আরও কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে।
তিনি বলেন, মেডিকেল বোর্ড আবারও মত দিয়েছে যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের একাধিক দীর্ঘস্থায়ী রোগ ও স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে বিদেশে একটি উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে তার চিকিৎসা খুবই জরুরি।
এর আগে বিএনপি চেয়ারপার্সন গুলশানের বাসা থেকে বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছান এবং ডাক্তারি পরীক্ষা করান। তিনি সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে হাসপাতাল থেকে বের হন এবং সন্ধ্যা ৭টা ৫৫ মিনিটে তার বাসায় পৌঁছান।
৭৭ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বিভিন্ন রোগে ভুগছেন
এর আগে ১০ জুন বিএনপি চেয়ারপার্সনের বাম ধমনীতে ৯৫ শতাংশ ব্লকের কারণে তিনি হার্ট অ্যাটাক করেন। ব্লক সরিয়ে সেখানে একটি স্টেন্ট (রিং) বসানো হয়।
চিকিৎসকরা তার রক্তনালীতে আরও দুটি ব্লক খুঁজে পেয়েছেন, তার বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতার কারণে তারা সেগুলো অপসারণ করতে পারেনি।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালত পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিলে তাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরে একই বছর আরেকটি দুর্নীতির মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
করোনার কারণে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার খালেদা জিয়াকে তার গুলশানের বাড়িতে থাকার এবং দেশ না ছাড়ার শর্তে সাজা স্থগিত করে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়।
পড়ুন: স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিকালে হাসপাতালে যাবেন খালেদা জিয়া
জনরোষ এড়াতে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠান: বিএনপি