রবিবার জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন তিন বিচজারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে এদিন দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এবং হারুন অর রশিদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
এর আগে ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম শুল্কফাঁকির অভিযোগে দুদকের মামলায় তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাকে ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেন। অর্থ অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয় ওই রায়ে।
এ মামলার পলাতক আসামি চ্যানেল নাইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এনায়েতুর রহমান বাপ্পীকে দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
মামলার অপর পলাতক আসামি ইশতিয়াক সাদেককে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৪০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
রায় ঘোষণার সময় এমপি হারুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
এরপর খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন হারুন অর রশীদ। হারুন অর রশিদের করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে একই বছরের ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের একক বেঞ্চ তার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষ এ জামিনাদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে। তখন আপিল বিভাগ নো অর্ডার আদেশ দেন। এরপর হারুন অর রশিদ জামিনে মুক্তি পান।
খুরশীদ আলম খান জানান, এর মধ্যে দুদক জামিন আবেদনের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন। যেটি রবিবার খারিজ হয়ে যায়। ফলে তার জামিন আপিলেও বহাল থাকল।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, হারুন বিএনপি জোট সরকারের সময় এমপি থাকাকালে ২০০৫ সালে ব্রিটেন থেকে একটি হ্যামার ব্র্যান্ডের গাড়ি শুল্কমুক্ত সুবিধায় কেনেন। গাড়িটি তিনি পরে ইশতিয়াক সাদেকের কাছে ৯৮ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। এরপর সাদেক গাড়িটি চ্যানেল নাইনের এমডি বাপ্পীর কাছে বিক্রি করেন। নিয়ম অনুযায়ী শুল্কমুক্ত গাড়ি তিন বছরের মধ্যে বিক্রি করলে শুল্ক দিতে হয়। কিন্তু এমপি হারুন শুল্ক না দিয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। এই অভিযোগে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ এমপি হারুনসহ তিনজনের নামে এ মামলা দায়ের করেন তেজগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক ইউনুস আলী। মামলায় ২০০৭ সালের ১৮ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। একই বছর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
হারুন অর রশীদ বিগত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত হন।