গণতন্ত্রের উত্তরণ আরও বিলম্বিত হলে বাংলাদেশের জনগণ আবার জেগে উঠতে পারে বলে অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নেতা ড. আব্দুল মঈন খান।
শনিবার (২ আগস্ট) রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মঈন বলেন, ‘আমি অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করছি, দয়া করে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ দীর্ঘায়িত করবেন না। যদি আপনি তা করেন, তাহলে বাংলাদেশের জনগণ আবার জেগে উঠবে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ড. মঈন বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিল, কারণ তারা বুঝতে পেরেছিল যে পাকিস্তানের শাসনামলে গণতন্ত্র কখনও বিকশিত হতে পারবে না।
বাংলাদেশের জনগণ এবং গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য গত পনের থেকে ষোল বছর ধরে সংগ্রাম করে আসছে বলেও সরকারকে স্মরণ করিয়ে দেনে বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘সেই প্রত্যাশা কি পূরণ হয়েছে? না... গত এক বছরেও হয়নি। কেন নয়? আমরা অতীতে এমন উদাহরণ দেখেছি যেখানে ৯০ দিনের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের চোখের সামনে সেই নজির রয়েছে।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘ফিরে দেখা রক্তাক্ত জুলাই-আগস্ট: প্রত্যাশা এবং বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি।
এক বছর পরও কেন দেশ তার গণতান্ত্রিক উত্তরণে এগিয়ে যেতে পারেনি—এমন প্রশ্নও তোলেন ড. মঈন।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রায়শই ভয় পাই যে এই নতুন ব্যবস্থা স্থায়ী ব্যবস্থায় পরিণত হতে পারে কিনা। আমরা পরিবর্তন চাই, কিন্তু সমস্ত পরিবর্তনই প্রকৃত পরিবর্তন নয়। ১/১১-এর সময়, আমরা ঢাকা জুড়ে ব্যানার এবং ফেস্টুন দেখেছি যাতে সবকিছু পরিবর্তন করার, সবকিছু পুনর্গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু বিশ্বের সবকিছু পরিবর্তন করা যায় না বা করা উচিত নয়।’
বিএনপি নেতা বলেন, যখন অনেকে পরিবর্তনের কথা বলেন, তখন পরিবর্তনের জন্য এটি পরিবর্তন করা উচিত নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘যখন আমরা সংস্কারের কথা বলি, তখন আমি বলি সংস্কারগুলো ভাসাভাসা হওয়া উচিত নয়। বাহ্যিক পরিবর্তন ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করবে না। আপনি সংবিধানের কয়েকটি লাইন সংশোধন করতে পারেন - এমনকি পুরো দলিলটিও পুনর্লিখন করতে পারেন—তবে এটি কোনো কাজে আসবে না, যদি না এই দেশ পরিচালনাকারী মানুষের হৃদয় পরিবর্তন হয়।’
পড়ুন: বিষাক্ত রাজনীতি এড়াতে দলগুলোর পারস্পরিক বোঝাপড়ার আহ্বান ফখরুলের