তিনি বলেছেন, ‘ড. কামালরা যে ৫টি প্রস্তাব দিয়েছেন এটা অগ্রহণযোগ্য। এ প্রস্তাব মেনে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাদের পাঁচ দফা মেনে নিলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি করবে। তাদের প্রস্তাব মানতে গেলে সরকারের সময়সীমা শেষ হবে, সংসদ শেষ হবে, সংবিধানও শেষ হবে। তখন একটি সাংবিধানিক শূন্যতাও তৈরি হবে।’
মঙ্গলবার সচিবালয়ে তার নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে ‘কার্যকর গণতন্ত্র’ নিশ্চিত করতে গত শনিবার বদরুদ্দোজার নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’র ঘোষণা দেয়।
তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে-একাদশ সংসদ নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা এবং নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়া, গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা ইসির ওপর ন্যস্ত করা, নির্বাচনের এক মাস আগে এবং নির্বাচনের পর ১০ দিন পর্যন্ত মোট ৪০ দিন ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন, কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রছাত্রীসহ সব রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার ও তাদের মুক্তি এবং এখন থেকে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার না করা এবং নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বন্ধ ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ গণমুখী করে সংশোধন করা।
হাসনুল হক ইনু বলেন, ‘এর আগে তত্বাবধায়ক সরকারে যে ব্যবস্থা বাতিল হয়েছে, সেখানে বিচার বিভাগকে সরকার গঠনের প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত না করার সুস্পষ্ট রায় রয়েছে। সুতরাং সেই অবস্থায় বিচার বিভাগকে বাদ দিয়ে নিরপেক্ষ ব্যক্তি খুঁজতে হবে। তাহলে এখানে পরিষ্কার যে, সবগুলো রাজনৈতিক দল একমত না হলে নির্দলীয় সরকার গঠন সম্ভব হবে না। তা কীভাবে সম্ভব হবে?’
তিনি বলেন, নির্বাচনের যখন তিন মাস বাকি, কিছু ব্যক্তি নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ না করে নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা না করে সংবিধান বহির্ভূভতভাবে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বাতিলের দাবি করছে। এটা সাংবিধানিক একটি শূন্যতা তৈরি করে দেবে। এই মুহূর্তে যদি একটি নির্বাচিত সরকার পদত্যাগ করে এবং সংসদ বাতিল হয়ে যায় তাহলে দেশ একটি সাংবিধানিক শূন্যতায় পড়ে যায়। তাহলে এই অন্তর্বর্তী সময়ে কে দেশ চালাবে? আপনারা কোনো আলোচনা না করে আগে পদত্যাগ করো, সংসদ বাতিল করো, তারপর নির্বাচন কমিশন সংস্কার করো, তারপর আলোচনায় যাবেন, এটা হয় না।’
যুক্তফ্রন্টের করা দাবির বিষয়ে ইনু বলেন, এই দাবিগুলো টোটালি বিএনপি জামায়াতের দাবির ফটোকপি মাত্র। সেনা মোতায়েনের দাবি আমরা নাকচ করছি। আগামী নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব বা দাবি নেই। এটা শুধুমাত্র নির্বাচন কেন্দ্রীক দাবি।’