তিনি বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সকাল বেলা কড়া ভাষায় সরকারের সমালোচনা করেন। সেটার সাথে প্রতিযোগিতা করে দুপুরে রিজভী আহমেদ আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করে আরও কড়া ভাষায় সরকারের সমালোচনা করেন। পাশাপাশি প্রেস ক্লাবে গিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কিংবা অন্য কেউ আরেকবার বক্তৃতা দিয়ে বলেন- আমাদের কথা বলার কোনো অধিকার নাই। বিএনপি নেতারা সারা দিন সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে সন্ধ্যায় বলেন আমাদের কথা বলার অধিকার নেই।’
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন:পার্বত্যাঞ্চলের শান্তিতেও তারা খুশি নয়: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘টেলিভিশনের টক-শোগুলো শুনুন, সেখানে সরকারকে কী ভাষায় সমালোচনা করা হয়। তবে আমরা মনে করি এ সমালোচনা থাকতে হবে। সমালোচনা না থাকলে গণতন্ত্র নষ্ট হয়, গণতন্ত্রের সৌন্দর্য নষ্ট হয়। গঠনমূলক সমালোচনা হচ্ছে বিউটি অব ডেমোক্রেসি এবং সেই সমালোচনাকে সমাদৃত করার মানসিকতা থাকতে হয়।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমালোচনাকে সমাদৃত করার সংস্কৃতি লালন করেন। আমি যখন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলাম তখন যেই পত্রিকা ব্যঙ্গ করে আমার কার্টুন ছাপিয়েছিল প্রথম পাতায়, সেই পত্রিকাকে জাতীয় পরিবেশ পদক দেয়ার জন্য আমি নিজেই নাম প্রস্তাব করেছিলাম এবং তারা পেয়েছিল। কারণ আমরা মনে করি দায়িত্বে থাকলে সমালোচনা হবে এবং সেই সমালোচনা সহ্য করার মানসিকতা দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের থাকতে হয়। না হয় বহুমাত্রিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে না।’
‘অনেক সমালোচনা হচ্ছে, রাত ১২টার পরে যদি টক-শো শোনেন, সবগুলো টক-শো যদি কোনো উপসংহারে আসে তাহলে মনে হবে দেশে কোনো কিছুই হচ্ছে না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ব্লুমবার্গ করোনা নিয়ে যেই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেখানে বলছে করোনা মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় সবগুলো দেশের উপরে বাংলাদেশের অবস্থান এবং পুরো পৃথিবীতে বাংলাদেশের অবস্থান ২০তম,’ বলেন তথ্যমন্ত্রী।
তার মতে, যখন ভালো কাজের প্রশংসা না হয়ে অহেতুক সমালোচনা হয় তখন কিন্তু যারা ভালো কাজ করেন তারা হতাশ হন। তখন মানুষ ভালো কাজ করার জন্য উৎসাহিত হন না। অবশ্যই সমালোচনা হবে, সমালোচনা থাকবে, এটির পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসাও দরকার। না হয় রাষ্ট্র সমাজ এগুবে না।
আরও পড়ুন:বিজয় দিবসের প্রত্যয় স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে নির্মূল করা: তথ্যমন্ত্রী
বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা এঁকেছিল জামায়াতে ইসলামী: তথ্যমন্ত্রী
ধর্ম ব্যবসায়ীদের কাছে ইসলাম ধর্ম লিজ দেয়া হয়নি: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতপক্ষে গণমাধ্যম হচ্ছে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। রাষ্ট্রের যদি কোনো একটি স্তম্ভ সঠিকভাবে কাজ না করে তাহলে রাষ্ট্রের ভিত নষ্ট হয়ে যায়। এটি মাথায় রেখে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের সাথে যুক্তরা যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে ও স্বাচ্ছন্দে জীবন-যাপন করতে পারেন সে ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছেন।
সংকটময় পরিস্থিতিতে গুজব রটিয়ে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে সমাজে অস্থিরতা তৈরি করা একটি অংশ ওঁৎ পেতে থাকে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ করোনাকালের শুরুতেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু যাতে গুজব রটাতে না পারে ও মিথ্যা সংবাদের মাধ্যমে সমাজে অস্থিরতা তৈরি না হয় সে ব্যাপারে মূলধারার গণমাধ্যমগুলো অত্যন্ত যত্নশীল ছিল এবং কঠোরভাবে কাজ করেছে। এ কারণে করোনাকালে গুজব কিংবা মিথ্যা সংবাদ খুব বেশি কাজে আসেনি। এ জন্য গণমাধ্যমের সাথে যুক্তদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’
মৌলবাদীগোষ্ঠীর অপচেষ্টা রুখতে গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ: তথ্যমন্ত্রী
প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে ও যুগ্ন সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান ও কলিম সরওয়ার, সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা, বিএফইউজে’র সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।