ব্রিকসের সদস্যপদ লাভে বাংলাদেশের ব্যর্থতার জন্য সরকারের 'কূটনৈতিক ব্যর্থতাকে' দায়ী করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতা ডক্টর আবদুল মঈন খান।
তিনি বলেন, ‘এই সরকার শুধু অর্থনৈতিক নয়, কূটনৈতিকভাবেও ব্যর্থ হয়েছে। সরকার ব্রিকসের সদস্য হবে বলে গর্ব করে দক্ষিণ আফ্রিকা যায়। কিন্তু আমাদের সবচেয়ে বন্ধুপ্রতীম দেশ (ভারত) ব্রিকসের সদস্যপদ সম্প্রসারণের বিষয়ে বড় সিদ্ধান্ত নেয় এবং তারা আমাদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছে।’
জোহানেসবার্গে তার সাম্প্রতিকতম শীর্ষ সম্মেলনে পাঁচ দেশের ব্রিকস গ্রুপে (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা) ছয়টি নতুন দেশকে জোটে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বাংলাদেশসহ অন্তত ২০টি দেশ সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছে বলে জানা গেছে।
এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা বলেন, এটা প্রশংসনীয় যে সরকার গত ১৫ বছরে অনেক মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেছে এবং অনেকগুলো বাস্তবায়ন করেছে। ‘কেন আমি তাদের ভালো কাজের জন্য তাদের প্রশংসা করব না? কিন্তু মেগা প্রজেক্টের নামে যে মেগা দুর্নীতি হয়েছে তার কথাও আমাকে বলতে হবে।’
তিনি বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে, এই বাস্তবতা সরকার অস্বীকার করতে পারে না।
সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী এবং বর্তমানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর মঈন খান আরও বলেছেন, দেশের ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে ব্রিকসে বাংলাদেশকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ‘এটাই বাস্তবতা এবং এটাই সত্য।’
আরও পড়ুন: এক দফা আন্দোলন: রাজধানীতে কালো পতাকা নিয়ে বিএনপির গণমিছিল শুরু
তিনি বলেন, নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশকে কবে ব্রিকসের সদস্য হিসেবে দেখবে তা এখন অনিশ্চিত। ‘তবে আমরা বলতে পারি, বিশ্ব যেভাবে আমাদের প্রত্যাখ্যান করছে তা লজ্জাজনক, বাংলাদেশকে (ব্রিকসের) সদস্যপদ দেওয়া হয়নি।’
সোমবাবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে বিএনপিপন্থী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সমস্ত বক্তব্য এবং ভিডিও মুছে ফেলার জন্য হাইকোর্টের নির্দেশের বিরোধিতা করেন ডক্টর মঈন। তিনি বলেন, ‘তাকে আপনারা এত ভয় পাচ্ছেন কেন? একজন মানুষকে ভয় পান কেন? কারণ তিনি (তারেক) বাংলাদেশের অধিকাংশ জনগণের কাছে পৌঁছে গেছেন এবং এই সরকার জনগণকে ভয় পায়।’
তিনি অভিযোগ করেন, তাদের দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকেও ‘মিথ্যা’ মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে, কারণ বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের কথা বলে, সরকার তাকে ভয় পায়।
আরও পড়ুন: জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে আর ক্ষমতায় থাকা যাবে না: খসরু
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ (ডিএসএ) বিভিন্ন আইন করে সরকার জনগণের কণ্ঠরোধ করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, জনগণের কণ্ঠস্বরকে দমিয়ে রাখার জন্য ডিএসএকে সাইবার নিরাপত্তা আইনে (সিএসএ) রূপান্তরিত করার সরকারের পদক্ষেপ 'নতুন বোতলে পুরানো মদ' ছাড়া আর কিছুই নয়।
ড. মঈন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার আর জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে পারবে না, কারণ বিরোধীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের সব কালো আইন, অপকর্ম, প্রতারণা ও একদলীয় রাজনীতি উপড়ে ফেলবে।
তাদের দল (বিএনপি) সহিংসতা ও প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবে।
আরও পড়ুন: নেতাদের চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাওয়া নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে: বিএনপি