দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মানিকগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
পরে ভারপ্রাপ্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুর হোসেন আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি-তর্ক শুনে সেলিম মণ্ডলকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নিদের্শ দেন। একই সাথে পলাতক আসামি আব্দুল হানিফ ও আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সেলিম হাইকোর্ট থেকে চলতি বছর ১৩ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান। ২১ এপ্রিল হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করে আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে সাত দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিংগাইর থানার উপপুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন জানান, পারিবারিক ও দাম্পত্য বিরোধের জের ধরে ২০১৮ সালের ২ আগস্ট সাভারের ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করে সেলিম। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর সহযোগীদের নিয়ে লাশ গোপন করার জন্য গাড়িতে করে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের স্বরুপপুর নামক স্থানে ফেলে দেয় এবং পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় তার সাথে আরও বেশ কয়েকজন ছিল।
গত ৩ আগস্ট সিংগাইর উপজেলার বায়রা গ্রাম থেকে আগুনে ৯০ শতাংশ ঝলসানো একটি তরুণীর লাশ উদ্ধার করে সিংগাইর থানা পুলিশ। পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে লাশটি মানিকগঞ্জ পৌরসভা কবরস্থানে দাফন করা হয়। সিংগাইর থানা পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
পরে মরদেহের ছবি দেখে আত্বীয়স্বজন আয়েশা আক্তার বকুলকে শনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় আয়েশার বড় ভাই উজ্জল হোসেন সেলিমকে প্রধান আসামি করে সিংগাইর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় প্রধান অভিযুক্ত সেলিম বেশ কিছুদিন পালিয়ে থেকে গত ২৮ আগস্ট উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালত তাকে অস্থায়ী জামিন দেয়। অস্থায়ী জামিনে থাকা অবস্থায় গত ৫ সেপ্টেম্বর রাতে দেশ থেকে পালিয়ে ইতালি যাওয়ার সময় হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে। পরে সিংগাইর থানা পুলিশের কাছে আটক সেলিমকে হস্তান্তর করা হয়।
গত ৬ সেস্টেম্বর আদালতে সেলিমকে হাজির করে তিন দিনের রিমান্ডে নেয় সিংগাইর পুলিশ। পরবর্তীতে পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত আরও পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। তবে রিমান্ড শেষ হওয়ার আগেই সেলিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হন। আপিল বিভাগের আদেশে রবিবার সেলিম বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাকে জেলা হাজতে পাঠান।