চাহিদা থাকায় ঝালকাঠি জেলায় সম্প্রসারিত হচ্ছে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল মাল্টার চাষ। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত দেশি মাল্টা এরই মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে। ফরমালিন মুক্ত ও সতেজ হওয়ায় সাধারণ মানুষের কাছে স্থানীয় মাল্টার চাহিদাও রয়েছে।
স্থানীয় চাহিদার কথা চিন্তা করে ঝালকাঠি জেলার সবচেয়ে বড় মাল্টা বাগানটি তৈরি অবসরপ্রাপ্ত একমি ল্যাবরেটরির জ্যেষ্ঠ মার্কেটিং কর্মকর্তা খন্দকার ইকবাল মাহমুদ।
২০১৭ সালে এ ব্লকের ৩ একর জায়গা কিনে বারি-১ জাতের মাল্টার বাগান করেন তিনি। সেই সাথে উচ্চ ফলনশীল জাতের আম-লিচু ও সফেদা ফলের গাছসহ ৯০০টি ফলের গাছ রয়েছে তার বাগানে। বাগানে ২০১৭ সালে মাল্টা গাছ লাগানোর পরের বছর থেকে ফলন পেতে শুরু করেন।
এ বছরও তার বাগানে মাল্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ ফলন তোলা ও বাজারজাত করবেন বলে আশা করছেন খন্দকার ইকবাল মাহমুদ।
ইকবাল জানান, ২০১৯ সালে ফল চাষাবাদে তার ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যেখান থেকে শুধু মাল্টা বিক্রি করেছেন ৯ লাখ টাকার। ওই বছর বাগান থেকে নিট আয় হয়েছিল ৬ লাখ টাকা।
কোনো ধরনের রাসায়নিক সার ব্যবহার ছাড়াই তিনি তার বাগানে ফল ফলিয়ে থাকেন বলে জানান।
অরগানিক পদ্ধতি ব্যবহার করে ফল উৎপাদন করায় স্থানীয় ঝালকাঠি ও বরিশাল থেকে এসে ফল বিক্রেতারা তার বাগান থেকে মাল্টা কিনে নিয়ে যায়।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনার কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, শুধু ফল চাষই নয় বাগান করার আগে ভূমি উন্নয়ন ও ধানি জমিকে উঁচু করার জন্য মাটি কেটে দুটি পুকুর তৈরি করেছেন। সেই পুকুরে এখন মিশ্র জাতে মাছের চাষ হচ্ছে।
সামনের দিনগুলোতে জৈব সারের ব্যবহার করার জন্য দুগ্ধ খামার ও হাঁসের খামার করার জন্য চিন্তা ভাবনা করছেন, এ উদ্যোক্তা।
খন্দকার ইকবাল মাহমুদকে উৎসাহ দিতে ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তারা তার বাগানের খোঁজ খবর নিচ্ছেন এবং প্রযুক্তিগত পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানান।
জানা যায়, ঝালকাঠি জেলার স্থানীয় কৃষকরা অপেক্ষকৃত উচুঁ জায়গায় কান্দি করে মাল্টার বাগান করছেন। চাষাবাদে কৃষকদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ দিয়ে মাল্টা চাষ সম্প্রসারণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। ওই অঞ্চলের উৎপাদিত মাল্টা চাষ লাভজনক ও ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফলটির স্বাদও অনেক মিষ্টি হয়।
কৃষি সম্প্রসারণের হিসাব মতে, জেলায় ৫০ একরের জমিতে মাল্টা চাষ হচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় ১০০-১২৫ টাকা কেজি দরে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের চাহিদা পূরণ করছে।