হাইকমিশনার শনিবার বাংলাদেশের শিল্পীদের সৃষ্ট শিল্পকর্মের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমি মনে করি শিল্পের মাধ্যমে আমরা আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারব।’
রাজধানীর কসমস সেন্টারে ২১ শিল্পীর কাজ নিয়ে ‘শেখ হাসিনা: অন দ্য রাইট সাইড অব হিস্ট্রি’ শীর্ষক দুই মাসব্যাপী শিল্পকর্ম প্রদর্শনী পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা বলেন দোরাইস্বামী। এ সময় তার স্ত্রী সংগীতা দোরাইস্বামীও সঙ্গে ছিলেন।
আরও পড়ুন: গ্যালারি কসমসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘটনাবহুল জীবন প্রদর্শিত
কসমস গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ জামিল খান অন্যদের মধ্যে এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশি শিল্পীদের মান ‘অসাধারণ প্রতিভাময়’ এবং তারা যেসব শিল্পকর্ম করেছেন তা সত্যই অনেক দর্শনীয়।
বাংলাদেশ আজ এক দুর্দান্ত ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে আছে এবং দেশটির স্বাধীনতার ৫০ বছর, ২০২১ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বন্ধনের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর উদযাপন চলমান রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের শিল্প নিয়ে উদযাপনের সেরা সময় এখন। আমি মনে করি শিল্প নিয়ে উদযাপনের এটি এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে গ্যালারি কসমসের আর্ট ক্যাম্প
দুর্দান্ত আর্ট গ্যালারি দেখে নিজের মুগ্ধতার কথা জানিয়ে হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে শিল্পচর্চায় ভাগ করে নেয়ার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রয়েছে।
তিনি বলেন, শিল্পে সর্বাধিক মৌলিক যে বিষয়টি রয়েছে তা হলো এতে পরিচয়ের ওপর জোর দেয়া হয় না বরং ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং গল্প থাকে।
দুদেশের উদযাপন নিয়ে দোরাইস্বামী বলেন, পারস্পরিক শিল্প বিনিময়ের জন্য তারা উন্মুক্ত আছেন এবং আর্ট প্রদর্শনী ও ক্যাম্প আয়োজনে গ্যালারি কসমসের সাথে অংশ নিতে পারলে খুশি হবেন। ‘আমাদের যা প্রয়োজন তা হলো আইডিয়া। শিল্প নিয়ে নিয়মিত আয়োজন থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে শিল্পীরা চমৎকার কাজ করেছেন: তথ্যমন্ত্রী
হাইকমিশনার বলেন, ‘ভারতীয় শিল্পীদের বাংলাদেশে আনতে আমি আগ্রহী এবং এ জন্য আরও কিছু করতে চায়। আমরা ভবিষ্যতে আরও অনেক কিছু করতে পারি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাথে অংশীদারিত্ব চিরস্থায়ী, এটাও চিরস্থায়ী হতে হবে এবং এ অংশীদারিত্বকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে শিল্প ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই।
এ সময় মাসুদ খান বলেন, গ্যালারি কসমস বিশ্বাস করে মানুয়ের জন্য শিল্প দরকার এবং চারুকলার জন্য মানুষের প্রয়োজন। ‘আমি মনে করি, আপনারা সকলেই একমত হবেন যে এখানের প্রতিটি শিল্পকর্মের নিজস্বতা আছে তা অনন্য এবং বিশেষ।’
আরও পড়ুন: গ্যালারি কসমসের আয়োজনে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রথম ভার্চুয়াল প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত
তিনি বলেন, প্রতিদিনের জীবনযাপনে শিল্পকর্ম অপরিহার্য না হলেও দীর্ঘমেয়াদে একটি সমাজ ও সংস্কৃতির টিকে থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মাসুদ খান বলেন, ভারত বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু এবং এ অঞ্চলের শান্তি ও অগ্রগতি অর্জনে দুই দেশের মধ্যে অংশীদারিত্বপূর্ণ সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের বছরব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কসমস ফাউন্ডেশন ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই
কসমস ফাউন্ডেশনের সহায়তায় গ্যালারি কসমস সম্প্রতি কসমস আতেলিয়ার৭১-এর সাথে যৌথভাবে বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে এক আর্ট ক্যাম্পের আয়োজন করে।
প্রখ্যাত শিল্পী অলকেশ ঘোষ, আহমেদ শামসুদ্দোহা, শেখ আফজাল, নাসির আলী মামুন, বিশ্বজিৎ গোস্বামী, রত্নেশ্বর শুত্রধর, রাসেল কান্তি, মনজুর রশিদ, সৌরভ চৌধুরী, মানিক বনিক, জয়ন্ত সরকার, আজমল হোসেন, ফিদা হোসেন, অমিত নন্দী, দিদারুল লিমন, তামান্না আফরোজ, ফাহিম চৌধুরী, মিসকাতুল আবির, প্রসূন হালদার, হাসুরা আক্তার রুমকি ও সুরভী আক্তার আর্ট ক্যাম্পে অংশ নেন। আর্ট ক্যাম্পে অংশ নিয়ে তাদের আঁকা শিল্পকর্মগুলো দিয়েই প্রদর্শনীটি করা হচ্ছে।
কসমস সেন্টারে প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি অব্যাহত থাকবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এখানে একসাথে মাত্র ২০ জন দর্শনার্থী পরিদর্শনের সুযোগ পাবেন। পরিদর্শনের সময় তাদের সব সময় মাস্ক পরে থাকা এবং পরস্পর থেকে যথাযথ দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে।
ভারতীয় হাইকমিশনার ইউএনবি নিউজরুমসহ কসমস সেন্টারে থাকা কসমস গ্রুপের বিভিন্ন বিভাগও পরিদর্শন করেন।