ঝিনাইদহে হরিনাকুণ্ডু উপজেলায় অপরিকল্পিতভাবে খাল খননের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমি। এর ফলে ইতোমধ্যে ধ্বসে গেছে সড়কের পাশ, বসতভিটাসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, খাল খননে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও খাল খননের সেই মাটি বিক্রি করে দেওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্মকর্তাদের দাবি, অপরিকল্পিত খননের কারণে নয়, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণেই ভাঙছে খালের পাড়।
এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে পাউবো।
মহাসড়কের পাশে খাল পাড়ে স্ত্রী-সন্তান, ভাই ও মাকে নিয়ে মাত্র ১ শতক জমিতে বাস করেন হরিনাকুণ্ডু উপজেলার মকিমপুরের কৃষক আলম মন্ডল।
কয়েকদিন আগে ভাঙন শুরু হলে তার বসতভিটা খালগর্ভে চলে যায়। তার পর থেকে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে হতদরিদ্র পরিবারটি।
আরও পড়ুন: ১৫টি খাল খনন করলেই দূর হবে ঢাকার ৮০ শতাংশ জলাবদ্ধতা
স্থানীয়রা জানান, মকিমপুর গ্রামের বাগমারা খাল পাড়ের অর্ধশত পরিবার এখন ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। খালের দুই পাশের বাসিন্দাদের গাছপালা, বসতঘর, শৌচাগার ভেঙে গেছে।
খাল পাড় দিয়ে বয়ে যাওয়া এলজিইডির সড়কেরও একই অবস্থা। কোনো কোনো স্থানে সড়কের অর্ধেক নেমে গেছে খালে। হুমকির মুখে রয়েছে অন্যান্য বসতভিটা ও ফসলি জমি।
মশিয়ার রহমান নামের এক কৃষক বলেন, যেকোনো সময় আমার জমি খালে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এখন আমি কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না। তাই দ্রুত খালের পাড় বাঁধার দাবি জানাচ্ছি।
ইউনুছ আলী নামের এক কৃষক বলেন, খাল খননের সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন খাল পাড়ের মাটি বিক্রি করে দেওয়ায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। যদি খালের মাটি বিক্রি না করত, তাহলে এ সমস্যা হতো না।
সবুজ হোসেন নামের এক পথচারী বলেন, খালের ভাঙ্গনে সড়কটি প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। এখনই খালের পাড় বাঁধা না হলে এই সড়কটি দিয়ে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে যাবে। গ্রামের কৃষকরা মাঠ থেকে ফসল আনা-নেওয়ার জন্য আর সড়কটি ব্যবহার করতে পারবে না।
ঝিনাইদহ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) রঞ্জন কুমার দাস বলেন, এ বছর অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। সমস্যা সমাধানে কাজ করা হচ্ছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে এই খালটি খনন করে ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সাড়ে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালটি খননে ব্যায় হয়েছিল ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন: বসিলায় ট্রাক টার্মিনাল উচ্ছেদের পর লাউতলা খাল খননে ডিএনসিসি