বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানের জন্য আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়ে অফশোর দরপত্র আহ্বান করেছে তেল ও গ্যাস করপোরেশন পেট্রোবাংলা।
রবিবার (১০ মার্চ) 'অয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস এক্সপ্লোরেশন আন্ডার বাংলাদেশ অফশোর বিডিং রাউন্ড ২০২৪' শীর্ষক দরপত্রটি আহ্বান করেছে সংস্থাটি।
বিদেশে বাংলাদেশ মিশনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় সংবাদপত্র ও ওয়েবসাইটে দরপত্র জমা দেওয়ার জন্য চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় মাস সময় দেওয়া হয়েছে।
আহ্বান করা দরপত্রে মোট ২৪টি অফশোর ব্লক রয়েছে- এর মধ্যে ৯টি অগভীর সমুদ্র ব্লক এবং ১৫টি গভীর সমুদ্র ব্লক।
আরও পড়ুন: লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলে পেট্রোবাংলার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: নসরুল হামিদ
৯টি অগভীর সমুদ্র ব্লক হলো- এসএস-০১, ০২, ০৩, ০৫, ০৬, ০৭, ০৮, ১০ ও ১১) এবং ১৫টি গভীর সমুদ্র ব্লক হলো- ডিএস-০৮, ০৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১ ও ২২।
দরদাতা এককভাবে বা অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে মিলে এক বা একাধিক ব্লকের জন্য দরপত্র জমা দিতে পারেন।
আহ্বান করা দরপত্রের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- বাংলাদেশ অফশোর মডেল প্রোডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট-২০২৩ অনুযায়ী সফল দরদাতাদের সঙ্গে চুক্তি সই হবে।
প্রস্তাবিত চুক্তির বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে- মুনাফার পূর্ণ প্রত্যাবর্তন, কোনো অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা বা রয়্যালটি না থাকা, আন্তর্জাতিক নির্দেশকের আলোকে অপরিবর্তিত আকর্ষণীয় গ্যাসের দাম, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাজারমূল্যের ভিত্তিতে তেলের দাম নির্ধারণ করা হবে।
এতে পেট্রোলিয়াম পরিচালনার জন্য আমদানি করা যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রপাতির ওপর কোনো শুল্কারোপ করা হবে না। ঠিকাদারের করপোরেট আয়কর দায় পেট্রোবাংলা বহন করবে এবং ন্যূনতম অনুসন্ধান কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য ব্যাংক গ্যারান্টি বহন করবে।
মুনাফাভিত্তিক শেয়ার হস্তান্তর এবং শতভাগ ব্যয় পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা থাকবে, যার বার্ষিক সীমা ৭৫ শতাংশ।
আনুপাতিকভাবে বাধ্যতামূলক কাজের বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তি পেতে ঠিকাদারের অবশ্যই ২ডি সিসমিক সার্ভে থাকতে হবে। একই সঙ্গে বিডযুক্ত ব্লকগুলোর বিপরীতে ২ডি মাল্টি-ক্লায়েন্ট সিসমিক ডেটা ক্রয় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
প্রতিটি অনুসন্ধান সময়কালে তাদের ন্যূনতম কাজের বাধ্যবাধকতা থাকবে এবং বাধ্যতামূলক কর্মসূচির উপরে অংশগ্রহণযোগ্য কাজের কর্মসূচির প্রতিশ্রুতি থাকবে।
নিলামযোগ্য সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সীমাসহ আর-ফ্যাক্টরের ভিত্তিতে পেট্রোলিয়াম মুনাফা ভাগাভাগি হবে। তবে বিদেশি কোম্পানি যদি গ্যাস বিক্রি করতে চায়, তাহলে প্রথমে পেট্রোবাংলাকে প্রস্তাব দিতে হবে। পেট্রোবাংলা যদি তা প্রত্যাখ্যান করে তবেই তৃতীয় পক্ষের কাছে গ্যাস বিক্রির সুযোগ পাবে বিদেশি কোম্পানি।
অগভীর ও গভীর সমুদ্রে উভয় ধরনের ব্লকের জন্য রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) জন্য ১০ শতাংশ শেয়ার নিশ্চিত করতে হবে।
দরদাতাদের যোগ্যতার মানদণ্ডের মধ্যে রয়েছে- একক বা যৌথ উদ্যোগের ক্ষেত্রে কমপক্ষে একজন সদস্যের দৈনিক কমপক্ষে ১৫ হাজার ব্যারেল তেল বা ১৫০ এমএমএসসি গ্যাসের অফশোর উৎপাদন ক্ষমতা থাকতে হবে। দরদাতাদের অবশ্যই তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনে কমপক্ষে একটি বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা (স্বদেশ ব্যতীত) থাকতে হবে।
আগ্রহী দরদাতা বা কোম্পানি ৩০০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বাংলাদেশি টাকা খরচ করে তথ্য প্যাকেজটি সংগ্রহ করতে পারবেন।
সংস্থাগুলোর প্রস্তাবিত ব্লকগুলোর ভূতাত্ত্বিক সম্ভাবনাগুলো মূল্যায়ন করতে সক্ষম করার জন্য প্রচারমূলক ও ডাটা প্যাকেজ পেমেন্টের ভিত্তিতে পাওয়া যায়।
সংস্থাগুলো প্রস্তাবিত ব্লকগুলোর ভূতাত্ত্বিক সম্ভাবনাগুলো মূল্যায়নে সক্ষম করতে প্রচারমূলক ও ডেটা প্যাকেজগুলো অর্থ প্রদান সাপেক্ষে পাওয়া যাবে। প্রচারমূলক প্যাকেজগুলোতে দরপত্রের প্রয়োজনীয় নথি, ভূমিকম্প বিভাগের নমুনা, মাধ্যাকর্ষণ, চৌম্বকীয়, ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র রয়েছে। নিলামের যোগ্যতা অর্জনের জন্য কোম্পানিগুলোকে প্রমোশনাল প্যাকেজ কেনার কথা বলা হয়েছে দরপত্রে।
প্রমোশনাল প্যাকেজের ক্রয়মূল্য ১০ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বাংলাদেশি টাকা। ডেটা বিক্রয় প্যাকেজ ক্রয় ঐচ্ছিক। বিভিন্ন মূল্যে বিভিন্ন ডাটা সেলস প্যাকেজ পাওয়া যায়।
দরপত্রে বলা হয়েছে, প্রমোশনাল ও ডাটা সেলস প্যাকেজের দরপত্র ক্রয়ে আগ্রহী কোম্পানিগুলো ঢাকার কাওরান বাজারের পেট্রোসেন্টারে অবস্থিত বাংলাদেশ তৈল, গ্যাস ও খনিজ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) প্রোডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট-এর পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে।
আরও পড়ুন: পেট্রোবাংলার সঙ্গে এক্সেলারেট এনার্জির এলএনজি সরবরাহ চুক্তি সই