অপরদিকে তিস্তা নদীতে পানি কমে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে প্রচণ্ড ভাঙন। এই ভাঙন ও পানিবন্দী অবস্থায় চরম বিপর্যয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন এ অঞ্চলের মানুষজন।
বন্যার পানিতে ডুবে জেলায় এ পর্যন্ত ১৫ শিশুসহ মারা গেছে ২০ জন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান।
গত এক সপ্তাহ ধরে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি আবারও বাড়ছে। শুক্রবার সকালে ধরলা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ৮৩ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারীতে ৭৪ ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
টানা বন্যায় জেলার ৯ উপজেলার ৬০ ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক গ্রামের প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এতে ৫০ হাজার বাড়িঘরের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। এছাড়া ৩৭ কিলোমিটার সড়কপথ ও ৩১ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দীর্ঘ প্রায় এক মাস ধরে ঘরবাড়ি ছাড়া পানিবন্দী মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে নীরব খাদ্যাভাব। মানবেতর জীবনযাপন করছেন প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের মানুষ।
চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু হানিফা বলেন, ‘আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী ত্রাণ পাচ্ছি না। এই মূহুর্তে আমাদের শুকনো খাবার, স্যানিটেশন, পানি ও ওষুধের অনেক প্রয়োজন।’
বন্যার মধ্যেই তিস্তা নদীতে পানি কমে যাওয়ায় রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা, বিদ্যানন্দ এবং উলিপুর উপজেলার থেতরাই ও বজরা ইউনিয়নের কাসিমবাজারে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানির প্রবল স্রোতে ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের বুড়িরহাট এলাকায় ক্রসবারের মাটির ৫০ মিটার পানিতে ভেসে গেছে। ভাঙন দেখা দিয়েছে বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রতিরাম এলাকার ক্রসবারেও। দুটি ইউনিয়নের প্রায় ২০ গ্রাম ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে।
ওই এলাকার হক্কানী মিয়া জানান, এখানে গত আট দিন ধরে ভাঙন চলছে। মানুষের ঘরবাড়ি ছাড়াও ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে স্থানীয় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা প্রথম ও দ্বিতীয় দফা বন্যায় ৪৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করেছি। দুই লাখ টাকার শিশু খাদ্য ও দুই লাখ টাকার গো-খাদ্য ছাড়াও পাঁচ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে।’