এজন্য ময়মনসিংহ অঞ্চলে স্থাপন করা হবে চা বোর্ডের আঞ্চলিক অফিস।
রবিবার চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে চা বোর্ডের একটি প্রতিনিধি দল শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার পাহাড়ী জনপদের বিভিন্ন অঞ্চল পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
এর আগে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রতিনিধি দলটি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা, টাঙ্গাইলের মধুপুরসহ আরও কয়েকটি জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের পরীক্ষামূলক চা বাগান পরিদর্শন করেন।
এ সময় চা বোর্ডের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মাসুদ রানা, কীটতত্ত্ব বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নাঈম মোস্তফা আলী ও সহকারী উন্নয়ন কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান আকন্দ দলটির সাথে ছিলেন। তারা প্রতিটি বাগানের মাটিও পরীক্ষা করেন।
পরিদর্শক দল ঝিনাইগাতীর বনাঞ্চলঘেরা গজনী, বাকাকুড়া এবং শ্রীবরদীর খাড়ামোড়া এলাকায় যান। সেসব স্থানে গারো হিলস টি কোম্পানির মাধ্যমে সৃজন করা পরীক্ষামূলক চা বাগান পরিদর্শন করেন এবং চা চাষিদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন। তারা এই এলাকাকে চা বাগানের জন্য উপযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করেন।
ঝিনাইগাতীর গজনীর বনরানী রেস্ট হাউজে স্থানীয় সাংবাদিক ও গারো হিলস টি কোম্পানির কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়কালে চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘চা বোর্ড বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের গারো পাহাড়ের পাদদেশে চা চাষ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বৃহত্তর ময়মনসিংহের পাঁচ জেলার ১৫ উপজেলায় ১৫ হাজার ৬৪৫ একর জমিতে ক্ষুদ্রায়তন চা আবাদের সম্ভাবনা রয়েছে। উক্ত জমি চা আবাদের আওতায় আনা গেলে এ অঞ্চল থেকে বছরে ১৬ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হবে।’
তিনি জানান, ইতোমধ্যে চা বোর্ড ৭৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে এক হাজার ২৩৫ একর জমিতে চা চাষ সম্প্রসরাণ করতে ‘বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলায় ক্ষুদ্রায়তন চা চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্প’ শিরোনামে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চল থেকে ১ দশমিক ৫০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হবে এবং প্রায় ২ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ময়মনসিংহ অঞ্চলে চা বোর্ডের একটি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন করা হবে। সে বিষয়েও সম্ভাব্যতা যাচাই কাজ চলছে বলে তিনি জানান।
গারো হিলস টি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের পাহাড়ি জনপদে চা চাষের উদ্যোক্তা আমজাদ হোসেন ফনিক্স জানান, বানিজ্যিকভাবে চা চাষের জন্য স্থানীয়ভাবে ২৭ জন কৃষকের মাঝে ২৭ হাজার উন্নত জাতের চা চারা বিতরণ করা হয়েছে। ২০১৮ সালের ২৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে চা চারা রোপন। ইতোমধ্যে শেরপুরের শ্রীবরদীতে ৬ জন, নালিতাবাড়ীতে ৩ জন, ঝিনাইগাতীতে ১৩ জন, নকলায় ৪ জন, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় একজন কৃষক ৫ দশমিক ৩১ একর জমিতে চা চাষ শুরু করেছেন।