কয়েকটি কেন্দ্রে মারামারির ঘটনার পর বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইসমাইল বালীকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) পলাশ কান্তি নাথ সংবাদ মাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত ২
বহুল আকাঙ্ক্ষিত চসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন বুধবার নির্বাচনী সহিংসতায় ভাইয়ের হাতে ভাইসহ মোট দুজন নিহত হয়েছেন।
সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরুর পরপরই খুলশী থানার ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের আমবাগান ইউসুফ স্কুল এলাকায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত ওয়ার্ড কাউন্সির প্রার্থী এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যু হয়। নিহত আলম মিয়া (২৮) কুমিল্লার সুলতান মিয়ার ছেলে।
এই ঘটনায় আরও পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আমবাগান এলাকায় ভোটগ্রহণ কেন্দ্র করে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকরা সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে উভয় দল গুলি চালায় এবং তাদের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এ সময় আলমসহ আরও পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ ছয়জনকে হাসপাতালে আনা হয় এবং তাদের মধ্যে সকাল ১০টার দিকে আলমকে মৃত ঘোষণা করা হয়।’
এদিকে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে নগরীর ১২ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের বার কোয়াটার এলাকায় আপন ভাইয়ের হাতে এক যুবক খুন হয়েছেন। নিহত নিজাম উদ্দিন মুন্না (৩৫) পাহাড়তলী ওয়ার্ড ছাত্রলীগ কর্মী বলে জানা গেছে।
সকাল ৮টার দিকে বার কোয়াটার ডায়মন্ড টার্চ কমিউনিটি সেন্টার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) রাশেদুল হক জানান।
স্থানীয়রা জানান, মুন্না সরাইপাড়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী সাবের আহমদের কর্মী ছিলেন। তার ভাই সালাউদ্দিন কামরুল একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নুরুল আমিনের কর্মী। নির্বাচন নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। আজ সকালে ভোট শুরুর আগেই দুজনের মধ্যে তুমুল ঝগড়া শুরু হলে মুন্নাকে ছুরিকাঘাত এবং গলাকেটে হত্যা করে পালিয়ে যায় কামরুল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।
ঘটনার পর থেকে কামরুল পলাতক রয়েছেন।
গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি চসিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল ইসি। ওই তফসিল অনুসারে ২৯ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা ছিল। তবে দেশে করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে ভোটগ্রহণের আট দিন আগে ২১ মার্চ তা স্থগিত করা হয়। এরপর গত ১৪ ডিসেম্বর চসিক সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণের জন্য ২৭ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করে ইসি।
নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরী (নৌকা), বিএনপির শাহাদাত হোসেন (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা), এনপিপির আবদুল মঞ্জুর (আম), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন (মোমবাতি), ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার) এবং স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বী খোকন চৌধুরী (হাতি) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এছাড়া ৪১ সাধারণ ওয়ার্ডে ১৭২ কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ১৪ সংরক্ষিত আসনে ৫৭ নারী কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।