সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশে হবিগঞ্জের আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বাধা দূর হওয়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ২৮ নভেম্বর (রবিবার) ভোট হওয়ার কথা।
এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. দেলোয়ার হোসেন (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী (চশমা), আব্দুল হামিদ নিক্সন (ঘোড়া) ও এজাহারুল ইসলাম (আনারস)।
রবিবার (২৮ নভেম্বর) ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
এর আগে দ্বিগর ব্রাম্মন গ্রামের বাসিন্দা নিশি সূত্রধরসহ পাঁচজন তাদের গ্রামকে প্বার্শবর্তী মৌলভীবাজার জেলার খলিলপুর ইউানয়নের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়েয়ের সচিব বরাবরে আবেদন করেন। আবেদনটির সরেজমিন তদন্ত করে কোন যৌক্তিকতা নেই মর্মে প্রতিবেদন দেন জেলা প্রশাসক।
পড়ুন: শরীয়তপুরে নির্বাচনী সহিংসতা: আহত আ’লীগ কর্মীর মৃত্যু
এদিকে, বর্তমান চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান হারুন পরিষদের সভায় তার ইউনিয়নের কোন গ্রামকে যেন খলিলপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত না করা হয় এ মর্মে রেজুলেশন গ্রহণ করেন। অপরদিকে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। উক্ত রিটের শুনানি শেষে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রেসপনড্টেদের বিরুদ্ধে রুল জারি করে চার সপ্তহের মধ্যে জবাব দিতে বলেন হাইকোর্ট।
রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, হবিগঞ্জ ও মৌলভী বাজারের জেলা প্রশাসকসহ সাত জনকে বিবাদী করা হয়। এছাড়া বিগত ৮ মার্চ রিট পিটিশন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন।
এদিকে অন্যান্য ইউনিয়নের সাথে এই ইউনিয়নের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়। গত ১ নভেস্বর মহিবুর রহমান নির্বাচন স্থগিত চেয়ে আরও একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল জারি করে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলেন এবং ১৫ দিনের মধ্যে সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে চূড়ান্ত সীদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দেন।
গত ২৩ নভেম্বর হাইকোর্টে মহিবুর রহমানের দায়ের করা রিটের শুনানি শেষে ওই ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন। উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে মিস মামলা দায়ের করলে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দেন।
পড়ুন: শার্শায় ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ৩ কর্মীকে কুপিয়ে জখম
মুন্সিগঞ্জে নির্বাচনী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ ৫
এ ব্যাপারে নৌকার প্রার্থী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, একটি মহল নির্বাচন না করে ক্ষমতায় থাকার নানা দৌড়ঝাপ শুরু করেছে। তারা দ্বিগর ব্রাম্মনগ্রামের সহজ সরল কয়েকজন লোককে ভুল বুঝিয়ে প্বার্শবর্তী খলিলপুর ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্তির আবেদন করেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বর্তমান সীমানার মধ্যে এ ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে অসন্তোষ জানিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুন বলেন, দ্বিগর ব্রাম্মনপাড়া (ঢালারপাড়) গ্রামটি মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলার ১নং জে এল ভুক্ত। ভূমি রেজিষ্ট্রিসহ যাবতীয় কাজে তাদেরকে মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় যেতে হয়। ওই গ্রামের সকল উন্নয়ন কাজ করা হয় আউশকান্দি ইউনিয়নে বরাদ্দ থেকে। কিন্তু ভূমি উন্নয়ন করের কোন অংশ পান না।
তিনি বলেন, ‘ওই এলাকায় ইকনোমিক জোন করা হচ্ছে। ইউনিয়নের উন্নয়নের স্বার্থে সীমানা নির্ধারণের যৌক্তিকতা রয়েছে।’