মালয়েশিয়ায় লকডাউন চলাকালে প্রবাসীদের ওপর দেশটির সরকারের নিপীড়নমূলক আচরণের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে কথা বলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাকে।
শনিবার রাত ১টায় মালয়েশিয়ান এয়ালাইন্সের একটি বিমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান রায়হান কবির। এরপর ভোর সাড়ে পাঁচটায় তিনি নারায়ণগঞ্জ বন্দরের শাহী মসজিদ এলাকায় নিজ বাসায় ফেরেন।
এদিকে, তার বাসায় ফেরার পর এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ফেরার পরই রায়হানকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মা। রায়হানকে দেখার জন্য আশপাশের লোকজন সকাল থেকেই তার বাড়িতে ভিড় করতে থাকেন।
রায়হানের বাবা মো. শাহ আলম এবং মা রাশিদা বেগম জানান, নিজের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে রায়হান মালেশিয়া গিয়েছিল। কিন্তু সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। এমনকি রায়হানের সার্টিফিকেটসহ সব কাগজপত্রও মালয়েশিয়াতেই রয়ে গেছে। ‘কিন্তু এসব নিয়ে আমাদের আর দুঃখ নেই কারণ আমরা আমাদের সন্তানকে জীবিত ফিরে পেয়েছি।’
মা রাশিদা বেগম জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বরে ছুটি শেষে মালয়েশিয়ায় ফেরত যায় রায়হান। এরপর চলতি বছরের ২৪ জুলাই মালয়েশিয়া পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন তিনি। এ খবর পাওয়ার পর থেকেই পরিবারের সবাই দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়।
বাবা শাহ আলম বলেন, ‘আমি এবং ব্র্যাকের শরীফুল হাসান শুক্রবার রাতে বিমানবন্দরে রায়হানকে রিসিভ করি।’
২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জ শহরের সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশের পর উচ্চশিক্ষার জন্য মালয়েশিয়া যান রায়হান কবির। ২০১৭ সালে কুয়ালামপুর টিএমসি ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ কোর্স শেষে ভর্তি হন এমবিএতে। লেখাপড়ার খরচ চালাতে কাজ নেন সেখানকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।
সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরায় দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের দুঃখ, কষ্ট ও সমস্যার কথা তুলে ধরেছিলেন রায়হান। এ সময় ওই দেশের সরকারের বিরুদ্ধে তিনি কিছু না বললেও, ভুল তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৪ জুলাই স্থানীয় পুলিশ তাকে আটক করে। এরপর দুই দফায় ২৭ দিন রিমান্ডে ছিলেন তিনি।
শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করে মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের বাস্তব জীবন এবং তার রিমান্ডের বিষয়ে কথা বলার কথা জানিয়েছেন রায়হান কবির।