স্বজনরা মোবাইল ফোনে কল করে কোনো উত্তর পাচ্ছিলেন না। ঘরের দরজা ভেঙে দেখলেন ভয়াবহ দৃশ্য। পড়ে থাকা অবস্থায় পাওয়া গেল মা ও তার দুই ছেলের লাশ।
সোমবার (২ জুন) দুপুরে এ রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে ধামরাই উপজেলার গাঙ্গুলদিয়া ইউনিয়নের রক্ষিত এলাকার মৃত ব্যবসায়ী রাজা মিয়ার বাড়িতে।
এদিকে বছরখানেক আগে এই পরিবারের কর্তা ব্যবসায়ী রাজা মিয়া একইভাবে ঘরের ভেতর মারা যান। বছর না ঘুরতেই একইভাবে একটি কক্ষের ভেতর রহস্যজনকভাবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী ও তার দুই ছেলের।
আরও পড়ুন: নাটোরে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
মৃত তিনজন হলেন- নাজমা আক্তার (৩৫), তার দুই ছেলে মো. শামীম হোসেন (১২) ও সোলায়মান হোসেন (৬)।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজা মিয়ার মেয়ে নাসরিন আক্তারের সঙ্গে একই উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. রবিন হোসেনের বিয়ে হয়। তাদের একটি কন্যাসন্তান আছে। মা ও দুই ভাই ঈদের উপহার নিয়ে নাসরিন আক্তারের বাড়িতে আসার কথা ছিল সোমবার সকালে। তাদের আসতে বিলম্ব দেখে নাসরিন আক্তার তার শ্বশুরবাড়ি থেকে সোমবার সকাল থেকে মা ও ভাইদের ফোন দিতে থাকেন। দুপুর ১২টা নাগাদ মা ও দুই ভাই মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় নাসরিন আক্তার বাবার বাড়িতে চলে যান। ভেতর থেকে ঘরের দরজা বন্ধ দেখে তিনি লোকজন নিয়ে দরজা ভেঙে দেখতে পান ঘরের ভেতর বিছানার ওপর তার মা ও দুই ভাইয়ের লাশ পড়ে রয়েছে।
বিষয়টি ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলামকে জানানো হয়। তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ৩টি রাজধানীর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে পাঠান। এ ঘটনায় ধামরাই থানায় একটি মামলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে রাজা মিয়ার মেয়ে নাসরিন আক্তার বলেন, আমার মা ও দুই ভাই স্বাভাবিকভাবে মারা যায়নি। কেউ না কেউ তাদের কৌশলে হত্যা করেছে। কেবল আমার শরিকদের সঙ্গেই জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। যে বিরোধের কারণে আমার বাবা বছরখানেক আগে মারা গেছেন। আর একইভাবে বছর না ঘুরতেই আমার মা ও দুই ভাইয়ের জীবন গেল। আমি তদন্তসাপেক্ষে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার ও হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দাবি করছি।
ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘরের ভেতর একই সঙ্গে তিনজনের মৃত্যু সত্যিই রহস্যজনক। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ছাড়া এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছুই বলা সম্ভব নয়।