বুধবার পরিবেশ অধিদপ্তরের ঢাকা কার্যালয়ে শুনানি শেষে প্রতিষ্ঠানটিকে এ জরিমানা করা হয়। জরিমানা নির্ধারণ করেন মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট বিভাগের পরিচালক রুবিনা ফেরদৌসী।
অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পাহাড় কেটে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, পাহাড়ের উপরিভাগের মাটি এবং ভূমির বাইন্ডি ক্যাপাসিটি নষ্টসহ পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করায় এই জরিমানা করা হয়।
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন ইউনিভার্সিটির বহি:সীমানা দিয়ে লুপ রোড নির্মাণসহ ঢাকা ট্রাংক রোড থেকে বায়েজিদ বোস্তামী পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটির নির্মাণাধীন সড়কের দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৯৬০ কিলোমিটার যার মধ্যে ১৮টি পাহাড় রয়েছে। সর্বমোট ২ দশমিক ৬৬ কিলোমিটার জায়গার পাহাড়ি ভূমি কর্তনের প্রয়োজন ছিল। বায়েজিদ বোস্তামী রোড থেকে ঢাকা ট্রাংক রোড পর্যন্ত লিংক রোড নির্মাণের লক্ষ্যে ৩৩৮১.১০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৯৯৯ সালে একনেক কর্তৃক বর্ণিত প্রকল্পের পূর্বে অন্য একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়।
এ প্রতিবেদনে তখন বিভিন্ন মৌজার ৩৫৭, ৩৫৮ ও ৩৫৯ দাগের পাহাড় কাটার প্রমাণ পায়। সে সময় অনুমতি ছাড়া পাহাড় কাটায় সিডিএকে নোটিশ দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর। তাদের নোটিশের জবাবে শুনানিতে অংশ নিয়ে পাহাড় কাটার কথা স্বীকার করলেও পাহাড় কাটা অব্যাহত রাখে প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টিকে সিডিএ কর্তৃক নির্মিত ৪ হাজার ফুট দীর্ঘ ১২০ ফুট প্রশস্ত রাস্তা (১১ একর) গত ২০১০ সালের ২২ নভেম্বরে হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীতে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনকে আরও ২৬ দশমিক ৯৭ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি সরকার কর্তৃক অধিগ্রহণ-পূর্বক বরাদ্দ দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৩ থেকে ডিসেম্বর ২০১৮ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। ওই প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর একনেক সভায় অনুমোদিত হয়।
ওই প্রকল্প পরিচালক ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেন। পরে ওই বছরের ৩ নভেম্বর ইআইএ এর কার্যপরিধি অনুমোদন করা হয় এবং ২০১৭ সালে প্রকল্পটির ইআইএ অনুমোদনের জন্য সদর দপ্তরে প্রেরণ করা হলে সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রকল্পের আওতায় পাহাড়/টিলা ও সমতল ভূমির পরিমাণ, পাহাড় ও টিলা কর্তন কিংবা মোচন করার বিষয়টি জাতীয় অপরিহার্য বিবেচনায় সরকারের অনুমোদনপত্র, প্রকল্প এলাকার পাহাড়/টিলা থেকে কি পরিমাণ মাটি সংগ্রহ করা হবে ও সংগৃহীত মাটি ব্যবস্থাপনার ওপর সংশোধিত ইআইএ দাখিলের নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনকে সরকার কর্তৃক ১০৪ দশমিক ৪০ একর জমি প্রদান করার কারণে সেই সময় প্রকল্পটি আর সমাপ্ত করা সম্ভব হয়নি। ওই প্রকল্পের অধীনে বায়েজিদ বোস্তামী প্রান্ত থেকে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত ২-লেনের রাস্তার নির্মাণ কাজ করা হয়।
উল্লেখ্য, নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত ৬ কিলোমিটারের এই সড়ক তৈরি করতে কাটা হয় ১৫টি পাহাড়। পরিবেশ অধিদপ্তর বারবার জরিমানা করার পরও ফৌজদারহাট-বায়েজিদের এই সংযোগ সড়ক তৈরি থেকে পিছু হটেনি সিডিএ।