বরিশাল-৪ আসনের ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য (এমপি) পঙ্কজ দেবনাথ এবং মেহেন্দিগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. তৌহিদুজ্জামানের মধ্যে একটি অডিও কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এই মোবাইল কলে পঙ্কজ বলেছেন যে তিনি তার অনুসারীদের মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভার মেয়রসহ প্রতিপক্ষদের কোপানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে পঙ্কজ দেবনাথের দাবি, অডিও ক্লিপটি প্রতিপক্ষের সাজানো। কণ্ঠস্বর নকল করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ছড়ানো হয়েছে।
এক মিনিট ৯ সেকেন্ডের কথোপকথনে পুলিশ কর্মকর্তাকে এমপি পঙ্কজ বলেন, 'ওইখানে মারামারি যা হয়েছে তো হইছে, ওই শালায় তো খারাপ। ওরা মারামারি করলে আমাদের লোকজনকে বলে দিয়েছি- রামদা লইয়া ওপেন মুভ করতে। ফাইজলামি করলে কিন্তু সামনাসামনি কোপ খাইবে। আপনি কইয়া দেন যে সিদ্ধান্ত হইছে- মেয়র সামনে পড়লে মেয়রকেও কোপাইবো। যে সামনে পড়বে, হ্যারেই কোপাইবো; কেমন!' ঠিক আছে, যে কোপ খাইছে সে তো খারাপ, নেশাখোর, অ্যাডিকটেড- তাই না! এ নিয়া যেন মাতবরি না করে, বাড়াবাড়ি না করে। আমি পোলাপানরে রেডি হইতে কইছি যে তোরা রেডি হ, যা থাকে কপালে, যুদ্ধ হইয়া যাক একটা।'
বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে, গত ৪ জুলাই আওয়ামী লীগ কর্মী রাতুল চৌধুরীকে কুপিয়ে জখম করার পর মেহেন্দিগঞ্জে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি হামলার প্রস্তুতি নেয়। তখন রাত ৮টার দিকে এমপি পঙ্কজ পুলিশ কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামানের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বরিশালে বিএনপির ১২ নেতা-কর্মী আটক
পরিদর্শক মো. তৌহিদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগ কর্মী রাতুল চৌধুরীকে কুপিয়ে জখম করার পর ওই রাতে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। তখন এমপি আমাকে ফোন করেছিলেন। তবে এগুলো তাদের রাজনৈতিক বিষয়।
একটি অডিও ভাইরাল হওয়ার কথা শুনেছেন বলে জানান পরিদর্শক তৌহিদুজ্জামান।
এ ব্যাপারে মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন খান বলেন, 'এটি এমপি পঙ্কজ দেবনাথ ও মেহেন্দিগঞ্জ থানার পরিদর্শক তৌহিদুজ্জামানের কথোপকথন। পুরো বিষয়টি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছি। এক প্রান্ত থেকে রামদা দিয়ে কোপানোর নির্দেশদাতা হচ্ছেন এমপি পঙ্কজ দেবনাথ। দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে তিনি এসব বলতে পারেন না। মেহেন্দিগঞ্জকে অশান্ত করতে এমপি পঙ্কজের প্রয়াস চলছেই। সে অস্ত্রের রাজনীতি করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরই ঘায়েল করতে চায়।
এই বিষয়ে পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, 'তালুকদার ইউনুস ও কামাল খানরা এসব ষড়যন্ত্র করছে আমার বিরুদ্ধে। পুরো বিষয়টি ষড়যন্ত্র আমার নাম খারাপ করতে। আমার কন্ঠস্বর নকল করে এই কল রেকর্ড ভাইরাল করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভোলা-বরিশাল সীমান্তে চর দখল নিয়ে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২০