সোমবার সকালে ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কে পানি ওঠার পাশাপাশি ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বহু ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে কয়েকশ পুকুরের মাছ। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ১৩ গ্রামের শত শত মানুষ।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন জানান, সোমবার সকাল ৬টায় মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এর আগে আগের দিন রাতে বিপদসীমার ১.৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল।
‘প্রবল স্রোতে মুহুরী নদীর ফুলগাজী ও পরশুরাম অংশে অন্তত ছয়টি স্থানে ভেঙে গেছে। এতে দুই উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়,’ বলেন পাউবো প্রকৌশলী।
ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানান, রবিবার রাতে মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ফুলগাজীর উত্তর দৌলতপুরের তিনটি স্থানে ও কিসমত ঘনিয়া মোড়া গ্রামে দুটি স্থানে ভেঙে যায়।
‘এতে উত্তর দৌলতপুর, বৈরাগপুর, সাহাপাড়া, উত্তর বরইয়া, ঘনিয়া মোড়া, কিসমত ঘনিয়া মোড়া ও পূর্ব ঘনিয়া মোড়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, ফুলগাজী বাজারের পশ্চিম অংশে শ্রীপুর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে উপজেলা সদরের প্রধান সড়ক তলিয়ে গেছে। এতে ওইসব এলাকার পাঁচশতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পরশুরামের চিথলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন জানান, রবিবার রাতে মুহুরী নদীর চিথলিয়া অংশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কয়েকটি স্থানে ভেঙে ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত গ্রামগুলো হলো দক্ষিণ শালধর, মালিপাথর, পাগলীরকুল, দুর্গাপুর, রতনপুর ও রামপুর।
এছাড়া উত্তর ধনীকুন্ডা, মধ্যম ধনীকুন্ডা, উত্তর শালধর, রাজষপুর, নোয়াপুরসহ আরও বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, ফেনী জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে পানিবন্দী তিন শতাধিক মানুষের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করেন।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন আক্তার জানান, মুহুরী নদীর বাঁধের ভাঙন কবলিত অংশগুলো মেরামতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে তাগাদা দেয়া হয়েছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন জানান, মুহুরী নদীর বাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশে পানি কিছুটা কমলে বাঁধ মেরামতে কাজ করা হবে। এছাড়া নতুন করে বাঁধের কোনো অংশে যেন ভাঙন না ধরে সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে এবং পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে।