মঙ্গলবার জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে গত রবিবার নিহতের মামা মাজু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে হত্যার দায় স্বীকার করেন।
পরে তার (মাজু মিয়া) তথ্যমতে সোমবার বাবা সনু মিয়াকে ধরমন্ডল লম্বাহাটি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওইদিন বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আহমেদের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মামা মাজু মিয়া।
এদিকে, মঙ্গলবার ভোর রাতে ভাই আদম আলীকে ধরমন্ডল লম্বাহাটি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুপুরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন ভাই আদম আলীও।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, লাইজু তার মামা মাজু মিয়ার বাড়িতে থাকত। গত ২২ জুন লাইজুকে বাড়ির পাশে পাটক্ষেতে একজনের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেন মাজু মিয়া। বিষয়টি লাইজুর বাবা সনু মিয়া ও মা সাফিয়া আক্তারকে জানান মামা মাজু। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে বাবা সনু মিয়া। পরদিন সকালে ঘরে বসে বাবা সনু মিয়া ও মামা মাজু মিয়া লাইজুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তারা।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই দিন রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে লাইজুর বাবা সনু মিয়া মেয়েকে ঘর থেকে ডেকে বাইরে নিয়ে যান। এরপর লাইজুকে তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন করেন বাবা সনু ও মামা মাজু। বাবা ও মামার সাথে হত্যাকাণ্ডে যোগ দেন লাইজুর ভাই আদম আলী। পরে তারা তিনজন মিলে লাইজুর মৃতদেহ স্থানীয় একটি ডোবায় ফেলে দেন।
নাসিরনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন জানান, আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন ভাই আদম আলী ও মামা মাজু। এর আগে শনিবার সকালে লম্বাহাটি এলাকার একটি ডোবা থেকে লাইজুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাইজুর লাশ উদ্ধারের পর পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রথমে পরিবারের কেউ মামলা করতে রাজি হয়নি। পরে হত্যার ঘটনায় তরুণীর মা সাফিয়া আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
‘লাইজুর জন্য পরিবারের কারও কোনো শোকও ছিল না। এসব বিষয়ে আমাদের সন্দেহ তীব্র হয় তাদের প্রতি। মূলত মামাকে টাগের্ট করা হয়। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বাবা ও ভাইয়ের সম্পৃক্ততার কথা বেরিয়ে আসে, জানান কবির হোসেন।