পৃথিবীতে একজন সন্তানের কাছে মা-ই প্রথম, মা-ই সেরা, যিনি সুখে-দু:খে নিজের সন্তানকে আগলে রাখেন। কিন্তু সেই গর্ভধারিণী মা যখন সন্তানের জীবন থেকে অকালে চলে যান, সেই ব্যথা উপলব্ধি করতে কোনো ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় না। এমনই নির্মম পরিহাস ঘটেছে মণিরামপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লিখন চক্রবর্তীর ভাগ্যে।
মঙ্গলবার মা মল্লিকা চক্রবর্তীর প্রাণহীন দেহ বাড়িতে রেখেই গণিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে লিখন। এ ঘটনায় পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মণিরামপুর পৌর শহরের তাহেরপুর গ্রামের সন্তোষ চক্রবর্তীর একমাত্র ছেলে লিখন চক্রবর্তী। গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে সে। মঙ্গলবার তার গণিত পরীক্ষা ছিল।
লিখনের বাবা সন্তোষ চক্রবর্তী জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার স্ত্রী মল্লিকা চক্রবর্তী পরলোক গমন করেন। দীর্ঘদিন তিনি নার্ভজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন।
লিখনের বোন মাধবী চক্রবর্তী বলেন, পরিবারে সকলের প্রিয় ছোট ভাই লিখনের এখনও ৮টি বিষয়ের পরীক্ষা বাকি রয়েছে। একদিকে মায়ের শোক অপরদিকে ছোট ভাইয়ের পরীক্ষা নিয়ে আমরা চিন্তিত। মায়ের মৃত্যুতে গোটা পরিবারে শোকের মাতম চলছে।
মণিরামপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ বলেন, লিখন বরাবরই ভালো ছাত্র এবং প্রত্যেক পরীক্ষায় সে প্রথমস্থান অধিকার করেছে।
এবারের এসএসসি পরীক্ষাতেও লিখন ভালো ফলাফল অর্জন করবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি।
মঙ্গলবার বিকালে তাহেরপুর মহাশ্মশানে মল্লিকা চক্রবর্তীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।