পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী রবিবার সকাল ১০টায় বরগুনার শিশু আদালতে তদন্তকারী কর্মকর্তা হুমায়ূন কবিরের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন বিচারক মো. হাফিজুর রহমান।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে আদালত বন্ধ হয়ে যাওয়ার দীর্ঘ পাঁচ মাস পর এ মামলার ৭৪তম ও শেষ সাক্ষী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দিচ্ছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির।
সাক্ষ্যগ্রহণ উপলক্ষে কারাগারে থাকা এ মামলার সাতজন আসামিকে সকাল ১০টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। এ ছাড়াও আদালতে হাজির হয়েছেন এ মামলায় জামিনে থাকা অপর সাতজন অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামি।
সাক্ষ্য প্রদানকালে এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক হুমায়ুন কবির প্রজেক্টরের মাধ্যমে এ মামলার তথ্য উপাত্ত আদালতে উপস্থাপন করেন।
এ সময় আদালতে উপস্থিত শিশু আসামিরা তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য শোনেন এবং প্রত্যক্ষ করেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের পাশাপাশি আসামিপক্ষের আইনজীবীরাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের কার্যক্রম মুলতবি করে সোমবার সকাল ১০টায় আবার শুরু করার আদেশ দেয় আদালত।
গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করে বন্ড বাহিনী। পরে ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর বিকালে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক এই দুই ভাগে বিভক্ত করে দুটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশ। তদন্ত প্রতিবেদনে ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক আসামির পাশাপাশি ১৪ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হওয়ার পর আগামী ২৬ আগস্ট যুক্তিতর্কের দিন ধার্য করেছে জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
অন্যদিকে অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ২৪ ও ২৫ আগস্ট দিন ধার্য রয়েছে।
এ বিষয়ে রিফাত হত্যা মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল জানান, ১৪ আসামির মধ্যে রিশান ফরাজীসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে চার্জ গঠন করেছে আদালত।
এছাড়া অপর অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামি আরিয়ান হোসেন শ্রাবণের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে ষড়যন্ত্র, সহযোগিতা এবং আসামিদের পালাতে সহায়তার অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়েছে। গত ১৩ জানুয়ারি অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এর আগে গত ১ জানুয়ারি এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
অন্যদিকে গত ৮ জানুয়ারি অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে শিশু আদালত।