অফিস থেকে তাদের জানানো হয়, পরিশোধ করা পুরনো বিল তাদের নতুন বিলে যুক্ত হওয়ায় তা দ্বিগুন হয়েছে। পরে দীর্ঘ হয়রানির পর সে বিল সংশোধন করা হয়। এ ভুতুড়ে বিলের কবলে পড়ে এমন হাজার হাজার গ্রাহক এখন লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুতের দপ্তরগুলোতে ভিড় করছেন।
এছাড়াও, বিলের কপিতে মিটার রিডিংয়ের স্থানে ব্যবহৃত ইউনিট শূন্য দেখালেও ইচ্ছে মতো বিলের অংক বসিয়ে তা আদায় করছে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদুত সমিতি।
ভুক্তভোগীরা জানায়, গ্রাহকরা মার্চ এবং এপ্রিল মাসের বিল পরিশোধ করলেও, বকেয়া দেখিয়ে মে মাসের বিলের সাথে তা আবার যোগ করা হয়েছে। জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারি মাসে যে বিল এসেছে এখন তার দ্বিগুন নেয়া হচ্ছে। মিটার রিডিং না দেখেই, অফিসে বসে খামখেয়ালিভাবে এ বিল তৈরি করা হচ্ছে। জুনের শুরু থেকে হাজারও গ্রাহক এমন অভিযোগ নিয়ে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ে ভিড় করছেন।
শুধু যাদের পুরোনো বিল নতুন বিলের সাথে যুক্ত হয়েছে, তাদের নানা হয়রানির বিল সংশোধন করা হচ্ছে। যেসব বিল মিটার রিডিং না দেখে করা হয়েছে সে বিষয়ে কোনো সুরাহা করছে না পল্লী বিদ্যুত। এতে হয়রানির শিকার গ্রাহকরা ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করছেন।
গ্রাহক আবু ছিদ্দিক বলেন, ‘মে মাসে আমাদের ব্যবহৃত ইউনিট দেখানো হয়েছে ৩৯৫ ইউনিট। কিন্তু বাস্তবে ব্যবহার হয়েছে একশ ইউনিটের মতো। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনলে তা সংশোধন করা হয়।’ এতে তিনি নানা হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হন বলে জানান।
তার মতো বেশ কয়েকজন গ্রাহক ব্যবহারের চেয়ে কয়েকগুণ ইউনিট উঠিয়ে অতিরিক্ত বিল করার মতো অভিযোগ করেছেন।
ক্ষুব্দ গ্রাহকরা জানান, করোনাকালীন সময়ে জনগণকে ঘরে থাকার জন্য বলা হলেও পল্লী বিদ্যুতের ‘গলাকাটা’ বিলের কারণে ঘর থেকে বের হতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. আবু তাহের বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে আমাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া মাঠ পর্যায়ের দায়িত্বরত কর্মীরা করোনার ভয়ে ঠিকমতো গ্রাহক প্রান্তে পৌঁছে রিডিং আনতে পারেনি। ফলে বিদ্যুত বিলে কিছুটা সামঞ্জস্য রয়েছে। কিন্তু গ্রাহক অফিসে বিলের কপি নিয়ে আসলে তা সমন্বয় করে দেয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বিল বেশি নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেউ বেশি দিলেও গ্রাহকের নিদিষ্ট একাউন্টে পরবর্তী বিলের সাথে তা সমন্বয় করা হয়। যাদের বিলের সমস্যা আছে তারা যেন অফিসে এসে ঠিক করে নেয়।’
গ্রাহকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেবা দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অফিসে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রেখেছি। আমাদের কর্মীরা সার্বক্ষণিক মাস্ক ব্যবহার করে গ্রাহক সেবা দিচ্ছে। কিন্তু গ্রাহকরা যদি স্বাস্থ্যবিধি না মানে তাহলে আমাদের কি করণীয় আছে।’
এদিকে কমলনগরে গ্রাহকদের হয়রানি, অতিরিক্ত বিলের প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় কমলনগর উপজেলা কমপ্লেক্সের সামনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এ মানববন্ধন করেন তারা।