খুমেক হাসপাতালে ভর্তি নিপা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর বাবা মো. বাবুল হোসেন বলেন, বারবার অতিরিক্ত জ্বর ও অজ্ঞান হওয়ায় গোপালগঞ্জ থেকে মেয়ে রাশিদাকে (২০) নিয়ে গত ১১ জানুয়ারি হাসপাতালে আসেন তিনি। তার রোগের লক্ষণ দেখে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে চিকিৎসকরা একমত হন যে রাশিদা শরীরে নিপা ভাইরাস বহন করছেন। অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে সব রোগী থেকে আলাদা করে চিকিৎসা দিচ্ছেন।
নিপা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতার কথা জানিয়ে খুমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এস এম কামাল হোসেন বলেন, নিপা ভাইরাসটি মূলত বাদুর থেকে ছড়ায়। খেজুরের কাঁচা রসে বাদুর বসে তাই কাঁচা রস খাওয়া যাবে না। বাদুর ছাড়াও শুকুরের লালা ও পায়খানা থেকে নিপা ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই এ থেকে রক্ষা পেতে খেজুরের রস ভালোভাবে সিদ্ধ করে খেতে হবে। এছাড়া শুকুর ও বাদুরের লালা ও পায়খানা লেগে থাকতে পারে এমন যে কোনো জিনিস সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।
খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, এ বছর জেলাতে এখনও কেউ নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। একজন মাত্র রোগী খুমেক হাসপাতালে রয়েছে, যা খুলনার বাইরে থেকে এসেছে। বর্তমানে নিপা ভাইরাসের মৌসুম চলছে। উপজেলা ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও স্বাস্থ্য কর্মীরাও বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে সচেতন করছেন।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাশিদা খানম বলেন, ‘গত দুই বছরে খুলনায় কোনো নিপা ভাইরাসের রোগী ছিল না। মানুষ সচেতন হয়েছে। এরপরও আমরা মওসুমের শুরু থেকে সচেতনতা মূলক প্রচারণা চালাচ্ছি। সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছি। যেহেতু নিপা ভাইরাসের কোনো চিকিৎসা নেই তাই সতর্কতাই একমাত্র উপায়।’
উল্লেখ্য, গত দুই বছর খুলনা ও আশে পাশের এলাকাগুলোতে কোনো নিপা ভাইরাস রোগী শনাক্ত না হলেও ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে খুলনায় নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত দুইজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে এ ভাইরাসের ৮০ শতাংশের বেশি রোগীর মৃত্যুর রেকর্ড রয়েছে।