সারাদেশ
ফরিদপুরে অবৈধভাবে গ্যাস সিলিন্ডার রাখায় ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা
ফরিদপুরের নগরকান্দার সদর বাজারে যানজট নিরসন ও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ফুটপাত ও সড়কের ওপর অবৈধভাবে গ্যাস সিলিন্ডার রাখার দায়ে জিলু নামে এক ব্যবসায়ীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. দবির উদ্দিন। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এর ৫৭ ধারায় ওই ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়।
অভিযানে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম, স্থানীয় বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের কয়েকজন নেতাসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সাভারে ১১ অবৈধ বালু বিক্রির প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা পরিবেশ অধিদপ্তরের
অভিযান শেষে ইউএনও দবির উদ্দিন জানান, নগরকান্দা বাজারকে যানজটমুক্ত রাখতে প্রাথমিক পর্যায়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় এক ব্যক্তিকে জরিমানা করা হয়েছে এবং অন্যদের সতর্ক করা হয়েছে।
বাজারে শৃঙ্খলা রক্ষা ও জনদুর্ভোগ কমাতে এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চালানো হবে বলেও জানান তিনি।
১৫১ দিন আগে
কুমিল্লায় সবজিখেতে গাঁজা চাষ, গ্রেপ্তার চাষি
কুমিল্লার বুড়িচংয়ে সবজিখেতে গাঁজা চাষের অভিযোগে মো. দুলাল মিয়া (৪৮) নামের এক কৃষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে, গতকাল (বুধবার) মধ্যরাতে দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তিনি উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের বড়াইল পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: সিলেটে বিপুল ইয়াবা ও ২ কেজি গাঁজা জব্দ, ২ জন আটক
পুলিশ জানায়, অভিযানে একটি গাঁজা গাছ উদ্ধার করা হয়েছে। দুলাল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে সবজিখেতের আড়ালে গোপনে গাঁজা চাষ করে আসছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, পুলিশের অভিযানের আগেই তিনি অতিরিক্ত গাছ সরিয়ে ফেলেছেন।
পরে তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি বক্সে রাখা শুকনা গাঁজা এবং ইয়াবা সেবনের বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করা হয়।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুল হক জানান, বৃহস্পতিবার সকালে আসামিকে কুমিল্লা আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
১৫১ দিন আগে
লালমনিরহাটে বিদ্যুতায়িত হয়ে কাঠমিস্ত্রীর মৃত্যু, আহত ৩
লালমনিরহাটের আদিতমারীতে বিদ্যুতায়িত হয়ে যামিনী কান্ত রায় (৫২) নামে এক কাঠমিস্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি সারপুকুর ইউনিয়নের সবদল এলাকার মৃত হেদল চন্দ্র রায়ের ছেলে।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের ভেলাবাড়ী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় আরও তিনজন কাঠমিস্ত্রী আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন—জগদীশ (৪৮), রাশেদ (২০) ও সুজন (২৬)।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনজনের মৃত্যু
স্থানীয়রা জানান, যামিনী কান্ত পাশের ইউনিয়নের ভেলাবাড়ী গ্রামের মহর উদ্দিনের বাড়িতে ঘর মেরামতের জন্য কাজ করছিলেন। কাজের সময় ঘরের বেড়া সরাতে গিয়ে বিদ্যুতের মিটারের তারে স্পর্শ করলে তিনি বিদ্যুতায়িত হন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এ সময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে আরও তিন কাঠমিস্ত্রী বিদ্যুতায়িত হয়ে আহত হন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তারা সুস্থ হয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আকবর বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে।’
১৫২ দিন আগে
গঙ্গাচড়ায় হিন্দুপল্লীতে হামলা: গ্রেপ্তার ৫ জন জেলহাজতে
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি ইউনিয়নে আলদাদপুরে হিন্দু পাড়ায় ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলা মামলায় পাঁচজনকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে গঙ্গাচড়ায় গ্রেপ্তারদের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণ কমল রায়ের আদালতে তুলে রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠান।
এর আগে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশের কাছে তাদের হস্তান্তর করে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ সিঙ্গেরগাড়ি মাঝাপাড়া গ্রামের লাভলু মিয়ার ছেলে ইয়াসিন আলী (২৫), একই উপজেলার মাগুরা ধনীপাড়া গ্রামের নুর আলমের ছেলে মোহাম্মদ স্বাধীন মিয়া (২৮) দক্ষিণ চাদখানা মাঝাপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে আশরাফুল ইসলাম(২৮) উত্তর সিংগের গাড়ি পাঠানপাড়া গ্রামের বাবুল খানের ছেলে এম এম আতিকুর রহমান আতিক(২৮) এবং সিঙ্গের গাড়ি চাওড়া পাড়া গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন সেলিম (২২)।
কোর্ট পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জানান, ২৭ জুলাই গঙ্গাচড়ায় মহানবীকে (সা.) নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তির প্রতিবাদে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে তৎক্ষণাৎ পুলিশ অভিযুক্ত রঞ্জন কুমার রায়কে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কিশোর সংশোধনাগারে পাঠায়। এরপরে কিছু উত্তেজিত লোকজন একত্রিত হয়ে হিন্দু পল্লীতে হামলা চালিয়ে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ ঘটনায় ২৯ জুলাই রাতে ক্ষতিগ্রস্ত আলদাদপুর এলাকার ছয়ানি পাড়ার দেবেন্দ্রনাথ রায়ের ছেলে রবীন্দ্রনাথ রায় (৫৫) গঙ্গাছড়া মডেল থানায় অজ্ঞাত ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় যৌথবাহিনী সদস্যরা অভিযান চালিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে পাঁচজন অভিযুক্তকে আটক করে। বিচারক ঘটনার পর্যবেক্ষণ শেষে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গঙ্গাছড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল ইমরান জানান হিন্দু পল্লীতে হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত ১০০০ থেকে ১২০০ আসামি উল্লেখ করে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার রবীন্দ্রনাথ রায় যে মামলাটি করেছেন ওই ঘটনায় রাতেই পাঁচজনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: রংপুরে হিন্দুপাড়ায় হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের আলদাদপুর গ্রামে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে গত রবিবার সন্ধ্যায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঘটনার পরপরই প্রশাসনের কঠোর অবস্থান ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এখন শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে।
জেলা পুলিশ সুপার আবু সাইম জানান, হিন্দু পল্লীতে হামলার ঘটনায় যারা জড়িত তাদেরকেই গ্রেপ্তার করা হবে। অযথা কোনো সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হবে না বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল জানান, গঙ্গাচড়া উপজেলায় হিন্দুপল্লীর বাড়িঘর জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মঙ্গলবার সকাল থেকে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থলে সেনা এবং পুলিশ সদস্যরা তদারকি করছেন বলে তিনি জানান।
১৫২ দিন আগে
সিলেটে স্কুলছাত্র হত্যা: সাইফুলসহ ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন
সিলেটের বিশ্বনাথে চৈতন্নগর গ্রামে স্কুলছাত্র সুমেল মিয়া (১৮) হত্যা মামলায় আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আরও ১৭ জন আসামিকে দুই বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মোট ৩২ জন আসামির মধ্যে একজন এখনো পলাতক।
বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেটের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহীন এ রায় ঘোষণা করেন। সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মামলায় মোট ৩২ জন আসামির মধ্যে ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলায় মোট ২৩ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— যুক্তরাজ্যপ্রবাসী সাইফুল আলম, নজরুল, সদরুল, সিরাজ, জামাল, শাহিন, আব্দুল জলিল ও আনোয়ার।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— ইলিয়াছ, আব্দুন নুর, জয়নাল, আশিক, আছকির, ফরিদ ও আকবর।
ঘটনার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১ মে বিশ্বনাথ উপজেলার চৈতন্নগর গ্রামের নজির উদ্দিনের খেতের জমি থেকে জোর করে রাস্তায় মাটি তুলতে চান যুক্তরাজ্যপ্রবাসী সাইফুল আলম। এসময় তাকে বাধা দেন নজির উদ্দিন, চাচাতো ভাই মানিক মিয়া ও ভাতিজা ১০ম শ্রেণিতে পড়ুয়া স্কুলছাত্র সুমেল মিয়া। এতে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে সাইফুল আলমের বন্দুকের গুলিতে ওইদিন সুমেল মিয়া নিহত হন। এ সময় সুমেলের বাবা ও চাচাসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হন।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় বিয়ের প্রলোভনে গণধর্ষণ, দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ঘটনার পর সুমেলের চাচা ইব্রাহিম আলী সিজিল বাদী হয়ে ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে ২০২১ সালের ৩ মে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তৎকালীন বিশ্বনাথ থানার ওসি তদন্ত কর্মকর্তা রমা প্রসাদ চক্রবর্তী দীর্ঘ তদন্ত শেষে ৩২ জনের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর এ মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। মামলার প্রায় চার বছর পর আজ (বুধবার) এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।
এর আগে, গত ১৩ জুলাই মামলাটি যুক্তিতর্ক শেষে ৩০ জুলাই রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়েছিল। ওইদিন আদালত ৩০ জন আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার ৩২ জন আসামির মধ্যে এজাহারনামীয় আসামি মামুনুর রশীদ পলাতক এবং প্রধান আসামি যুক্তরাজ্যপ্রবাসী সাইফুল আলম আটকের পর থেকে প্রায় পৌনে ৪ বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন।
১৫২ দিন আগে
ন্যায্য মূল্যের দাবিতে সড়কে আলু ফেলে কৃষকদের মানববন্ধন
ধান-গমের মতো আলুর মূল্যও সরকারকে নির্ধারণ করে দেওয়ার দাবিতে সড়কে আলু ফেলে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন নওগাঁর আলু চাষিরা।
বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। নওগাঁ, বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলার কৃষক পরিবার ও আলু ব্যবসায়ী পরিবারের ব্যানারে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
কৃষকরা জানান, বাজারে আলুর দাম উৎপাদন খরচের অর্ধেকেরও নিচে। প্রতি কেজিতে ১৭-১৮ টাকা লোকসান হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করায় বাজারে দাম না পেয়ে সেই টাকা পরিশোধও করতে পারছেন না তারা। এ পরিস্থিতিতে সরকারের হস্তক্ষেপ চাইছেন চাষিরা।
নওগাঁ সদর উপজেলার কিত্তিপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, ‘সার-ফসফেটের দাম অনেক বেশি। সেই হিসেবে শুরু থেকেই এবার আলুর দাম নেই। খরচের টাকাও উঠছে না।’
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ধান-চালের সরকারি মূল্য নির্ধারণ করা হলে আলুর কেন নয়? সরকারের কাছে দ্রুত আলুর মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ওএমএসের মাধ্যমে আলু বিক্রির চিন্তা করছে সরকার: কৃষি উপদেষ্টা
সদর উপজেলার বক্তারপুর গ্রামের আরেক কৃষক বুলবুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে ধানের দাম বেশি, চালের দামও বেশি। কিন্তু আলুর কোনো দাম নেই। হিমাগারেও অতিরিক্ত খরচ নেওয়া হচ্ছে। এক মণ আলু চাষ করতেই ১২০০-১৩০০ টাকা খরচ হয়েছে। বাজারে এখন আলু বিক্রি করতে হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা মণ। তাহলে আমরা যাব কোথায়? সরকার যদি কোনো উদ্যোগ না নেয়, তাহলে আমরা শেষ হয়ে যাব।’
হাপানিয়া এলাকার আলু চাষি সাইফুল আলম বলেন, ‘গরু বিক্রি করে, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে লাভের আশায় আলু চাষ করেছিলাম। কিন্তু বাজারে এখন আলু বিক্রি হচ্ছে না। হিমাগারে প্রতি কেজি আলুতে আগের তুলনায় ৪ টাকা করে বেশি খরচ পড়ছে। এক কেজি আলু উৎপাদন ও হিমাগারে রাখতে ২৫-২৬ টাকা খরচ হচ্ছে। অথচ বাজারে পাইকারি দরে ১১-১২ টাকার বেশি বিক্রি হচ্ছে না। ঋণের টাকা পরিশোধ করা তো দূরের কথা, খরচের টাকাই উঠছে না।’
এ বিষয়ে নওগাঁ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বিপণন কর্মকর্তা সোহাগ সরকার বলেন, ‘এ বছর ফলন ভালো হওয়ায় আলুর উৎপাদন চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি হয়েছে। বছরের এই সময়টাতে অন্যান্য সবজি বাজারে বেশি থাকায় মানুষ আলু কম কিনছে। সরকারের পক্ষ থেকে ওএমএস অথবা টিসিবির মাধ্যমে আলু বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।’
১৫২ দিন আগে
বাল্যবিবাহ ঠেকাতে প্রধান শিক্ষকের কাছে স্কুলছাত্রীর দরখাস্ত
চাঁদপুরে নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দিচ্ছে পরিবার—এমন অভিযোগ তুলে প্রধান শিক্ষকের কাছে দরখাস্ত দিয়েছে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী। পরে বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা শিক্ষা অফিস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান ওই শিক্ষক।
সাহসিকতা দেখানো মেয়েটির নাম রুহি আক্তার (১৩)। সে ফরিদগঞ্জ উপজেলার কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। বাড়ি উপজেলার কড়ৈতলী গ্রামের গাজী বাড়িতে। বাবা প্রবাসী আব্দুর রশিদ এবং মা গৃহিণী সুমি বেগম।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) প্রধান শিক্ষক পংকজ শর্মার হাতে লিখিত আবেদনটি দেয় রুহি। আবেদনে সে জানায়, তার জন্ম ২০১২ সালের ১৮ জুন। সে এখনো পড়াশোনা করছে। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, যাতে সে রাজি নয়। তাই প্রধান শিক্ষকের সহায়তা চায় সে।
প্রধান শিক্ষক পংকজ শর্মা বলেন, ‘দরখাস্ত পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।’
আরও পড়ুন: বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় অ্যাসিড নিক্ষেপ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৩
ইউএনও সুলতানা রাজিয়া বলেন, ‘এই বয়সে এমন সাহসিকতা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আমরা মেয়েটির পাশে আছি এবং যে কোনো মূল্যে বাল্যবিয়ে ঠেকানো হবে।’
রুহির মা সুমি বেগম বলেন, ‘পারিবারিকভাবে ভালো পাত্র দেখা হয়েছিল, তবে এখনো বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক হয়নি। মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছুই করা হবে না।’
ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। বাল্যবিয়ের ক্ষেত্রে ইউএনও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন, আমরা প্রশাসনিক সহায়তা করি।’
১৫২ দিন আগে
পদ্মায় তীব্র স্রোত, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে যান চলাচল ব্যাহত
রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জকে সংযোগকারী দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে স্রোত বেড়ে যাওয়ায় লঞ্চ ও ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। আগের থেকে সময় লাগছে প্রায় দ্বিগুণ।
সরেজমিন দেখা যায়, দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের বিশাল পন্টুনের কোথাও লঞ্চ বাধা নেই। সেখানে কেবল যাত্রীসাধারণ, টিকিট চেকার ও হকাররা অবস্থান করছেন। নদীতে প্রচণ্ড বেগে স্রোত বয়ে যাওয়ায় মাঝেমধ্যে পন্টুন কেঁপে উঠছে। চালকদের সতর্ক করতে পন্টুনে লাঠির মাথায় লাল কাপড় বেঁধে রাখা হয়েছে।
এদিক-ওদিক লক্ষ করলে দেখা যায়, পন্টুনের পূর্বদিকে বসতভিটার কাছে দুটি লঞ্চ নোঙর করে রাখা হয়েছে। পাটুরিয়া থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ পন্টুনের পূর্বদিকে এসে ভিড়ছে। তখন বেঁধে রাখা লঞ্চটি পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
জানা যায়, বাধ্য হয়ে ছোট বা দুর্বল লঞ্চ এবং ফেরি বসিয়ে রাখা হয়েছে। স্রোতের তোড়ে টিকতে না পেরে পন্টুন ছেড়ে পাশের বসতবাড়ির কাছে রাখা হচ্ছে লঞ্চ। গত দুই সপ্তাহ ধরে এমনই অবস্থা চলছে।
ঘাটে থাকা এমভি নিপু-১ এর ইনচার্জ মাস্টার কাজী শফিক বলেন, নদীতে প্রচণ্ড স্রোত থাকায় পন্টুনে লঞ্চ রাখতে পারছি না, এমনকি ভেড়াতেও পারছি না। দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়া পৌঁছাতে আগে ২০ থেকে ২২ মিনিট সময় লাগত, এখন ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট লাগছে।
আরও পড়ুন: ভাঙন-ঝুঁকিতে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট
তিনি আরও বলেন, যেখানে ঘাটে সবসময় ৮ থেকে ১০টি লঞ্চ থাকত। বর্তমানে মাত্র একটি করে লঞ্চ রাখা হচ্ছে। যাত্রী সেবা চালু রাখতে একটি লঞ্চ ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে, আরেকটি আসছে।
১৫২ দিন আগে
বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, ধুবনি বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে লোকালয়ে
উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির তীব্র স্রোতে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা এলাকায় একটি বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ের হাজারো পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, ‘তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। ধুবনি এলাকায় একটি পুরনো বাঁধ ভেঙে গেছে, ফলে লোকালয়ে পানি ঢুকছে।’
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাত ৯টায় হাতীবান্ধায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২০ মিটার যা বিপৎসীমার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই পানি বাড়তে থাকে এবং বিকেলের দিকে স্রোতের গতি বেড়ে যায়। সন্ধ্যার পর থেকে দ্রুতগতিতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে লোকালয়ে। বর্তমানে তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
নদীপাড়ের মানুষ ও পাউবো জানায়, কয়েক দিন ধরে ভারতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় উজান থেকে আসছে পানি। ফলে তিস্তা নদীতে পানিপ্রবাহ বেড়ে গেছে। কয়েক দিন ধরে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি, তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তা অতিক্রম করে।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বাড়ছে, দেখা দিতে পারে বন্যার আশঙ্কা
গাতকাল রাত ৯টার দিকে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানিপ্রবাহ ক্রমেই বাড়ছে। ফলে তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে তিস্তাপাড়ের হাজার হাজার পরিবার। ডুবে গেছে তিস্তা চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ও ফসলের মাঠ।
১৫২ দিন আগে
নওগাঁয় যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মো. মোস্তাফিজুর রহমান (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আস সামস জগলুল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি মোস্তাফিজুর রহমান আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালে নওগাঁর মান্দায় শ্রীরামপুর গ্রামের আনিছুর রহমানের মেয়ে রাণী বেগমের সঙ্গে নিয়ামতপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মোস্তাফিজুরকে যৌতুক হিসেবে নগদ ৪০ হাজার টাকা, একটি ভ্যানগাড়ি ও একটি সেলাই মেশিন টাকা দেওয়া হয়। বিয়ের কয়েক মাস যেতে না যেতেই মোস্তাফিজুর তার স্ত্রী রাণী বেগমকে তার বাবার বাড়ি আরও যৌতুক হিসেবে ৫০ হাজার টাকা আনার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা আনতে না পারায় রাণী বেগমকে নির্যাতন করতেন মোস্তাফিজুর রহমান।
যৌতুকের দাবিতে পারিবারিক কলহের একপর্যায়ে ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট রাতে মোস্তাফিজুর তার স্ত্রী রাণী বেগমকে কাঠের হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেন। এ ঘটনার পর দিন রাণী বেগমের বাবা বাদী হয়ে নিয়ামতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলা তদন্ত করে নিয়ামতপুর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম ২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার নথি, ১৬ জন সাক্ষীর জেরা ও জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে আসামি মোস্তাফিজুরের বিরদ্ধে স্ত্রী রাণী বেগমকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় বিয়ের প্রলোভনে গণধর্ষণ, দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ইকবাল জামিন চৌধুরী এবং আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী আতিকুর রহমান।
এ রায়ের বিষয়ে সরকারি কৌসুলি ইকবাল জামিল চৌধুরী বলেন, ‘আদালতের এ রায় যুগান্তকারী। এর ফলে সমাজে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যা ও নির্যাতনে প্রবণতা কমে যাবে। এ রায় দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও সমাজে শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়ক হবে।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী আতিকুর রহমান এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
১৫৩ দিন আগে