বিশেষ সংবাদ
কৃষকের ভাগ্য বদলে দিল বিএডিসির সেচ প্রকল্প
কৃষকের ভাগ্য বদলে দিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) সেচ প্রকল্প। শুষ্ক মৌসুমে অল্প খরচে সেচ সুবিধা পাওয়ায় কৃষকরা এক ফসলি জমিকে তিন ফসলি জমিতে রূপান্তর করেছেন।
কৃষকরা জানান, এই সেচ সুবিধায় বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
এদিকে, পানির প্রাপ্যতা ও সময়মতো সেচ সরবরাহের ফলে এ বছর ধানের শীষ ভালো হয়েছে। এ ছাড়া, এ বছর রোগ-বালাই তুলনামূলকভাবে কম ছিল বলেও জানান কৃষকরা।
উপজেলার দিলালপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, ‘আগে পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় ধানের উৎপাদন কম ছিল। বিগত বছরে যেখানে ৫/৬ মণ ধান হয়েছিল, এবার ২৫/২৬ মণ ধান হবে।’
কৃষক আব্দুল বারী বলেন, ‘আগে যখন ব্যক্তিগত ডিপ টিউবওয়েল বা অন্য উৎসে সেচ দিতে হত, তখন খরচ বেশি পড়ত। এবার বিএডিসির প্রকল্পে অল্প খরচে ধান চাষ করতে পেরেছি।’
‘অকেজো ১৪টি গভীর নলকূপ চালুসহ সেচ সুবিধা আরও বাড়ানো হলে কৃষকরা উপকৃত হবেন।’
উপজেলা কৃষি অফিস ও বিএডিসি অফিস জানায়, লালপুর উপজেলায় বিএডিসি ও বরেদ্র বহুমুখী উন্নয়ন কতৃপক্ষের ২৭টি ও ব্যক্তি মালিকানায় ১৯৫টি বিদ্যুত চালিত পাম্পের মাধ্যমে জমিতে সেচ দেওয়া হচ্ছে। এতে বোরো ধানের লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাজে আসছে না ১৫০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ
চলতি মৌসুমে ১০৫৫ হেক্টর জমিতে বোর ধান চাষের লক্ষমাত্রা থাকলেও ১০৬৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। ৬৩৩০ মেক্ট্রিকটন ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
বড়াইগ্রাম জোনের সহকারী প্রকৌশলী জিয়াউল হক বলেন, ‘বিএডিসির সেচ সুবিধা কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ। সরকারিভাবে নিয়মিত মনিটরিং ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে, যাতে কৃষকরা আরও ভালো ফলন পান। সরকার কৃষি ও কৃষকদের উন্নয়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছে। আগামী মৌসুমে আরও নতুন এলাকা এই প্রকল্পের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, ‘সেচ সুবিধার পাশাপাশি কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়েছেন। ফলে সঠিক সময়ে সার ও কীটনাশক প্রয়োগসহ আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির ব্যবহার কৃষকদের ফলন বাড়াতে সহায়তা করেছে।’
২২৯ দিন আগে
কাজে আসছে না ১৫০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ
কোনো কাজে আসছে না সিলেটের বিয়ানীবাজারের ১৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ। প্রযুক্তি ব্যবহার করে বড় পর্দায় (প্রজেক্টর) কোমলমতি শিশু-শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য এই প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। এ জন্য স্কুলগুলোর একজন করে শিক্ষককে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি ট্রেনিং) বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ স্কুলের ল্যাপটপ, প্রজেক্টর ও মডেম শিক্ষক ও নৈশপ্রহরীরা রেখেছেন নিজের বাড়িতে। ফলে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে শিক্ষালাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি ৩-৪) আওতায় বিয়ানীবাজারের ১৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেওয়া হয়েছে ল্যাপটপ, প্রজেক্টর, মডেম-সিম, ওয়াইফাই রাউটারসহ নানা সরঞ্জাম। প্রতিটি বিদ্যালয়ে ওয়াইফাই রাউটারের জন্য প্রতি মাসে ৪০০ টাকার প্যাকেজে ২০ জিবি ডেটাও সরবরাহ করা হচ্ছে। একটি ওয়াই-ফাই রাউটারের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ সর্বোচ্চ ১০ জন শেয়ার করে ব্যবহার করতে পারে। আবার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি থাকায় দুটি করে ল্যাপটপ দেওয়া হয়েছে। তবে বিতরণের আগে এসব বিদ্যালয়ের একজন করে শিক্ষককে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি ট্রেনিং) দেওয়া হয়েছে। এসব শিক্ষাসামগ্রী অনেক শিক্ষক রেখেছেন নিজের বাড়িতে। এতে করে বিদ্যালয়ের শিখন-কার্যক্রমের বাইরে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইউটিউব ব্যক্তিগত ডিভাইসে ব্যবহার করে শেষ হচ্ছে সরকারি টাকায় কেনা ডেটা।
আরও পড়ুন: ৩২ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই: উপদেষ্টা
সরেজমিনে দেখা গেছে, কোনো বিদ্যালয় ল্যাপটপ পেয়েছে, কোনো বিদ্যালয় ল্যাপটপ পেলেও প্রজেক্টর পায়নি। আবার প্রজেক্টর পেলেও ল্যাপটপ পায়নি, এমন বিদ্যালয়ও আছে।
এ ছাড়া কিবোর্ড অকেজো, ব্যাটারি ও সাউন্ডে সমস্যার কথাও জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা। বিতরণ করা ল্যাপটপ, প্রজেক্টরের মধ্যে কতটি বর্তমানে সচল আছে, তার কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি বিয়ানীবাজার উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মোতালেব।
বিভিন্ন বিদ্যালয়ে দেখা গেছে, ওয়াইফাই রাউটার বিদ্যালয়ের চেয়ারের নিচে কিংবা টেবিলে লাগানো রয়েছে। বন্ধের দিন রাউটার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। ল্যাপটপ, প্রজেক্টর ও মডেমের অধিকাংশই পাওয়া যায়নি। শিক্ষকদের দাবি, স্কুলে চুরি যাওয়ার ভয়ে তারা এগুলো বাড়িতে নিয়ে রাখেন।
বিয়ানীবাজার উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা পারভেজ তালুকদার বলেন, ‘বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ডিজিটাল ক্লাসে শিক্ষকদের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। তবে উপজেলার সবকটি নয়, এখনও ১২-১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ডিজিটাল ক্লাসের আওতায় আসেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি ল্যাপটপ, প্রজেক্টর, রাউটার ও মডেম বিদ্যালয়ে থাকা বাধ্যতামূলক। প্রধান শিক্ষক ও নৈশপ্রহরীর বাড়িতে থাকার বিষয়ে কিছু জানা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
আরও পড়ুন: প্রাথমিকেও বৃত্তি চালু করতে যাচ্ছি: উপদেষ্টা
২৩০ দিন আগে
অর্ধযুগ পার, সুনামগঞ্জের মৈত্রী সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে কবে
সুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদীর ওপর শাহ আরেফিন (র.)-অদ্বৈত মহাপ্রভু মৈত্রী সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে ৪ ডিসেম্বর। তবে অর্ধযুগ পেরিয়ে ৭ বছরে পড়লেও সেতুটি যাদুকাটার দুপাড়ের বাসিন্দাদের মৈত্রীর বন্ধনে বাঁধতে সক্ষম হয়নি। নদীর মাঝে সেতুর কয়েকটি গার্ডার খাড়া হলেও সেতুটি পূর্ণতা পেতে এখনও অনেক কাজ বাকি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টদের গড়িমসির কারণে সেতুটি সংযোগ স্থাপনে ব্যর্থ হওয়ায় সড়কপথের সুফল পাচ্ছে না সুনামগঞ্জের চারটি উপজেলার লাখ লাখ মানুষ। পাশাপাশি স্থানীয়দের দুর্ভোগ তো রয়েছেই। এ ছাড়াও জেলার দীর্ঘতম এই নির্মাণাধীন সেতুকে কেন্দ্র করে তিনটি শুল্ক বন্দর ও কয়েকটি পর্যটন স্পটে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের সুযোগ মিলছে না, যার নেতিবাচক প্রভাবের বলি হচ্ছে স্থানীয় কর্মক্ষম বেকার যুবসমাজ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যাদুকাটা নদীর ওপর শাহ আরেফিন (র.)-অদ্বৈত মহাপ্রভু মৈত্রী সেতুর নির্মাণকাজ ৩০ মাস, অর্থাৎ আড়াই বছরের মধ্যেই সম্পন্ন করার নির্দেশনা ছিল। গত ৭ বছরে সেখানে এই মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে চারবার, তবুও কাজ শেষ হয়নি।
তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের গড়কাটি ও বিন্নাকুলী গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত যাদুকাটা নদীর ওপর নির্মাণাধীন ৭৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটন স্পট, তিনটি শুল্ক বন্দরসহ চার উপজেলার যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের লক্ষ্যে এই সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু অর্ধযুগ পরেও সাধারণ মানুষ এখনও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয়। এ নিয়ে স্থানীয় সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন: অবৈধ দখল-দূষণের কবলে ফেনীর ২৪৪ নদী ও খাল
ভারতের মেঘালয় পাহাড় আর তাহিরপুরের অপরূপ সৌন্দর্যে্যর যাদুকাটা নদীকে ঘিরে রয়েছে পর্যটন শিল্প। সেই শিল্পকে চাঙ্গা করা ছাড়াও সীমান্ত এলাকাও তিনটি শুল্ক বন্দর, সীমান্ত সড়ক হয়ে সুনামগঞ্জ-নেত্রকোণা-ঢাকার সড়ক যোগাযোগ এবং জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার লাখ লাখ মানুষ যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রধান মাধ্যমে পরিণত হবে এই সেতু। কিন্তু সেতুটির পূর্ব পাড়ের অংশে কাজ শেষ না করায় প্রান্তিক এই উপজেলার মানুষের স্বপ্নপূরণের দ্বারপ্রান্তে এসেও তা আলোর মুখ দেখছে না।
২০১৮ সালে ৪ ডিসেম্বর ‘পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি)। তমা কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয় সেতুটি নির্মাণের দায়িত্ব। এরপর থেকে ৭৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটির ৭৫টি গার্ডারের মধ্যে ৫৭টি এবং ১৫টি স্লাবের মধ্যে ১০টির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ১৮টি গার্ডার ও পাঁচটি স্লাবের কাজ সাত বছর পরেও এখনও বাকি রয়ে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার বিন্নাকুলী গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আলমসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। সে সময় তারা বলেন, সেতুটি সম্পন্ন হলে আমাদের আর দুর্ভোগ পোহাতে হতো না। সিএনজি বা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়েও অনেকের জীবিকা নির্বাহের সুযোগ হতো। কিন্তু তাস বছরেও সেতুটির নির্মাণকাজ যখন শেষ হয়নি, তখন তা কবে শেষ হবে, তা নিয়ে আমরা আর কোনো আশা রাখি না।
গুরুত্বপূর্ণ এই স্থানে যাদুকাটার ওপর সেতু না থাকায় যে দুর্ভোগ পোহাতে হয়, সে কথাও বলেন তারা, নৌকা দিয়ে নদী পার হতে ৩০ মিনিট সময় লাগে আর বর্ষার সময় আরও বেশি সময় লাগে। নৌকা দিয়ে নদী পার হতে টাকাও খরচ হয়। নদী পাড়ি দিতে গিয়ে অনেক সময় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।
বাদাঘাট বাজারের ব্যবসায়ী কবির ভূইয়া বলেন, ‘উপজেলার বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীরা ঢাকা থেকে মালামাল কিনে সরাসরি বাজারগুলোতে নিয়ে আসতে পারছেন না শুধু সেতু না হওয়ার কারণে। এখন মালামাল পরিবহনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। গত তিন বছর ধরে শেষ হবে বলে সময় পার করা হয়েছে, কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না।’
বাদাঘাট ইউনিয়নের সমাজসেবক আবুল হোসেন বলেন, ‘সেতুটির নির্মাণ সম্পন্ন হলে স্থানীয় পর্যায়ে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে। পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, সেইসঙ্গে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের উপায় হবে। অথচ সবকিছুই এখন আটকে রয়েছে।’
আরও পড়ুন: নিদ্রা সৈকত: অপার সম্ভাবনার এক নিসর্গ ভূমি
বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘সেতুর জন্য লাখ লাখ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। গুরুত্ব দিয়ে সেতুটির নির্মাণকাজ দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ সম্পন্ন করলে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে। আর এই সেতু যোগাযোগ ব্যবস্থার মাইলফলক সৃষ্টি করবে।’
সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করতে কেন এত সময় লাগছে—জানতে চাইলে তমা কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাসির বলেন, ‘বারবার বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কাজ শেষ করা যায়নি।’ তবে ২০২৬ সালের মে মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
সেতুটির নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে বলে জানান সুনামগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনও।
২৩০ দিন আগে
চার চিকিৎসকের কাঁধে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবার ভার, জনদুর্ভোগ চরমে
চরম জনবল সংকটে ভুগছে নওগাঁর মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এর ফলে সেখানকার স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৪ চিকিৎসকের পদের বিপরীতে বর্তমানে চিকিৎসক আছেন মাত্র চারজন। চিকিৎসকের অভাবে জেলার সবচেয়ে জনবহুল এই উপজেলার মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে সচল দুটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও চালক না থাকায় এক বছরের বেশি সময় ধরে সেগুলো ব্যবহার হচ্ছে না। পড়ে থাকতে থাকতে সেগুলো অচল হয়ে যাওয়ার জোগাড় হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, এখানে চিকিৎসকের ২৪টি শূন্য পদের মধ্যে ১০টিই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের। এ ছাড়া শূন্য রয়েছে ১০ জন স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পদ। এ অবস্থায় চিকিৎসাসেবা চালিয়ে নেওয়ার স্বার্থে উপজেলার বিভিন্ন উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সাতজন স্বাস্থ্য সহকারীকে প্রেষণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পদায়ন করা হয়েছে। চিকিৎসক সংকটে ছোট ছোট সমস্যাতেও রোগীদের রেফার করা হচ্ছে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতাল কিংবা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাসনিম হোসাইন আরিফ বলেন, ‘এক বছরের বেশি সময় আগে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সচালক অবসরে যান। তারপর থেকেই এখানকার সচল দুটি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার হচ্ছে না। এ ছাড়া অ্যাম্বুলেন্স চালানোর জন্য তেলের যে বরাদ্দ সেটিও দেওয়া হচ্ছে না। ফলে অ্যাম্বুলেন্সগুলো গ্যারেজেই অব্যবহৃত অবস্থায় দিনের পর দিন পড়ে আছে।’
তিনি বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সের চালক নিয়োগ ও তেলের বরাদ্দ দেওয়ার জন্য ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।’
নওগাঁর সবচেয়ে বড় উপজেলা মান্দা। ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই উপজেলায় ৫ লাখের বেশি মানুষের বাস। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৪৫০ জন রোগী বহির্বিভাগে টিকিট কাটেন। এ ছাড়া জরুরি ও অন্তর্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নেন আরও ১৩০ থেকে ১৪০ সেবাপ্রত্যাশী।
গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা ২০-২২ জন রোগী টিকিট কেটে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। টিকিট না কেটে চিকিৎসকের খোঁজখবর নিচ্ছেন আরও অনেকে। বহির্বিভাগের দুটি কক্ষে রোগী দেখছেন দুজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। এ ছাড়া হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স রাখার গ্যারেজ বাইরে থেকে তালা দেওয়া। আর হাসপাতাল চত্বরে বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে দুটি অ্যাম্বুলেন্স।
সেবা নিতে আসা উপজেলার বিজয়পুর, ছোট বেলালদহ ও বড়পই গ্রামের সাত-আটজনের সঙ্গে এ সময় কথা হয়।
তারা বলেন, হাসপাতালে আর আগের মতো চিকিৎসাসেবা পাওয়া যায় না। ঘণ্টার ঘণ্টা অপেক্ষা করেও চিকিৎসকের দেখা পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে সেবা না নিয়েই অনেক সময় ফিরে যেতে হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবার ব্যতিক্রম দৃষ্টান্ত ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের
এখানে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রের (প্রেসক্রিপশন) বেশিরভাগ ওষুধই বাইরে থেকে কিনতে হয় বলে অভিযোগ করেন তারা।
২৩১ দিন আগে
বায়ো ফিশ ফিড উৎপাদনে সাফল্য: মাছচাষে কমবে ব্যয়, থাকবে না স্বাস্থ্যঝুঁকি
নাটোরে প্রাকৃতিকভাবে মাছের খাবার বা বায়ো ফিশ ফিডের পরীক্ষামূলক উৎপাদনে সাফল্য মিলেছে। এর ফলে বাজারে প্রাপ্ত ফিশ ফিডের তুলনায় প্রায় অর্ধেক খরচে সম্ভব হবে মাছ চাষ। এ ছাড়া বয়ো ফিশ ফিড মানবদেহের জন্যও সম্পূর্ণ নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর বলে দাবি উদ্ভাবকের।
দীর্ঘ গবেষণার মাধ্যমে মানবদেহের জন্য নিরাপদ এই বায়ো ফিশ ফিড উদ্ভাবন করেছেন জীববিজ্ঞানী ড. জি এন এম ইলিয়াস। নাটোরে তার গবেষণা খামারে উৎপাদিত প্রোটিনসমৃদ্ধ ব্ল্যাক সোলজার লার্ভি বা বিশেষ ধরনের পোকা এবং ল্যাবে উৎপাদিত আরেক বিশেষ ছত্রাক ট্রাইকোডার্মার সঙ্গে চিনিকলের চিটা গুড় ও সরিষার খৈল মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে প্রাকৃতিক এই মাছের খাবার। ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলক উৎপাদনে সফলতাও পেয়েছেন তিনি।
ড. ইলিয়াস জানান, এই ফিড পুকুরে ব্যবহারে মাছের প্রধান খাবার প্ল্যাংটনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। আবার নবায়নযোগ্য খাবার হওয়ায় পানির জৈব উপাদানও বাড়ায়। এর ফলে মাছের পাশাপাশি হাঁসেরও খাবার তৈরি হয়। বাজারে প্রচলিত খাবারের চেয়ে সাশ্রয়ী ও নিরাপদ হওয়ায় বায়ো ফিশ ফিড মাছচাষিদের জন্য নতুন দুয়ার খুলে দেবে বলে মনে করেন এই জীববিজ্ঞানী।
তিনি বলেন, ‘পোকার খাদ্য হিসাবে বেগুনসহ নানা সবজি ব্যবহার করা হয়। এসব সবজি খেয়ে ব্ল্যাক সোলজার লার্ভি জাতীয় পোকা তার বংশ বিস্তার করে। পর্যাপ্ত ডিম দেওয়ার পর পোকাগুলো মরে যায়। প্রোটিনসমৃদ্ধ ওইসব মৃত পোকা কম্পোস্টে পরিণত হয়। এ ছাড়া পোকার ডিমও পর্যাপ্ত প্রোটিন ও ভিটামিনসমৃদ্ধ হওয়ায় মাছের পছন্দের খাবার হিসাবে গণ্য হয়।’
তিনি আরও জানান, বায়ো ফিশ ফিডে ব্যবহৃত চিনিকলের চিটা গুড় ও সরিষার খৈল মাছের মূল খাবার প্ল্যাংটনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। এর সঙ্গে ট্রাইডোর্মার মিশ্রণ খাবারগুলোকে আরও সমৃদ্ধ ও নবায়নযোগ্য করে তোলে। ফলে পানিতে ব্যবহৃত ফিড কয়েক দফায় খাদ্য উপাদান তৈরি করে থাকে। একইসঙ্গে পানির গুণগত মান ও পরিবেশগত সুরক্ষাও নিশ্চিত করে বলে জানান এই গবেষক।
মৎস্য খামারি শফিউল হক বলেন, নতুন উদ্ভাবিত বায়ো ফিশ ফিড সময়োপযোগী একটি আবিষ্কার। এটি জলজ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ-সহায়ক, মানবদেহের জন্য নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী। ফলে এর বাণিজ্যিক উৎপাদন করা গেলে মাছ উৎপাদনে বিপ্লব সৃষ্টি হতে পারে বলে মত তার।
আরও পড়ুন: অবৈধ দখল-দূষণের কবলে ফেনীর ২৪৪ নদী ও খাল
স্থানীয় সৌখিন মৎস্যচাষি মেহেদী হাসান জানান, পরীক্ষামূলকভাবে পুকুরে বায়ো ফিশ ফিড ব্যবহার করে তিনি সফলতা পেয়েছেন। তিনিও এই সারের বানিজ্যিক উৎপাদনের ওপর জোর দেন।
২৩১ দিন আগে
অবৈধ দখল-দূষণের কবলে ফেনীর ২৪৪ নদী ও খাল
উপরের ছবিটি কোনো ময়লার ভাগাড়ের নয়, ছবিটি ফেনী জেলার একটি খালের। তবে ময়লা ফেলে খালটির যে হাল করা হয়েছে, তাতে ভাগাড় বললেও খুববেশি বাড়িয়ে বলা হয় না।
ময়লা-আবর্জনা ফেলে জেলার নদী, শাখা নদী ও খালের স্রোতধারা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে জলবদ্ধতা তৈরি একটি নৈমিত্তিক সমস্যা। প্রতি বর্ষায় জলাবদ্ধতার কারণে ফেনী শহরের রাস্তাঘাট নদীর মতো দেখা যায়। সামান্য বৃষ্টিতে হাঁটুপানি জমে যায় শহরের প্রতিটি সড়কে। এ ছাড়াও অবৈধ দখলের কারণে খালগুলো বর্তমানে নর্দমায় পরিণত হয়েছে। ময়লার কারণে কিছু কিছু স্থানে নর্দমার অস্তিত্বও বিলীন হয়ে গেছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, জেলার সোনাগাজী উপজেলার ৫৬টি, দাগনভূঞার ৫২টি, সদর উপজেলার ৩৯টি, পরশুরামের ৪টি, ছাগলনাইয়ার তিনটি ও ফুলগাজীর ৯০টি খালই দখল-দূষণে মৃতপ্রায়।
ফেনীর ছয় উপজেলার অন্তত ২৪৪টি খাল ও শাখা নদী অবৈধ দখল-দূষণের কবলে। বেশিরভাগ খাল বেদখলে বেহাল, অথবা দূষণে ভরাট হয়ে আছে। ফলে সেগুলো দিয়ে শহরের পানি দ্রুত নামতে পারছে না।
গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ভারী বর্ষণ ও ভারতীয় উজানের পানিতে সৃষ্ট বন্যায় মানুষজনের পাশাপাশি ক্ষতির শিকার হয় ঘরবাড়ি, কৃষিজমি, পুকুর-খামার ও গবাদিপশু। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পৌর কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় উদ্যোগ নিয়েও খাল ও শাখা নদীগুলোর অবৈধ স্থাপনা নানা জটিলতায় উচ্ছেদ করতে পারছে না; পারছে না খালগেুলোর সংস্কার করতেও।
দখল হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ফেনীর খাল-নদী পলি মাটি জমে ভরাট হয়ে নাব্যতা হারিয়ে। সেই সঙ্গে ময়লা-আবর্জনা জমে থাকায় দূষিত হয়ে কোথাও কোথাও সেগুলো সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এসব খালের পানির প্রবাহ ঠিক করা না গেলে বর্ষা মৌসুমে জলবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। পৌরসভার পক্ষ থেকে খালগুলো পরিষ্কারের পদক্ষেপ নিলেও পুনরুদ্ধারের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায় না।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে কানাইখালী নদী দখল করে দালান নির্মাণের অভিযোগ
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাগলিছড়া, পিটিআই ও খাজা আহাম্মদ লেক খালগুলোর মধ্যে কয়েকটি খালের অস্তিত্ব বিলীনের পথে। যেগুলো আছে সেগুলো এখন আর পানি প্রবাহের জায়গা নয়, বরং প্লাস্টিক বোতল, পলিথিন, খাবারের প্যাকেটসহ বিভিন্ন বর্জ্যে ভর্তি একেকটি ময়লার ভাগাড়ে রূপ নিয়েছে। এসবের ফলে জলাবদ্ধতা, দুর্গন্ধ ও মশার উপদ্রব শহরবাসীর নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে।
২৩২ দিন আগে
১৮ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে
সরকার বারবার সময় দেওয়ার পরও ১২ বছরের বেশি সময় হয়ে গেছে, এমন ১৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি ইউজিসি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) মাসিক সভা থেকে সেই সিদ্ধান্ত আসবে।
১৮ টি বেসরকারি ভার্সিটি- লিমিট ক্রস করে ফেলেছে। যারা ১২ বছরের বেশি সময় পার হয়েছে। কারো ১২, ১৫, ১৮, ২০ বছরের বেশি হয়েছে, এখানে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি।
ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ইউএনবিকে এক সাক্ষাৎকারে জানান, ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সীমা ছাড়িয়ে গেছে। কোনোটির ১২ বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে, কোনো কোনোটির ১৫, ১৮, এমনকি ২০ বছর হয়ে গেছে, এখনও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির অভিযোগ: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ব্যবস্থা নিতে পারে ইউজিসি
ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়া ব্যাপারে বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও যায়নি। এ বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে তিন মাস আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একটা নির্দেশনা দিয়েছে। তবে এই সংখ্যা হবে ১৮টি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সুত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে পাঠানো চিঠিতে ইউজিসি চেয়ারম্যানকে বলা হয়, ১৬ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক অনুমতির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও শিক্ষা কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করেনি। ফলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর ধারা ১২ (১) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কী নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে ইউজিসির এই সদস্য বলেন, ‘এটি বলা যাবে না। তবে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে মাসিক সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। খুব দ্রুতই মাসিক সভা হবে। সেখানে ১২ বছরের উপরে হয়ে গেছে, কিন্তু স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি—এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
কী কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যেতে পারলে অনুমোদন বাতিলসহ অনেক বিকল্প আছে। তবে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক না কেন, চেয়ারম্যানের নির্দেশেই তা বাস্তবায়ন করা হবে।’
এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আর কতদিন সময় দেবেন জানতে চাইলে ইউজিসির এই সদস্য বলেন, ‘২/৩ মাসে তো আর যেতে পারবে না। সময় দিলেও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে৩/৪ বছর সময় লাগবে।’
তিনি বলেন, ‘অনেক ভার্সিটির ১২, ১৫, ২০ বছর হয়ে গেছে, এখনও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এসব ক্ষেত্রে ইউজিসির মাসিক সভায় বহু ধরনের সিদ্ধান্ত আসবে। কাউকে সতর্ক, কাউকে সময় দেওয়াসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত আসবে।’
আরও পড়ুন: বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শাখা স্থাপনের অনুমতি দিতে গাইডলাইন হচ্ছে
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘১১৭ ভার্সিটির মধ্যে বেশিরভাগেরই স্থায়ী ক্যাম্পাস নেই। স্থায়ী ক্যাম্পাস সংখ্যা অনেক কম। তারপরও তাদের সময় দেওয়া হচ্ছে।’
এর আগে, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য ১৮ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দিয়েছিল ইউজিসি। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারায় চার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ, দুটির অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা এবং বাকি ১২ বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে আলাদা সময় দেওয়া হয়েছিল।
স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকায় যে ১৮ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এর মধ্যে ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ই রাজধানী ঢাকায়।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো ঢাকার সাতমসজিদ রোডের ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, সিদ্ধেশ্বরীর স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, রাজারবাগের দ্য মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি, মোহাম্মদপুরের দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, গুলশানের প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, বনানীর প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি, শ্যামলীর আশা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, পান্থপথের সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি, মিরপুরের বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস, সিলেটের নর্থ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, কিশোরগঞ্জের ঈশা খাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, ফেনীর ফেনী ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও চিটাগং ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি এবং কুমিল্লার ব্রিটানিয়া ইউনিভার্সিটি।
এদিকে, রাজধানীর সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে গত শনিবার খিলগাঁও ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে তাদের অর্ধসমাপ্ত স্থায়ী ক্যাম্পাস উদ্বোধন করেছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে প্রতিষ্ঠার পর প্রথমে সাত বছর, পরে আরও পাঁচ বছর সময় পায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এর মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারলে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে ইউজিসি।
২৩২ দিন আগে
নিদ্রা সৈকত: অপার সম্ভাবনার এক নিসর্গ ভূমি
বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নে অবস্থিত নিদ্রা সমুদ্র সৈকত, যা স্থানীয়ভাবে ‘নিদ্রার চর’ নামেও পরিচিত। অপরূপ এই সৈকতটি বাংলাদেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় পর্যটন স্থান হিসেবে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই সৈকতটির একদিকে সাগর, অন্যদিকে নদী এবং মাঝখানে কেওড়া ও ঝাউবনে ঘেরা সবুজ পরিবেশ। এখানকার জোয়ার-ভাঁটার খেলা, সবুজ ঘাসের বিস্তীর্ণ প্রান্তর এবং শ্বাসমূলের সমারোহ পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
স্থানীয় পর্যটন উদ্যোক্তা আরিফ রহমান বলেন, নিদ্রা সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বৈচিত্র্য পর্যটকদের সহজেই আকর্ষণ করতে সক্ষম। এখানে পর্যটন অবকাঠামো উন্নত করা গেলে এটি দেশের অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা বলেন, নিদ্রা সৈকতকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের বিকাশে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। পর্যটকদের জন্য নিরাপত্তা এবং সুবিধা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।
নিদ্রা সৈকতের কাছেই রয়েছে শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত, যেখানে প্রতি বছর জোছনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন টেংরাগিরি, ফাতরার চর ও সোনাকাটা ইকোপার্কও এই এলাকায় অবস্থিত। সব মিলিয়ে নিদ্রা সৈকত ও এর আশপাশের এলাকা পর্যটকদের জন্য একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
আরও পড়ুন: বৈশাখী মেঘের ডাকে মাটি ফুঁড়ে ‘মে বলের’ হাতছানি
সার্বিকভাবে, নিদ্রা সমুদ্র সৈকত তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বৈচিত্র্যপূর্ণ পরিবেশ এবং আশেপাশের পর্যটন স্থানের সমন্বয়ে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা ও উন্নয়নের মাধ্যমে এটি দেশের অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।
২৩৩ দিন আগে
কুশিয়ারার পেটে সিলেটের সড়ক ও সেতু
সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার দীর্ঘতম সড়কগুলোর অন্যতম খসরুপুর জিসি-বালাগঞ্জ সড়কের ফাজিলপুর এলাকায় কুশিয়ারার ভাঙনে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে সড়ক ও সেতু। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে এই অঞ্চলের জনসাধারণ চরম বিপাকে পড়েছেন। সড়কের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে লাইন বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। এর ফলে তীব্র গরমের মাঝে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
গত বুধবার (৭ মে) সকাল ৮টার দিকে ভয়াবহ এ ভাঙনের ঘটনা ঘটে।
ভাঙনের ফলে স্থানীয় পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলা সদরের সড়ক যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ এলাকার বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
বড় এই ভাঙনের পর আরও ভাঙনের আশঙ্কায় স্থানীয়দের মাঝে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিকসহ এলাকাবাসী জরুরি-ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
কুশিয়ারা নদীর তোড়ে সম্প্রতি খসরুপুর জিসি-বালাগঞ্জ সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকদিন আগে ওই সেতু এলাকায় ফাটল দেখা দেয়। বুধবার সকালে ভেঙে পড়ে সড়কের একাংশ এবং এর ওপর নির্মিত সেতুটি। প্রায় ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক দিয়ে বালাগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ওসমানীনগর উপজেলার শেরপুর পর্যন্ত যোগাযোগ সংযুক্ত রয়েছে।
ভাঙনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মামুনুর রশীদ, উপজেলা প্রকৌশলী মুহিবুল্লাহ, স্থানীয় পৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিনসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন: পদ্মা নদীতে বালু দস্যুদের বিরুদ্ধে যৌথবাহিনীর অভিযান, ড্রেজার-ট্রলার জব্দসহ আটক ৫
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ভাঙন দেখা দিয়েছিল গত বছরের নভেম্বর মাসে। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) জিও ব্যাগ ও ব্লক ফেলার প্রস্তাব দেওয়া হলেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিয়ে কয়েকদিন আগে কেবল মাটি ও পলিব্যাগ দিয়ে ভাঙনের স্থানগুলো ভরাট করে দেওয়া হয়। কালভার্ট ও সড়ক রক্ষায় জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় কয়েকদফা সংবাদও প্রকাশিত হয়। পরে গত ২৮ এপ্রিল স্থানীয় সরকার সিলেটের উপপরিচালক সুবর্ণা সরকার স্থানটি পরিদর্শনেও আসেন, কিন্তু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়ায় শেষমেষ শেষ রক্ষা হলো না রাস্তা ও কালভার্টের।
২৩৩ দিন আগে
চাঁদপুরে শাকসবজির দাম বেড়েই চলেছে, ধরাছোঁয়ার বাইরে ইলিশ
ঈদের পর গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজসহ প্রায় সব ধরনের শাকসবজির দাম বাড়ছে চাঁদপুরে। কেবল পেঁয়াজের দামই প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। অথচ বাজারে শুধু পেঁয়াজ কেন, কোনো শাকসবজিরই সরবরাহে কমতি নেই।
কেন এমন দরবৃদ্ধি, তা নিয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারছেন না স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও। তারা বলছেন, কেন দাম বাড়ছে জানি না। তবে গত কয়েক সপ্তাহের বাজার বিবেচনা করে সহজেই বলে দেওয়া যায় যে, সামনে দাম আরও বাড়বে।
চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। অথচ ২০/২৫ দিন আগে তা ছিল ৩০-৩৫ টাকা কেজি।
এছাড়া দাম বেড়েছে সব সবজিরও। প্রতিটি সবজিই ১০ থেকে ৩০, আবার কোনো কোনোটি ৪০ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
বর্তমানে এক কেজি কাকরোল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়, পটল ৭০ টাকা কেজি, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, লম্বা সিম ৭০ টাকা কেজি, গাজর ৪০-৪৫ টাকা কেজি , ধুন্দল ৬০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচের কেজি ১০০ টাকা, ধনে পাতা ১২৫ টাকা কেজি।
আরও পড়ুন: বৈশাখী মেঘের ডাকে মাটি ফুঁড়ে ‘মে বলের’ হাতছানি
এ ছাড়া রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা কেজি দরে, পেঁপে ৮০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, টমেটো ৩৫-৪০ টাকা, ঢেড়স ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, মিষ্টি আলু ৬০ টাকা কেজি; মাঝারি সাইজের লাউ একেকটি ৫০-৬০ টাকা,মাঝারি সাইজের চাল কুমড়া প্রতিটি ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
শাকের মধ্যে লাল ও সবুজ শাক বিক্রি হচ্ছে কেজি ৪০ টাকা দরে। এ ছাড়াও কচুর লতি ৭০ টাকা কেজি, শসা ৬০ টাকা ছড়া কচু ৭০ টাকা, কাঁচকলা ৪০ টাকা হালি, লম্বা কালো বেগুন ৭০ টাকা ও গোলাকার কালো বেগুন ৮০ টাকা কেজি। আর মাঝারি সাইজের লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকায়। তবে গোল আলুর দাম এখনও ২০ টাকা কেজিই আছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব শাকসবজির দাম বাড়ায় জেলার সীমিত আয়ের লোকজনের দুর্ভোগ বেড়েছে।
এ বছর জেলায় পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পুরাপুরি অর্জন হয়েছে বলে দাবি চাঁদপুর কৃষি বিভাগের। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগে কর্মরত কৃষিবিদ মোবারক হোসেন ইউএনবিকে জানান, জেলায় এ বছর পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ৭৫০ হেক্টরে। কাটা ও হয়েছে ৭৫০ হেক্টরের পেঁয়াজ। এসব জমিতে মোট উৎপাদন হয়েছে ৮ হাজার ৮১১ দশমিক ৬ টন পেঁয়াজ।
তার দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় রসুনের আবাদ হয়েছে ৩৬০ হেক্টর জমিতে। এরই মধ্যে সব রসুন তোলা হয়েছে। জেলায় রসুনের মোট উৎপাদন হয়েছে ২ হাজর ৯৬২ দশমিক ২৫ টন।
মাছের বাজারেও আগুন
সবজির মতো শহরের মাছ বাজারের চিত্রও এক। ইলিশসহ অন্যান্য মাছের দাম চড়া।
চিংড়ি মাঝারি সাইজেরটা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকা কেজি, মাঝারি সাইজের শিং/মাগুর ৭৫০-৮০০ টাকা কেজি, চাষের পাঙ্গাস কেজিপ্রতি ২২০ টাকা, কাচকি বইচা মাছ ৫০০ টাকা এবং তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা কেজি দরে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় নিম্নমানের সরকারি পাটবীজ বিতরণ, অনাগ্রহ কৃষকদের
আর ইলিশের দাম তো সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিপনীবাগ মাছ বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৩০০ টাকা দরে, ৫০০/৬০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২০০০ টাকা কেজি, তিনটায় এক কেজি—এমন ইলিশের দামও ১৩০০-১৪০০ টাকা কেজি।
শহরের ব্যস্ততম বিপনীবাগ বাজারের পুরাতন ব্যবসায়ীরা বলছেন, বড় স্টেশন মাছের মোকাম, হরিণাঘাট ও আনন্দবাজার মাছের মোকামে ইলিশের আমদানি এখনও কম। এ ছাড়া শহরের টিলাবাড়ি এলাকার ইলিশশিকারী জেলেদের কাছ থেকে জানা যায়, নিষেধাজ্ঞার পর এখনও জালে ইলিশ ধরা পড়ছে কম। তাই বাজারে দাম একটু চড়া।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সভাপতি ও প্রবীণ ব্যবসায়ী শবেবরাত সরকারসহ কয়েকজন বলেন, নিষেধাজ্ঞার পর এখনও বড় স্টেশন মাছ ঘাট জমে উঠেনি। সাগরেও নিষেধাজ্ঞা চলছে। তাই দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা ভোলা, হাতিয়া, চরফ্যাশন ইত্যাদি এলাকা থেকে ইলিশ আমদানি হচ্ছে না। সারা দিনে এই মাছ ঘাটে গড়ে পদ্মা নদীর দুই থেকে আড়াই মণ ইলিশ আসে।
তারা আরও বলেন, এখন তো ইলিশের সিজন নয়। সিজন শুরু হবে জুন-জুলাইতে। আশা করি তখন নদীতে ঢেউ উঠবে, ঝড় ও বজ্রবৃষ্টিসহ বাতাস থাকবে। তখন বেশি বেশি ইলিশ পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: নড়াইলে লবণাক্ততায় তিন ফসলি জমি এক ফসলিতে পরিণত
২৩৫ দিন আগে