বিশেষ সংবাদ
ফেনীতে দুই তৃতীয়াংশ জমিতে আবাদ হয়নি, খাদ্য সংকটের আশঙ্কায় কৃষক
আগস্টের বন্যার কারণে ফেনীর কৃষিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। গত মৌসুমের অর্ধেক জমিতেও এবার আমন চাষাবাদ হয়নি। এছাড়া জেলার ছয়টি উপজেলায় শুধু কৃষিজাত ফসলের ক্ষতি হয়েছে ৪৫১ কোটি ২০ লাখ টাকার বেশি। খাদ্য সংকটের আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।
জমি খালি পড়ে থাকায় দুশ্চিন্তায় প্রান্তিক কৃষকেরা। প্রণোদনাসহ সার, বীজের সহায়তার কথা থাকলেও তা কাগজে কলমে। ঘরে ধান তোলার কথা থাকলেও কৃষকের মনে হতাশা। ক্ষতি পোষাতে চাইছেন সরকারি সহায়তা।
জেলার সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী, পরশুরাম, দাগনভূঞাঁসহ জেলার সবখানে ফসলের মাঠের এমন চিত্র।
ফেনীতে চলতি মৌসুমে আবাদ হয়েছে মাত্র ২৬ হাজার ৭৬৪ হেক্টর জমিতে। অথচ গত বছরে জেলায় আমনের আবাদ হয়েছিল ৬৬ হাজার ৭৫২ হেক্টর জমিতে।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, বন্যায় জেলার ৩০ হাজার ৩৫২ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা মোট ফসলি জমির ৭৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। তার মধ্যে ১ হাজার ৮৬৫ হেক্টর আমন বীজতলা, ২৬ হাজার হেক্টর আমন খেত, ১ হাজার ৮৫৪ হেক্টর আউশ, আবাদ করা ৫২৫ হেক্টর শরৎকালীন সবজির পুরো অংশ, ৬৯ হেক্টর ফলবাগান, ৭ হেক্টর আদা, ১৬ হেক্টর হলুদ এবং ১৬ হেক্টর আখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার ছয়টি উপজেলায় শুধু কৃষিজাত ফসলের ক্ষতি হয়েছে ৪৫১ কোটি ২০ লাখ টাকার বেশি। এতে প্রায় দুই লক্ষাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নে চলতি আমন মৌসুমে মাত্র ১৭৩ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। যেখানে গত আমন মৌসুমে (২০২৩ এর ১৫ জুন থেকে ১৫ অক্টোবর) আবাদ হয়েছিল ১ হাজার ২৬০ হেক্টর। উৎপাদন হয়েছিল ৬ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন ধান। অনাবাদি রয়েছে ১ হাজার ৮৭ হেক্টর জমি।
আরও পড়ুন: 'স্মার্ট এগ্রিকালচার কৃষিপণ্যের সিন্ডিকেট ভাঙতে সক্ষম’
সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া এলাকার কৃষক আবুল হোসেন বলেন, বন্যার কারণে বেশির ভাগ জমিই খালি রয়েছে। ঘরের খোরাকি কীভাবে মেটাবে সেই চিন্তা মাথায়। ধান আবাদের যেটুকু জমি ছিল। বন্যার প্রভাবে ফসলি জমি থেকে খালি পড়ে আেছে। তাই সম্ভব হয়নি আমন আবাদ।
সোনাগাজী এলাকার আরেক কৃষক এসহাক আহমেদ বলেন, বন্যার পর আরেক সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ধরনের পোকা। আর্মিওয়ার্মসহ নানা ধরনের পোকায় যেমন নষ্ট হচ্ছে ধান তেমনি নষ্ট হচ্ছে সবজিসহ সব ধরনের ফুল-ফসল।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ফেনীর অতিরিক্ত উপপরিচালক পুষ্পেন্দু বড়ুয়া বলেন, বন্যার কারণে মাঠের অনেক জমির ধান নষ্ট হয়েছে। আবাদি জমিগুলো খালি পড়ে রয়েছে। তবে বীজ ও প্রণোদনাসহ সার্বিক সহায়তা নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে আছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, আমন আবাদ বিঘ্ন ঘটায় সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চলতি মৌসুমে সবজি আবাদ, রবি ফসল এবং বোরো আবাদে কৃষকদের উৎসাহ যোগাচ্ছে কৃষি বিভাগ। এরই মধ্যে সরকার জেলার ৬ উপজেলায় ৬০ হাজার কৃষককে পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় এনেছেন। এদের মধ্যে উপসি জাতের ৫ কেজি বীজ, ৫ কেজি ডিএপি সার ও ১০ কেজি এমওপি সারসহ মোট ২৫ কেজি কৃষি উপকরণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
এদের মধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় ১৫ হাজার, ছাগলনাইয়া উপজেলায় ১১ হাজার, ফুলগাজী উপজেলায় ৯ হাজার ৫০০, পরশুরাম উপজেলায় ৭ হাজার, দাগনভূঞা উপজেলায় ১৩ হাজার ও সোনাগাজী উপজেলায় ৪ হাজার ৫০০ কৃষক রয়েছেন।
ফেনীস্থ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মো. একরাম উদ্দিন জানান, বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে কৃষকদের উৎসাহিত করছে সরকার। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক তাদের পাশে রয়েছেন। এরই মধ্যে উপকারভোগী ৭০ ভাগ কৃষকের হাতে পুনর্বাসন কর্মসূচির বীজ-সার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ৫ কৃষি-ইকোলজিক্যাল এলাকায় কাজ করবে ইউএনডিপি
৩৮৫ দিন আগে
রাজনৈতিক পালাবদলের পরও ফেনীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত
আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ফেনীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা গেছে। বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেকের আবির্ভাব দৃশ্যমান হয়েছে।
সরকার পতনের পর থেকেই আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মী আত্মগোপনে চলে গেছেন। বিপরীতে প্রকাশ্যে ফিরতে শুরু করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে নানা দখলদারীতেও জড়িয়ে পড়েছেন তারা।
স্থানীয় মানুষের ভাষায়, ‘আওয়ামী লীগ আউট, বিএনপি ইন।’ বিএনপির নেতা-কর্মীদের দীর্ঘদিন পর প্রকাশ্যে আসায় খুশি হয়েছিলেন অনেকে। তবে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে ক্ষোভও বাড়ছে।
ফেনীর সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া ও পরশুরাম উপজেলার নদী থেকে বালু উত্তোলন ও উত্তোলন করা বালু লুটের মহোৎসব চলছেই। একইভাবে ইজারাদারের উত্তোলন করা বালুও প্রভাবশালীরা লুট করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী ইজারাদাররা পালিয়ে যাওয়ার পর বিএনপির নেতাকর্মীরা বালুমহাল দখল করছেন। উত্তোলন করা বালুগুলো লুটে নিয়ে যাচ্ছে। তবে ভয়ে কেউ তাদের বিষয়ে মুখ খুলছেন না। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত ও উন্নয়ন প্রকল্পের নাম করে নতুন করে প্রায় ২০টি স্থান থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত নদীর আশেপাশে ভাঙন দেখা দিচ্ছে ও বিশাল স্তুপের বালুমহাল এখন সমতল মাঠে পরিণত হয়েছে।
সরকারি নির্দিষ্ট নীতিমালা থাকলেও সেগুলো অমান্য করে যথেচ্ছা বালু তুলছে প্রভাবশালী মহল। ইজারা দেওয়া বালু মহালের সরকারি নির্দিষ্ট সীমারেখার বাইরে গিয়ে বালু তোলায় ক্ষতিগ্রস্ত নদী ও এর আশপাশের জনপদ। ব্লাকহেড, ট্রলার, ডেজার মেশিন দিয়ে দিনে-রাতে নদীর সুবিধামতো জায়গা থেকে বালু তুলে নিয়ে যাচ্ছে। বালু খেকোদের কারণে নদী-খাল হচ্ছে বিপন্ন, ভাঙনে ভিটে হারাচ্ছে হাজারো মানুষ। নদীতে বিলীন হচ্ছে একের পর এক কৃষিজমি, ঝুঁকিতে রেল ও সড়ক সেতু। অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে প্রতি বছর নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার একর জমি, বিলীন হচ্ছে বসতভিটা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন অংশ।
৩৮৭ দিন আগে
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় 'কক্সবাজার' নীতির পরামর্শ ইইউ দূতের
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত ও হেড অব ডেলিগেশন মাইকেল মিলার বলেছেন, তারা সবাই বুঝতে পেরেছেন যে, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান দীর্ঘায়িত করা 'রাজনৈতিক' এবং 'পুরো কক্সবাজার' নীতি এগিয়ে নিতে ঢাকার সঙ্গে কাজ করা উচিত।
সম্প্রতি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি ইউএনবিকে বলেন, 'আমরা সবাই, বাংলাদেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রত্যাবাসন দেখতে চাই এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রোহিঙ্গারা নিজেরাও তা চায়। তবে নিরাপদ, টেকসই, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের শর্ত বর্তমানে বিদ্যমান নেই।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, এরই মধ্যে পুনরুদ্ধারের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য আরও কাজ করার অনুমতি দেওয়ার প্রতিক্রিয়ার একটি ‘বিবর্তন’ প্রয়োজন।
তার মতে, এর অর্থ হলো শক্ত আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি যথাযথ বিবেচনা করা যা দাতাদের তহবিলকে দীর্ঘস্থায়ী করবে এবং যার জন্য বর্তমানে একাধিক প্রাথমিক প্রস্তাবনাকে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার বলেন, 'এর অর্থ হওয়া উচিত শরণার্থীদের জন্য কীভাবে বৃহত্তর পুরুদ্ধারের সক্ষমতা বাড়ানো যায় তা অন্বেষণ করা এবং ডিজিটাল শিক্ষার উন্মুক্তকর করা, যাতে মিয়ানমারের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে যুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য নিয়োগ,অপরাধ এবং শোষণকে এড়ানো যায়।’
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে গিয়ে বাংলাদেশ যে বোঝা বহন করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তা স্বীকার করে।
কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১৩ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে বাংলাদেশ।
২০২৪ সালে ইইউ রোহিঙ্গাদের তাৎক্ষণিক সহায়তার জন্য মানবিক তহবিলে ৪৩ মিলিয়ন ইউরো এবং পরবর্তী তিন বছরের জন্য উন্নয়ন তহবিলে আরও ৩৫ মিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ করেছে।
রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ‘আমরা শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠী উভয়কেই সহায়তা দিচ্ছি। এ কারণেই আমি অক্টোবরে কক্সবাজার গিয়েছিলাম মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি বুঝতে, বাঙালি (বাংলাদেশি) ও রোহিঙ্গাদের কথা শুনতে এবং আমাদের অর্থায়নের সর্বোচ্চ প্রভাব ও স্থায়িত্ব কীভাবে সর্বোচ্চ করা যায় তা বিবেচনা করতে।’
তিনি বলেন, 'নিরাপত্তা, নাকি নিরাপত্তাহীনতা', আশ্রয় শিবিরগুলোতে তাদের কথা শোনাও ছিল একটি বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্যাম্পের বাইরে এবং শিবিরগুলোর ভিতরে একটি স্থানীয় গতিশীল অর্থনীতির উন্নয়নে আমরা কাজ করেছি এবং অব্যাহত রেখেছি। আমি কেবল আমাদের সহযোগিতার বিষয়ে ইতিবাচক কথা শুনেছি, যা আমার বোধকে আরও দৃঢ় করেছে যে 'পুরো কক্সবাজার' নীতি বাস্তবায়নের জন্য আমাদের ঢাকার সঙ্গে কাজ করা উচিত।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি অল স্টেকহোল্ডার্স ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, 'এটি এরই মধ্যে ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমর্থন পেয়েছে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, উচ্চ পর্যায়ের এই সম্মেলন মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন ও প্রত্যাবসানের জন্য একটি বাস্তবসম্মত কাঠামোর ওপর রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে তুলবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের হাওর-উপকূলীয় এলাকায় বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হবে: ইইউ রাষ্ট্রদূত
রফিকুল আলম বলেন, সংকটের মূল কারণগুলো মোকাবিলা এবং বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি সময়োপযোগী ও সমন্বিত কাঠামো প্রণয়নেও এই পরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির প্রভাব কমানো এবং আর্থ-সামাজিক, পরিবেশগত ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিষয়েও সম্মেলনে গুরুত্বারোপ করা হবে।
মুখপাত্র বলেন, 'আমরা আশা করি, এই সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার বৃদ্ধি, সমন্বিত মানবিক ও উন্নয়ন প্রক্রিয়া জোরদার করা এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের জবাবদিহিতায় সহায়তা করার বিষয়গুলো উত্থাপিত হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মিয়ানমারে 'নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ' প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বানসহ রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি 'জরুরি মনোযোগ' দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'রাখাইন রাজ্য (মিয়ানমার) বা গাজায় যারা অব্যাহতভাবে নিপীড়ন, উৎখাত ও চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছে, আমরা তাদের উপেক্ষা করতে পারি না। এক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি, তাদের সংখ্যা বা পরিচয় বিবেচ্য নয়।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ন্যায়বিচার ও মূল্যবোধ নবায়নের আশাবাদ ইইউ রাষ্ট্রদূতের
৩৮৭ দিন আগে
'স্মার্ট এগ্রিকালচার কৃষিপণ্যের সিন্ডিকেট ভাঙতে সক্ষম’
কৃষিপণ্যের উচ্চমূল্যের জন্য দায়ী সিন্ডিকেট ভাঙতে স্মার্ট এগ্রিকালচার সাহায্য করবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) স্মার্ট এগ্রিকালচার বিভাগের পরিচালক ও প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামান।
তিনি বলেন, কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি ও কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়নে এটি ব্যাপকভাবে সহায়ক হতে পারে। এছাড়া কৃষিপণ্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কৃষক থেকে সরাসরি ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছানোও স্মার্ট এগ্রিকালচারের অন্তর্ভুক্ত। কৃষকরা সরাসরি বাজারজাত করতে পারলে মধ্যস্বত্বভোগীদের হস্তক্ষেপ কমবে এবং তারাও ন্যায্যমূল্য পাবেন।
স্মার্ট এগ্রিকালচারের পরিচালক অধ্যাপক সহিদুজ্জামান বলেন, স্মার্ট এগ্রিকালচার বলতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার এবং নতুন নতুন কৃষি উদ্ভাবনের মাধ্যমে কৃষিকাজকে আরও দক্ষ, লাভজনক এবং টেকসই করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়। এর মাধ্যমে স্যাটেলাইট ইমেজিং, ড্রোন, সেন্সর ও জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাটির গুণগত মান, আর্দ্রতা, তাপমাত্রা ও অন্যান্য পরিবেশগত তথ্য সংগ্রহ করা যায়। এর ফলে কৃষকরা সঠিক সময়ে সঠিক সেচ, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে পারেন। স্মার্ট এগ্রিকালচার ব্যবস্থায় ডেটা অ্যানালাইটিক্সের সাহায্যে ফসল উৎপাদনের পূর্বাভাস, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং কীটপতঙ্গের আক্রমণ সম্পর্কে আগাম তথ্য পাওয়া সম্ভব। এছাড়া এটি কৃষকদের আরও কার্যকরী পরিকল্পনা করতে সাহায্য করবে।
স্মার্ট এগ্রিকালচারের বিভিন্ন উপকারী দিক সম্পর্কে অধ্যাপক ড. সহিদুজ্জামান ইউএনবিকে বলেন, স্মার্ট এগ্রিকালচারের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন, বন্যা, খরা ইত্যাদি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব। উন্নত বীজ ও কৃষিপণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে বেশি উৎপাদনশীল এবং জলবায়ু সহিষ্ণু ফসলের চাষ করা সম্ভব হবে, যা বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়াবে। নতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সাহায্যে কৃষকরা প্রতিকূল পরিবেশেও সফলভাবে চাষাবাদ করতে পারবে।
স্মার্ট এগ্রিকালচারে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রযুক্তি সম্পর্কে এ অধ্যাপক জানান, স্মার্ট ট্রাক্টর, রোবটিক হারভেস্টার এবং অটোমেটেড সেচ সিস্টেম ব্যবহার করে কৃষি কাজের খরচ ও সময় উভয়ই কমানো সম্ভব। এর মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানো এবং শ্রমের উপর নির্ভরতা কমানো যায়। ইন্টারনেট অব থিংস ব্যবহার করে স্মার্ট সেন্সর ও ডিভাইসগুলো মাটির স্বাস্থ্য, আর্দ্রতা এবং অন্যান্য পরিবেশগত তথ্য রিয়েল-টাইমে সংগ্রহ করে যা দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ তৈরি করে দেয়।
দেশে স্মার্ট এগ্রিকালচারের সম্ভাবনার পাশাপাশি মাটির সুরক্ষায় এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে স্মার্ট এগ্রিকালচারের ভূমিকা ইউএনবির কাছে তুলে ধরে বাকৃবির মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান জাহাঙ্গীর এবং গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ওয়াকিলুর রহমান।
স্মার্ট কৃষিতে কীটনাশকের গুরুত্ব উল্লেখ করে মৃত্তিকা বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান জাহাঙ্গীর ইউএনবিকে বলেন, কীটনাশক ব্যবহার করা স্মার্ট এগ্রিকালচারের একটি অংশ। স্মার্ট এগ্রিকালচার উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাৎক্ষণিকভাবে জমিতে কীটপতঙ্গের আক্রমণ, ফসলের বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ ইত্যাদি যথাসময়ে নির্ণয় করে প্রতিকারের ব্যবস্থা করা যায়। এছাড়া নির্দিষ্ট জমিতে কীটনাশক ব্যবহারের যথাযথ পরিমাণ, সময় ও ব্যবহার পদ্ধতি স্মার্ট এগ্রিকালচারের মাধ্যমেই জানা যাবে। স্মার্ট এগ্রিকালচার এবং কীটনাশকের সমন্বয় করলে দিনশেষে কৃষকরাই লাভবান হবে।
আগাছানাশক বা কীটনাশক সম্পর্কে ওই অধ্যাপক আরও বলেন, জৈব সার মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী মাইক্রোবিয়াল পপুলেশনের সংখ্যা বাড়াতে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু জৈব সার প্রয়োগে মাটির উর্বরতা বাড়ে কিন্তু আগাছা নির্মূল করা যায় না যা কৃষি উৎপাদনের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। কীটনাশক ব্যবহারের ফলে কিছু কিছু নন-টার্গেটেড মাইক্রো ও ম্যাক্রো অণুজীব প্রভাবিত হয়। এতে কিছু জীবাণুর সংখ্যা ও কার্যক্রম কমে যায় আবার কিছু অণুজীব প্রভাবিত হয় না। কীটনাশক কখনো মাটির ব্যাকটেরিয়াকে প্রভাবিত করে আবার কখনো মাটির ছত্রাককে প্রভাবিত করে। এটি নির্ভর করে কীটনাশকের রাসায়নিক গঠনের উপর। আগাছানাশক ব্যবহারের ফলে মাটিতে বসবাসকারী অণুজীব তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় না অথবা হলেও সেটা কীটনাশক প্রয়োগের প্রথম ১৪ থেকে ১৫ দিন পর আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়।
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক জাহাঙ্গীর তার একটি গবেষণার উদাহরণ উল্লেখ করে বলেন, একটি জমিতে নাইট্রিফায়ার্স মাইক্রোবিয়াল পপুলেশনের উপর আগাছানাশক প্রয়োগ করে দেখা যায় পপুলেশনের পরিমাণ প্রথম ১৫ দিন কিছুটা কমে যায়। তবে পরে ওই পপুলেশনের সংখ্যা আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়।
মাটির মাইক্রোবিয়াল পপুলেশন ও তাদের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যর উপর কীটনাশকের প্রভাব যেমন সয়েল মাইক্রোবায়োলজি ও মাইক্রোবিয়াল ইকোলজির উপর প্রভাব জানতে হলে আরও অনেক গবেষণা প্রয়োজন বলে জানান মৃত্তিকা বিজ্ঞানী জাহাঙ্গীর।
এক্ষেত্রে কৃষি পেশার সঙ্গে সরাসরি জড়িতদের কর্মসংস্থান হারানোর সম্ভাবনা আছে কি না-এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কৃষি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মো. ওয়াকিলুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, দেশে বিস্তরভাবে স্মার্ট এগ্রিকালচার বাস্তবায়িত হলে কর্মসংস্থান নষ্ট হওয়ার কোনো ঝুঁকি নেই বরং এটি নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে ভূমিকা পালন রাখবে। উদ্যোক্তা তখনই তৈরি হবে যখন তারা কৃষি উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত হয়ে লাভবান হতে পারবে। কৃষির সঙ্গে সরাসরি জড়িত অনেকেই অন্যান্য পেশায় যুক্ত হচ্ছেন। ফলে দেশে অনাবাদি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে স্মার্ট এগ্রিকালচার বাস্তবায়িত হলে অনাবাদি সকল জমিই চাষযোগ্য করা যাবে এবং অর্থনৈতিক লাভ নিশ্চিত হবে।
দেশের কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়নে তরুণদের ভূমিকা ও বাণিজ্যিকভাবে স্মার্ট এগ্রিকালচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কৃষি কাজ এখনও ব্যবসা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। স্মার্ট এগ্রিকালচারের মাধ্যমে সহজেই কৃষিকে বাণিজ্যিকভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব।
অধ্যাপক ওয়াকিলুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশের কৃষি কাজ এখনো প্রকৃতি নির্ভর। কৃষিকে লাভজনক ও বাণিজ্যিকীকরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে স্মার্ট এগ্রিকালচার বিস্তরভাবে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।
স্মার্ট এগ্রিকালচারের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে বাকৃবির স্মার্ট এগ্রিকালচারের অধ্যাপক সহিদুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে স্মার্ট এগ্রিকালচার কার্যকর করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। প্রযুক্তিগত অবকাঠামো উন্নয়ন (ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ), কৃষকদের প্রশিক্ষণ এবং সহযোগিতা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যাপক বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগের ঘাটতি রয়েছে। এটি স্মার্ট এগ্রিকালচার বাস্তবায়নে একটি বড় বাধা। তাই অবকাঠামোগত উন্নয়ন জরুরি৷ দেশের অধিকাংশ কৃষক আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্পর্কে অবগত নন। এছাড়া এদেশের আবাদি জমিগুলো ছোট ছোট খণ্ডে ভাগ করা। এসব খণ্ডিত জমিগুলোতে ড্রোন বা আধুনিক কৃষি যন্ত্র ভালো পরিচালনা করা কষ্টসাধ্য আবার এতে উৎপাদন খরচও বেড়ে যায়।
৩৮৮ দিন আগে
'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' উন্নয়ন প্রকল্প কাটছাঁট, বরাদ্দে বড় ধরনের সংকোচন
২০২৪-২৫ অর্থবছরে আগের সরকারের অনুমোদন করা উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বরাদ্দে বড় ধরনের সংকোচন দেখা দিতে পারে। কারণ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই প্রকল্পগুলোর অনেকগুলোকে 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' হিসেবে চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জনগণের অর্থের অপচয় রোধে এসব 'অপ্রয়োজনীয়' প্রকল্প বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের পর চলতি বছরের ৮ আগস্ট ক্ষমতায় আসা ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগে নেওয়া বেশ কয়েকটি প্রকল্প ব্যয়ের তুলনায় সন্তোষজনক ফলাফল দেয়নি।
সম্প্রতি একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিগত বছরগুলোর তুলনায় উন্নয়ন বরাদ্দ কমানো হবে।’
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে উন্নয়ন বরাদ্দ বাস্তবায়নের হার ব্যতিক্রম হিসেবে ৮ শতাংশ কম হয়েছে। আর এটি বৈদেশিক অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রকল্পের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্প বাস্তবায়নে নিজস্ব তহবিল ব্যবহার করা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে এ হার ১২ থেকে ১৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির গতি ধীর রয়েছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন বাস্তবায়নের হার রেকর্ড করা হয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই থেকে অক্টোবর) এডিপি বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮ শতাংশ, যা বিগত বছরগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন।
সংস্থাটির তথ্য বলছে, গত বছরের একই সময়ে বাস্তবায়নের হার ছিল ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
আইএমইডি’র তথ্যমতে, বিশেষ করে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে সরকার।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম একনেক সভায় উন্নয়ন বরাদ্দ কমানোর সিদ্ধান্ত হয়।
ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আগের অনেক প্রকল্প রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ব্যয়ের অনুপাতে ইতিবাচক ফল বয়ে আনার সম্ভাবনা কম।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করিনি যে এগুলো কোনো উল্লেখযোগ্য ফলাফল আনবে, তাই আমরা সেগুলো কাটছাঁট করেছি। সাধারণত সংশোধিত উন্নয়ন বরাদ্দ কমানো হয়, তবে এবার কমানোটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ হবে।’
অনেক প্রকল্প পরিচালক পালিয়ে যাওয়াকে প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির আংশিক কারণ হিসেবে উল্লেখ করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র।
সূত্র বলছে, তাদের পালিয়ে যাওয়ার ফলে প্রকল্পগুলো অব্যাহত রাখতে সরকারের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুরোনো ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রকল্প থেকে সরে এসে উদ্ভাবনী ও নতুন ধরনের প্রকল্পকে গুরুত্ব দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: জাপানের কাছে বাজেট সহায়তা চাইলেন অর্থ উপদেষ্টা, উন্নয়ন সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান
সূত্র জানায়, পরিকল্পনা উপদেষ্টা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সতর্কতার সঙ্গে প্রকল্প প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তারা তাদের ব্যয়ের তুলনায় একাধিক ইতিবাচক ফল দিতে পারে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন করেছে।
এডিপিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত, ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা (বরাদ্দের ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ)।
এছাড়া স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের ১৩ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার এডিপি অনুমোদন দিয়েছে এনইসি।
নতুন এডিপিতে ১ হাজার ১৩৩টি বিনিয়োগ প্রকল্প, ২১টি সমীক্ষা প্রকল্প, কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ৮৭টি এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও করপোরেশনের ৮০টি প্রকল্পসহ মোট প্রকল্পের সংখ্যা ১ হাজার ৩২১টি।
স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের ১৩ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার এডিপিসহ ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এডিপির মোট আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন: অসঙ্গতি দূর করতে জেন্ডার বাজেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: উপদেষ্টা
৩৮৯ দিন আগে
বিদ্যুৎ খাতে সংস্কার হলে বছরে ১২০ কোটি ডলার সাশ্রয় করতে পারে পিডিবি
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বিদ্যুৎ খাতে সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশের বছরে ১২০ কোটি ডলার বা ১৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারে বলে জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিক্স অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইএফএ)।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) আইইএফএ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। বর্তমানে সরকারি ভর্তুকির মাধ্যমে পিডিবির এই ক্ষতিপূরণ করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিল্প-কারখানার ব্যবহৃত অর্ধেক ক্যাপটিভ জেনারেটরের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে স্থানান্তর, ৩ হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংযোজন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় লোডশেডিং ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন লস ৮ শতাংশে সীমাবদ্ধ করার মাধ্যমে এই সাশ্রয় অর্জন সম্ভব।
২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত পিডিবির মোট বার্ষিক ব্যয় ২.৬ গুণ বেড়েছে, যেখানে আয় বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র ১.৮ গুণ। ফলে, অর্থনীতিকে সচল রাখতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারকে মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা (১০.৬৪ বিলিয়ন ডলার) ভর্তুকি দিতে হয়েছে। এরপরও পিডিবির ২৩ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা (১.৯৯ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতি হয়েছে।
শুধু ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই পিডিবিকে ৩৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা (৩.২২ বিলিয়ন ডলার) ভর্তুকি দিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: শীতকাল শুরু, দিন-রাতে বাড়বে আরও ঠান্ডা
ভর্তুকির বোঝা কমাতে শিল্প-কারখানাগুলোকে সম্পূর্ণরূপে জাতীয় গ্রিডের ওপর নির্ভরশীল করার পরামর্শ দিয়েছে আইইএফএ।
আইইএফএ বাংলাদেশের জ্বালানি-বিষয়ক প্রধান বিশ্লেষক শফিকুল আলম বলেন, ‘৬১.৩ শতাংশ রিজার্ভ মার্জিন নিয়ে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে অতিরিক্ত উৎপাদন সক্ষমতার (ওভার ক্যাপাসিটি) মতো সমস্যা রয়েছে যা পিডিবির ভর্তুকির বোঝা বাড়াচ্ছে। ফলে বিদ্যুতের দাম বারবার সমন্বয় করার পরও বড় অঙ্কের রাজস্ব ঘাটতি এবং ভর্তুকির বোঝা ভবিষ্যতেও থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাত সংস্কারে জ্বালানি সাশ্রয় বিবেচনা করে বিদ্যুতের চাহিদা পূর্বাভাসের পদ্ধতি উন্নত করা, জীবাশ্ম জ্বালানি-ভিত্তিক নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ সীমিত করা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধি, শিল্প-কারখানাগুলোকে গ্রিড বিদ্যুতের দিকে স্থানান্তর, লোডশেডিং হ্রাস ও বিদ্যুৎ গ্রিড আধুনিকায়নের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি বয়লারের মতো গ্যাসচালিত যন্ত্রপাতি ধীরে ধীরে বৈদ্যুতিক সিস্টেমে স্থানান্তরেরও প্রস্তাব করেছে সংস্থাটি। এর ফলে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিক্রির মাধ্যমে পিডিবির আয় বাড়বে বলে জানিয়েছেন শফিকুল আলম।
সংস্কারের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে প্রতিবেদনে ২০২৫ সাল থেকে জ্বালানি সাশ্রয় এবং চাহিদা স্থানান্তরের বিষয়গুলি বিবেচনা করে বিদ্যুতের চাহিদা পূর্বাভাস তৈরির জন্য সরকারকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: গোয়াইনঘাটের সালুটিকর-কচুয়ারপার সড়কে অন্তহীন দুর্ভোগে মানুষ
৩৮৯ দিন আগে
গোয়াইনঘাটের সালুটিকর-কচুয়ারপার সড়কে অন্তহীন দুর্ভোগে মানুষ
শত বছরের পুরনো সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাওঁ ও তোয়াকুল ইউনিয়নের হাওরাঞ্চল। এই হাওরাঞ্চলে রয়েছে উপজেলার নন্দিরগাওঁ ও তোয়াকুল ইউনিয়নের ছোট বড় প্রায় ১৮টি গ্রাম। দেশ স্বাধীনের ৫৩ বছর অতিবাহিত হলেও এসব গ্রামে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি, নির্মাণ করা হয়নি পাকা সড়ক।
সরেজমিনে দেখা যায়, সালুটিকর বাজার থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরেই নন্দিরগাওঁ ইউনিয়নের কচুয়ারপার, দারিকান্দি ও দারিরপার গ্রাম। দারিকান্দি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে চৌধুরী কান্দি, বাইমারপার, চলিতাবাড়ি ও শিয়ালা হাওর গ্রাম। শিয়ালা হাওর থেকে দুই কিলোমিটার দূরে জলুরমুখ গ্রাম এবং জলুরমুখ থেকে লক্ষীনগর, মেউয়ারকান্দি, চদিবদি হাওর, পূর্ব পেকেরখাল, জামলাকান্দি গ্রামগুলোর দূরত্ব আরও দুই কিলোমিটার। মাত্র ১০ কিলোমিটার পাকা সড়কের অভাবে এ যুগেও নন্দিরগাওঁ ও তোয়াকুল ইউনিয়নের এসব গ্রামের উপাধি হাওরাঞ্চল হিসেবে। এসব গ্রাম থেকে থেকে সালুটিকর বাজার, গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর কিংবা জেলা শহরে যাওয়ার রাস্তা মাত্র একটি। এই একমাত্র রাস্তায়ও দৃষ্টি পড়েনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের। হাওর এলাকায় দৃষ্টি দিলে দেখা মেলে 'বর্ষায় নাও আর হেমন্তে পাও' প্রবাদের বাস্তব চিত্র।
স্থানীয়রা জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত না হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী প্রাথমিকের গন্ডি পেরিয়েই পড়াশোনার ইতি টানছে।
চলিতাবাড়ি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা কাশেম আলী বলেন, নন্দিরগাওঁ ও তোয়াকুল ইউনিয়নের হাওরাঞ্চলের গ্রামে জনবসতি শত বছরের পুরোনো। এখনে ১৫ হাজার মানুষের বাস। গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, সব রাজনৈতিক দলের জনপ্রতিনিধিরাই শুধু ভোটের সময় গ্রামে আসেন। নির্বাচন শেষ হলে তারা উধাও। একটি রাস্তার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ফল মেলেনি।
আরও পড়ুন: সিলেটের সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক সংস্কারে 'রাস্তার পেট কেটে' মাটি ভরাটের অভিযোগ
কৃষি, নদী, গবাদি পশু লালন পালন ও বর্ষায় মাছ ধরার মধ্যেই এ সকল গ্রামের মানুষের জীবিকা সীমাবদ্ধ। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকার কারণেই তারা এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
নন্দিরগাওঁ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ইউনুস আলী ও একই ওয়ার্ডের বিএনপি নেতা রমযান আলী বলেন, 'আমাদের গ্রামে স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। ৬ থেকে ৭ বছর আগে বিদ্যুতের আলো পৌঁছালেও রাস্তায় মাটির কাজ ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নয়ন জনপ্রতিনিধিরা করেননি।
নন্দিরগাওঁ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল হক জিয়া বলেন, '১৫ বছর যাবৎ সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদ হাওরাঞ্চলে কুড়ি বার মাটির রাস্তা পরিদর্শন করে পাকাকরণের আশ্বাসও দিয়েছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি।
আমাদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নেই। অসুস্থ হলে স্বাস্থ্যসেবা পাই না। রাস্তাঘাট নেই। ভোটের সময় এলে অনেকে অনেক প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ভোটের পর তাদের আর দেখা যায় না। গত ১৫ বছর শুধু রাস্তা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিই শুনে গেলাম। কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়ন হয়নি।
নন্দিরগাওঁ ইউনিয়নের আরেক বিএনপি নেতা আব্দুল মতিন লেবু বলেন, রাস্তার অভাবে গ্রামের লোকজন অসুস্থ হলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা সেবা মেলে না। মুমূর্ষু রোগীদের পলো অথবা গরুর গাড়িতে করে নিয়ে যেতে হয় চিকিৎসকের কাছে। এমনকি যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে বিনা চিকিৎসায় মারা যায় অনেকে। সামান্য বৃষ্টি হলে রাস্তায় চলতে পারি না। এখন তো হেঁটে আমরা সালুটিকর বাজারে যেতে পাড়ি। কিন্তু জ্যৈষ্ঠ মাসে সবাইকে হাঁটুর উপরে কাপড় তুলে দুই কিলোমিটার রাস্তা যাতায়াত করতে হয়।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন সালুটিকর-গোয়াইনঘাট রাস্তা থেকে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর পর্যন্ত গাংকিনারী রাস্তা নামে এলজিইডিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর থেকে গাংকিনারী রাস্তায় দুই কিলোমিটার আরসিসি ঢালাই করে পাকা করা হয়েছে। অপর দিকে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের কচুয়ারপার গ্রাম পর্যন্ত পাকাকরণের লক্ষে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রকৌশলীকে ডাটাবেইজ সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৬ মাস ধরে বেতন বন্ধ সিলেট সরকারি ইউনানী আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ শিক্ষকদের
৩৯০ দিন আগে
শীতকাল শুরু, দিন-রাতে বাড়বে আরও ঠান্ডা
বাংলাদেশে শীতের তীব্রতা যত বাড়ছে, ততই সারা দেশের তাপমাত্রা কমে আসার হার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) ঠান্ডা দিন এবং রাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। আগামী সপ্তাহগুলোতে তাপমাত্রা আরও কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে প্রকাশ করা সর্বশেষ ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে, এবং দিনের তাপমাত্রাও সামান্য কমতে পারে।
গভীর রাত এবং ভোরের দিকে কিছু এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশাসহ আবহাওয়া বেশিরভাগ শুষ্ক থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটি মৌসুমী নিম্নচাপ ব্যবস্থা এবং উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে এর সম্প্রসারণ এই পরিস্থিতিতে অবদান রেখেছে, যা আরও সাধারণ শীতকালীন আবহাওয়ার রূপান্তরকে তুলে ধরে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে কমছে তাপমাত্রা, বৃদ্ধি পাচ্ছে শীতের তীব্রতা
পাঁচ দিনের বর্ধিত পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, তাপমাত্রা আরও কমতে পারে, যা দেশজুড়ে শীতকে আরও তীব্র করে তুলবে।
মাঝারি শীতের সময় ডিসেম্বর
ডিসেম্বর বাংলাদেশের জলবায়ুর পরিবর্তন শুরু হয়। এই সময়টিতে শুষ্ক পরিস্থিতি, ঠান্ডা রাত এবং স্নিগ্ধ দিন থাকে।
আন্তর্জাতিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর মতে, বেশিরভাগ অঞ্চলে দিনের গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। এসময় রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নেমে আসে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেটের মতো শহরগুলোতে কম আর্দ্রতার মাত্রা এবং প্রচুর রোদ অনুভূত হয়। এর ফলে বাইরের কাজকর্ম এবং ভ্রমণের জন্য আবহাওয়া অনুকূল হয়।
আরও পড়ুন: শীতকালে গরম পানির গিজার: জনপ্রিয় ব্র্যান্ড, মডেল, ধরন ও দাম
ঢাকা: দিনের তাপমাত্রা সাধারণত ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করে থাকে।
চট্টগ্রাম: উপকূলীয় শহরটিতে হালকা শীতকালীন আবহাওয়া বিরাজ করে। তাপমাত্রা ১৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকে।
সিলেট: পার্বত্য অঞ্চলের জন্য পরিচিত সিলেটে শীতকালীন আবহাওয়া অনুভূত হয়। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে আসে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্য
বাংলাদেশে শীতকাল উৎসব ও কৃষিকাজের ঋতু। কৃষকরা এই সময়কে কাজে লাগিয়ে অনুকূল পরিবেশে ধান ও সবজি চাষ করে থাকেন।
শহর এবং গ্রামীণ অঞ্চলগুলো একইভাবে শীতল আবহাওয়াকে বরণ করে নেয়। আয়োজন করে মেলা, বিবাহ এবং বাইরের অনুষ্ঠানগুলো পুরোদমে চলছে।
তবে, শীতের রাত এবং সম্ভাব্য কুয়াশা ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়ের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে উত্তরের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা কম থাকে।
কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা কমে যেতে পারে এমন সময় ভ্রমণকারীদের ভোরের দিকে সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
বাসিন্দা এবং দর্শনার্থীদের জন্য পরামর্শ
আবহাওয়া অধিদপ্তর সন্ধ্যায় এবং ভোরের জন্য হালকা জ্যাকেট(গরম কাপড়) পরার পরামর্শ দেয়। আবহাওয়ার পরিস্থিতি সম্পর্কে হালনাগাদ থাকার পরামর্শ দেয় সংস্থাটি। বিশেষ করে যারা দীর্ঘ দূরত্বে ভ্রমণ করেন তাদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
কক্সবাজার, সুন্দরবন এবং সিলেটের চা বাগানের মতো প্রধান ভ্রমণ গন্তব্যগুলো মনোরম আবহাওয়া এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি অনাবিল পরিবেশ উপভোগ করতে আন্তর্জাতিক দর্শনার্থীদের এই সময়ে বাংলাদেশ ঘুরে দেখতে উৎসাহিত করা হয়।
শীতের ঠান্ডা তীব্রতর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাংস্কৃতিক উদযাপন এবং উত্তাপ থেকে বহুল প্রত্যাশিত অবকাশের ঋতুকে বরণ করতে প্রস্তুত হচ্ছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: শীতকালে নিরাপদে মোটরসাইকেল চালকদের প্রয়োজনীয় সেফটি গিয়ার ও পোশাক
৩৯০ দিন আগে
সিলেটের সীমান্ত এলাকার লাখো পাথর শ্রমিক-ব্যবসায়ীর নীরব কান্না
পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টের বিষয় উল্লেখ করে বছরের পর বছর বন্ধ রয়েছে সিলেটের ভোলাগঞ্জ, জাফলং ও বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারি।
শ্রমিক ও ব্যসায়ীদের দাবি, সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন করতে হাইকোর্টের আদেশ থাকলেও কী কারণে এসব পাথর কোয়ারি বন্ধ রয়েছে এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর তারা কারো কাছ থেকে পাননি। ।
গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা জানান, সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের বিষয়ে হাইকোর্টরের আদেশের কপি নিয়ে নিয়মিত প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। তবে প্রশাসনের কার্যকরি পদক্ষেপ না পেয়ে হতাশ হয়েছেন তারা।
পাথরগুলো কয়েক বছর ধরে বন্ধ থাকায়, কোয়ারি সংশ্লিষ্ট শ্রমজীবী দিনমজুররা কর্মসংস্থান হারিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে-অর্ধহারে দিনযাপন করছেন। কর্মক্ষেত্র বন্ধ থাকায় পাথর, বালু ও বারকি শ্রমিকদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।
প্রতিদিন ভোরে সাজের সন্ধানে বেলচা, টুকরি নিয়ে তীর্থের কাকের মতো বসে থাকেন তারা। দেশের সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারি সিলেটের জাফলং, বিছনাকান্দি, ভোলাগঞ্জ ও শ্রীপুরসহ সব কয়টি এলাকায় কোয়ারি ও বালু মহালের সংশ্লিষ্ট কয়েক লাখ শ্রমিকের বর্তমান অবস্থা এমনই।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, কোয়ারি ও বালু মহাল সচল থাকলে সরকারের বড় অংকের রাজস্বও আদায় হতো। পাশাপাশি সিলেটসহ সারাদেশের ৩-৪ লাখ শ্রমিক কাজ করে নিজের জীবনযাপন করতে পারতেন। সেই সঙ্গে দেশের অর্থনীতি আরও মজবুত হতো।
শুধু পাথর, বালু ও বারকি শ্রমিক নয়, বেকায়দায় পড়েছেন এবার পাথর ব্যবসায়ীরাও। তারা জানান, শেষ সম্বল টুকু ব্যাংকে বন্ধক রেখে কিনেছেন পাথর ভাঙার যন্ত্র (ক্রাশার মিল)। কোয়ারি বন্ধ থাকায় ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতেও পারছেন না। হারাতে বসেছেন তাদের শেষ সম্বল টুকু।
পাথর ব্যবসায়ীরা অপেক্ষায় বসে আছেন কোয়ারি খোলার। দীর্ঘ দিন থেকে কোয়ারি ও বালু মহাল থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় পাথরের সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বেকার হয়ে পড়েছেন। বন্ধ হতে চলেছে জাফলং, ধূপাগুল, ভোলাগঞ্জসহ উত্তর সিলেটের ক্রাসিং জোন এলাকা। কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় ওই সব ক্রাশার এলাকা শ্রমিক শূন্য হয়ে পড়েছে দিন দিন।
এদিকে দীর্ঘদিন একই পেশায় নিয়োজিত থেকে অন্য কোনো কাজ করতেও পারছেন না তারা।
এর মধ্যে বেশ কয়েকবার শ্রমিকেরা কোয়ারি খোলার দাবিতে নানা ধরনের আন্দোলনও করেছেন। এছাড়া জাফলং, বিছনাকান্দি, ভোলাগঞ্জ ও শ্রীপুরের ব্যবসায়ী নেতারা পাথর কোয়ারি সচলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন।
শুধু শ্রমিক ও পাথর ব্যবসায়ীই নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছেন পরিবহন শ্রমিক-মালিকরাও।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম শাখার ট্রাক-পিক আপ-কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, এ এলাকায় প্রায় দুই হাজার ট্রাক পাথর পরিবহন করে। বর্তমানে ট্রাক মালিক ও শ্রমিকরাও মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পাথর কোয়ারি খুলে দিলে সরকার যেমন রাজস্ব পাবে, তেমনি শ্রমজীবীরাও পেটের ভাত পাত পাবে।
বিছন্নাকান্দির পাথর ব্যবসায়ী মহিবুর রহমান বলেন, সোনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তলনের জন্য কোয়ারি খুলে দিলে এলাকার ব্যবসায়ী ও পাথর সংশ্লিষ্ট সবার জীবিকার ও কর্মসংস্থানের দ্বার উন্মোচন হবে। অনেক ব্যবসায়ী ব্যাংকে বন্ধক রাখা সম্পত্তি ফিরে পাবেন। এবার সেই কোয়ারিগুলো থেকে পরিবেশ সম্মতভাবে পাথর উত্তোলনের সুযোগ করে দেওয়া জরুরি।
এ ব্যাপারে জাফলং পাথর কোয়ারি এলাকার ব্যবসায়ী মিনহাজ উদ্দিন বলেন, পাথর ও বালু উত্তোলন বন্ধ থাকার কারণে কোয়ারি এলাকার শ্রমিকদের মধ্যে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ক্রমেই কর্মহীন মানুষের হাহাকার বাড়ছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ইজারা বিহীন কোয়ারি এবং যান্ত্রিক পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন বন্ধের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় জাফলং, বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারি ও বালু মহাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাথর কোয়ারি বন্ধ রাখতে উপজেলা প্রশাসন থেকে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
এদিকে দীর্ঘ ৬ বছর বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের করা রিট পিটিশনের ভিত্তিতে হাইকোর্ট সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে জাফলংয়ের ব্যাপারে ২২ অক্টোবর, বিছনাকান্দির ১১ নভেম্বর ও ভোলাগঞ্জের ব্যাপারে ১৪ নভেম্বর পাথর উত্তোলনের নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরাও একই কথা জানিয়েছেন।
তবে এ বিষয়ে তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমার কাছে তথ্য আছে পাথর কোয়ারি বিষয়ে হাইকোর্টর আদেশ চেম্বার কোর্টে স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে গোয়াইনঘাট উপজেলার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন, পাথর ও বালু শ্রমিকদের মানবেতর জীবন বিবেচনা করে পাথর কোয়ারিগুলো জরুরি ভিত্তিতে খুলে দিতে।
৩৯৩ দিন আগে
পরিচালন ব্যয় সংকোচনের পরিকল্পনা সরকারের
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন বৈশ্বিক ও দেশীয় চ্যালেঞ্জের কারণে যেসব পরিচালন ব্যয় বেড়েছিল, আগামী বছরগুলোতে তা কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সরকারি নথি অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারি ব্যয়ের ৫৮ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৫৮ দশমিক ৪ শতাংশ হবে পরিচালন ব্যয়।
চলতি অর্থবছরে মোট সরকারি ব্যয়ের ৫৯ শতাংশ পরিচালন ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।
পরিচালন ব্যয়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত সরকারি কর্মচারীদের বেতন ও মজুরি, পণ্য ও সেবা ক্রয়, ভর্তুকি ও স্থানান্তর পেমেন্ট, দেশীয় ও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এবং 'খাদ্য হিসাব পরিচালনা' সংক্রান্ত ব্যয়।
নথি অনুসারে, কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০১৯ সালের পরিচালন ব্যয় ৫৫.৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৩ সালে ৬২.৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বর্ধিত ব্যয়ের মূল চালিকাশক্তি
ক্রমবর্ধমান ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতায় সুদ পরিশোধ ক্রমাগত বেড়েছে।
নথিতে বলা হয়েছে, সামাজিক কল্যাণ ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পদক্ষেপের উপর জোর দিয়ে ২০১৯ সালে মোট সরকারি ব্যয়ের ভর্তুকি এবং স্থানান্তর সংক্রান্ত ব্যয় ২.৯ শতাংশ থেকে ২০২৪ সালে বেড়ে প্রায় ৪ শতাংশ হয়েছে।
২০১৯ অর্থবছর থেকে ২০২৩ অর্থবছর পর্যন্ত পরিচালন ব্যয় গড়ে জিডিপির ৭ দশমিক ৬ শতাংশ বজায় রেখেছে।
২০২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এই অঙ্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮.৬ শতাংশে।
দেশীয় সুদের হারের ঊর্ধ্বগতি এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বিনিময় হারের অস্থিরতা থেকে এটি বেড়েছে এবং এটি একই সঙ্গে সুদ পরিশোধ ব্যয়ও বাড়িয়েছে।
এইসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, সরকার কৌশলগত সমন্বয় ও আর্থিক শৃঙ্খলার মাধ্যমে মধ্যমেয়াদে পরিচালন ব্যয় জিডিপির ৮.৩ শতাংশে স্থিতিশীল রাখার প্রত্যাশা করছে।
২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে খাদ্য ভর্তুকি ১৪.১ শতায়শ বেড়েছে। এটিও পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধির একটি কারণ।
বেতন ও পণ্য ব্যয় ব্যবস্থাপনা
বেতন ও ভাতা সংক্রান্ত খাতে ২০১৯ সালে জিডিপির ১.৮ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে ১.৪ শতাংশ কমে গেছে। তবে তা বেতন কমানোর কারণে নয়, বরং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণেই হয়েছে।
২০২৫ সালে বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় জিডিপির ১ দশমিক ৫ শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে; যা ২০১৯ সালের ১ দশমিক ৮ শতাংশের চেয়ে কম।
নথিতে বলা হয়েছে, দক্ষ সরকারি সেবা প্রদান নিশ্চিত করার পাশাপাশি বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় বাড়াতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
কোভিড-১৯ মহামারির বছরগুলোতে আরও গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে সম্পদের পুনর্বিন্যাস এবং ২০২২ সাল থেকে গৃহীত সাশ্রয়ী নীতির কারণে পণ্য ও সেবার উপর ব্যয় ২০২৯ সালের মোট ব্যয়ের ৭.৩ শতাংশ ছিল। ২০২৩ সালে সেখান থেকে কমে দাঁড়ায় ৫.৯ শতাংশে।
২০২৪ অর্থবছরের সংশোধিত প্রাক্কলনে দেখা যায়, এ অর্থবছরে পণ্য ও সেবা খাতে ব্যয় ছিল মোট ব্যয়ের ৬ দশমিক ১ শতাংশ।
মধ্যমেয়াদে পণ্য ও সেবা খাতে ব্যয় ৬ শতাংশের কাছাকাছি থাকবে বলে প্রাক্কলন করেছে অর্থ বিভাগ।
ভর্তুকি যৌক্তিকীকরণ এবং সামাজিক সমর্থন জোরদার করা
সরকার ভর্তুকি বরাদ্দসমূহ যুক্তিসঙ্গতভাবে নির্ধারণের জন্য একটি কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ জনগণের জন্য জীবনযাত্রা সহায়তা কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
ক্রমবর্ধমান প্রয়োজনীয় ব্যয়ের মধ্যে কৃষি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে রয়েছে।
জ্বালানি খাতে ধীরে ধীরে ভর্তুকি কমানো হবে। নিয়মতান্ত্রিক মূল্য সমন্বয় এবং ফর্মুলা ভিত্তিক জ্বালানি মূল্য নির্ধারণের প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের মাধ্যমে এটি করা হবে।
তবে পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় বকেয়া ভর্তুকি দীর্ঘায়িত করার জন্য চলমান মনোযোগ প্রয়োজন।
প্রবৃদ্ধি ও স্থায়িত্ব বাড়ানো
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সরকার রপ্তানি বহুমুখীকরণ, রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি, কৃষি উন্নয়ন এবং তৈরি পোশাক খাতে সবুজ প্রযুক্তি গ্রহণের জন্য আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের পরিকল্পনা করেছে।
হাইব্রিড প্রযুক্তি, বৈদ্যুতিক যানবাহন এবং আইসিটি পরিষেবা রপ্তানির উপরও জোর দেওয়া হচ্ছে।
দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি কৃষি ও রপ্তানিতে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হবে বলে নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
৩৯৩ দিন আগে