বিশেষ-সংবাদ
ব্যাংকিং ব্যবস্থার অপব্যবহারে সংকটাপন্ন ব্যাংকগুলোর ক্ষতি ১৬৬৩.৩৮ কোটি টাকা
একসময় লাভজনক খাত হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে খেলাপি ঋণ ও বড় ধরনের লোকসানে জর্জরিত বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত। সর্বশেষ ত্রৈমাসিক আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ৯টি ব্যাংক সম্মিলিতভাবে ১ হাজার ৬৬৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা লোকসান করেছে।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে লাগামহীন দুর্নীতি, নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর অপব্যবহার এবং গুরুত্বপূর্ণ পদে অসাধু ও অদক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগের ফলে ব্যাংকিং খাতে বর্তমান অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার ব্যাংকিং ব্যবস্থার অপব্যবহারের আগে এই ব্যাংকগুলো লাভজনক প্রতিষ্ঠান ছিল। গত কয়েক বছরে সাধারণ মানুষের জমানো বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাট করা হয়েছে, যার ফলে বর্তমান সংকট দেখা দিয়েছে।’
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। এই লুটপাটের ফলে ব্যাংকগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ব্যাংকিং খাতে উদ্বৃত্ত তারল্য ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা
বিভিন্ন ব্যাংকের সম্পদ মূল্যায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক অডিট ফার্ম নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, ২০১৭ সালের পর এস আলম গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শুধু কাগজে-কলমে থাকা কোম্পানি এবং গ্রুপটির সহযোগীদের ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঋণ ইস্যু করা হয়।
আত্মসাৎ করা এই অর্থ সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাচার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে অনেক ব্যাংক বর্তমানে গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। এরই ধারাবিকতায় জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে ব্যাংকগুলো।
প্রতিবেদনে ন্যাশনাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ইউনিয়ন ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের মোট ১ হাজার ৬৬৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া এবি ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংকসহ ১০টি ব্যাংকের মুনাফাও আগের বছরের এই সময়ের তুলনায় কমেছে।
জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে সবচেয়ে বেশি লোকসান দিয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক, যা আগের বছরের এই সময়ের চেয়ে ২০১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বা ৪০ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন: ব্যাংকিং খাতের সংস্কার ও অর্থ পাচার রোধে আইএমএফের কারিগরি সহায়তা চায় বাংলাদেশ: অর্থ উপদেষ্টা
এই প্রান্তিকে কর-পরবর্তী ৫৬৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা লোকসানের কথা জানিয়েছে এক্সিম ব্যাংক। অথচ গত বছর এই সময়ে তাদের মুনাফা ছিল ৫৩৩.৯ কোটি টাকা মুনাফা।
ব্যাংক এশিয়ার লোকসান হয়েছে ১০৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা, যেখানে আগের বছর মুনাফা ছিল ২৭৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
একইভাবে ইসলামী ব্যাংক ৮৯ কোটি ২০ লাখ টাকা লোকসান করেছে, যেখানে গত বছর এই সময়ে তাদের মুনাফা ছিল ৯৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ফলে মুনাফায় ১৯৪ শতাংশ পতন হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
২০২৩ সালের এই সময়ে ৫২ কোটি ৮০ লাখ টাকা মুনাফার বিপরীতে চলতি বছর ৮০ কোটি ১৮ লাখ টাকা লোকসান করেছে ইউনিয়ন ব্যাংক।
এ ছাড়াও আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে অথবা লোকসান বেড়েছে।
আরও পড়ুন: ব্যাংকিং সেক্টর রিফর্মে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে বিশ্বব্যাংক: অর্থ উপদেষ্টা
১৯ ঘণ্টা আগে
‘ভবদহের জলাবদ্ধতায় অভয়নগরে পূরণ হয়নি আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা’
ভবদহ এলাকার জলাদ্ধতায় যশোরের অভয়নগরে পূরণ হয়নি আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা। ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে দুঃশ্চিন্তা গ্রাস করছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের। প্রতিবছরই রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়ে থাকলেও এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন।
উপজেলার কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৮ ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভার রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল হাইব্রিড ১ হাজার ৭৯০ হেক্টর, উফসী ৫ হাজার ৮২৫ হেক্টর এবং স্থানীয় ২৫ হেক্টর মিলে মোট ৭ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে অর্থাৎ ৭ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে চাষ হলেও ভবদহে জলাবদ্ধতার কারণে ১ হাজার ৮২৬ হেক্টর জমির আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আমন ধানের উৎপাদন কম হবে প্রায় ৯ হাজার ৩৮ মেট্রিক টন। এবার আমন উৎপাদন হয়েছে মাত্র ৫ হাজার ৮১৪ হেক্টর জমিতে। গতবছর আমন উৎপাদন হয়েছিল ৭ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। এ বছর ১ হাজার ৭৩৬ হেক্টর কম জমিতে রোপা আমন উৎপাদন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুন্দলী ইউনিয়নের পুরো ৮৩৫ হেক্টর জমির আমন উৎপাদন।
কৃষি কার্যালয় আরও জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভায় আমন আবাদ হয়েছিল ৮৫০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু ভবদহ জলাবদ্ধতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩১০ হেক্টর জমির ধান। উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছিল ১ হাজার ১৫৪ হেক্টর জমিতে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৩৩ হেক্টর জমির ধান। সুন্দলী ইউনিয়নে চাষ হয়েছিল ৮৩৫ হেক্টর জমিতে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুরো ৮৩৫ হেক্টর জমির ধান। চলিশিয়া ইউনিয়নে চাষ হয়েছে ১ হাজার ১১ হেক্টর জমিতে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬০ হেক্টর জমির ধান। পায়রা ইউনিয়নে চাষ হয়েছে ৬০৫ হেক্টর জমিতে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮৮ হেক্টর জমির ধান। সবচেয়ে বেশি আমন আবাদ হয়েছে শ্রীধরপুর ইউনিয়নে চাষ হয়েছে ১ হাজার ৩৯২ হেক্টর জমিতে। বাঘুটিয়া ইউনিয়নে চাষ হয়েছে ১ হাজার ৩০৫ হেক্টর জমিতে, শুভরাড়া ইউনিয়নে চাষ হয়েছে ৪৬০ হেক্টর জমিতে। সিদ্দিপাশা ইউনিয়নে চাষ হয়েছে মাত্র ১৪০ হেক্টর জমিতে।
উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের আড়পাড় গ্রামের কৃষক উজ্জ্বল দাস বলেন, ‘শুড়িরডাঙ্গা বিলে বর্গা নিয়ে রোপা আমন ধান লাগিয়েছিলেন ১ একর জমিতে। জলাবদ্ধতার কারণে পুরো ধানই নষ্ট হয়ে গেছে। পরের জমি বর্গা নিয়ে স্বর্ণা জাতের আমন ধান চাষ করেছিলাম।’
উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের কোটা গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন, ‘চাত্রার বিলে দুই বিঘা জমিতে রোপা আমন লাগিয়েছি। একে তো বাড়ির উঠানে পানি। তারপর পুরো ধানই নষ্ট হয়ে গেল। পাঁচ সদস্যের পরিবার নিয়ে কিভাবে চলব, তাই নিয়ে ভীষণ দুঃশ্চিন্তায় আছি। সরকার যদি একটু ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে তাহলে বাঁচা যায়।’
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, ‘ভবদহ এলাকার জলাবদ্ধতা সমস্যার জন্য আমনের এই উৎপাদন কম হয়েছে। জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকার সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। তবে যেসব জলাবদ্ধ এলাকা থেকে আগামী ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে সেখানে স্বল্পমেয়াদি ও উচ্চফলনশীল বিনা-১৪ ধান আবাদের পরিকল্পনা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান সময়ের সবজি উৎপাদন বাড়ানোর ওপরেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় সবজি চাষ বাড়ানোর জন্য ৪৭৫ জনকে উফশী সবজি বীজ ও জনপ্রতি নগদ ১ হাজার দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বোরো মৌসুমে যাতে বেশি ধান উৎপাদন করা যায় সেদিকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করব।
১ দিন আগে
বাংলাদেশে বছরে ১২-১৮টি এলএনজি কার্গো রপ্তানির প্রস্তাব ব্রুনাইয়ের
বাংলাদেশের সঙ্গে ১০ বছরের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় বছরে ১২ থেকে ১৮টি এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) কার্গো রপ্তানির প্রস্তাব দিয়েছে ব্রুনাই সালতানাত।
ব্রুনাই এনার্জি সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেডিং (বেস্ট) এসডিএন বিএইচডি বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিজিসিএল) কাছে এই প্রস্তাব পাঠিয়েছে বলে এক নথি দেখেছে ইউএনবি।
প্রস্তাবে অনুযায়ী প্রতিটি কার্গোর আকার প্রায় ৩১ লাখ এবং ৩২ লাখ এমএমবিটিইউ (মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট, এলএনজি পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত একটি ইউনিট) এর মধ্যে হবে। এর দাম এমএমবিটিইউ প্রতি জেকেএম + শূন্য দশমিক ৮৭ মার্কিন ডলার হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাপান কোরিয়া মার্কার(জেকেএম) হলো একটি সূচক যা জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন এবং তাইওয়ানে বিতরণ করা এলএনজির মূল্য পরিমাপ করে এবং এশিয়ান স্ট্যান্ডার্ড হিসাবে গৃহীত হয়। এস অ্যান্ড পি গ্লোবালের তথ্য অনুযায়ী, ২০ নভেম্বর পর্যন্ত জেকেএম ১৪ দশমিক ৬৫ মার্কিন ডলার।
অতীতে বাংলাদেশ সাধারণত ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ পরিমাপের এলএনজি কার্গো আমদানি করেছে।
ব্রুনাইয়ের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থা বেস্ট প্রাথমিকভাবে আঞ্চলিক জ্বালানি বাজারে অপরিশোধিত তেল, এলএনজি এবং মিথানল বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত এবং আরপিসিএল রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলার একটি সহায়ক সংস্থা- যা বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানিতে নিযুক্ত রয়েছে।
পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা জানান, জ্বালানি সমৃদ্ধ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি থেকে এলএনজি আমদানির ধারণা নতুন নয়, ২০১৮ সালেও বাংলাদেশ দেশটি থেকে একটি প্রস্তাব পেয়েছিল। এর ফলে ২০১৮ সালের আগস্টে দুই 'ভ্রাতৃপ্রতিম' দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়।
আরও পড়ুন: শিগগিরই আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেটের এলএনজি সরবরাহকারীদের তালিকা করবে পেট্রোবাংলা
কিন্তু সেই সমঝোতা স্মারকটি দুই দেশের মধ্যে প্রস্তাবিত জ্বালানি বাণিজ্যে বাস্তবায়িত হয়নি, যার ফলে শেষ পর্যন্ত ঢাকা ও বন্দর সেরি বেগাওয়ানের মধ্যে চুক্তিটি আরও ৫ বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছে।
সরকারি সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ১৫-১৭ অক্টোবর ব্রুনাইয়ের সুলতান হাজী হাসানাল বলকিয়া তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে আসেন।
বিষয়টির স্পর্শকাতরতা হওয়ায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের শীর্ষ পর্যায়ের একটি সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ এই প্রস্তাবে রাজি হয়েছে। আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি সরবরাহের মাধ্যমে তার ব্যবসায়িক স্বার্থ সর্বোত্তমভাবে উদ্ধার হওয়ায় তৎকালীন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করছিলেন বলে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।
ফলে হামিদের এমন বিরোধিতায় ব্রুনাই হতাশ হয়ে পড়ে বলে সূত্রটি জানায়।
গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্রুনাই পুনরায় তার যোগাযোগ শুরু করে এবং এবার একটি অগ্রগতি দেখা গেল।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিষ্ঠান ব্রুনাই থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে জিটুজি চুক্তির আওতায় দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে এলএনজি আমদানির জন্য পেট্রোবাংলার প্রস্তাব উত্থাপন করে।
আরও পড়ুন: এলএনজি প্রকল্পে বাংলাদেশের খরচ হবে ৫০ বিলিয়ন ডলার: রিপোর্ট
গত ১৩ নভেম্বর অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের কমিটির (একসিইএ) সভায় এ প্রস্তাবে নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশ জিটুজি চুক্তির আওতায় দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে কাতার ও ওমান থেকে বছরে ৩৫ লাখ মেট্রিক টন (এমটিপিএ) এলএনজি আমদানি করছে।
কাতার ১৫ বছরের চুক্তিতে ২ দশমিক ৫ এমটিপিএ এবং ওমান ১০ বছরের চুক্তিতে ১ এমটিপিএ সরবরাহ করে আসছে।
গত বছর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার এলএনজি আমদানি আরও ৫ দশমিক ৫ এমটিপিএ বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক্সিলারেট এনার্জি ও স্থানীয় গ্রুপ সামিট গ্রুপের সঙ্গে আরও দুটি চুক্তি সই করে।
ব্রুনাইয়ের প্রস্তাব সম্পর্কে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, চুক্তিটি 'নীতিগত' অনুমোদনের পর্যায়ে রয়েছে, এখন রাষ্ট্রীয় হাইড্রোকার্বন এজেন্সি দাম চূড়ান্ত করার জন্য আলোচনা শুরু করবে এবং চুক্তির মেয়াদও নির্ধারণ হবে।
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘আলোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত, সরবরাহের মূল্য এবং চুক্তির মেয়াদ সম্পর্কে কিছুই নির্ধারণ করা হবে না।’
আরও পড়ুন: এলএনজি টার্মিনালের দরপত্র প্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পেট্রোবাংলা
১ দিন আগে
সিলেটের সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক সংস্কারে 'রাস্তার পেট কেটে' মাটি ভরাটের অভিযোগ
গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাঁও, তোয়াকুল, রুস্তুমপুর, বিছনাকান্দি, পশ্চিম জাফলং, গোয়াইনঘাট সদর, লেঙ্গুড়া ও মধ্য জাফলং ইউনিয়নবাসীর একমাত্র চলাচলের রাস্তা সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক।
উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বাসিন্দারা উপজেলা সদর ও জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যমও এ সড়ক।
এলাকাবাসীর পাশাপাশি এ সড়ক দিয়ে দেশ-বিদেশি হাজার হাজার ভ্রমণ পিয়াসু পর্যটক বিছনাকান্দি ও পান্তুমাই বেড়াতে আসেন।
সড়কটি সংস্কারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডিসিএল অ্যান্ড এমডিএইচের (জেভি) বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও এবারে প্রকাশ্যে উঠে এসেছে ‘সড়কের পেট কেটে’ রাস্তা ভরাটের অভিযোগ।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে এ অভিযোগের সত্যথা পাওয়া যায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায় সড়কের পাশ থেকেই এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি কেটে রাস্তা ভরাট করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে গাজীপুর: গবেষণা
স্থানীয় বাসিন্দা নন্দিরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আফতাব আলী, নিজাম উদ্দিন, সমাজসেবী আব্দুল হাসিম চৌধুরী জানান, সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অংশ হচ্ছে দশগাঁও মসজিদের বাজার থেকে সালুটিকর বাজার পর্যন্ত। সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ এ অংশ প্রতি বছর বন্যার পানিতে বেশ কয়েকবার তলিয়ে যায় এবং এ অংশে পানির স্রোত বেশি থাকে। বর্তমানে দামারী বিল এলাকায় এক্সকেভেটর দিয়ে রাস্তার পেট কেটে ভরাট করা হচ্ছে বৃষ্টি হলেই সেখানে রাস্তার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।
রাস্তার পাশ থেকে এভাবে মাটি কাটার দৃশ্য দেখে পথচারী ও স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর থেকে সালুটিকর বাজার পর্যন্ত সড়কটি সংস্কারের জন্য ৩টি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারে সরকারের ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। মূলত রাস্তায় মাটি ভরাট করার কথা অন্য কোনো স্থান থেকে মাটি এনে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তা না করে রাস্তার পাশ থেকেই মাটি কেটে ভরাট করছেন। এটি নিয়মবহির্ভূত।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডিসিএল অ্যান্ড এমডিএইচের (জেভি) স্বত্বাধিকারী দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাস্তার পেট কেটে মাটি ভরাটের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি আমি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।
এ সড়ক সংস্কার কাজে এলজিইডির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী আজমীর শরীফ বলেন, রাস্তার পেট কেটে মাটি ভরাট করতে আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিষেধ করেছি। কিন্তু উনারা আমাদের কথা না শুনে তাদের মতো কাজ করছেন।এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তার পেট কেটে মাটি ভরাট করতে আমরা নিষেধ করেছি।
এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য এই প্রতিবেদক সোমবার সন্ধ্যায় সিলেট জেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী জেএম ফারুকের মোবাইলে ফোন করলে তিনি ক্ষুব্ধ হন এবং কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।এ ব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, রাস্তার পেট কেটে মাটি দিয়ে রাস্তা ভরাটের প্রশ্নই আসে না। রাস্তা নিরাপদ রেখে মাটি কাটার বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: রুট পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেন আটকে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
২ দিন আগে
লাশের সুরতহাল-ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে ভয়ংকর তথ্য রয়েছে: মুনিয়া হত্যামামলার আইনজীবী
মোশাররাত জাহান মুনিয়া হত্যা মামলায় সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন উপেক্ষা করার অভিযোগ করেছেন তার আইনজীবী ও স্বজনরা। একই সঙ্গে আসামি পক্ষ প্রভাব খাটিয়ে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন পাল্টে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
তাদের দাবি মামলার প্রধান আসামি সায়েম সোবহান আনভীরসহ অন্যদের বাাঁচাতে আসল ঘটনা ধামাচাপা দিতেই মুনিয়া হত্যার ঘটনাকে আত্মহত্যা সাজিয়ে মামলা থেকে তাদের অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে আদালতে।
সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের বেশ কিছু বিষয় উল্লেখ করে বাদীপক্ষের আইনজীবী সরোয়ার হোসেন বলেন, এ দুটি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলেই মুনিয়াকে হত্যার ঘটনার ভয়াবহ তথ্য বেরিয়ে আসে। মুনিয়ার স্বজনরাও একই দাবি করেন।
২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল গুলশানের ভাড়া বাসা থেকে ২১ বছর বয়সি মোশাররাত জাহান মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনভীরকে প্রধান আসামি করে গুলশান থানায় মামলা করেন মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান তানিয়া।
আরও পড়ুন: মুনিয়া হত্যা: হুইপপুত্র শারুনের সাবেক স্ত্রী সাইফা কারাগারে
ওই বছরের ১৯ জুলাই সেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার ওসি আবুল হাসান ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন। তাতে তিনি আনভীরকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন।
এদিকে সেই প্রতিবেদনে নারাজি দিয়ে পুনঃতদন্তের আবেদন করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী এবং আদালত সেই আপিল গ্রহণ করেন।
মামলার রিটকারী আইনজীবী সরোয়ার হোসেন জানান, মোশাররাত জাহান মুনিয়াকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ২০১৯ সালের জুন থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বনানীর একটি বাসায় রেখেছিলেন আসামি আনভীর। এরপর ১ মার্চ থেকে খুন হওয়ার আগ পর্যন্ত গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে রাখেন। বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গুলশানের বাসায় আনভীর ছাড়া অন্য কেউ ঢুকতে পারতেন না।
সরোয়ার বলেন, ‘মুনিয়া মারা যাওয়ার পর তার লাশ ঝুলন্ত থাকলেও পা খাটের সঙ্গে লাগানো ছিল। কেউ আত্মহত্যা করলে পা খাটের সঙ্গে লাগানো থাকবে না। তার মানে তাকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে। অপরাধী এটা খেয়াল করেনি। সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হত্যার আগে তাদের মধ্যে জোর-জবরদস্তি করা হয়েছে। যার জন্য তার ইনার গার্মেন্টস ছেড়া ছিল। গুলশান থানায় বাদীর বক্তব্য গ্রহণ না করে, ভুল করে পেনাল কোডের ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যা প্ররোচনা হিসেবে রেকর্ড করে। কিন্তু প্রথমেই এই মামলা ৩০২ ধারার হওয়ার কথা ছিল।’
এ আইনজীবী বলেন, ‘ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুনিয়ার শরীরে পুরুষের বীর্য পাওয়া গেছে। তার মানে তাকে মৃত্যুর আগে ধর্ষণ করা হয়েছে। সেই বীর্য আনভীরের, কারণ সিসিটিভি ফুটেজ ও দারোয়ানের কথা অনুযায়ী সেই বাসায় আনভীর ছাড়া কেউ যেতে পারতেন না। আরও ভয়ংকর তথ্য হলো, মেয়েটা তিন সপ্তাহের অন্তঃসত্তা ছিল। তার মানে এটা দুইজনকে হত্যা করা। একদিনের ভ্রুণও যদি হত্যা করা হয়, সেটাও একটা হত্যাকাণ্ড।’
সরোয়ার বলেন, ‘এসব তথ্য গুলশান থানা ও পিবিআই দুটোর তদন্তেই এসেছে। তদন্তে বেরিয়ে আসা তথ্যই বলে এই মামলা সাজানো হয়েছে। এত কিছুর পরও চূড়ান্ত প্রতিবেদনে আসামিদের অব্যাহিতির আবেদন মানে আসামিরা প্রভাব খাটিয়েছে।’
মামলা সম্পর্কে সরোয়ার বলেন, ‘প্রথম মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট দেয় ৩০৬ ধারায়। সেখানে আসামিকে অব্যাহতির আবদেন করা হয়। তার বিরুদ্ধে আমরা নারাজি দিই এবং ফ্রেশ পিটিশন নিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমনে যাই। সেখান থেকে এই মামলা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯ (১) ধারা এবং ৩০২ ধারায় রেকর্ড করার জন্য দ্বিতীয়বার গুলশান থানাকে বলা হয়। পাশাপাশি পিবিআইকে তদন্তের ভার দেওয়া হয়। দ্বিতীয় মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধেও আমরা আপিল করেছি নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ২৮ ধারায়। আপিল গ্রহণের পর আমরা হাইকোর্টে শুনানির জন্য দিয়েছি।’
মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান বলেন, ‘আপনারা এখনও আমার বোনের হত্যা মামলা নিয়ে কাজ করছেন, এটা আমাদের জন্য আশীর্বাদ। তখন বিচার হয়নি। আমরা শুনানির জন্য অপেক্ষা করছি। আমরা আসামির ফাঁসি চাই।’
নুসরাতের স্বামী মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমার শ্যালিকা মুনিয়া হত্যার সঙ্গে যারা যারা জড়িত, সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
এদিকে মুনিয়া হত্যাকাণ্ডের মামলায় যেসব পুলিশ সদস্য কাজ করেছেন তাদের কেউ বর্তমানে সংশ্লিষ্ট থানায় দায়িত্বে নেই। এরপরও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ইউএনবির এ প্রতিবেদক। তবে তারা কেউই এ ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি হননি।
পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানজিনা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে। তিনি একদিন সময় নেন তথ্য দেওয়ার জন্য। তবে পরদিন যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আগে যারা ছিলেন তারা মুনিয়ায় ব্যাপারে কথা বলতে চান না।
আরও পড়ুন: মুনিয়া হত্যা মামলা: ষষ্ঠবারের মতো পেছালো তদন্ত প্রতিবেদন জমাদানের তারিখ
২ দিন আগে
মনপুরা দ্বীপে ধ্বংসযজ্ঞ: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জেগে ওঠার আহ্বান
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও ঝুঁকি মোকাবিলায় যখন আলোচনা চলছে কপ২৯ সম্মেলনে, তখন একটি নতুন গবেষণায় বাংলাদেশের উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপজ্জনক পরিণতি তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ধংসের দ্বারপ্রান্তে থাকা মনপুরা দ্বীপকে।
জয় ভৌমিক, হাসিব মো. ইরফানুল্লাহ, সামিয়া আহমেদ সেলিম এবং মোহাম্মদ বদরুদুজ্জামান পরিচালিত এই গবেষণায় দ্বীপের জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক এবং অর্থনৈতিক নয় এমন ক্ষতির বিষয়টিও উঠে এসেছে।
এসব ক্ষতি কমাতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের মধ্যে সহনশীলতা তৈরি করতে দ্রুত, প্রমাণভিত্তিক নীতিনির্ধারণের আহ্বান জানানো হয়েছে এই গবেষণার ফলাফলগুলোতে।
বাস্তুতন্ত্রের ক্ষয় ও এর প্রভাব
২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে পরিচালিত এ গবেষণা ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, লবণাক্ততার অনুপ্রবেশ এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতান্ত্রিক সেবার ওপর গুরুতর প্রভাব পড়েছে।
মানবীয় ব্যবস্থার বিপরীতে, বাস্তুতন্ত্রগুলোর এ ধরনের পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সক্ষমতা নেই; যা এই বাস্তুতন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীগুলোর জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে।
অর্থনৈতিক মূল্যায়নে দেখা গেছে, মনপুরা দ্বীপের পরিবারগুলো বছরে ২৮ থেকে ৪১৯ মার্কিন ডলার (প্রায় ৩,০০০ থেকে ৪৬,০০০ টাকা) পর্যন্ত ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। সেখানে ধান, মাছ, গবাদি পশু ও শস্যের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এসব ক্ষতি আরও বেড়ে যায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে। এটি ঝুঁকিপূর্ণ জীবিকা নির্বাহের ওপর আরও আঘাত হেনেছে।
তবে গবেষণায় কেবল আর্থিক ক্ষতির পরিমাপই করা হয়নি; এটি দ্বীপবাসীদের অর্থনৈতিক নয় কিন্তু গভীর এমন ক্ষতিও তুলে ধরেছে।
এর মধ্যে রয়েছে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি, নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধি, সামাজিক ভাঙন এবং মাটির উর্বরতা হ্রাস। এগুলো দ্বীপবাসীদের সাংস্কৃতিক পরিচয় ও মানসিক কল্যাণের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।
উপযোগী পদক্ষেপের আহ্বান
গবেষকরা বাস্তুতন্ত্রভিত্তিক অভিযোজনের মূল ভিত্তি হিসেবে মানবসম্পদ উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তারা ভবিষ্যতের ক্ষতি কমাতে এবং সহনশীলতা বৃদ্ধি করতে শিক্ষা, দক্ষতা, প্রশিক্ষণ ও জীবিকার বৈচিত্র্যকরণে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ হলো বাস্তব সময়ে ক্ষয়ক্ষতির দলিল রাখার জন্য ওয়েব-ভিত্তিক আইসিটি প্ল্যাটফর্মের উন্নয়ন। এসব সিস্টেম নীতিনির্ধারকদের জন্য কার্যকরী ডেটা প্রদান করবে, যা জলবায়ু হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি সৃষ্টি করতে সহায়তা করবে।
মনপুরা: গ্লোবাল মাইক্রোকোজম
বিশ্বজুড়ে অগণিত বিপদগ্রস্ত সম্প্রদায় যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে তাদের প্রতিনিধিত্ব করছে মরপুরা দ্বীপ। তাদের দুর্দশা জলবায়ু আলোচনায় অর্থনৈতিক নয় এমন ক্ষতিগুলোর অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে—এটি এমন একটি এলাকা যা প্রচলিত সামাজিকতায় প্রায়ই উপেক্ষিত।
লেখকরা উল্লেখ করেছেন ‘বাস্তুতন্ত্রের মূল্য বস্তুগত পণ্যকে ছাড়িয়ে যায়’। নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গবেষণায় বলা হয়েছে, তারা যেন একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেন; যা বাস্তুতান্ত্রিক সেবার সাংস্কৃতিক, আবেগীয় ও মানসিক মাত্রাগুলোকে স্বীকৃতি দেয়।
ভূমি ও ঐতিহ্যের ক্ষয়
বছরের পর বছর, মনপুরা উল্লেখযোগ্য বাস্তুতান্ত্রিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে:
ভূমি হ্রাস: দ্বীপটির আয়তন ১৯৭৩ সালে ১৪৮ বর্গ কিলোমিটার ছিল। ২০১০ সালের মধ্যে তা কমে মাত্র ১১৪ বর্গ কিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে। এর উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে।
মাটি ক্ষয়: ভারী বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়, ঝড়ের স্রোত ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে উপরিভাগের উর্বর মাটি উধাও হয়ে যাচ্ছে, যা কৃষি উৎপাদনশীলতা এবং জীবিকা নির্বাহকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে।
শস্যের ক্ষতি: রূপগত পরিবর্তন এবং মানুষের কার্যকলাপের কারণে ১৯৯০ সাল থেকে কৃষি জমির পরিমাণ ৩৮ শতাংশ কমে গেছে।
সাংস্কৃতিক ক্ষয়: দ্বীপটির অমূল্য ক্ষতিগুলোর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যহীনতা, মানসিক চাপ ও অস্তিত্বের সংকট, যা তার বাসিন্দাদের তাদের ঐতিহ্য থেকে আরও বিচ্ছিন্ন করেছে।
কপ২৯-এ বাংলাদেশের ভূমিকা
বাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। মনপুরা দ্বীপের দুর্দশা বাস্তব সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করছে।
ভৌমিক এবং তার সহকর্মীদের গবেষণায় জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে স্থানীয় বাস্তবতার ভিত্তিতে সমাধানের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
গবেষণার ফলাফলে বাস্তুতান্ত্রিক সেবার ভৌত ও অদৃশ্য উভয় দিকগুলোর সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে।
যেহেতু বিশ্বজুড়ে জলবায়ু সংকট প্রকট তাই সরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর জন্য সামনের সারিতে থাকা সম্প্রদায়ের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি।
গবেষকদের মতে, মনপুরার গল্পটি কেবল একটি সতর্কবার্তা নয়, এটি বাংলাদেশ ও এর বাইরেও টেকসই, ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যতের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান।
৪ দিন আগে
বাংলাদেশে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় পুঁজিবাজারে তেজিভাব
বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ফিরে আসায় গত কয়েক সপ্তাহে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় পুঁজিবাজারের লেনদেন হতে দেখা গেছে।
সম্প্রতি বন্ধ হওয়া প্রান্তিকে অনুকূল আয়সহ শেয়ারগুলোতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কারণে পুঁজিবাজারের বেঞ্চমার্ক সূচক টানা তিন সপ্তাহ ধরে তার লাভের ধারা বাড়িয়েছে।
স্থিতিশীলতায় সামষ্টিক পুনরুদ্ধারের লক্ষণ দেখিয়ে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এই সপ্তাহে ৮৯.৪৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৩৫৫ স্তরে পৌঁছেছে।
বিস্তৃত সূচকে শতকরা পরিবর্তন ছিল ১.৭০ শতাংশ। বাজারের অংশগ্রহণ ছিল ৮.৫৫ শতাংশ। বাজারটিতে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৫৫৪ কোটি টাকা।
ক্রমবর্ধমান খাদ্য মূল্যস্ফীতির প্রতিক্রিয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংক পণ্য আমদানি সহজীকরণ এবং প্রধান খাদ্য বরাদ্দ জোরদার করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ভোজ্য তেল, চিনি এবং ছোলার মতো প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে অস্থায়ীভাবে ঋণপত্র (এলসি) মার্জিন সরিয়েছে। দাম স্থিতিশীল রাখতে রমজান পর্যন্ত পণ্য আমদানিকারকদের ২৫ শতাংশ একক ঋণগ্রহীতার আবেদনের সীমা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এসব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ব্যয়বহুল ও পরিবেশগতভাবে ক্ষতিকর এলএনজি বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। আর ৫০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের এই প্রকল্পটি জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকিও তৈরি করছে।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে চায় সরকার: অর্থ উপদেষ্টা
এদিকে, নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর ওপর চাপ কমাতে জানুয়ারি মাস থেকে স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে এক কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য বিক্রির পরিকল্পনা করছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।
উল্লেখযোগ্য রেমিট্যান্স প্রবাহের কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংক্ষিপ্তভাবে ২০ বিলিয়ন ডলারের সীমা অতিক্রম করেছিল। তবে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নকে ১.৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পরে এই প্রান্তিকে রিজার্ভ কমে গেছে।
চলমান শ্রমিক অসন্তোষ সত্ত্বেও তৈরি পোশাক খাতের অক্টোবরের রপ্তানি আয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ২০ দশমিক ৬৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ইতোমধ্যে সৌদি আরব বাংলাদেশি নার্স নিয়োগ শুরু করেছে। যা আরও দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানির দিকে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।
তবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উচ্চাভিলাষী প্রকল্পটি ছোট করেছে। পরিবর্তে কাজ শেষ করার জন্য সুস্পষ্ট সময়সীমাসহ কয়েকটি অগ্রাধিকারযুক্ত অঞ্চলের উপর মনোনিবেশ করেছে।
মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার কঠোর মুদ্রানীতির প্রতিরক্ষা সত্ত্বেও ব্যবসাগুলো উচ্চ সুদের হারের সঙ্গে লড়ছে।
উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর জন্য বৈদেশিক সহায়তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সরকারি সংস্থাগুলো সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যর্থতার কারণে সরকার কাটছাঁটের কথা বিবেচনা করছে।
ব্যাংকিং খাতে একীভূতকরণ, অধিগ্রহণ ও পুনঃমূলধন সহজতর করতে 'ব্যাংক রেজুলেশন অ্যাক্ট' নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ব্যাংকিং, রাজস্ব আয় ও পুঁজিবাজার সংস্কারে সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্য
কৃষি উৎপাদনে সহায়তার জন্য সার আমদানিতে নগদ মার্জিন হার ন্যূনতম রাখতে ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এছাড়া, অর্থপ্রদানের ভারসাম্যে সাম্প্রতিক ব্যাঘাতের কারণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের কাছ থেকে বাজেট-সহায়ক ঋণ চাইছে। যাতে অর্থনীতির জন্য স্বাচ্ছন্দের সুযোগ তৈরি করা যায়।
গত তিন মাসে বাংলাদেশ প্রবাসীদের কাছ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রাজস্ব আদায়ে ঘাটতির কথা জানিয়েছে। যার ফলে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের ঋণ নেওয়া বেড়েছে।
অনলাইন কর পরিশোধেল জন্য নতুন ফি প্রবর্তন করা হয়েছে। যা কর প্রদাদের প্রক্রিয়াকে সহজ করবে।
জাপানের সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে এবং বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগের দ্বার উন্মুক্ত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই ইতিবাচক অগ্রগতি সত্ত্বেও পোশাক খাতে দেরিতে মজুরি দেওয়ার কারণে শ্রমিক অসন্তোষ একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ হিসাবে রয়ে গেছে।
রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে ৯০ দিনের ঋণে ১১টি পণ্য আমদানির অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) উল্লেখ করেছে যে, বাজেট-সহায়ক ঋণে সুইচ করা, রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং বহিরাগত অর্থায়ন বাধাগুলোর মধ্যে অর্থনীতির জন্য কিছুটা স্বস্থির জায়গা দেবে।
কৃষি উৎপাদন কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সার আমদানিতে নগদ অর্থের মার্জিন কম রাখতেও ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
একদিকে রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের ঘাটতি আর্থিক স্থিতিশীলতার উপর প্রভাব ফেলছে। অন্যদিকে বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের হার বেড়েছে।
তাছাড়া এসিইউ’র পাওনা পরিশোধের পর সম্প্রতি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে ভঙ্গুরতাকে তুলে ধরেছে। শ্রমিক অসন্তোষ সত্ত্বেও শক্তিশালী তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি আয় এবং সৌদি আরবে বাংলাদেশি নার্স নিয়োগ উচ্চ-দক্ষ শ্রম রপ্তানির দিকে একটি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রটি বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে কৌশলগত পদক্ষেপের মিশ্রণে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জাপানের সঙ্গে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা দেশের অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের জন্য নতুন সুযোগ দেবে।
এদিকে, পূর্ববর্তী উচ্চাভিলাষী ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্পের পরিবর্তে নির্বাচিত অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গুরুত্বারোপ, উন্নয়নের জন্য আরও লক্ষ্যযুক্ত পদ্ধতিকে তুলে ধরে।
পরিশেষে, বাংলাদেশ স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে কৌশলগত পদক্ষেপের মিশ্রণসহ একটি জটিল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে। এই যাত্রায় বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক চ্যালেঞ্জেরও সম্মুখীন।
আরও পড়ুন: সোম-মঙ্গল-বুধবার বন্ধ থাকবে ব্যাংক ও পুঁজিবাজার
৪ দিন আগে
চুয়াডাঙ্গায় রস সংগ্রহে খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত গাছিরা
পঞ্জিকা অনুযায়ী আরও এক মাস পর শীত শুরু। তবে পঞ্জিকার অপেক্ষায় তর সইছে না প্রকৃতির। গ্রাম-বাংলার মাঠে-ঘাটে শীতের আবহ শুরু হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার গ্রামে গ্রামে গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করতে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার গ্রামে গ্রামে খেজুরগাছ কাটার কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। আর কিছু দিন পর গাছ থেকে রস সংগ্রহের পর্ব শুরু হবে।
জমির আলী নামে একজন গাছি বলেন, খেজুর গাছ কাটা সহজ কাজ নয়। অনেক সময় গাছের ওপর থাকা অবস্থায় ভারসাম্য রক্ষা করাটাই কঠিন হয়ে যায়। তবে শীতের শুরুতে রস সংগ্রহ করে পরিবারের জন্য কিছু সঞ্চয় করতে পারলে সেই কষ্টটা সার্থক হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দীননাথপুর গ্রামের গাছি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘গাছের ডালপালা পরিষ্কার ও চাঁছা-ছিঁলার কাজ হয়ে গেছে। বাপের পেশা এখনও ধরে রেখেছি। এবার ৮০টি খেজুর গাছ চাঁছা-ছিঁলার কাজ হয়েছে। তারপর গাছে গাছে ঘাট কেটে রাখা হবে। শীতের শিশির যত বাড়বে ঘাট দিয়ে রস গড়িয়ে পড়তে শুরু করবে।’
তিনি আরও জানান, তার জমির আইলে নিজস্ব গাছ রয়েছে ৪০টি। আরও ৪০টি গাছ তিনি বর্গা নিয়েছেন। এ মৌসুমে দাম ভালো থাকলে এসব গাছ থেকে প্রায় দুই লাখ টাকার মতো গুড় বিক্রি করতে পারবেন।
চুয়াডাঙ্গার মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নের গাছি খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমরা পেশাগত কারণে প্রায় প্রতি বছরই খেজুরগাছ মালিকদের কাছ থেকে চার মাসের জন্য বর্গা নিয়ে থাকি। গাছ ভেদে ২ কেজি করে খেজুরের গুড় এবং ২৫০ টাকা দিতে হয় মালিকদের। এবারও প্রায় ১০০টি খেজুর গাছের জন্য মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করেছি। বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে না দিয়ে জীবন-জীবিকার জন্য এই পেশা ধরে রেখেছি। খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
আরও পড়ুন: খরায় কাঁচা মরিচের উৎপাদন কমে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা; বাজারেও সংকট
৫ দিন আগে
ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে গাজীপুর: গবেষণা
গত দুই দশকে অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়নের কারণে গাজীপুর বাংলাদেশের পরিবেশগত অবক্ষয়ের উদাহরণে পরিণত হয়েছে। এ সময় এ এলাকার ৬০ শতাংশ বন উজাড় এবং ৫০ শতাংশ জলাধার দখল করে অন্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
২০০০ সালের গাজীপুরের বনাঞ্চলের আয়োতন ছিল ৩৯ হাজার ৯৪৩ হেক্টর। ২০২৩ সালে তা কমে ১৬ হাজার ১৭৪ হেক্টরে নেমে এসেছে। অর্থাৎ তিন বছরে বনাঞ্চল কমেছে ৫৯.৫১ শতাংশ।
একই সময় জলাশয়ের আয়তন কমেছে ৫১.৪২ শতাংশ। ২০০০ সালে জলাশয় ছিল ১১ হাজার ৪৬২ হেক্টর। ২০২৩ সালে সেখান থেকে কমে ৫ হাজার ৫৬৮ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশন, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) সহযোগিতায় রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে 'গাজীপুর জেলার পরিবেশগত অবস্থা: পরিণতি ও ভ্রমণ' শীর্ষক এই গবেষণা পরিচালিত হয়।
মানদণ্ড অনুযায়ী ২০-২৫ শতাংশ বনাঞ্চল এবং ৭-১৪ শতাংশ জলাশয় রাখতে হবে। কিন্তু গাজীপুরে এখন মাত্র ৯.৪৯ শতাংশ বনভূমি এবং ৩.২৭ শতাংশ জলাশয় রয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজীপুরে বিপুল সংখ্যক মানুষ গ্রাম থেকে শহরাঞ্চলে এসে বসবাস করছে। এ কারণে শহুরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১০.৫১ শতাংশ, যেখানে গ্রামীণ জনসংখ্যা ২.০৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
মূলত শিল্পভিত্তিক কর্মসংস্থানের কারণে মানুষ গ্রাম ছেড়ে শহরমুখী হয়েছে। এখন কর্মক্ষম বয়সের জনসংখ্যার ৬১.৫২ শতাংশ বিভিন্ন শিল্প কারখানায় কর্মরত।
২০০০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে শিল্পাঞ্চলের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।
শিল্প কারখানার এই বৃদ্ধি বন ও জলাশয় দখলের অন্যতম কারণ। একই সঙ্গে দূষণের মাত্রা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
আরও পড়ুন: জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচার বন্ধ করতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
২০০০ সালে জেলার জমির ২৩.৪৪ শতাংশ বনাঞ্চল, ৬.৭৩ শতাংশ জলাশয়, ৫০.২১ শতাংশ বসতি, ৫.২১ শতাংশ শিল্প এলাকা, ১০.২১ শতাংশ কৃষি এলাকা এবং ৩.১৯ শতাংশ খোলা জায়গা ছিল।
২০২৩ সালের মধ্যে, এসব পরিসংখ্যানে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন দেখা যায়। এ সময় বসতি এলাকা ৬৫.৮৩ শতাংশ এবং শিল্প অঞ্চলগুলো ৮.৭৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছিল। এর বিপরীতে বনাঞ্চলের পরিমাণ কমেছে ৯.৪৯ শতাংশ, জলাশয় ৩.২৭ শতাংশ, কৃষি এলাকা ১১.৯২ শতাংশ এবং উন্মুক্ত স্থান ০.৭৭ শতাংশ।
গত দুই দশকে গাজীপুরে অনিয়ন্ত্রিত উন্নয়নের কারণে প্রায় ২৩ হাজার ৭৬৯ একর বা ৫৯ দশমিক ৫ শতাংশ বনাঞ্চল বিলীন হয়ে গেছে।
গাজীপুরের বাস্তুতন্ত্র ও অর্থনীতির জন্য অপরিহার্য নদ-নদী, খাল, জলাভূমি দূষণ ও দখলের কারণে মারাত্মক হুমকির মুখে।
গবেষণায় তুরাগ, লাবান্দা, টঙ্গী, মোগর ও চিলাই নদীসহ প্রধান জলাশয়গুলোতে ২৪৭টি প্রধান স্থান দখল এবং ১৬১টি সক্রিয় দূষণ পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে।
তুরাগ নদী মার্কাস বিল থেকে আসা শিল্পবর্জ্যের কারণে মারাত্মকভাবে দূষিত হয়েছে। আর লাবন্দা নদী প্লাস্টিক প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, ১৫টি পৌরসভার বর্জ্য লাইন এবং ৩৯টি দৃশ্যমান শিল্প বর্জ্য লাইনের কারণে বর্জ্যে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে।
জবরদখলের কারণে মোগর খালেও ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। প্রাথমিকভাবে বাণিজ্যিক কার্যক্রম এবং মাটি ভরাটসহ ৩৪টি ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
তুরাগ নদীর তীরে অবৈধ ইটভাটার কারণে দূষণ ও দখল বেড়েছে এবং পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে।
এদিকে, কৃষিকাজ ও মাছ ধরার মতো ঐতিহ্যবাহী জীবিকা ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখোমুখি।
গবেষণায় গাজীপুরের পরিবেশগত সংকট মোকাবিলায় পৌর ও জাতীয় কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
আরও অবক্ষয় রোধ করতে এবং জেলার প্রাকৃতিক ভারসাম্য পুনরুদ্ধারের জন্য শক্তিশালী পরিবেশগত নীতি এবং তার কার্যকরী প্রয়োগ ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র ও পরিবেশ সুরক্ষায় নিরপেক্ষ-নির্ভীক সাংবাদিকতা অপরিহার্য: রিজওয়ানা হাসান
৫ দিন আগে
ব্যাংকে তারল্য সংকট: টাকা উত্তোলনে ভোগান্তিতে ৬ ব্যাংকের গ্রাহক
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের (এসআইবিএল) সাভার শাখা থেকে রেমিট্যান্সের অর্থ উত্তোলনের চেষ্টা করেছিলেন ৭৩ বছর বয়সি সাদেকুর রহমান।
গত ২৪ অক্টোবর বাবা-মায়ের চিকিৎসাসহ সংসারের খরচের এক লাখ টাকা পাঠান সাদেকুরের ছেলে রইসউদ্দিন।
১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সাদেকুর তিন কিস্তিতে ৩৫ হাজার টাকা উত্তোলন করতে সক্ষম হন।
মুঠোফোনে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে সাদেকুর বলেন, সংসারের খরচ মেটাতে কমপক্ষে ৭০ হাজার টাকা তুলতে হবে। কিন্তু এসআইবিএল নগদ অর্থের তীব্র সংকটে থাকায় ব্যাংক কর্মকর্তারা কয়েক কিস্তিতে টাকা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন: সঞ্চয়পত্রের সঙ্গে সংযুক্ত ব্যাংক পরিবর্তন করে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরের উপায়
এমন অভিজ্ঞতা শুধু সাদেকুরের নয়, এস আলম গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত সংকটাপন্ন ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ খেলাপিঋণের কারণে তাদের অনেক গ্রাহক জমা অর্থে পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঋণগ্রহীতারা আত্মগোপনে চলে গেছেন এবং তহবিলের অব্যবস্থাপনার কারণে তাদের ব্যবসা ‘দুর্বল’ হয়ে পড়েছে।
এসআইবিএলের সাভার শাখার কর্মকর্তা আবুল হোসেন (ছদ্মনাম) ইউএনবিকে বলেন, অনেক আমানতকারী তাদের পুরো ব্যালেন্স তুলে নিতে চাচ্ছেন। এ কারণে ব্যাপক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে এ ব্যাংক।
তিনি বলেন, এই শাখায় ৮৭ কোটি টাকার আমানত রয়েছে। যদি এক-তৃতীয়াংশ আমানতকারীও স্বল্প সময়ের নোটিশে অর্থ উত্তোলনের চেষ্টা করেন, তবে তা যেকোনো ব্যাংকের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী জমা করা অর্থ দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন ঋণে বিনিয়োগ করা হয়।
আরও পড়ুন: বেক্সিমকো গ্রুপে রিসিভার হলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ইডি
হোসেন আরও জানান, তারা আমানতকারীদের অল্প পরিমাণে নগদ অর্থ সরবরাহ করছেন এবং তাদের অর্থ কিস্তিতে ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
সম্প্রতি নগদ অর্থের প্রচলন কমলেও ঋণের কিস্তি নিয়মিত করে তা পুনরুদ্ধার করতে কাজ করছে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে তারল্য সহায়তা পেতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টির আওতায় ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক (এফএসআইবি), গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকার তারল্য সহায়তা পেয়েছে।
তা সত্ত্বেও আমানতকারীরা এসব ব্যাংকের শাখা, প্রধান কার্যালয় ও এটিএম বুথে ভিড় জমাচ্ছেন। কিন্তু অনেক সময় তারা প্রয়োজনীয় অর্থ উত্তোলন করতে পারেন না।
ন্যাশনাল ব্যাংক ছাড়াও তারল্য সংকটে থাকা অন্য ব্যাংকগুলোর পর্ষদে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণকারী অংশীদারত্ব রয়েছে।
আরও পড়ুন: মূল্যস্ফীতি রোধে নীতি সুদহার ১০ শতাংশ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক
ঋণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এস আলম গ্রুপের নিয়েছে এবং এসব অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। ফলে ঋণগুলো খেলাপি হয়ে যায়। এতে করে এস আলম গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকের চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট পরিমাণ নগদ ঘাটতি রয়েছে।
এসআইবিএলের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ফোরকানুল্লাহ ইউএনবিকে বলেন, নগদ অর্থের চাহিদা মেটাতে তাৎক্ষণিক তারল্য সমাধানের ব্যবস্থা করতে ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতা নিচ্ছে।
ব্যাংকটি গত দুই মাসে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ঋণের কিস্তি ও আমানত সংগ্রহ করেছে। এটি এসআইবিএলের নগদ প্রবাহকে ত্বরান্বিত করেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসআইবিএল বর্তমানে আমানতকারীদের প্রয়োজন অনুযায়ী নগদ চাহিদা পূরণ করছে। কিন্তু একাধিক গ্রাহক একসঙ্গে টাকা তোলার চেষ্টা করায় কিছু শাখায় সমস্যা হচ্ছে।
ফরানউল্লাহ আরও বলেন, 'এ সমস্যা সম্পর্কে সবাই সচেতন, তবে গ্রাহকরা যদি তাদের তাৎক্ষণিক প্রয়োজনের বাইরে নগদ উত্তোলন অব্যাহত রাখেন তবে এটি দীর্ঘায়িত হবে। স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরলে আমানতকারীরা তাদের টাকা পাবেন ব্যাংক।’
আরও পড়ুন: মূল্যস্ফীতি কমাতে ৮ মাস লাগবে: বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর
এফএসআইবির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে তারল্য সহায়তার পর স্বাভাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পুনরায় চালু হয়েছে।
বোর্ড পুনর্গঠনের পর থেকে ব্যাংকটি সফলভাবে ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে যথেষ্ট তহবিল পুনরুদ্ধার করেছে বলে জানান তিনি।
এফএসআইবির চেয়ারম্যান বলেন, এফএসআইবি গ্রাহকদের মৌলিক চাহিদা, জরুরি চিকিৎসা, জরুরি পরিস্থিতি এবং রেমিট্যান্স এনক্যাশমেন্ট পূরণের জন্য ঋণ পরিশোধকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
পর্যায়ক্রমে বড় আমানতকারীদের ঋণ পরিশোধেও কাজ করছে ব্যাংকটি।
ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ইউএনবিকে বলেন, গ্রাহকদের অর্থ দিচ্ছে ব্যাংক, যদিও বড় অংকের উত্তোলন প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা হবে।
আরও পড়ুন: ৭ ব্যাংককে ৬৫৮৫ কোটি টাকার তারল্য সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক
তিনি বলেন, এসব সমস্যা রাতারাতি তৈরি হয়নি, বেশ কয়েক বছর ধরে তৈরি হয়েছে।
আমানতকারীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে মিন্টু বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকের অবস্থার উন্নতি হবে।
৫ দিন আগে