বিশেষ-সংবাদ
চাঁদপুরের হাইমচরে তৈরি হচ্ছে জামদানি শাড়ি
শাড়িতে নারী। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাঙালি নারীদের বসনে বিভিন্ন ধরনের পোশাক জড়ালেও শাড়ি এখনো পছন্দের শীর্ষে। এর মধ্যে বেনারসি, কাতান, জামদানি, মসলিন, সিল্ক অন্যতম। তবে এসব শাড়ি তৈরির জন্য গড়ে উঠেছে শিল্প ও কারখানা। তবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পেও এসব শাড়ির কোনো কোনোটির উৎপাদন হয়ে থাকে দেশে।
চাঁদপুর হাইমচরের এক উদ্যমী যুবক রনি পাটওয়ারী। তিনি প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিজ বাড়িতে জামদানি শাড়ি তৈরি করছেন। তার এই উদ্যোগ উপজেলায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
উপজেলার ৩ নম্বর দক্ষিণ আলগী দুর্গাপুর ইউনিয়নের নিভৃত পল্লী পশ্চিম চর কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা রনি পাটোয়ারী। নিজ এলাকা ছাড়িয়ে এই জামদানি শাড়ি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে মরিয়া এই উদ্যোক্তা।
সরজমিনে দেখা যায়, ‘নিজের একটি দো'চালা টিনের ঘরে ক্ষুদ্র পরিসরে জামদানি শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। উদ্যমী যুবক রনি।
রনির বাবা বিল্লাল পাটওয়ারী ইউএনবিকে বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে পারিবারিক অভাব-অনটনে পড়ে রনি হাইমচর ছেড়ে পাড়ি জমায় নারায়ণগঞ্জে। সেখানে ২০ বছরে নানান প্রতিষ্ঠানে কাজ করে ধীরে ধীরে জামদানি কাপড় বুনার অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও নিপুনতা রপ্ত করেন। পরে নিজ গ্রামে ফিরে উদ্যোক্তা হয়ে উৎপাদন করতে থাকেন জামদানি শাড়ি। এখন নিজ ক্ষুদ্র শিল্প নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভাবের তাড়নায় প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখা বেশি এগোতে পারেননি তিনি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও এখন এই শাড়ি তৈরি বা বুনা ও বিক্রি করে সংসার চালিয়ে নিচ্ছেন রনি। ছেলের এই দক্ষতা ও উদ্যোগে নিজেদের অনেক আনন্দের কথা হাসিমুখে জানালেন বৃদ্ধ বাবা বিল্লাল।
রনির মা সালমা বেগম ও বাবা বলেন, সুতা, নাটাই, কাঠের ফ্রেম, সিজার, কেচিসহ নানা যন্ত্রপাতি দিয়ে একা হাতে এক একটি জামদানি তৈরি করতে রনির ৩ থেকে ৪ দিন সময় লেগে যায়। তাই নানা প্রান্ত থেকে শাড়ির অর্ডার আসলেও তা তাদের হাতে তুলে দিতে ওর সময় লেগে যাচ্ছে।
জামদানি শাড়ি তৈরির উদ্যোক্তা রনি পাটওয়ারী ইউএনবিকে বলেন, এ কাজটিতে আরও অনেকের কর্মসংস্থান তৈরির প্রত্যাশা রয়েছে তার। এজন্য প্রয়োজন সরকারি ও বেসরকারি সাহায্য সহয়তা। যদি তারা সহযোগিতায় এগিয়ে আসতো, তাহলে এখানে আরও অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হতো।
২৮৮ দিন আগে
সুন্দরবনে নদী ভাঙনে কমছে বনভূমি, পদক্ষেপের ঘাটতি
নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে সুন্দরবনের বনভূমি। এতে যেমন কমছে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনটির ভূমি, তেমনি বিলীন হচ্ছে বনভিবাগের জেটি ও অন্যান্য স্থাপনাও। এতে করে অফিস ব্যারাক ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন বনরক্ষীরা। প্রতিনিয়ত বাড়ছে হুমকি।
সম্প্রতি বনের ৯টি স্থানের ভাঙন ঠেকাতে গত সেপ্টেম্বরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তা চেয়েছিল পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ। বগি ফরেস্ট অফিসের সামনে ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেললেও তাতে তেমন কোনো কাজ হয়নি।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েক বছর ধরে সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। বেশ বড় এলাকা ও গাছপালা বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদীতে। বিশেষ করে দুবলা ফরেস্ট অফিসের জেটি, খাবার পানির একাধিক পুকুর, অফিস ভবন, মেহেরআলী চরের সাইক্লোন শেল্টার ও মিষ্টি পানির পুকুর সাগরে বিলীন হয়েছে। সাগরে বিলীন হয়েছে কটকার পুরাতন রেস্ট হাউস ভবন ও জেটি। বগি ফরেস্ট অফিসের দোতলা ভবন নদীতে বিলীন হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এছাড়াও অনেক স্থানে অফিস ও পুকুর নদীতে বিলীন হওয়ার পথে।
জানা যায়, বনের ৯টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এগুলো হলো—কচিখালী অভয়ারণ্যকেন্দ্র, কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্র, চান্দেশ্বর টহল ফাঁড়ি, জেলেপল্লী দুবলা টহল ফাঁড়ি, বগি ফরেস্ট স্টেশন, ঝাপসি টহল ফাঁড়ি, জোংড়া টহল ফাঁড়ি, করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্র ও শুয়ারমারা টহল ফাঁড়ি। এসব ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন: নদী ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যক্রম শুরু হবে: পানিসম্পদ উপদেষ্টা
সুন্দরবনের প্রধান পর্যটন স্পট কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্টার সোয়েবুর রহমান সুমন ইউএনবিকে বলেন, সাগরের ভাঙনে কটকার বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল সাগরে বিলীন হচ্ছে। ক্রমাগত বনভূমি ভেঙে কমছে বনভূমি। অনেক গাছপালা সাগরে বিলীন হয়েছে। কটকার পুরাতন রেস্টহাউস ভবন সাগরে চলে গেছে। তাছাড়া সুন্দরবনের গহিনে অনেক জায়গা নদী ও খালে বিলীন হয়েছে। কটকার ফরেস্ট অফিস এখন ভাঙনের মুখে বলেও জানান এই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
২৮৯ দিন আগে
চান্দিনায় আশ্রয়ণের এক তৃতীয়াংশ ঘরে নেই ভূমিহীন, বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ
ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের আবাসন নিশ্চিত করতে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় কুমিল্লার চান্দিনায় নিমার্ণ করা অনেক ঘরের বরাদ্দ নিয়ে কেউ থাকছেন না। অভিযোগ আছে, বরাদ্দের সময় বিভিন্ন মহলের তদবিরে কিছু সংখ্যক মানুষ ঘর বাগিয়ে নিয়েছেন। ফলে বঞ্চিত হয়েছেন প্রকৃত ভূমিহীনরা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিত্যক্ত ওইসব ঘরে এখন মানুষের পরিবর্তে কোথাও লাকড়ির স্তুপ আবার কোথাও রয়েছে হাঁস-মুরগী! কেউ আবার ঘরের বৈদ্যুতিক তারসহ গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম নিয়ে হয়েছন উধাও। বরাদ্দকৃত ঘরের এক তৃতীয়াংশই এখন ফাঁকা পড়ে আছে। এমতাবস্থায় তাদের বরাদ্দ বাতিল করে প্রকৃত গৃহহীনদের নামে বরাদ্দ দিতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: ড্যাপ ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় সংশোধন চান আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৮ সালে টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ হাতে নেয়। ওই কর্মসূচির আওতায় সরকারি খাস জমিতে নির্মাণ করা হয় দৃষ্টিনন্দন পাকা ঘর। এসব ঘরে সংযুক্ত শৌচাগাড় সুবিধা এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হয়। জমির বন্দোবস্তসহ আশ্রয় দেওয়া হয় গৃহহীনদের।
ওই কর্মসূচির আওতায় কুমিল্লার চান্দিনায় পাঁচ ধাপে উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের ভোমরকান্দি, কেরণখাল ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া, বাড়েরা ইউনিয়নের বাড়েরা, মহিচাইল ইউনিয়নের অম্বরপুর গ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে ২১৬টি গৃহ নির্মাণের মধ্য দিয়ে প্রতিটি ঘরে গৃহহীনদের আবাসন নিশ্চিত করা হয়। কিন্ত পরবর্তীতে ওই ঘরগুলোর অকেগুলোতে থাকছেন না অনেক পরিবার। ঘর বরাদ্দপ্রাপ্ত সুবিধাভোগীরা কেউবা কর্মের তাগিদে পরিবার নিয়ে শহরে থাকেন, আবার কেউবা ঘর বরাদ্দ নিয়ে পূর্বের ঠিকানায় ফিরে গেছেন। এর আগে বরাদ্দ পেতে রাজনৈতিক বিবেচনায় তদবির, উপজেলা প্রশাসনের দপ্তরের চাকুরির সুবাদে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সুপারিশ, আবার কেউ কেউ টাকার বিনিময়ে বরাদ্দ নেন ওইসব ঘরের।
উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের ভোমরকান্দি গ্রামের খাস জমিতে একত্রে ৪০টি ঘর নির্মাণ করে সেখানে ৪০টি পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হয়। গত শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে সরজমিনে দেখা যায়, সেখানকার ৫, ৭, ১১, ১৪, ২৪, ২৯, ৩০, ৩৫, ৩৬ ও ৪০নম্বর ঘরগুলোর কোনোটিতে তালা ঝুলছে, আবার কোনটির দরজা খোলা ফেলেই চলে গেছে বরাদ্দপ্রাপ্তরা। তালাবদ্ধ ঘরগুলোর কোনটির সামনে রয়েছে পাশের ঘরের বাসিন্দাদের লাকড়ি ও পাতার স্তুপ। আর দরজা খোলা রেখে ফেলে যাওয়া ঘরগুলোর ভিতরে রয়েছে পাশের ঘরের বাসিন্দাদের লাকড়ি, খড়কুটো। আবার কোনোটিতে হাঁস মুরগি পালন করা হচ্ছে। সেখানকার ৪০ নম্বর ঘরটি যার নামে বরাদ্দ ওই ব্যক্তি ঘর বরাদ্দ পাওয়ার কয়েকদিন পর ঘরের বৈদ্যুতিক তারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খুলে নিয়ে গেছে। কোনো কোনো ঘরে দুই বছরেও কোন মানুষ বসবাস না করায় বকেয়া বিলের দায়ে বৈদ্যুতিক লাইন বিচ্ছিন্ন করেছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। আবার কোনো ঘরে একদিনও বৈদ্যুতিক আলো না জ্বলায় দুই বছরে মিটার রিডিং শুন্যের কোঠায়!
রবিবার (৯ মার্চ) উপজেলার কেরণখাল ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে এক সঙ্গে ৩০টি গৃহ নির্মাণ করে সেগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়। বর্তমানে সেখানে ১৬টি পরিবার স্থায়ীভাবে বসবাস করলেও ১০টি পরিবারের কোনো খোঁজ নেই। ৪টি ঘরে প্রকৃত বরাদ্দপ্রাপ্তর না থাকলেও বাস করছেন অন্যরা।
আরও পড়ুন: সংশোধিত ড্যাপ বাতিলের দাবি আবাসন ব্যবসায়ীদের, আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে মনে করছেন পরিকল্পনাবিদরা
অভিযোগ রয়েছে উপজেলা প্রশাসনে অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকুরি করার সুবাদে লাইলি বেগম ঘর বরাদ্দ নিয়ে এ পর্যন্ত ওই ঘরে বসবাস করেননি। সুবিধাভোগী রিকশাচালক সুজন ঘর বরাদ্দ নিয়ে একদিনও থাকেনি।
লাইলি বেগম জানান, আমি মাঝে মধ্যে ওই ঘরে যাই। আর আমার মামার বাড়ি চান্দিনা উপজেলা সদরের মহারং গ্রামে, বেশির ভাগ সময় সেখানেই থাকি।
একই দিন শুহিলপুর ইউনিয়নের শুহিলপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় ৮টি ঘরের মধ্যে ১টিতে বাসিন্দা নেই। ঘর বরাদ্দ পাওয়া বিমল শুরু থেকেই থাকছেন ওই ঘরে। অম্বরপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ২৫ ঘরের মধ্যে ৯টি ফাঁকা পড়ে আছে।
ভোমরকান্দি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ওসমান গণি জানান, সে সময়ে ঘরগুলো এলোমেলোভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এক গ্রামের বা এক ইউনিয়নের বাসিন্দাকে অন্য গ্রামে অন্য ইউনিয়নে ঘর দেয়। যে কারণে অনেকেরই কোনো কাজ কর্ম নেই। এখানে অনেকে কর্ম না পেয়ে বাধ্য হয়ে অন্যত্র চলে গেছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের একাধিক বাসিন্দা জানান, সে সময়ে (যখন ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়) চেয়ারম্যান মেম্বারসহ রাজনৈতিক নেতাদের সুপারিশে অনেক ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। যাদের বাড়িতে জায়গা আছে, বা যারা চান্দিনাতে থাকেন না—এমন লোকদেরকেও ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওইসময়ে প্রকৃত ভূমিহীন অনেকেই ঘর বরাদ্দ পায়নি। বর্তমানে সবগুলো ঘর যাচাই-বাছাই করে যারা ঘরে থাকছে না বা যাদের নিজস্ব জায়গা থাকার পরেও ঘর বরাদ্দ নিয়েছেন— তাদের বরাদ্দ বাতিল করে প্রকৃত ভূমিহীনদের তালিকা করে ঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়ার অনুরোধ জানান তারা।
আরও পড়ুন: গণভবনে জাদুঘরের পাশাপাশি শহীদদের পরিবারের আবাসনের প্রস্তাব পার্থর
২৯০ দিন আগে
পুতিন কি রাজি হবেন এক মাসের যুদ্ধবিরতিতে?
যুদ্ধবিরতিতে ইউক্রেন সম্মতি দেওয়ার পর এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে রাশিয়া। যদিও ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া বর্তমানে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। এখন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কী যুদ্ধবিরতিতে সায় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির সুযোগটি কাজে লাগাবেন, নাকি প্রত্যাখ্যান করবেন?
সৌদি আরবের জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এক মাসের একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ইউক্রেন। এরপরে রাশিয়াকেও একই প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শেষে জানিয়েছেন, শিগগিরই রাশিয়া-ইউক্রেনকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব দেওয়া হবে।
এরইমধ্যে ইউক্রেন এ প্রস্তাবের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে উল্লেখ করে রুবিও বলেন, যদি রাশিয়াও শান্তির হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে এতদিনের চলমান যুদ্ধ বন্ধ হতে খুব বেশি দেরি নেই। কিন্তু রাশিয়া যদি এ প্রস্তাব মেনে না নেয়, তাহলে শান্তি আলোচনায় অনিশ্চয়তা দেখা দেবে বলে মত দেন তিনি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, যুদ্ধ বিরতিতে রাশিয়ার রাজি হওয়া না-হওয়া বহুমুখী হিসাব-নিকাশের ওপর নির্ভর করছে।
চলতি বছর জানুয়ারি অবধি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাফ জানিয়ে এসেছেন, কোনো ধরনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার আগ্রহ তার নেই। যদি শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতেই হয়, সেটি হতে হবে স্থায়ী সমাধান।
বর্তমানে যুদ্ধে অনেকটাই কোণঠাসা ইউক্রেন, রাশিয়ার সেনারা ভালো অবস্থানে রয়েছে। তাছাড়া পুতিন বারংবার বলেছেন, সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা শক্তি সঞ্চয়ের সুযোগ পাবেন। এই পরিস্তিতিতে পুতিন কি ট্রাম্পের মন রাখবেন, নাকি যুদ্ধ চালিয়ে ইউক্রেনে জয়ের পথেই হাঁটবেন তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই।
মূলত, জানুয়ারির ২০ তারিখ ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেয়ার পর পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টে গেছে। বিশেষ করে ১২ ফেব্রুয়ারি পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের একান্ত ফোনালাপ এবং এরপর একের পর এক রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মার্কিনিদের বৈঠকই চলমান যুদ্ধের আশু সুরাহার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন কূটনীতিবিদরা।
তবে রাশিয়ার পদক্ষেপ এখনও স্পষ্ট করে বোঝা যাচ্ছে না বলে মনে করেন তারা। সৌদিতে বৈঠকের পর বেশ কৌশলের সঙ্গেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ক্রেমলিন। ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে কি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে বিস্তারিত না জেনে কোনো মন্তব্য জানানো হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে চায় না বলেই রাশিয়া এমন কৌশলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: মুখোমুখি বসবেন ট্রাম্প-পুতিন, চলছে প্রস্তুতি
রুশ-মার্কিনিদের সাপে-নেউলের সম্পর্কের বাইরে গিয়ে ট্রাম্প-পুতিন সখ্য কিন্তু বিশ্ব পাড়ায় মোটেই অজানা নয়। তবে এই সখ্যই সব নয়: এর বাইরে আছে ইউক্রেনের খনিজের প্রতি ট্রাম্পের চোখ আর কিয়েভের ভূমির ওপর পুতিনের লোভ।
শেষ কদিনের যুদ্ধে ভালোই এগিয়েছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ শহর কুরুস্কের বেশিরভাগ এলাকা এখন রাশিয়ার দখলে। দর কষাকষিতে কুরুস্ককে নিজেদের হাতে রাখতে চান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে দিনদিন তা কঠিন হয়ে উঠছে তার সৈন্যবাহিনীর জন্য।
আবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভেন্স এবং খোদ ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নজিরবিহীন বাকবিতণ্ডা এবং পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রকে অসম্মান করার অভিযোগ নিয়ে আমেরিকা ত্যাগের মতো ঘটনা এতদিন জেলেনস্কিকে ভালোই ভুগিয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনকে সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, শান্তি চুক্তির প্রতি যতদিন না আগ্রহ দেখাবে ইউক্রেন, ততদিন বন্ধ থাকবে সব ধরনের সামরিক সহযোগিতা। নিজের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদেই বর্তমান বাস্তবতাকে মেনে নিতে হচ্ছে জেলেনস্কির।
কিন্তু পুতিন কেন আপস করবে? বাইডেন প্রশাসনের সময়ে হাজারখানেক নিষেধাজ্ঞার ভারেও নতজানু না হওয়া পুতিন কেন এত সহজে রাজি হবে যুদ্ধবিরতিতে?
এ প্রশ্নের উত্তর মিলবে নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি এস পেশকভের সাক্ষাৎকারে। পেশকভ জানিয়েছেন, জেদ্দার আলোচনার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়ও পর্যবেক্ষণ করছে মস্কো। এখনি হলফ করে কিছু বলা না গেলেও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের আরেক দফা ফোনালাপের পর রাশিয়া নিজের সিদ্ধান্ত জানাতে পারবে।
প্রথমবার ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপে রাশিয়ার ইতোমধ্যে দখলকৃত ইউক্রেনের ভূমি নিয়ে ফয়সালা, কোনোভাবেই ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদান করতে না দেওয়ার ওয়াদা এবং পূর্ব-মধ্য ইউরোপে ন্যাটোর হম্বিতম্বি কমিয়ে আনার ব্যাপারে পুতিন জোরালো দাবি তুলেছেন বলে জানা যায়।
চলতি সপ্তাহেই ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আবারও পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ করবেন তিনি। বার্তাসংস্থা এপির নিশ্চিত করা এই তথ্য থেকেই চূড়ান্ত দর কষাকষির আভাস পাচ্ছেন কূটনীতিক বিশ্লেষকরা।
এর আগে ট্রাম্প বেশ কয়েকবার তার বক্তব্যে আভাস দিয়েছেন, এই চুক্তিতে ইউক্রেনকে ছাড় দিতে হবে। এতদিন ইউক্রেন ছাড় দিতে রাজি না থাকলেও এবার বাধ্য হয়েই আপসের পথে হাঁটতে হতে পারে দেশটি।
রুশ রাজনৈতিক বিশ্লেষক এলিয়া গ্রাশ্চিনেকভ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সাদা চোখে এই চুক্তিতে কারও বিজয় হয়নি মনে হলেও রাশিয়া কৌশলগত বিজয় নিশ্চিত করেই চুক্তি স্বাক্ষরে সম্মতি দেবে।’
রাশিয়া কৌশলগত বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এ কথা উঠে এসেছে মস্কোর সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনেও। বলা হয়েছে, রুশ প্রতিনিধিরা জেদ্দায় না থাকলেও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ প্রধান জন র্যাটক্লিফ নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন রুশ প্রশাসনের সঙ্গে।
উপরন্তু ট্রাম্পের প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ গত মাসেও রাশিয়ায় পুতিনের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা শেষে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরেছেন এবং আগামীতেও তার রাশিয়া সফরের সম্ভাবনা রয়েছে।
এখানে একটা বিষয় লক্ষ্য করার মতো তা হলো, এই পুরো আলোচনায় ইউরোপকে তোয়াক্কাই করছে না ট্রাম্প প্রশাসন।
ইউরোপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের ঘটনায় ইতোমধ্যে দুই ভূখণ্ডের সম্পর্ক অনেকটাই শীতল। ন্যাটো নিয়েও ট্রাম্প খুশি না; শপথ নিয়েই দাবি জানিয়েছেন ন্যাটোর বাজেট বাড়ানোর। আবার ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও তার উপদেষ্টা ইলন মাস্কও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাটো থেকে বের হয়ে যাওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: ওভালকাণ্ড: পুতিনের পৌষমাস, জেলেনস্কির সর্বনাশ!
এদিকে ডেনমার্কের থেকে গ্রিনল্যান্ড আদায় চেষ্টার ইস্যুতেও ইউরোপের সঙ্গে কয়েক দফা মন কষাকষি হয়েছে ট্রাম্পের। সব মিলিয়ে ইউরোপ-আমেরিকার ঐতিহাসিক সম্পর্ককে ভেঙে রাশিয়ামুখী হওয়াকে খোদ যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কংগ্রেস সদস্য ভালো চোখে না দেখলেও, এটাই এখন বাস্তব।
এই বাস্তবতার ভিতকে পুঁজি করেই রুশ কূটনৈতিক বিশ্লেষক স্যামুয়েল শ্যারাপ বলেন, ‘ওয়াশিংটনের সঙ্গে বর্তমানে মস্কোর সম্পর্ক যেকোনো সময়ের তুলনায় ভালো। ট্রাম্প-পুতিনের মধ্যকার উষ্ণতার বিচার-বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায়, যে যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছে তা মস্কো মেনে নিলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।’
শুরুতে সাময়িক যুদ্ধবিরতি দিয়ে যুদ্ধ বন্ধের পথ রচিত হলেও পরবর্তীতে হয়তো এই এক মাসের যুদ্ধবিরতিই স্থায়ী যুদ্ধ বন্ধের সূচনা করবে এবং তিন বছর ধরে চলা এই সংঘাতের অবসান হবে বলে মত আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক।
২৯০ দিন আগে
জাবিতে বসন্তের আগমন, প্রকৃতিতে স্নিগ্ধতার ছোঁয়া
‘পূর্ণিমা রাতে ঐ ছোটাছুটি করে কারা? দখিনা পবনে দোলে, বসন্ত এসে গেছে!’ জানালা ভেদ করে সূর্যের আলোকচ্ছ্বটা প্রবেশ করছে কক্ষে। পাখপাখালির কলতানে মুখরিত চারপাশ। শীতের আড়মোড়া ভেঙে, রুক্ষতা বিদায় করে, ফুলের সুবাসে, কোকিলের মিষ্টি মিহি সুরে ঘুম থেকে জেগে ওঠা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলো জনমানবশূন্য। শুষ্কতার আবেশে ঘোর রিদ্যতা। চারিদিকে শুনশান, নীরব-নিস্তব্ধতা।
আপন নীড়ে ফিরে গেছে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আগত পরিব্রাজক পাখিরা। গাছে গাছে নতুন পাতা গজিয়েছে। সবুজের সমারোহ প্রাণ খুলে হাসতে শুরু করেছে। প্রকৃতি যেন তার রূপের ডালি মেলে জগৎবাসীকে জানান দিচ্ছে—শীতের ইতি ঘটেছে, ঋতুরাজ বসন্ত এসেছে।
বসন্তের শুরুতে রূপ-লাবণ্যের সবটাই যেন প্রকৃতিপ্রেমীদের উজাড় করে দেয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলা-নিকেতন, মায়ার নগরী, বাসন্তী রানী, প্রকৃতিকন্যা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। গাছের ডালে ডালে ঝরে পড়া পাতার পর নতুন সবুজ কচি পাতার অঙ্কুর, কোকিলের কুহু কুহু ধ্বনি, পলাশ-শিমুলের রক্তিম আভা, সেইসঙ্গে গন্ধরাজের অমৃত সুবাসে ক্যাম্পাসের প্রতিটি আনাচ-কানাচে উৎসবের আমেজ বসন্তকে যেন আরও রূপবান করে তুলেছে।
কোকিল-শ্যামা গাছের ডালে বসে গাইতে শুরু করেছে। ভ্রমরেরা মেলেছে ডানা। আকাশে ভেসেছে মেঘের ভেলা। গাছে গাছে শিমুল-পলাশ, কৃষ্ণচূড়ার মেলা। চারদিকে পরিবর্তনের ছোঁয়া। জাহাঙ্গীরনগরে লেগেছে তারুণ্যের হাওয়া। প্রকৃতি সেজেছে বর্ণিল সাজে।
বাংলা সাহিত্যে বিশাল স্থান অধিকার করে আছে বসন্ত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশসহ বহু কবি বসন্তের সৌন্দর্য, প্রেম ও প্রাণচাঞ্চল্যের কথা লিখেছেন।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো।’
যদিও বৈশাখকে আহ্বান করে লেখা, তবুও এর ভেতরে বসন্তের এক ধরনের প্রস্তুতির বার্তা পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: বর্ণিল আয়োজনে ঢাবিতে বসন্ত বরণ
২৯১ দিন আগে
অতিথি নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োগ নেই, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
বিয়েসহ অন্যান্য বেশ কিছু অনুষ্ঠানের জন্য অতিথি নিয়ন্ত্রণ আইন থাকলেও তার প্রয়োগ না করায় প্রতিনিয়ত কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। আবার পদস্থ কর্মকর্তাসহ সাধারণ মানুষের অনেকেই এই আইনটি সম্পর্কে জানেন না।
১৯৮৪ সালের অতিথি নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, দেশের যেকোনো সেন্টারে বিয়ে, জন্মদিন, আকিকা বা অন্য কোনো অনুষ্ঠান করতে হলে অনুমতি নিতে হয়। এক্ষেত্রে অতিথি এক শ বা তার কম হলে সরকারকে কোনো ধরনের রাজস্ব দিতে হয় না। তবে এর বেশি হলেই জনপ্রতি ২৫ টাকা হারে রাজস্ব দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু প্রয়োগের অভাবে কেউই মানছেন না এই আইন। শুধু তা-ই নয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতিও নিতে দেখা যায় না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনী পৌরসভার প্রধান নির্বাহী আবুজার গিফরি নিজেই তেমন কিছু জানেন না উল্লেখ করেন। বলেন, ‘রাজস্ব দেওয়া তো দূরের কথা, গত ১৫ বছরে কেউ অনুমতির জন্যই আসেনি। এরকম আইন জেলা প্রশাসকের অফিসে থাকতে পারে। আমাদের আছে কিনা, খোঁজ নিয়ে বলতে হবে।’
ফেনীতে গত বছর ৯ হাজার ৮৫৩টি বিয়ে হয়েছে। প্রতিটি বিয়ে অনুষ্ঠানে গড়ে তিন শতাধিক অতিথি অংশ নেয় বলে জেলা শহরের বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টার থেকে জানা গেছে।
পারিবারিক, সামাজিক, অভিজাত রেস্তোরাঁ ও জেলার প্রায় অর্ধশতাধিক কমিউনিটি সেন্টারে বিয়েসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এ ছাড়াও শতাধিক অতিথি নিয়ে ঘরোয়া ও কমিউনিটি সেন্টার বা কনভেনশন হলে আয়োজিত হয়ে থাকে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক অসংখ্য অনুষ্ঠান।
ফেনী সদর কমিউনিটি সেন্টার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাঈদ খান বলেন, ‘আমরা নিয়মিত সরকারকে ভ্যাট দিয়ে থাকি। তবে অতিথির সংখ্যা ও করের বিষয়টি অনুষ্ঠান কর্তৃপক্ষ দেখবে।’
সম্প্রতি স্মৃতি কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, দুই পাশে দুটি বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে। প্রতিটি অনুষ্ঠানে পাঁচ শতাধিত অতিথির আপ্যায়ন চলছে।
অনুষ্ঠানের সমন্বয়কারী কনের পিতার (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) কাছে অতিথি নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ১০০ অতিথির বেশি হলে জনপ্রতি ২৫ টাকা করে রাজস্ব দেওয়ার বিধান রয়েছে জানালে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান।
ফেনী গ্র্যান্ড সুলতান কমিউনিটি সেন্টার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়সাল বলেন, ‘প্রতিনিয়ত নানারকম অনুষ্ঠান হলেও কাউকে রাজস্ব দিতে ও নিতে দেখিনি।’
ফেনী জেলার কোথাও অতিথি নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োগ নেই। আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় সরকার প্রতি বছর বঞ্চিত হচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে। তাছাড়া আইনটি সম্পর্কে জনসচেতনতার অভাবে আপ্যায়নে অতিথির সংখ্যাও বাড়ছে প্রতিযোগিতামূলকভাবে।
১৯৮৪ সালের ৩০ আগস্ট অতিথি আইন চালু করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সে সময় সরকারি এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১০০ জনের অধিক অতিথি আপ্যায়ন করতে হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার জেলা প্রশাসন বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বা সিটি, পৌর প্রশাসকের লিখিত অনুমোদন নিতে হবে। ১০০ জনের অতিরিক্ত প্রতিজনের জন্য ২৫ টাকা হারে আপ্যায়ন ফি জমা দিতে হবে। এ আইন অমান্যকারীকে অতিরিক্ত প্রতিজন অতিথির জন্য ১০০ টাকা করে জরিমানা দিতে হবে।
আপ্যায়নকারী নির্ধারিত জরিমানা দিতে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে পাবলিক ডিমান্ড রিকভারি অ্যাক্ট ১৯১৩-এর আওতায় সার্টিফিকেট মামলা করার বিধান রয়েছে।
এ ছাড়াও আইন অমান্যকারীর কাছে থেকে শাস্তিমূলক মাশুল আদায় এবং আইনের প্রয়োগের জন্য খাদ্য অধিদপ্তরের সকল কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও ইউএনওর নিযুক্ত ক্ষমতা সকল গেজেটেড কর্মকর্তার মতো দেওয়া হয়।
এরপর ২০০২ সনের ৮ এপ্রিল এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিয়ে, ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে ১৫০ জন পর্যন্ত অতিথি বিনা মাশুলে আপ্যায়ন করা যাবে। ১৫১ জন থেকে এক হাজারজন পর্যন্ত মাথাপিছু ২০ টাকা ও তদূর্ধ্ব ক্ষেত্রে মাথাপিছু ১০ টাকা হারে মাশুল ধার্য করা হয়েছে। এ আদেশ অমান্যকারীকে দিগুণ হারে জরিমানা করা হবে বলে আইনে বলা হয়।
এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে উল্লিখিত বিভাগসমূহের প্রতিনিধির সমন্বয়ে কমিটি থাকবে। তবে ওরশ, ধর্মসভা, চেহলাম ও শ্রাদ্ধের ক্ষেত্রে এ আদেশ কার্যকর হবে না বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ফেনী জেলা প্রসাশক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এ আইনটি থাকলেও তার কার্যকারিতা বা প্রয়োগ নেই। আমরা শিগগিরই আইনটি পড়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
২৯২ দিন আগে
গ্রিনল্যান্ডেই কেন পরাশক্তিগুলোর নজর?
দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফিরেই গ্রিনল্যান্ড কিনে নেওয়ার আগ্রহের কথা জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্প। যদিও তার এই মনোবাসনা নতুন কিছু না। প্রথম মেয়াদে ২০১৯ সালে তিনি একই চেষ্টা করেছিলেন। তখন তার এই চেষ্টাকে রসিকতা মনে করে উড়িয়ে দিয়েছিলেন সবাই।
গেল ৫ মার্চ কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণে ‘যে করেই হোক না-কেন’ বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপটি নিয়ন্ত্রণের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এবার তার মনোভাব ও প্রকাশ ভঙ্গি দেখে কেউই আর বিষয়টিকে ঠুনকো হিসেবে দেখছেন না।
গ্রিনল্যান্ড দখলে ট্রাম্পের কেন এই আগ্রহ, অনেকের মনেই ঘুরপাঁক খাচ্ছে সেই প্রশ্ন। কথা হচ্ছে, কেবল যুক্তরাষ্ট্রই না, আরও অনেক দেশের নজর রয়েছে অঞ্চলটির ওপর। এতে দ্বীপটি নিয়ে পরাশক্তিগুলোর মধ্যে নতুন করে দ্বন্দ্বও দেখা দিতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।
ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব ও খনিজসম্পদের ভরপুর থাকার কারণেই পরাশক্তিগুলোর চোখ এখন গ্রিনল্যান্ডের দিকে বলে দাবি করেছেন বিশ্লেষকরা।-খবর অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের।
সবই চাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট
ডেনমার্কের স্বনিয়ন্ত্রিত দ্বীপটি নিয়ে ট্রাম্প যেভাবে সরব হয়েছেন, তাতে তার ‘আমেরিকাই প্রথম’ নীতি আগ্রাসীভাবে ফুটে উঠেছে। শুধুই যে গ্রিনল্যান্ডেই থেমে নেই তার লোভাতুর দৃষ্টি, চাচ্ছেন ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ—বিনিময়ে দিতে চাচ্ছেন সামরিক সহায়তা।
এছাড়াও তিনি পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছেন। আয়তনে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও বড় স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র কানাডাকে করতে চেয়েছেন ৫১তম অঙ্গরাজ্য। বাদ যায়নি যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাও, উপত্যকাটিও দখলের পাঁয়তারা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সব নিয়ে তিনি বানাবেন গ্রেট আমেরিকা।
কেন গ্রিনল্যান্ড চাচ্ছেন ট্রাম্প?
যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউরোপের মধ্যবর্তী কৌশলগত অবস্থানে এই দ্বীপটি অবস্থিত। বরফে ঢাকা আর্কটিক অঞ্চলটিতে প্রচুর খনিজ সম্পদ রয়েছে। ২০২৩ সালের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রিনল্যান্ডে লিথিয়াম ও গ্রাফাইটসহ ৩১ ধরনের খনিজের বিশাল মজুদ থাকতে পারে, যা বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যাটারি উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য।
বিশ্বের বৃহত্তম এই দ্বীপে মাত্র ৫৬ হাজার মানুষের বসবাস, যাদের মধ্যে অধিকাংশ ইনুইত জনগোষ্ঠীর। গ্রিনল্যান্ড ১৯৭৯ সাল থেকে ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল।
উত্তর আটলান্টিক ও আর্কটিক মহাসাগরের মধ্যে দ্বীপটির অধিকাংশই সুমেরীয় বৃত্তের উত্তর অংশে অবস্থিত। এটির পশ্চিম দিকে ডেভিস প্রণালী ও ব্যাফিন উপসাগর দিয়ে প্রাথমিকভাবে কানাডীয় সুমেরীয় দ্বীপপুঞ্জ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং পূর্ব দিকে ডেনমার্ক প্রণালী দিয়ে আইসল্যান্ড থেকে আলাদা হয়েছে।
ভূরাজনীতিতে সাম্প্রতিক সময়ে নানা উত্তেজনা চলছে, তার ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খনিজ সমৃদ্ধ এই দ্বীপটির অর্থনৈতিক গুরুত্বও রয়েছে ব্যাপক।
এমন পরিস্তিতে যুক্তরাষ্ট্রকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন যে ট্রাম্প; তিনি তো এই কৌশলগত অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে রাখতে চাইবেন, এটিই অনুমেয়।তবে ট্রাম্পের এই প্রস্তাব কিন্তু মিত্র দেশ ডেনমার্ক প্রত্যাহার করেছে। তারা বরং গ্রিনল্যান্ড যে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা চাইছে, সেই লক্ষ্যে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এদিকে বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রতিহত করতে এরই মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুৎসি বোওরব এয়েদে। ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, ‘কালাল্লিত নুনাত আমাদের।’ নিজেদের গ্রিনল্যান্ডিক ভাষায় এই নামেই ডাকেন তারা। যার অর্থ, গ্রিনল্যান্ডবাসীদের দেশ।
এ ছাড়াও গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয় বলেও তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন।
অন্যদের নজরও কেন গ্রিনল্যান্ডে?
মূলত বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে আর্কটিক অঞ্চলের বরফ গলতে শুরু করেছে। এতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ওই অঞ্চলটি দিয়ে একটি পথ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দ্রুত আর্কটিকের বরফ গলে যাচ্ছে। এতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে বিশ্বের অনেক দেশ বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে একে নিজেদের সামরিক ও বাণিজ্যিক সুযোগ হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীনসহ শক্তিধর দেশগুলো। বরফ গলে যাওয়ায় গ্রিনল্যান্ডের বিপুল খনিজ উত্তোলনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। পোলার রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইনিশিয়েটিভের ব্যবস্থাপক ডোয়েন মেনেজেস বলেন, ‘আমরা আর্কটিক যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। এই যুগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হবে গ্রিনল্যান্ডের উত্থান এবং স্থায়ী গুরত্ব সৃষ্টি। পাশাপাশি দ্বীপটির প্রভাব তৈরি হবে সর্বব্যাপী।’
স্বভাবতই গ্রিনল্যান্ডের এই উঠতি প্রভাবের সময়ে এর নিয়ন্ত্রণ অনেকেই নিতে চাইবেন, এমনকি কয়েক ধাপ এগিয়ে কিনতেও চাইবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আর্কটিক অঞ্চলে বাড়বে প্রতিযোগিতা
স্নায়ুযুদ্ধের পর এই অঞ্চলটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সহায়তার ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত থাকলেও, বর্তমানে সেই পট পরিবর্তিত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, খনিজ সম্পদের সন্ধান ও ইউক্রেন যুদ্ধ—সবমিলিয়ে বিশ্বজুড়ে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এখন চরমে। এতে আর্কটিক অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব খাটাতে শক্তিধর দেশগুলো মরিয়া।
কৌশলগত গুরুত্ব
গ্রিনল্যান্ড কানাডার উত্তর-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত, এবং এর দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি অংশ আর্কটিক বৃত্তের মধ্যে পড়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এটি উত্তর আমেরিকার প্রতিরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।
সে সময় যুক্তরাষ্ট্র গ্রিনল্যান্ড দখল করে, যাতে এটি নাৎসি জার্মানির হাতে না পড়ে এবং উত্তর আটলান্টিকের গুরুত্বপূর্ণ নৌপরিবহন রুটগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।
যুদ্ধ শেষ হলেও গ্রিনল্যান্ডে সামরিক ঘাঁটি বজায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পিটুফিক স্পেস বেস (পূর্বনাম থুলে এয়ার ফোর্স বেস) নামে ওই ঘাঁটিটি থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর ক্ষেপণাস্ত্রের সতর্কতা, প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ নজরদারি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়ে থাকে।
জিআইইউকে গ্যাপ (গ্রিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, যুক্তরাজ্য) নামে পরিচিত একটি অংশের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে গ্রিনল্যান্ড। ওই স্থান থেকেই উত্তর আটলান্টিকে রাশিয়ার নৌচলাচল পর্যবেক্ষণ করে ন্যাটো।
আরও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো—কৌশলগতভাবে আর্কটিক অঞ্চলের সম্ভাব্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ নৌপথের পাশেই অবস্থিত গ্রিনল্যান্ড। সম্ভাব্য বলার কারণ এই যে, এতদিন বরফে আবৃত থাকার কারণে এই পথ বন্ধ ছিল। তবে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে বরফ গলতে শুরু করেছে।
এ কারণে গুরুত্বপূর্ণ ওই নৌপথ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। আর্কটিক অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ওই নৌপথ দুটি চালু হলে একদিকে আটলান্টিক মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগর দিয়ে পণ্য পরিবহনে সময় কমে আসবে, অন্যদিকে সুয়েজ ও পানামা খালের সংকীর্ণ পথ এড়িয়ে চলার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।
যদিও আর্কটিক অঞ্চলের এই নৌপথ ব্যবহার উপযোগী হতে এখনো অনেকটা সময় লাগবে। তবে এরইমধ্যে এসব কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে গ্রিনল্যান্ড।
চীনের আগ্রহ
যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ নিয়ে আলোচনা হবে, সেখানে চীন আসবেই—এটিই এখন রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশ দুটি পরস্পরের বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিশ্ব বাণিজ্যের অঙ্গনে হাজির হয়েছে।
চীন ২০১৮ সালে নিজেদের আর্কটিক অঞ্চলের নিকটবর্তী দেশ হিসেবে ঘোষণা করে। ধারণা করা হয়—অঞ্চলটিতে নিজেদের আধিপত্য বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বেইজিং। এ ছাড়াও আর্কটিক অঞ্চলে জাহাজ চলাচলের পথ তৈরির মধ্য দিয়ে ‘পোলার সিল্ক রোড’ গঠিত হবে বলেও জানায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর অর্থনীতিটি।
কিন্তু আর্কটিককে মহাসাগরকে আরেকটি ‘দক্ষিণ চীন সাগর’ হিসেবে দেখতে চান না বলে জানিয়েছিলেন তখনকার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। পাশাপাশি পোলার সিল্ক রোড প্রস্তাবেরও বিরোধিতা করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, প্রশান্ত মহাসাগরের এক গুরুত্বপূর্ণ বলয়ে অবস্থিত দক্ষিণ চীন সাগর অর্থনীতি, কূটনীতি ও রাজনীতির দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ। চীনের পরমাণু অস্ত্রবাহী দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সাবমেরিনের কৌশলগত টহল ও নৌপরিবহনের জন্য সাগরটিতে নিয়ন্ত্রণ চাচ্ছে তারা।
কী চায় গ্রিনল্যান্ড?
গ্রিনল্যান্ডের প্রতি সবার আগ্রহ থাকলেও অঞ্চলটি নিজে কী চায়, তা নিয়েও মানুষের আগ্রহ কম না। কংগ্রেসে ট্রাম্পের ভাষণের কয়েক ঘণ্টা পরই সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমেরিকান হতে চাই না, ডেনিসও না; আমরা কালাল্লিত নুনাত (গ্রিনল্যান্ডবাসী)। আমেরিকান ও তাদের নেতাদের এই বিষয়টি বুঝতে হবে। আমরা বিক্রির জন্য না এবং তারা আমাদের নিয়ে নিতেও পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ডবাসীরাই আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন।’ মুষ্টিবদ্ধ হাতের ইমোজি ও জাতীয় পতাকা দিয়ে ওই ফেসবুক পোস্টটি শেষ করেন গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী।
এ ছাড়াও, সম্পতি জনমত জরিপে দেখা গেছে, বেশিরভাগ গ্রিনল্যান্ডবাসী যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে চান না, তারা বরং ডেনমার্ক থেকে স্বাধীনতা চায়। গ্রিনল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২৯২ দিন আগে
কয়রায় সাইক্লোন সেল্টার সংকট, নেই নারী-শিশুর পৃথক ব্যবস্থা
প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ খুলনার কয়রা উপজেলায় চাহিদার তুলনায় নেই সাইক্লোন সেল্টার। বিদ্যমান ১১৭টি সাইক্লোন সেল্টার দুর্যোগের সময় ৩ লক্ষাধিক মানুষের জন্য খুবই অপ্রতুল। আর এসবের মধ্যে আবার নারী ও শিশুদের পড়তে হয় নতুন আরেক ভোগান্তিতে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় উপজেলার অনেক মানুষকে একই রুমে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। সেখানে পর্যাপ্ত থাকা-খাওয়া ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। নেই নারী-পুরুষের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থাও। এ কারণে দুর্যোগের সময় চরম সংকটে পড়তে হয় এই উপজেলার বাসিন্দাদের।
দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবসে নারী ও শিশুবান্ধব সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এলাকাবাসী জানায়, সুন্দরবনের পাশ ঘেঁষে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় উপজেলা কয়রা ৭টি ইউনিয়নের ১৩১টি গ্রাম নিয়ে গঠিত।
কপোতাক্ষ, শাকবাড়িয়া, শিবসা ও আড়পাঙ্গাসীয়া নদী বেষ্টিত উপজেলাবাসী সারা বছরই থাকেন আতঙ্কগ্রস্ত।
আরও পড়ুন: কয়রায় বেড়িবাঁধে ভাঙন, আতঙ্কে এলাকাবাসী
প্রতি বছর কোনো না কোনো অমাবশ্যা ও পূর্ণিমার সময় জলোচ্ছ্বাসে বেড়িবাঁধ ভেঙে যেকোনো গ্রাম প্লাবিত হয়। এ সময় মানুষ নিরাপদ আশ্রয়স্থল খোঁজে। সে সময় একমাত্র আশ্রয়স্থল হলো সাইক্লোন সেল্টার।
প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, আম্ফান, ইয়াস, রিমেলের আতঙ্ক কেটে গেলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের আতঙ্ক কাটেনি উপকূলীয় জনপদ কয়রাবাসীর। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও আশ্রয়ের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ আশ্রয়কেন্দ্র নেই।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের তথ্য অনুসারে দুর্যোগের সময় ৩ লক্ষাধিক মানুষের জন্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে ৯৮টি।
ফায়েল খায়ের ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাইক্লোন শেল্টার রয়েছে ১৯টি।
কয়রার সর্ব দক্ষিণের জনপদ জোড়শিং গ্রামের মিজানুর রহমান (৫০) বলেন, প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয়। প্রতিটি মুহূর্তে নদীভাঙন, জলোচ্ছ্বাস আর ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংবাদ বয়ে আনে দুর্দশা। তারপরেও সমস্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে বসবাস করছি। দুর্যোগকালীন সময় আশ্রয় নেওয়ার জন্য এই অঞ্চলে পর্যাপ্ত সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ করা প্রয়োজন।
উপজেলার ২ নম্বর কয়রা গ্রামের নারী নেত্রী মুর্শিদা আক্তার বলেন, এই অঞ্চলে দুর্যোগকালীন সময় আশ্রয় নেওয়া সাইক্লোন সেল্টারগুলো নারী ও শিশু বান্ধব নয়। নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে সেখানে গর্ভবতী, বয়সন্ধীকালীন ও পিরিয়ড নারীদর আশ্রয় নিতে হয়। তাই নারীবান্ধব সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ করা এখন জনমানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: কয়রায় অনেক বেড়িবাঁধ অরক্ষিত, আতঙ্কে খুলনার উপকূলবাসী
কয়রা সদর ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সেলিনা আক্তার লাইলি বলেন, কয়রায় কোন সাইক্লোন সেল্টারে আলাদা টয়লেট নেই। তাই প্রতিটি সেল্টারে নারীদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে।
উপজেলা জলবায়ু পরিষদের সমন্বয়ক নিরাপদ মুন্ডা বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আমাদী ইউনিয়ন ছাড়া বাকি ৬টি ইউনিয়ন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো। সেজন্য ৬টি ইউনিয়নে আরও সাইকোন সেল্টার নির্মাণ করা দরকার।
জেজেএসের সহকারী প্রকল্প সমন্বয়কারী শেখ নাজমুল হুদা বলেন, কয়রা সদর, দক্ষিণ বেদকাশি ও উত্তর বেদকাশি ৩টি ইউনিয়নের সাইক্লোন সেল্টারগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কমিটিগুলো সক্রিয় করার কার্যক্রম চলমান। এ ছাড়া প্রস্তুতি প্রকল্পের মাধ্যমে দুর্যোগ প্রস্তুতির জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র সিপিপি সদস্যসহ স্বেচ্ছাসেবীদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে।
উপেজলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মামুনার রশিদ বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় সার্বিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার অভাবে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসে প্লাবিত হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন উপকূলীয় অঞ্চল কয়রার মানুষ। দুর্যোগের সময় ওইসব মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য আরও সাইক্লোন সেল্টার প্রয়োজন। যা রয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় কম।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুলী বিশ্বাস বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় কয়রাবাসীর আশ্রয়ের জন্য সরকারের তত্ত্ববধানে আরও ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়ণ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: উপকূল অতিক্রম করে খুলনার কয়রায় অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল
২৯৩ দিন আগে
জিকের সেচ পাম্প চালু, বোরো-আউশ আবাদে সুবিধা পাবেন কৃষকরা
দীর্ঘ কয়েক বছর প্রয়োজনের সময় কাঙ্ক্ষিত সেচ সুবিধা না পাওয়া গেলেও এবার মৌসুমের শুরুতেই পানি মিলছে গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পে। এতে শুধুমাত্র কুষ্টিয়া জেলাতেই ১১ হাজার হেক্টর জমি সেচ সুবিধা পাবে। একই সঙ্গে সেচ সুবিধা পাবেন পাশ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা জেলার কৃষকরাও। বোরো আবাদে কৃষকের বিঘা প্রতি খরচ অন্তত ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা সাশ্রয় হবে।
কৃষক ও সংল্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে কথা বলে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার অন্তত ১১ হাজার হেক্টর জমিতে এবার জিকের পানিতে বোরো আবাদ হবে। মাসখানেক খালে পানি পেলেই তাদের খরচ বাঁচবে বিঘাপ্রতি ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। আর যদি পানি পুরো মৌসুমজুড়েই থাকে, তাহলে ব্যয়ের মাত্রা অনেকটাই নেমে আসবে কৃষকের। এছাড়াও পেঁয়াজসহ বেশকিছু মাঠে থাকা ফসলও উপকৃত হবে এই জিকের পানিতে।
পদ্মায় পানি সংকট ও জিকের সেচ পাম্প নষ্ট থাকায় গত দুই থেকে তিন মৌসুম ধরেই ঠিকমতো পানি মিলছে না কৃষকদের। গত বছর মৌসুমের শেষভাগে পানি আসলেও তাতে কৃষকের কোনো লাভ হয়নি। তবে আগেভাগে পানি পাওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন কৃষকরা।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের কৃষক আক্কাস আলী জানান, আমরা ধরেই নিয়েছি জিকের পানি পাব না। সেই হিসেব করেই চারা রোপন করা। এখন জিকের পানি তাদের জন্য বাড়তি বোনাস হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
এ সময় অন্যান্য কৃষকরা জানান, যেসব জমিতে খালের পানি যাবে না, তারাও পরোক্ষভাবে লাভবান হবেন। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, গত দুই তিন মৌসুমে তাদের এলাকার পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। এতে ঠিকমতো পানি ওঠে না শ্যালো ইঞ্জিনে। ক্যানেলে পানি থাকলে এবার আর এই সমস্যায় পড়তে হবে না।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ কুষ্টিয়ার উপপরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, এই পানিতে ধান চাষে কৃষক ভালো মুনাফা পাবেন। বোরো মৌসুমে সেচ বাবদই বেশি ব্যয় করতে হয় কৃষককে। তাছাড়া অন্যান্য ফসলও সুবিধা পাবে। তবে আউশ ধান যারা লাগাবে তারা বেশি সুবিধা পাবেন। চলতি মাসের ১৫ তারিখের পর থেকে কৃষকরা আউশ ধানের বীজতলা শুরু করবেন। আর রোপন শুরু হবে আরো ২০ থেকে ২৫ দিন পর।
তিনি আরও জানান, জেলায় এবছর বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬ হাজার ৪৬৪ হেক্টর জমিতে। তবে আবাদ হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৯৬ হাজার হেক্টর জমিতে।
জিকে সেচ ব্যবস্থাপনা ফেডারেশনের সভাপতি সাফায়েত হোসেন পল্টু বলেন, গত বছর খালে পানি সরবরাহ না করায় অনেক সমস্যা হয়। অনেক জমি অনাবাদি ছিল। সেচ সরবরাহ সচল হলে ফসল উৎপাদন বাড়বে। পরিবেশও রক্ষা হবে।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) প্রকল্পের পাম্প ইনচার্জ মিজানুর রহমান জানান, গত ৬ মার্চ থেকে সচল একটি পাম্প দিয়ে জিকে খালে পানি সরবরাহ শুরু হয়েছে। অপর একটি পাম্পও সচল করার জন্য কাজ চলছে। আশা করা যাচ্ছে চলতি মাসেই পাম্পটি সচল করে জিকে খালে পানি সরবরাহ করা যাবে। তবে আরেকটি পাম্প একেবাইে অকেজো। সেটি কোনোভাবেই মেরামত যোগ্য নয়।
আরও পড়ুন: দুর্নীতি-অব্যবস্থাপনায় মুখ থুবড়ে পড়েছে নরসিংদীর বিসিক শিল্পনগরী
২০০৯ সালে জাপানের একটি কোম্পানি থেকে ৩টি বড় পাম্প এনে স্থাপন করা হয়। তবে গত বছর তার দুটি বিকল হয়ে পড়ে। অন্যটি পানির অভাবে গত বোরো আবাদের সময় বন্ধ রাখতে হয়। জাপানের প্রকৌশলীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর তারা পরিদর্শন করেছেন। কিছু যন্ত্রাংশ ইতোমধ্যে আনা হয়েছে। বাকি যন্ত্রাংশ বন্দরে এসেছে।
তিনি জানান, পদ্মার ভেড়ামারা পয়েন্টে পানির লেভেল ৪ দশমিক ৪০ মিটার রয়েছে। ৪ দশমিক ২০ মিটার পর্যন্তও পানি সরবরাহ করা যাবে। এর নিচে নামলে পানি বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। ৩টি পাম্প একসঙ্গে চালু থাকলে প্রতি সেকেন্ডে ৩ হাজার ৯০০ কিউসেক পানি আবাদি জমিতে দেওয়া সম্ভব হয়। একটি পাম্প দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১৩শ’ কিউসেক পানি পাওয়া যায়।
গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রকল্পের আওতাধীন জেলা চারটি হলেও বোরো মৌসুমে মূলত কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গায় পানি সরবরাহ করতে সক্ষম হচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রশিদুর রহমান বলেন, ৪টি জেলায় জিকের খাল বিস্তৃত। জিকের পাম্প হাউস আধুনিকায়নসহ খাল সংস্কারের জন্য ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। বর্তমান সরকার টাকা কাটছাঁট করে সেটি ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকায় করার পরামর্শ দিয়েছে। প্রকল্পের আওতায় দুটি বড় ও ৫টি ছোট পাম্প স্থাপন করা হবে। খাল সংস্কারসহ গাছ লাগানো হবে। নতুন পাম্প স্থাপন করা হলে পদ্মার পানি ৩ সেন্টিমিটারের নিচে নামলেও পানি সরবরাহ সচল থাকবে।
সূত্র জানায়, ১৯৫৯ সালে প্রধান পাম্প হাউজের কার্যক্রম চালু হয়। ১৯৬২ থেকে ৬৩ সালে প্রাথমিকভাবে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে জিকে সেচ প্রকল্প চালু করা হয়। তখন চাষযোগ্য ফসলি জমি ছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ৬০০ হেক্টর। পরবর্তীতে পাম্পের ক্যাপাসিটি কমার সঙ্গে সঙ্গে জমির পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ৯৫ হাজার ৬১৬ হেক্টর। শুরুতে তিনটি পাম্প দিয়ে বছরে ১০ মাস (১৫ জানুয়ারি থেকে ১৫ আক্টোবর পর্যন্ত) দিনরাত ২৪ ঘণ্টা পানি উত্তোলন করা যেত। বাকি ২ মাস রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পাম্প তিনটি বন্ধ রাখা হত। ৩টি পাম্প সচল থাকলে ৪ জেলার ১৯৩ কিলোমিটার প্রধান খাল, ৪৬৭ কিলোমিটার শাখা খাল ও ৯৯৫ কিলোমিটার প্রশাখা খালে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলন, ৫০০ কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা
২৯৩ দিন আগে
ফরিদপুরে জমে উঠছে ঈদের বাজার
ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন মার্কেটে জমে উঠেছে ঈদবাজার। বিপণিবিতানগুলোতে ভিড় বাড়ছে, শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। এবার ভালো ব্যবসা হবে বলে প্রত্যাশার কথাও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নিউ মার্কেট, চকবাজার, হাজী শরিয়াতুল্লাহ বাজারসহ বিভিন্ন মার্কেটে ঘুরে ঘুরে পছন্দমতো পোশাক কিনছেন ক্রেতারা। কেউ কেউ পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছেন ঈদবাজার করতে।
ব্যবসায়ীরা জানালেন, গত দুই ঈদ বাজারের তুলনায় এবারে হয়তো ভালো ব্যবসা হবে আমাদের। আমরা যে পণ্যগুলো নিয়ে হাজির হয়েছি; তা ভোক্তাদের নাগালের মধ্যে।
চকবাজার কাপড় ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা সাদ্দাম হোসেন জনি বলেন, এবছর রোজার শুরুতেই ব্যবসা জমতে শুরু করেছে। ক্রেতাদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষেরা বেশ কেনাকাটা করছেন।
শনিবার (৭ মার্চ) দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ উপলক্ষে এসব মার্কেটে বেচাকেনা চলছে পুরোদমে। কেনাকাটায় নারীদের পাশাপাশি পুরুষেরাও নেই পিছিয়ে। তাছাড়া নিত্য-নতুন ডিজাইনের ঝলেমলে বাহারি পোশাক চলে আসায় কাস্টমারদের চাহিদা বাড়ছে।
নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী বনি হোসেনসহ দোকানিরা জানান, বেচাকেনার শীর্ষে রয়েছে ছেলেদের পাঞ্জাবি, লুঙ্গি, শার্ট-প্যান্ট, মেয়েদের শাড়ি, চুড়ি, থ্রি-পিস ও বাচ্চাদের পোশাক ইত্যাদি।
এবার রমজানে শুরুর দিক থেকেই প্রায় সব দোকানে বেচাকেনা ভালো। এ বিষয়ে বিপ্লব সরকার নামে এক দোকানি জানান, অন্যান্য বছর থেকে এ বছর বেচাকেনা ভালো। তবে নিম্নবিত্তদের বেশিরভাগের ভরসা ফুটপাত।
কেননা ফুটপাতে যে পণ্যটি তিনশ থেকে চারশ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়, অভিজাত মার্কেটে সেটির দাম অনেক বেশি।
২৯৪ দিন আগে