বিশেষ-সংবাদ
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে চুনাপাথর আমদানি বন্ধ, হতাশায় ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা
৫ মাসের মাথায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আবারও শুল্ক বৃদ্ধি করায় চুনাপাথর আমদানি বন্ধ থাকায় হতাশায় ভুগছেন ছাতক-দোয়ারাবাজারের ব্যবসায়ীরা। বেকার হয়ে পড়েছেন এর সঙ্গে নিয়োজিত অনেক পাথর ও বারকি শ্রমিক।
২ ডলার যোগ করে প্রতিটন পাথরে মোট ১৩ দশমিক ৭৫ ডলার শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে গত ১২ দিন ধরে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার চেলা এলসি স্টেশন (লাইমস্টোন) দিয়ে ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।
একই ইস্যুতে গত ১৬ আগস্ট থেকে এক সপ্তাহ চেলা স্টেশন দিয়ে চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা। তা সত্বেও প্রতিটন চুনাপাথর ও বোল্ডারে ১ ডলার বাড়িয়ে ১১ দশমিক ৭৫ ডলার শুল্ক নির্ধারণ করে এনবিআর। এ নিয়ে আমদানিকারকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিলে ৫দিন পর আলোচনার ভিত্তিতে পুনরায় পাথর আমদানি শুরু হয়।
আরও পড়ুন: তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে শুল্ক কর বৃদ্ধির কারণে পাথর আমদানি বন্ধ
পরে ৪ জানুয়ারি এক চিঠির মাধ্যমে আবারও টনপ্রতি ২ ডলার বাড়িয়ে ১৩ দশমিক ৫০ ডলার বা তদূর্ধ্ব শুল্কারোপ করা হয়। যা ৮ জানুয়ারি থেকে কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই বর্ধিত নতুন শুল্ক কার্যকর নিয়ে গত ১ জানুয়ারি( সোমবার) স্থানীয় আমদানিকারকদের সঙ্গে কাস্টমস কর্মকর্তাদের সভা হয়। সভায় ব্যবসায়ীরা বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানি বন্ধের ঘোষণা দেন।
চেলা এলসি স্টেশনে নৌকা দিয়ে চুনাপাথর পরিবহনকারী আব্দুল মোতালিব গংরা বলেন, ‘বুধবার থেকে এলসি স্টেশন বন্ধ থাকায় আমাদের কয়েক হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে।’
এ বিষয়ে ছাতক (চেলা-ইছামতী) লাইমস্টোন ইমপোর্টার্স অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সেলিম আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘এনবিআর ভারত থেকে পাথর ও চুনাপাথর আমদানির ওপর অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু প্রতিটনে অতিরিক্ত শুল্ক বৃদ্ধি করে। ওই বাড়তি শুল্ক দিয়ে পাথর আমদানি করতে হলে আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। তাই শুল্ক কমানোর দাবিতে সম্প্রতি চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তা বহাল থাকবে।’
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট সিলেটের কমিশনার মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘২০০০ সালের শুল্ক বিধিমালা অনুসারে পাথরের শুল্কমূল্য ধরা হয়। সব স্টেশনেই পাথরের মূল্য ১৩, ১৪, ১৫ ডলার নির্ধারিত আছে।’
শুল্ক কমানোর প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের আমদানি বন্ধের ব্যাপারে কাস্টমস কমিশনার বলেন, ‘তারা বন্ধ করলে আমাদের কিছু করার নেই। আইনগতভাবে ১৩ ডলারের নিচে নামার কোনো উপায় নেই। এটা আমি আমদানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সবাইকে বুঝিয়েছি।’
আরও পড়ুন: আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিবাদে সিলেট সীমান্ত দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ
অবৈধ ড্রেজার দিয়ে রাতের আঁধারে লুট হচ্ছে সুরমার বালু
রাতের আঁধারে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে সুরমা নদীর বালু তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জ শহরের একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।
এভাবে বালু নিয়ে যাওয়ায় দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে শহরের সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সংযোগ সেতু আব্দুজ জহুর। এছাড়া এভাবে ড্রেজার চালানোয় এবং শব্দ দূষণের কারণে হুমকিতে পড়েছে নদীর দুই তীরের জনপদ।
সুনামগঞ্জ শহরের আব্দুজ জহুর সেতু এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সেতুসংলগ্ন সুরমা নদীর কয়েকশ মিটার এলাকাজুড়ে একাধিক ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন চলছে।
এদিকে প্রতি রাতে নদীর কয়েকটি স্থানে ড্রেজারের তাণ্ডব চললেও এসব বন্ধে প্রশাসনের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন, আটক ২: নৌপুলিশ
স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে সুবিধা দিয়ে সুরমা নদীর বালু এভাবে লুটে নিচ্ছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট।
ড্রেজারের তাণ্ডব বন্ধ না হলে আব্দুজ জহুর সেতুসহ দুই তীরের কয়েকটি গ্রামের ঘরবাড়ি হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
নিরাপত্তাজনিত কারণে নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, কিছুদিন ধরে জলিলপুর, আব্দুজ জহুর সেতু এলাকা, অচিন্তপুর, বড়পাড়া এলাকাসহ একাধিক স্থানে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র। রাত ১টার পর থেকে শুরু হয়ে ভোর পর্যন্ত বিরামহীনভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হয়। পরে এসব বালু বাল্কহেড বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। প্রতি রাতে কয়েক লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন হয় বলে তাদের ধারণা।
সম্প্রতি এ বিষয়ে কথা হয় বালু উত্তোলনে কাজ করা এক শ্রমিকের সঙ্গে হয়।
আরও পড়ুন: কৃষি জমির স্বার্থে বালু উত্তোলন বন্ধে পদক্ষেপ নিতে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ
গ্রামে নগরায়নের ছোঁয়া, খুলনায় মিলছে না খেজুরের রস
কুয়াশার দখলে তখনো সকাল। ঘুম ভাঙেনি সূর্যের। শেষ হয়নি আলো-আঁধারির যুদ্ধও। মাঠের কোণায় একটি ছায়ামূর্তি দেখা যায়। দূর থেকে ভেসে আসে ‘র-অ-অ-অ-স খেজুরের রস’। ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হয় অবয়ব। কাঁধের ভারের দুই পাশে দুটি মাটির কলস ঝুলছে। প্রত্যাশিত সেই মুখ দেখেই শিশু-কিশোররা ‘দে ছুট’। কারো হাতে জগ কারো হাতে পাতিল। পাখিদের সঙ্গে মিশে যায় শিশু-কিশোরের কোলাহল। মুখর হয়ে উঠে বাড়ির উঠান। শীতের বাংলায় অতি পরিচিত এ দৃশ্য।
মৌসুম শুরুর আগেই প্রস্তুতি নিতে থাকেন গাছিরা। কে কত আগে গাছ প্রস্তুত করতে পারেন, কার গাছ কত ভালোভাবে চাঁচ দেওয়া হলো এসব নিয়ে আলোচনা চলে নিজেদের মধ্যে।
তবে বর্তমানে চিরায়ত সেসব দৃশ্য চোখে পড়ে না খুব সহজেই। খুলনা অঞ্চলে হারিয়ে যেতে বসেছে সুস্বাদু খেজুরের রস। নতুন প্রজন্মের এসব দৃশ্য অনেকটাই অপরিচিত। অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছে খেজুরের রসের স্বাদ থেকে।
খেজুর গাছ কাটার পেশায় জড়িতরা পেশা বদল করে চলে যাচ্ছে অন্য পেশায়। সে কারণে খুলনায় ঐহিত্যবাহী খেজুরের রস এখন সোনার হরিণ। শিশির পড়া সকালে কম্বল পেঁচিয়ে বিছানার উপর থেকে আর শোনা যায় না খেজুরের রস বিক্রির ডাক-হাক।
সেই সঙ্গে প্রায় হারিয়ে গেছে রাত জেগে খেজুর রসের সেই পিঠা, পায়েস বানানোর সময় বৌ-ঝিদের মিলনমেলা। খুলনায় খানিকতটা ভাটা পড়েছে উৎসবের আনন্দে।
আরও পড়ুন: খেজুরের রস কাঁচা না খাওয়ার পরামর্শ খুলনার সিভিল সার্জনের
উদ্বোধনের দুই মাস পরও চালু হয়নি খুলনা-মোংলা রেললাইন
উদ্বোধনের পর দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও চালু হয়নি খুলনা-মোংলা রেললাইন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে পণ্য পরিবহন সাশ্রয় ও সহজ করতে খুলনার ফুলতলা রেলস্টেশন থেকে মোংলা পর্যন্ত রেলপথ স্থাপনের প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১০ সালে। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। এরপর দুই দফা সংশোধনের পর সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। কিন্তু ডিসেম্বরের মধ্যেও ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে ৭৫ কিলোমিটারের কাজ সম্পন্ন হয়। বাকি থাকে আরও ১৫ কিলোমিটার রেলপথের কাজ। এজন্য ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত আরও ছয় মাস প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। এরপর আরেক দফা প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলেও প্রকল্পের কাজে আর কোনো অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
রেলওয়ে প্রকল্প সূত্র জানায়, ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। শুরু থেকেই প্রকল্পটি নানা ধরনের বাধার মুখে পড়ে। তিন বছর মেয়াদের কাজটির জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দিতে সময় লাগে দুই বছর।
এদিকে, গত বছরের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এরপর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ খুলনা-মোংলা রেললাইনে ১ জানুয়ারি থেকে কমিউটার ট্রেন চালুর তারিখ নির্ধারণ করে। কিন্তু রেললাইন পুরোপুরি ট্রেন চলাচলের উপযোগী না হওয়ায় ওই দিন এ রেললাইনে ট্রেন চলাচল চালু করা হয়নি।
রেলওয়ের পশ্চিম জোনের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার জানান, খুলনা-মোংলা রেললাইনে এখনও ছোটখাটো কিছু কাজ বাকি রয়েছে। সে কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রেললাইনটি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেনি। হস্তান্তর করতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। রেললাইনটি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করার পর ট্রেন চলাচলের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে।
এ ব্যাপারে খুলনা মোংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান জানান, রেললাইনের কিছু কাজ বাকি রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, সব কাজ শেষে আগামী মার্চের মধ্যেই রেললাইনটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এরপরই ট্রেন চলাচলের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
২১ আসনে ৬০ শতাংশের বেশি ও ৫২টিতে ৩০ শতাংশের কম ভোট পড়েছে: ইসির পরিসংখ্যান
রবিবার অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার উপস্থিতি ৪১ দশমিক ৯৯ শতাংশ হলেও নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে ২১টি আসনে ৬০ শতাংশের বেশি এবং কমপক্ষে ৫২টি আসনে ৩০ শতাংশেরও কম ভোট দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তথ্য থেকে এ চিত্র দেখা গেছে।
যেখানে দেখা যায়, গোপালগঞ্জ-৩ আসনে সর্বোচ্চ ৮৭ দশমিক ২৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। যে আসন থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচিত হয়েছেন।
সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে ঢাকা-১৫ আসনে ১৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন।
প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির বর্জনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ২২২টি আসন পায় এবং জাতীয় পার্টি পায় মাত্র ১১টি আসন। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছেন ৬২টি আসনে।
এছাড়া বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে আসনে জয়ী হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভোটার উপস্থিতির হারকে যে কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারে: সিইসি
এদিকে, ময়মনসিংহ-৩ আসনের নির্বাচনের ফল স্থগিত করা হয়েছে।
দেশের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে রবিবার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়, কারণ নওগাঁ-২ আসনের বৈধ প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নির্বাচন কমিশন এর আগে নির্বাচন স্থগিত করে।
৭০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে এমন পাঁচটি আসন হলো: গোপালগঞ্জ-৩ (৮৭ দশমিক ২৪ শতাংশ; শেখ হাসিনা), গোপালগঞ্জ-২ (৮৩ দশমিক ২০ শতাংশ; আওয়ামী লীগ প্রার্থী শেখ ফজলুল করিম সেলিম), ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (৭৬ শতাংশ; আওয়ামী লীগ প্রার্থী এ বি তাজুল ইসলাম), চট্টগ্রাম-৬ (৭৩ দশমিক ২৪ শতাংশ; আওয়ামী লীগ প্রার্থী এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী) এবং সিরাজগঞ্জ-১ (৭২ দশমিক ৩২ শতাংশ; আওয়ামী লীগ প্রার্থী তানভীর শাকিল জয়)।
নওগাঁ-১, বাগেরহাট-১, বাগেরহাট-২, বাগেরহাট-৪, বরিশাল-১, জামালপুর-১, ময়মনসিংহ-১০, ফরিদপুর-৪, গোপালগঞ্জ-১, মাদারীপুর-১, কুমিল্লা-৭, কুমিল্লা-৮, ফেনী-২, নোয়াখালী-৬, চট্টগ্রাম-৭ ও বান্দরবান আসনে ৬০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে।
গোপালগঞ্জ-২ আসনে নৌকা প্রতীকে শেখ ফজলুল করিম সেলিম সর্বোচ্চ ২ লাখ ৯৫ হাজার ২৯১ ভোট পেয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ-১ আসনে তানভীর শাকিল জয় পেয়েছেন ২ লাখ ৭৮ হাজার ৯৭১ ভোট।
জামালপুর-৩ আসনে মির্জা আজম পেয়েছেন ২ লাখ ৭৬ হাজার ৪৫৩ ভোট এবং রাঙ্গামাটি আসনে দীপংকর তালুকদার পেয়েছেন ২ লাখ ৭১ হাজার ৩৭৩ ভোট।
ঢাকা-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওলাদ হোসেন সর্বনিম্ন ২৪ হাজার ৭৭৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
৪০ হাজারেরও কম ভোট পেয়েও জয়ী প্রার্থীরা হলেন: চাঁদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের শফিকুর রহমান (৩৬ হাজার ৪৫৮ ভোট), নীলফামারী-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদ্দাম হোসেন পাভেল (৩৯ হাজার ৩২১ ভোট) এবং ঢাকা-১৫ আসনে আওয়ামী লীগের কামাল আহমেদ মজুমদার (৩৯ হাজার ৬৩২ ভোট)।
ঢাকা-১৫ (১৩ দশমিক ০৪ শতাংশ), ঢাকা-১৭ (১৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ), ঢাকা-৮ (১৮ দশমিক ৭০ শতাংশ), সিলেট-১ (১৯ দশমিক ৩০ শতাংশ) এবং ঢাকা-১৬ (১৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ) - এই ৫টি আসনে ২০ শতাংশেরও কম ভোট পড়েছে। সিলেট-১ আসনে নির্বাচিত হয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় কম ভোটার উপস্থিতি নিয়েও বিজয়ী হয়েছেন।
জিএম কাদের রংপুর-৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, যেখানে ভোট পড়েছে মাত্র ২২ দশমিক ৩৬ শতাংশ। কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে ভোট পড়েছে ২৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মুজিবুল হক।
যে সব আসনে ২০-২৯ শতাংশ ভোট পড়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- রংপুর-৩, কুড়িগ্রাম-১, কুড়িগ্রাম-২, কুড়িগ্রাম-৩, গাইবান্ধা-১, গাইবান্ধা-৩, বগুড়া-২, বগুড়া-৪, বগুড়া-৬, বগুড়া-৭, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩, রাজশাহী-২, পটুয়াখালী-১, বরিশাল-৫, ময়মনসিংহ-৫, ময়মনসিংহ-৬, ময়মনসিংহ-৮, কিশোরগঞ্জ-৩, মানিকগঞ্জ-১, ঢাকা-৪, ঢাকা-৫, ঢাকা-৬, ঢাকা-৭, ঢাকা-৯, ঢাকা-১০, ঢাকা-১১, ঢাকা-১৩, ঢাকা-১৪, ঢাকা-১৮, ঢাকা-১৯, গাজীপুর-২, সিলেট-৫, সিলেট-৬, হবিগঞ্জ-১, চাঁদপুর-৩, চাঁদপুর-৪, নোয়াখালী-৩, নোয়াখালী-৪, লক্ষ্মীপুর-১, লক্ষ্মীপুর-৩, লক্ষ্মীপুর-৪, চট্টগ্রাম-৫, চট্টগ্রাম-৮, চট্টগ্রাম-১০, চট্টগ্রাম-১১, চট্টগ্রাম-১৫ ও কক্সবাজার-১।
৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ২৯৮টি আসনে ১১ কোটি ৮৯ লাখ ৮৯ হাজার ২৪১টি আসনের মধ্যে মোট ৪ কোটি ৯৯ লাখ ৬৫ হাজার ৪৬৭টি ভোট পড়েছে।
আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্যবেক্ষণে সিইসিসহ অন্যদের আমন্ত্রণ জানাল রাশিয়ার নির্বাচন কমিশন
দুবলার চরের শুঁটকি শ্রমিকরা যেভাবে ভোট দেন
বঙ্গোপসাগরের মোহনায় সুন্দরবনের দুবলার চরে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে চান শুঁটকি পল্লীর জেলেরা। সেখানে অবস্থানরত কয়েক হাজার জেলে ভোট উৎসবে যোগ দিতে বাড়ি উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সকালের জোয়ারে কয়েক হাজার জেলে তাদের নৌকা নিয়ে উপকূলের উদ্দেশে রওনা হন। ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে চান এসব জেলেরা।
শুঁটকি মৌসুমে দুবলার চরে আসা জেলেদের মধ্যে প্রায় ৯ হাজারের অধিক জেলে ভোট দিতে বাড়ি ফিরে গেছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
ইউএনবির এই প্রতিবেদক সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, বঙ্গোপসাগরের মোহনায় বাগেরহাট জেলার সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের আওয়াতাধীন দুবলার চরে নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শুঁটকি মৌসুম চলে। আলোরকোল, মাঝের কেল্লা,নারিকেল বাড়িয়া ও শ্যালার চর নিয়ে গঠিত দুবলার চর।
শুঁটকি মৌসুমে বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার জেলে ওই চরগুলোতে অবস্থান করেন। অস্থায়ী ঘর বেঁধে জেলেরা ৪ মাসের জন্য পল্লী গড়ে তোলেন। জেলেরা সাগর থেকে মাছ আহরণ, কাটা-বাঁছা এবং শুকানোসহ নানা কাজে এই সময় ব্যস্ত থাকেন।
আরও পড়ুন: শুঁটকির মৌসুম শুরু হওয়ায় দুবলার চরে জড়ো হতে পারেন ১০ হাজার জেলে
মৌসুম শেষ হলেই সাধারণত জেলেরা বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য জেলেরা তাদের নিজ নিজ বাড়িতে ফিরেছেন। এসব জেলেদের বাড়ি বাগেরহাট জেলার শরণখোলা, রামপাল, মোড়েলগঞ্জ, মোংলা, খুলনা সদর, কয়রা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, সাতক্ষীরা সদর, আশুশুনি, চট্টগ্রামের বাঁশখালীসহ বিভিন্ন উপজেলায় বলে জানা গেছে।
দুবলার চর থেকে বিভিন্ন জেলেরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা শুঁটকি মৌসুমে দুবলার চরে আসেন। এখানে আসার পর তারা সার্বক্ষণিক মাছ আহরণ, কাটা-বাছা ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু এ বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে তাদের মধ্যে এক ধরনের নির্বাচনী আমেজ তৈরি হয়। পছন্দের প্রার্থীর জন্য সাগর মোহনায় জেলেদের মধ্যে তারা প্রচার চালান। ভোট দিতে যাওয়ার জন্য জেলেরা একে অপরকে উৎসাহিত করেন।
বাগেরহাট জেলার রামপাল, মোংলা, খুলনা জেলার দাকোপ এবং সাতক্ষীরা এলাকার বেশ কয়েকজন জেলের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে কথা হলে তারা জানান, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে চান। বিভিন্ন আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে তাদের পছন্দের প্রার্থীও রয়েছেন। কোনো কোনো প্রার্থীর জন্য তাদের সমর্থন রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ পাচ্ছেন শহরের সুবিধা
তীব্র গ্যাস সংকটে চট্টগ্রাম নগরবাসী
দেড় মাস ধরে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় দিন ও রাতের কোনো সময়ই গ্যাস থাকছে না বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এর ফলে গৃহস্থালির কাজ কর্ম এবং শিল্প কারখানায় উৎপাদন উভয়ই ব্যাহত হচ্ছে।
নগরবাসী জানায়, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে গ্যাস সংকট শুরু হয়েছে। তবে সম্প্রতি তা আরও তীব্র হয়েছে। তাদের কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, তারা ২৪ ঘণ্টায় কোনো সময় গ্যাস পান না।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) সূত্রে জানা গেছে, মহেশখালীর দুটি এলএনজি টার্মিনালের একটি থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় চট্টগ্রামে গ্যাস সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
পাশাপাশি রক্ষণাবেক্ষণের কারণে ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ জানায়, চট্টগ্রামে স্বাভাবিক সময়ে জাতীয় গ্রিড থেকে ৩১০-৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হয়্ তবে বুধবার (৩ জানুয়ারি) মাত্র ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়।
গত ২২ অক্টোবর থেকে নগরবাসী গ্যাস সংকটে ভুগছেন এবং বেশিরভাগ এলাকায় সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন: ভোলা থেকে ঢাকার শিল্পকারখানায় সিএনজি আকারে গ্যাস সরবরাহ শুরু
কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ জানায়, মহেশখালী এলএনজি গ্যাস টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহের চাপ কমে যাওয়ায় গ্যাস ঘাটতি দীর্ঘদিন থাকতে পারে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকে ভোক্তাদের দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (সিসিসিআই) সভাপতি ওমর হাজ্জাজ।
বুধবার তিনি মন্ত্রীর কাছে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন।
ওমর বলেন, 'চট্টগ্রামে ৪০০-৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন হলেও এখন মাত্র ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। মোট গ্যাসের মধ্যে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দুটি সার কারখানা ও একটি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া অবশিষ্ট গ্যাস নগরবাসী, শিল্প ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনে বিতরণ করা হয়, যা যথেষ্ট নয়।
বাকি গ্যাস বিভিন্ন কৌশলগত পদ্ধতিতে নগরীর বিপুল সংখ্যক আবাসিক গ্রাহক, কারখানা ও সিএনজি স্টেশনে বিতরণ করা হচ্ছে। ফলে কারখানা ও পরিবারগুলো মারাত্মক গ্যাস সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে।
কেজিডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশন ডিভিশন) প্রকৌশলী আমিনুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরনগরীর মানুষ এলএনজি গ্যাস সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল।
তিনি বলেন, এই সংকট কতদিন থাকবে তা বলা মুশকিল।
লালখান বাজার, কাজীর দেউড়ি, আসকার দিঘিরপাড়, খুলশী, জামাল খান লেন, দেওয়ানজী পুকুর পাড়, দেওয়ান বাজার, হেম সেন লেন, শুলকবোহর, ঘাট ফরহাদবেগ, বাকলিয়া, চকবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই শীতে এসব এলাকার মানুষ দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে।
এলাকার অনেক বাসিন্দা বলেন, এটা নতুন কিছু নয়। প্রতি বছর নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গ্যাস সংকট দেখা দেয়।
একটি ব্যাংকের কর্মচারী শাহনূর সুলতানা বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে সকালে উঠে না খেয়ে অফিসে যেতে হচ্ছে। ঘুম থেকে উঠেই দেখা যায় চুলা জ্বলছে না। ফলে কোন ধরনের রান্না বান্না ছাড়াই অফিসে ছুটতে হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের হোটেল থেকে খাবার কিনে খেতে হচ্ছে।’
কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (বিপণন, দক্ষিণ বিভাগ) মু. রইস উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি এলএনজি টার্মিনাল থেকে জাতীয় গ্রিডে ৮০০ থেকে ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হতো। এর একটি রক্ষণাবেক্ষণের কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ আছে। এ কারণে গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শেষ হলে সংকট অনেকাংশে কেটে যাবে।’
কেজিডিসিএল-এর অধীনে ৬ লাখ ১ হাজার ৯১৪ জন গ্রাহক রয়েছেন এবং এর মধ্যে ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৫১৬টি পরিবারকে সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: কেরাণীগঞ্জে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফারণে দগ্ধ ১০
উদ্যোক্তাবান্ধব গবেষণায় দেশসেরা বাকৃবি
বিদায়ী বছরে ৮টি উদ্যোক্তাবান্ধব গবেষণা সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি)। এসব গবেষণা মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ করে দেশের চাকরির বাজারের অস্থিতিশীল চাপ কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব।
অপ্রচলিত ডাল জাতীয় ফসল থেকে মুখরোচক খাবার তৈরি, সাশ্রয়ী মূল্যে উদ্ভাবিত ধানের ড্রায়ার মেশিন, বিলুপ্তপ্রায় ও উচ্চফলনশীল মাছের শুক্রাণু দীর্ঘদিন সংরক্ষণ, নতুন বিদেশি উচ্চ ফলনশীল ফল, স্বল্পমূল্যে পনির উৎপাদন, উচ্চ ফলনশীল মিষ্টি আলু, পতিত জমিতে উচ্চ ফলনশীল ও ব্যাপক সম্ভাবনাময় কাসাভা আলু, মাছের ফেলে দেয়া ত্বক থেকে জেলাটিন নিষ্কাশন- বিদায়ী বছর ২০২৩ জুড়ে বাকৃবির গবেষকদের উদ্যোক্তাবান্ধব গবেষণাসমূহ ।
আরও পড়ুন: বিষণ্ণতায় ভুগছেন ৭৪ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী: গবেষণা
অড়হর ডাল থেকে মুখরোচক খাবার তৈরি
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পশুখাদ্য, জ্বালানি, বেড়া, মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিসহ নানা কাজে অড়হর ডাল ব্যবহৃত হয়। আমাদের দেশেও এটি অপ্রচলিত একটি খাবার। বাকৃবির ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির তার দীর্ঘদিনের গবেষণায় অড়হর থেকেই ৭ ধরনের মুখরোচক খাবার তৈরি করেছেন। খাবারগুলো হলো অড়হর পুরি, অড়হর সিঙ্গারা, অড়হর রুটি, সেদ্ধ কাঁচা বীজের পেস্ট দিয়ে হালুয়া ও কাবাব, অড়হর বীজ ভাজা ও কাঁচা বীজের সবজি। উচ্চ মাত্রায় আঁশ, কম মাত্রায় শর্করা ও চর্বিযুক্ত হওয়ায় এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে, ওজন কমাতে, হজমশক্তি বাড়াতে এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উত্তম খাবার হিসেবে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। হেক্টর প্রতি ৪০০ থেকে ৮০০ কেজি ফলন পাওয়া যায়। ফসল লাভের পর অড়হর গাছ ও পাতা জ্বালানি, বেড়া, পশুখাদ্য ও মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা যাবে।
বাকৃবি গবেষকদের ধান ড্রায়ার ও হারমেটিক ব্যাগ উদ্ভাবন
২০১৫ সালে বাকৃবির কৃষিশক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মঞ্জুরুল আলমের নেতৃত্বে গবেষণাটি শুরু হয়। সারাদেশে মাঠ পর্যায়ে এখন পর্যন্ত ২৫০টির বেশি ড্রায়ার ব্যবহৃত হচ্ছে। এ যন্ত্রের মাধ্যমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় কিংবা যে কোনো পরিবেশে ৩-৪ ঘন্টায় ৫০০ কেজি ধান শুকানো যায়। আমদানিকৃত রাইস ড্রায়ারের এক-পঞ্চমাংশ দামেই বাকৃবি উদ্ভাবিত ড্রায়ারটি পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া ধান ও বীজ সংরক্ষণে হারমেটিক ব্যাগ উদ্ভাবন করা হয়েছে। সনাতন পদ্ধতিতে ধান সংরক্ষণে ৬ শতাংশ অপচয় হয়। বায়ুরোধী হারমেটিক ব্যাগ ব্যবহারে তা অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব। এই ব্যাগ ব্যবহারে ধান বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা প্রায় ৯০ শতাংশ বজায় থাকে।
বাকৃবির গবেষকদের মাছের শুক্রাণু সংরক্ষণে সাফল্য
ক্রায়োপ্রিজারভেশনের মাধ্যমে -১৯৬° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় মাছের শুক্রাণু সংরক্ষণের পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন বাকৃবির গবেষকদল। বাকৃবির ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিকস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার ও যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটির এগ্রিকালচারাল সেন্টারের অ্যাকুয়াটিক জার্মপ্লাজম অ্যান্ড জেনেটিক রিসোর্স সেন্টারের অধ্যাপক ড. টেরেন্স টিয়ার্সের নেতৃত্বে এ গবেষণাটি সম্পন্ন হয়। দেশে বাণিজ্যিকভাবে প্রথমবারের মতো বিভিন্ন হ্যাচারিতে এই পদ্ধতিতে পোনা উৎপাদন করা হয়েছে। ক্রায়োপ্রিজারভেশনের মাধ্যমে উৎপাদিত মাছের কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই এমনকি গুনাগুনও অক্ষুণ্ণ থাকে।
বিদেশি ফল ল্যাংসাটঃ সম্ভাবনার নতুন দুয়ার
বাকৃবির জার্মপ্লাজম সেন্টারের সাবেক প্রকল্প পরিচালক ও বাকৃবির উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এম এ রহিম প্রায় দেড়যুগ আগে থাইল্যান্ড থেকে জার্মপ্লাজম সেন্টারে ল্যাংসাটের চারা নিয়েন আসেন। দীর্ঘ গবেষণার পর চারাগাছগুলোকে এদেশের আবহাওয়া ও পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেয়া হয়েছে। দেখতে লটকনের মতো ফলটি খেতে অনেকটা লিচু ও আঙ্গুরের মাঝামাঝি স্বাদের। একটি পরিণত গাছে বছরে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ কেজি ফল ধরে। এক একটি ফলের ওজন হয় প্রায় ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম। বিদেশি এই ফলটি দ্রুতই দেশের ফলের বাজারে স্থান দখল করে নেবে বলে জানান জার্মপ্লাজমের গবেষকদল।
পনির গবেষণায় বাকৃবির গবেষকদের সাফল্য
বাকৃবির ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম ও তার গবেষকদল দেশি বিদেশি বিভিন্ন জাতের চিজ তৈরি করেছেন। প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে অনেক সাশ্রয়ী মূল্যে ও ভিন্ন পদ্ধতিতে চিজ তৈরি করে সফলতা পেয়েছেন। তাদের উদ্ভাবিত চিজের মধ্যে রয়েছে দেশীয় অষ্টগ্রাম চিজ, মোজারেলা চিজ, বিদেশি চেডার চিজ ও প্রসেসড চিজ। প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে উদ্ভাবনের এ পদ্ধতিতে প্রতিকেজি দুধ থেকে বেশি পরিমাণে চিজ আহরণ করা যায়।
আরও পড়ুন: গবেষণায় ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড পেলেন শাবিপ্রবির ৪ গবেষক
উচ্চফলনশীল বাউ মিষ্টি আলু-৫ উদ্ভাবন
বাকৃবির কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ বি এম আরিফ হাসান খান রবিনের নেতৃত্বে উচ্চফলনশীল বাউ মিষ্টি আলু-৫ উদ্ভাবন করেছেন তার গবেষক দল। সাধারণ মিষ্টি আলু হেক্টর প্রতি ফলন দেয় প্রায় ১০ দশমিক ২৫ টন। উপযুক্ত পরিচর্যার মাধ্যমে বাকৃবি উদ্ভাবিত আলু ফলন দিয়েছে হেক্টর প্রতি প্রায় ৩০ টন। ১০০-১১০ দিন বয়সের গাছ থেকে সর্বোচ্চ ফলন পাওয়া যায়।
ধান ও গমের বিকল্প হিসেবে শিমুল আলু বা কাসাভা
বাকৃবির ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির ও তার গবেষক দল কাসাভা বা শিমুল আলু নিয়ে সফল গবেষণা করেছেন। সম্প্রতি কাসাভা আলু থেকে ১৩ ধরনের মুখরোচক ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার, আটা, স্টার্চ ও পশুখাদ্যের মতো উপাদান তৈরি করা হয়েছে। অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এই আলু অনাবাদি ও পতিত জমিতে ন্যূনতম পরিচর্যায় উচ্চ ফলন পাওয়া সম্ভব। প্রতি হেক্টরে প্রায় ৯ থেকে ১০ হাজার গাছ লাগানো যায় এবং প্রায় ৫০ টন ফলন লাভ করা সম্ভব।
মাছের ত্বক থেকে মূল্যবান জেলাটিন নিষ্কাশন
বিভিন্ন দেশীয় মাছের ত্বক থেকে জেলাটিন নিষ্কাশন করেছেন বাকৃবির ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন ও তার গবেষক দল। জেলাটিন সরাসরি ব্যবহার করা যাবে খাদ্য ও ঔষধ শিল্পে। জেলাটিন দিয়ে বিভিন্ন স্বাদের আইসক্রিম, পুডিং ও ক্যান্ডি তৈরি করা যায়।
গবেষণায় জানা গেছে পাঙ্গাস, সামুদ্রিক পোয়া, বাইন, শোল মাছসহ যে কোনো মাছের ত্বক থেকে জেলাটিন নিষ্কাশন করা সম্ভব। এ প্রযুক্তি ব্যবহারে নিষ্কাশিত জেলাটিন বিদেশে রপ্তানি করা যাবে। বাণিজ্যিকভাবে মাছের ত্বক থেকে জেলাটিন নিষ্কাশন করা হলে বিদেশ থেকে জেলাটিন আমদানির খরচ কমানোর পাশাপাশি মাছের ফেলে দেওয়া বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা করাও সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: টেকসই উন্নয়নে উচ্চতর গবেষণা পরিচালনার আহ্বান ইউজিসি চেয়ারম্যানের
গলাচিপা পৌরসভায় নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ মেয়রের বিরুদ্ধে
পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা পৌরসভা মেয়রের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি পৌরসভার পাঁচটি শূন্যপদে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে অর্ধকোটি টাকার লেনদেনসহ নানা অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে।
জানা যায়, নিয়ম মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগের ছাড়পত্রের আলোকে পৌরসভার শূন্যপদ পূরণে গেল বছরের ১৩ নভেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মেয়র।
এরপর গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর গলাচিপা সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৫টি পদে লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ শেষে ফলাফল প্রকাশ করে রাতেই মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। তবে এই পরীক্ষাগ্রহণ প্রক্রিয়ায় বেশ তড়িঘড়ি করা হয়েছে। ফলে নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ও অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ উঠে। শুধু ৫টি পদে প্রায় অর্ধকোটি টাকারও বেশি অবৈধ ঘুষ লেনদেন হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার কর্মচারী, চাকরি প্রার্থী ও স্থানীয়রা।
গলাচিপা পৌরসভার কর্মচারী নিয়োগ ও পদোন্নতি বাছাই কমিটির আহবায়ক পৌর মেয়র আহসানুল হক তুহিনের ব্যক্তিগত গাড়ি চালক ও বাসার কেয়ারটেকার মো. আরিফুর রহমানকে দারোয়ান পদে এবং শ্যালকের স্ত্রীকে নকশাকার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নিয়োগ বোর্ডের সদস্যের অনুপস্থিতিতে আবেদনপত্র যাচাই বাছাই করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন কয়েকজন সদস্য।
নিয়োগ বোর্ডের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- গলাচিপা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাছিম রেজা, পটুয়াখালী পৌরসভার সচিব (ভারপ্রাপ্ত) মো. মাসুম বিল্লাহ ও শহর পরিকল্পনাবিদ ফারজানা ইয়াসমীন।
চাকরি প্রার্থীদের আবেদনে অসঙ্গতি ও মিথ্যা তথ্য স্পষ্ট থাকার পরেও স্বজনপ্রীতি ও ঘুষের বিনিময়ে তাদের লিখিত পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করানো হয়। প্রার্থীদের কুকৌশলে উর্ত্তীর্ণ দেখিয়ে রাতে মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে সকালে চুড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে আত্মগোপনে যায় মেয়র আহসানুল হক তুহিন।
জানা যায়, অসঙ্গতির আবেদনগুলোর মধ্যে দৃশ্যমান ৫ নম্বর পদের দারোয়ান পদে ৫০১ রোল নম্বরের প্রার্থী মো. আরিফুর রহমান। তিনি আবেদনের সঙ্গে বোয়ালিয়া বিপিসি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০৮ সালে ৮ম শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার সনদ জমা দিয়েছেন। তবে আবেদনের তথ্যে দেওয়া হয়েছে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৩.২৫ পেয়েছেন তিনি। যা উভয়টিই মিথ্যা, জাল ও ভুয়া। কারণ, ২০০৮ সালে কোন জেএসসি পরীক্ষা চালু হয়নি। আর পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ পদ্ধতি চালু হয়েছিল ২০১০ সালে। তারপরও নিয়োগকর্তা ও মেয়র কোন যাচাই-বাছাই না করে তড়িঘড়ি করে পরীক্ষা আয়োজনসহ নিয়োগের আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে বলেও দাবি স্থানীয়দের।
এছাড়াও বিপিসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সই জাল করে ঐ সার্টিফিকেটের ফটোকপি সত্যায়িত করতেও জাল-জালিয়াতি করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আকরামুজ্জামানের সীল ও সই জাল করা হয়েছে। যা সরাসরি গলাচিপা পৌরসভার মেয়রের নির্দেশে ভুয়া সীল তৈরি করে এসব ভুয়া সার্টিফিকেট তৈরি করা হয়েছে বলে জানা যায়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আকরামুজ্জামান জানান, আরিফুর রহমান নামের এক ব্যক্তির এনআইডি ও সার্টিফিকেটে আমার সীল সই জাল করা হয়েছে। ঐ সীল সই আমার নয়।
আরও পড়ুন: নিয়োগ বাণিজ্য: ইবির দুই শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত
গত শনিবার রাতে গলাচিপা পৌরসভা ভবনের দ্বিতীয় তলায় আরিফুর রহমানকে ভুয়া সার্টিফিকেট ও জাল জালিয়াতির বিষয় জানতে চাইলে তিনি পালিয়ে চলে যান।
নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব ও পৌরসভার সচিব (ভারপ্রাপ্ত) মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে আমি ছিলাম। তবে আমি এ পৌরসভায় অতিরিক্ত দায়িত্বে। তাই বেশি সময় দিতে পারেনি।
আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের সময় সংযুক্ত কাগজ যাচাই করা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যাচাই করা হয়েছে কোন কথা থাকলে মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগ করুন, আমি জানিনা।
এছাড়াও পটুয়াখালী পৌরসভার শহর পরিকল্পনাবিদ ফারজানা ইয়াসমীনের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ও গলাচিপা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাছিম রেজা বলেন, আমি নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হলেও যাচাই- বাছাইতে ছিলাম না। শুধু মৌখিক পরীক্ষা নেয়ার সময় উপস্থিত ছিলাম। নিয়োগের বিষয়ে কোন কথা থাকলে আপনি মেয়রের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
এ বিষয়ে গলাচিপা পৌরসভার কর্মচারী নিয়োগ ও পদন্নোতি বাছাই কমিটির আহবায়ক ও পৌর মেয়র আহসানুল হক তুহিনের সঙ্গে তার অফিসে, বাসায় এবং মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: নিয়োগ বাণিজ্য, দাতা সদস্যকে বাদ দিয়ে গোপন স্কুল কমিটি
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ঢাবি ক্যাম্পাস ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা
জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে জনসমাগম ততই বেড়ে চলেছে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা এবার আগেই নেওয়া হয়েছে। ফলে, বেশিরভাগ শিক্ষার্থী হল ত্যাগ করেছেন, করছেন। শুধুমাত্র তারাই আছেন যারা চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন অথবা খণ্ডকালীন চাকরি করছেন।
স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মোকছেদুর রহমান পলাশ নির্জন ক্যাম্পাস দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এরকমটা শুধু ঈদের ছুটিতেই দেখা যায়। ক্যাম্পাসে আসার পর থেকে এরকম খালি ক্যাম্পাস এর আগে দেখিনি।
তিনি ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের কথা স্মরণ করে বলেন, ক্যাম্পাস তখন অনেক বেশি প্রাণবন্ত ছিল।
আরও পড়ুন: ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতিসহ ১১ জনের রিমান্ড
ক্যাম্পাস এভাবে খালি হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে যেসব ব্যবসা গড়ে উঠেছে সেগুলোতে বেশ প্রভাব পড়ছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যাওয়ায় বেশ কয়েকটি হলের ক্যান্টিন ও দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের একটি দোকানের মালিক আরিফ উদ্দিন জানুয়ারির শুরুতেই দোকান বন্ধ করে চাঁদপুরে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ক্যান্টিন ম্যানেজার ডালিম সরকার বলেন, ‘শিক্ষার্থী সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে কমেছে। আমরা সাধারণত ৭০০ থেকে ৭৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য খাবার প্রস্তুত করি। এখন, তা ৩০০-এর আশেপাশে নেমেছে।’
তিনিও ভোট দিতে চাঁদপুরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থী রাজু শেখ ভালো মানের খাবারের জন্য নির্ভর করা নতুন ক্যান্টিনটি বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং পুরনো ক্যান্টিনে নির্ভর করর চ্যালেঞ্জের কথা জানান। তিনি বলেন, অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। এমনকি চায়ের স্টল পাওয়াও কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঢাবি ছাত্রলীগের হামলায় ছাত্র ইউনিয়নের ৪ নেতা-কর্মী আহত