বাংলাদেশ
বিশেষ বিধানে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিতে সীমাহীন দুর্নীতি পেয়েছে জাতীয় কমিটি
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনের অধীনে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তিতে সীমাহীন দুর্নীতি ও জালিয়াতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে এ বিষয়ে গঠিত জাতীয় কমিটি।
রোববার (২ নভেম্বর) সচিবালয়ে বিশেষ বিধান আইনের অধীনে সম্পাদিত চুক্তি পর্যালোচনায় গঠিত জাতীয় কমিটি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের কাছে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।
প্রতিবেদন হস্তান্তরের পর জাতীয় কমিটির প্রধান হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা পর্যালোচনায় বিদ্যুৎ কেনার চুক্তিতে সীমাহীন দুর্নীতি, যোগসাজশ, জালিয়াতি, অনিয়ম পেলাম। ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারদের সঙ্গে চুক্তির প্রক্রিয়ার মধ্যে আমরা এগুলো পেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন। আগামী বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় আমরা আমাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেব।’
কমিটির প্রধান বলেন, ‘আপনারা জানেন, বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি পর্যালোচনা করা খুবই জটিল ও কষ্টকর কাজ। এজন্য প্রতিবেদন দিতে বেশি সময় লেগেছে। কারণ বিষয়টি তো টেকনিক্যাল—এটি বুঝতে হবে।’
মঈনুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, ‘বিস্তারিত প্রতিবেদনে রয়েছে। আমরা লিখে দিয়েছি, এটি গোপনীয়। উপদেষ্টা মহোদয় যদি এটি প্রকাশ করে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করেন, তাহলে আপনারা বিস্তারিত বুঝতে পারবেন, জানতে পারবেন।’
কমিটির সদস্য ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন-এর ফ্যাকাল্টি অব ল অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক (অর্থনীতি) মোশতাক হোসেন খান বলেছেন, ‘যে চুক্তিগুলো হয়েছে সেগুলো সার্বভৌম চুক্তি। একটি রাষ্ট্রের সঙ্গে একটি কোম্পানির চুক্তি সই হয়েছে। সার্বভৌম চুক্তি আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত। যদি মনে হয় এখানে কোনো কারচুপি হয়েছে, আপনি ইচ্ছামত এটাকে বাতিল করতে পারবেন না। এটা বাতিল করলে আন্তর্জাতিক আদালত থেকে আপনার ওপরে অনেক বড় জরিমানা আসবে। এজন্য আমাদের অনেক সময় লেগেছে যাতে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখা যায় প্রক্রিয়াগুলো কী ছিল, সেখানে কোথায় ব্যতিক্রম হয়েছে। আমরা যে বিষয়গুলো পেয়েছি, এর সব কিছু অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনে নেই। কারণ কিছু কিছু জিনিস চলমান, সেজন্য আমরা সেগুলোকে প্রকাশ করিনি।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা আগামী মাস খানেকের মধ্যে আরও অনেক দুর্নীতির তথ্য পাবেন। এখানে ব্যাপক দুর্নীতি; এই দুর্নীতিকে আমাদের রোধ করতেই হবে। এটাকে মেনে নেওয়া বা সহ্য করা সম্ভব নয়।’
‘ইতোমধ্যে আমাদের দেশে বিদ্যুতের দাম আমাদের প্রতিযোগীদের চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি হয়ে গেছে এই দুর্নীতির কারণে। সাবসিডিগুলো সরিয়ে দিলে এটা ৪০ শতাংশ হয়ে যাবে। আমাদের হিসেবে বিদ্যুতের এই দামে বাংলাদেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো টিকতে পারবে না। তাই আমাদের এটাকে শুধরাতেই হবে। এটা যাতে না হয়, আমাদের সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’
মোশতাক হোসেন খান আরও বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেদনে আছে—কোথায় কোথায় ভুলগুলো করা হয়েছে যেখানে ইন্টারভেনশন (হস্তক্ষেপ) করা হয়েছে, ওপর থেকে হুকুম এসেছে। প্রশাসন যে সবসময় নির্দোষ ছিল তাও না; সেটারও প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর মাশুলটা দিচ্ছে সাধারণ ভোক্তা, ক্রেতা ও করদাতারা। আমাদের ওপরে চাপিয়ে দিয়ে তারা চলে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই যে বিশাল অংকের ঋণ ও বেশি দামের বিদ্যুৎ, এটা আমরা দেব। যারা এখান থেকে টাকা নিয়ে চলে গেছে, তাদের বুঝাতে হবে, আপনারা এটা থেকে পার পাবেন না। আমরা প্রমাণ সংগ্রহ করছি; অ্যাকশন (ব্যবস্থা) নেওয়া হবে ভবিষ্যতে যাতে এটা আর না হয়। এটা অনেক কঠিন কাজ। সবাইকে একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে, কারণ এটা তাড়াতাড়ি করার কাজ নয়। তাড়াতাড়ি করলে ভুল হবে, আমরা সফল হব না। এজন্য আমাদের একটু দেরি হচ্ছে।’
বিদ্যুৎ চুক্তির অনিয়ম নিয়ে দ্বিতীয় আরেকটি রিট পিটিশন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম রিট পিটিশন করেছিলেন শাহদীন মালিক। দ্বিতীয় রিট পিটিশনের বিষয়ে পত্রিকায় সেভাবে আসেনি; সেটা আসা উচিতও নয়।
‘পত্রিকায় খবর এসেছে যে আদানির চুক্তির সঙ্গে অনেক দুর্নীতি ছিল। এই দুর্নীতি সম্পর্কে কেন কিছু করা হচ্ছে না? মাননীয় আদালত একটা রুলিং দিয়েছে—৬০ দিনের মধ্যে দুদকসহ যাদের নাম রিট পিটিশনে আছে, তাদের একটা তদন্ত করে আদালতে রিপোর্ট দিতে হবে। আমরা সেই কাজেও সহায়তা করছি। আমাদের বিশ্বাস, আপনারা মাসখানেকের মধ্যে শক্ত প্রমাণ পাবেন এই দুর্নীতির।’
‘সেটা যখন হবে, তখন আদানি এবং আদানির সঙ্গে আরও কয়েকটি বড় বড় কোম্পানি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত—তাদের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে আইনি প্রক্রিয়া চালু করা হবে’, বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কমিটির আরেক সদস্য বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনোমিস্ট ও অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বিদ্যুৎ কেনার জন্য যে চুক্তিগুলো ছিল, সেগুলো আমরা পড়েছি এবং এর পেছনে যে চিঠি আদান-প্রদান হয়েছে, একটি চুক্তি করার ক্ষেত্রে যাদের মতামত নিতে হয়, সেই নথিগুলো আমরা দেখেছি। প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে নয়, বড় বড় কেসগুলোর ক্ষেত্রে।’
তিনি বলেন, ‘২০০৮-২০০৯ থেকে ২০২৪ অর্থবছর পর্যন্ত তথ্য-উপাত্ত আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। সেগুলো আমরা রিপোর্টে বিশ্লেষণ করে দেখেছি; এই ডেটা থেকে কী ধরনের অনিয়ম চোখে পড়ে।’
২০১১ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত বিদ্যুতের উৎপাদন চার গুণ বেড়েছে জানিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘কিন্তু অর্থ পরিশোধ বেড়েছে ১১ দশমিক ১ গুণ। এটি কোনো টেকনিক্যাল ফ্যাক্ট দিয়ে এক্সপ্লেইন (ব্যাখ্যা) করা সম্ভব নয়।’
এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, ‘আমরা ২০১১ সালে বিদ্যুতের জন্য ৬৩৮ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছিলাম, সেটা ২০২৪-এ এসে বেড়ে ৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। কাদের টাকা পরিশোধ করেছে, এর বিপরীতে কি পরিমাণ বিদ্যুৎ পাচ্ছি—সেই হিসাব মেলানো যায় না। সেটাই আমাদের মূল ফাইন্ডিং (অনুসন্ধানের মূল ফলাফল)। বিশেষ বিধান আইনের মেয়াদ বারবার বাড়ানো হলো, আর বারবারই দায়মুক্তির পথ খুলে গেল।
‘এ ছাড়া আছে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূতকরণ। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় সব সময় প্রধানমন্ত্রীর অধীনে ছিল। প্রধানমন্ত্রীর অফিস এবং অন্যান্য মিলে ওখানেও একটা সমস্যা আছে। এটা একদম চোখে পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘যোগসাজশ শুধু সরকারের মধ্যে হয়েছে তা নয়; আমলা, সরকারি উচ্চ পদে, রাজনীতিবিদ যারা ছিলেন—সব মিলিয়ে যোগসাজশের মাধ্যমে হিসাবের গরমিলটা হয়েছে।
জাহিদ হোসেন, ‘আমরা যে সুপারিশ করেছি, তার মধ্যে একটি বিষয় হলো, ভবিষ্যতে রক্ষা করা। যাতে এ ধরনের চুক্তি আর না হতে পারে, সেজন্য একটা স্বাধীন সংস্থা থাকার কথা আমরা বলেছি।’
এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদানির চুক্তি সরকার বাতিল করতে যাচ্ছে কিনা—জানতে চাইলে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘মুখের কথায় বললেই চুক্তি বাতিল করা যাবে না। কারণ এটা আদালতের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দিতে হবে। কোনো কারণ ছাড়া চুক্তি বাতিল করলে বড় ধরনের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘চুক্তি বাতিল করার শর্ত চুক্তির মধ্যেই থাকে। আমরা জাতীয় কমিটির সঙ্গে কাজ করছি। চুক্তি অনুযায়ী যদি বাতিল করার কোনো কারণ থাকে, তবে আমরা এটি বাতিল করতে দ্বিধা করব না। তবে শুধু দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে কিছু করা যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হঠাৎ করে চুক্তি বাতিল করে সরকারকে আরও বড় একটা দায়ের মধ্যে ফেলতে চাই না।’
৫৬ দিন আগে
দেশে ভোটার বেড়ে হয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪ জন
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃতীয় ধাপের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪ জন।
রোববার (২ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘দেশে এখন ভোটার ১২ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার ৩৮২ আর মহিলা ভোটার ৬ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার ৭২ জন। আর তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১ হাজার ২৩০।’
ইসি সচিব বলেন, ‘গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দুই মাসে নতুনভাবে ভোটার বেড়েছে ১৩ লাখ ৪ হাজার ৮৮০ জন। বর্তমানে দেশে পুরুষ ভোটার নারীর তুলনায় ১৯ লাখ ৯ হাজার ৬১০ জন বেশি।’
যারা ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১৮ বছর পূর্ণ করেছেন এবং নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন, তাদের সবাইকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, আগামী ১৮ নভেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এই তালিকায় কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। তবে ১৭ নভেম্বরের মধ্যে দাবি ও আপত্তি জানানো যাবে।
এর আগে, গত ৩১ আগস্ট প্রকাশিত সম্পূরক ভোটার তালিকায় দেশে মোট ভোটার ছিল ১২ কোটি ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৫০৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪১ লাখ ৪৫৫ জন, নারী ভোটার ৬ কোটি ২২ লাখ ৫ হাজার ৮১৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ছিলেন ১ হাজার ২৩০ জন। ওই সময় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৬৪২ জন নতুন ভোটার যুক্ত হয়। এর মধ্যে পুরুষ ৯৪ হাজার ১৯২ জন, নারী ৪৩ হাজার ৪৪৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৬ জন।
৫৬ দিন আগে
বরিশালে অপসোনিন শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
পাঁচ শতাধিক শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বরিশালে পঞ্চম দিনের মতো বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করেছেন অপসোনিন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের শ্রমিকরা।
রবিবার (২ নভেম্বর) সকাল থেকে কারখানার সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে অংশ নেন তারা। এ সময় চাকরি ফেরত দেওয়ার দাবি জানান শ্রমিকরা। তাদের আন্দোলনে সংহতি জানায় বরিশালের অন্যান্য কলকারখানার শ্রমিকরাও।
প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্টেরিপ্যাক বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় ওই শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
তবে ভুক্তভোগী শ্রমিকদের অভিযোগ—তাদের প্রত্যেকের বেতন ১২ থেকে ১৬ হাজার টাকা ছিল। তাদের বরখাস্ত করে কম বেতনে নতুন কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা করছে কর্তৃপক্ষ।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বলেন, প্রথমে আমাদের তিন দিনের ছুটি দেওয়া হয়। পরে ডাকযোগে চাকরিচ্যুতির নোটিশ পাই। চাকরি হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। চাকরি না পেলে পথে বসতে হবে।
শ্রমিকদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বাসদ বরিশাল জেলা সমন্বয়কারী ডা. মনিষা চক্রবর্তী বলেন, অমানবিকভাবে এখানকার ৫০০ শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। হঠাৎ কাজ হারিয়ে তারা চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে। তাই তাদের অধিকার আদায়ে বরিশালের সব শ্রমিক এখন ঐক্যবদ্ধ।
৫৭ দিন আগে
আগামী বছর বিশ্ব ইজতেমা জাতীয় নির্বাচনের পর: ধর্ম উপদেষ্টা
তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
রবিবার (২ নভেম্বর) সচিবালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।
ইজতেমার তারিখ পরবর্তী সময়ে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে বলেও জানান ধর্ম উপদেষ্টা।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা দুই গ্রুপকে নিয়ে আসন্ন ইজতেমার বিষয়ে আলোচনা করেছি। খুবই পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা হয়েছে। যেহেতু সামনে নির্বাচন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন নিয়ে এখন ব্যস্ত, নির্বাচনের আমেজ শুরু হয়েছে। ইজতেমা করতে গেলে অনেক মানুষের সমাগম, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জড়িত থাকার বিষয় আছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ইজতেমা হবে ইলেকশনের পর। নির্বাচনের পর ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।'
খালিদ হোসেন বলেন, 'ইজতেমা যে নির্বাচনের পরে হবে, সেই বিষয়ে উভয়পক্ষ তিন উপদেষ্টার সামনে আমাদের কাছে সম্মতি দিয়েছেন।'
তিনি আরও বলেন, 'নির্বাচন যদি ফেব্রুয়ারির প্রথম ১৫ দিনের মধ্যে হয়, এরপর রমজানে তো আর হচ্ছে না, হয়তো রমজানের পর (ইজতেমা) হবে।'
দুই পক্ষ আলাদাভাবে ইজতেমা করবে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, 'পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে ইজতেমা একসঙ্গে হওয়ার সুযোগ নেই। পরিস্থিতি এমন দিকে গড়িয়েছে যে আলাদা আলাদাভাবেই হবে।'
নির্বাচন যদি পিছিয়ে যায় তবে ইজতেমা কবে হবে- এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, 'নির্বাচন তো আপাতত পেছানোর কোনো লক্ষণ নেই। নির্বাচন তো ফেব্রুয়ারির প্রথম ১৫ দিনের মধ্যে করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এভাবেই কাজ করে যাচ্ছে। নির্বাচন পেছানোর এই মুহূর্তে কোনো পরিকল্পনা নেই। যদি এরকম কোনো পরিস্থিতি দেখা দেয়, তবে আমরা আবার বসবো, কথা বলব কি করা যায় তখন। নির্বাচন সঠিক সময়ে হবে, এভাবেই আমরা এগোচ্ছি।'
ইজতেমা পেছানোর বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, 'নির্বাচনের আগে এত বড় একটা সমাবেশ, যেখানে বিদেশি মেহমানরাও থাকেন। এই ঝুঁকিটা সরকারের জন্য নেওয়া উচিত হবে না মনে করে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওনারাও সেটা বুঝতে পেরেছেন।'
বৈঠকে মাওলানা সাদ কান্ধলভী পন্থী মাওলানা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম ও জুবায়ের পন্থী মাওলানা মাহফুজুল হক, জুনায়েদ আল হাবিব সহ অন্যান্য মুরব্বীরাও উপস্থিত ছিলেন।
৫৭ দিন আগে
চলমান আন্দোলনের কারণে ঢাকায় তীব্র যানজট, ডিএমপির দুঃখপ্রকাশ
দাবি-দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি সংগঠন একযোগে কর্মসূচি শুরু করায় গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে। এতে ঢাকায় ব্যাপক জনভোগান্তি ও তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
রোববার (২ নভেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই অপ্রত্যাশিত যানজট এবং জনসাধারণের কষ্টের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে ডিএমপি।
এতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে রোববার (২ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি সংগঠন ও গোষ্ঠী একযোগে কর্মসূচি শুরু করে। এতে করে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় রাজধানীর কোথাও কোথাও ব্যাপক জনভোগান্তি ও তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, এমপিওভুক্তির দাবিতে ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট, প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়সমূহের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তিকরণ, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে প্রেস ক্লাবের সামনে বেশ কয়েকটি সংগঠন অবস্থান করছে। এছাড়া চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট ও ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নন-ক্যাডারে নিয়োগের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চলছে। ফলে যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না।
এতে শাহবাগ, প্রেস ক্লাব, পল্টন ও মতিঝিলের মতো প্রধান এলাকায় দীর্ঘস্থায়ী যানজট সৃষ্টি হয়। এ কারণে যাত্রীরা ও অফিসগামীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
শত বাধা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে যানজট বৃদ্ধির ফলে যে জনভোগান্তি তৈরি হয়েছে, সেজন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশও করেছে।
৫৭ দিন আগে
নিম্নচাপের প্রভাবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘নভেম্বর রেইন’
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ‘নভেম্বর রেইন’ হয়েছে। আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, আজ শনিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাজধানীতে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবার ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হয়েছে।
নভেম্বর মাসের প্রথম দিন দুপুরের পর থেকেই ঢাকার আকাশ মেঘলা হয়ে আসে। বিকেলের দিকে আকাশ আরও কালো হয় এবং সাড়ে ৪টার দিকে যেন সন্ধ্যা নেমে আসে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির শুরু হয় এবং ৫টার পর ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এ সময় রাস্তায় চলাচলকারী গাড়িগুলোতে হেডলাইট জ্বলতে দেখা যায়। অনেকে ছাতা না নিয়ে বের হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন, বিশেষ করে অফিসফেরত সাধারণ মানুষের কাকভেজা হয়ে বাসায় ফিরতে হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভারতের দক্ষিণ ছত্তিশগড় ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হয়েছে এবং বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে সংকেত নামিয়ে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পূর্ব ও মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় আরেকটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এদিকে, আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এতে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে।
পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুই-এক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
৫৭ দিন আগে
৯ মাস পর দুয়ার খুললেও প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
দীর্ঘ ৯ মাস পর আজ (১ নভেম্বর) থেকে সেন্ট মাটিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকরা দ্বীপে যেতে পারেননি।
হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজ মালিকরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।
এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজ মালিকরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজ মালিকরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।
তিনি বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।
সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, রাত্রিযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তর, কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
৫৭ দিন আগে
লালমনিরহাটে টানা বৃষ্টিতে নুয়ে পড়েছে আধাপাকা ধান, দুশ্চিন্তায় কৃষকরা
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা চার দিনের বৃষ্টিতে লালমনিরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলার মাঠজুড়ে রোপা আমন ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। ফলন ঘরে তোলার আগমুহূর্তে আধাপাকা ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আমনচাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টিতে সব উপজেলার কিছু এলাকায় আমন ধান নুয়ে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে। চলতি মৌসুমে জেলায় মোট ৮৬ হাজার ৬৪৫ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সরেজমিনে দেখা যায়, হলুদ হয়ে আসা ধানের শীষ মাটিতে লেগে গেছে। বিঘার পর বিঘা জমির ধান শুয়ে পড়ায় ফলন ও গুণগত মান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকেরা।
কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের দুহুলী গ্রামের কৃষক ছালাম মিয়া জানান, তিনি এক একর জমিতে আমনের আবাদ করেছেন। ১৫ দিন পর ধান কাটার কথা ছিল।
তিনি বলেন, অনেক কষ্ট করে আবাদ করেছি। এখন কাটার সময় এলো, তখনই টানা বৃষ্টিতে ধান মাটিতে পড়ে গেছে। জমিতে পানি জমে শীষ ভিজে নষ্ট হচ্ছে, ফলন অর্ধেকে নেমে আসতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সাইখুল আরেফিন বলেন, ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে এবং কৃষকদের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যেসব ধান নুয়ে পড়েছে, সেগুলো গোছা করে বেঁধে দিলে কিছুটা হলেও ক্ষতি কমানো সম্ভব।
৫৮ দিন আগে
কয়েদিদের ফুল দিয়ে বরণ করে খুলনায় নতুন কারাগার চালু
পুরাতন কারাগার থেকে ১০০ বন্দি স্থানান্তর করে সীমিত পরিসরে চালু হয়েছে আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন খুলনার নতুন কারাগার। শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে এর কার্যক্রম।
এদিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পুরাতন কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে করে বন্দিদের নতুন কারাগারে আনা হয়। সেখানে কারা কর্তৃপক্ষ তাদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কারা অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) মো. মনির আহমেদ, খুলনা জেলা কারাগারের জেল সুপার নাসির উদ্দিন প্রধান, ডেপুটি জেল সুপার আবদুল্লাহ হেল আল আমিন, জেলার মুহাম্মদ মুনীরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জেল সুপার নাসির উদ্দিন প্রধান বলেন, “দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে ১০০ বন্দির স্থানান্তরের মধ্য দিয়ে। নতুন জেল হওয়ায় কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও ধীরে ধীরে পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যক্রম শুরু হবে।”
নতুন কারাগারে রয়েছে পাকা রাস্তা, রঙিন ভবন, টাইলসের ফুটপাত, মসজিদ, হাসপাতাল ও পার্কিং সুবিধা। বন্দিদের জন্য নির্মিত প্রতিটি ভবনের চারপাশে রয়েছে পৃথক সীমানাপ্রাচীর, যাতে এক শ্রেণির বন্দি অন্য শ্রেণির সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারে।
মোট ৫৭টি স্থাপনা নির্মিত হয়েছে, যার মধ্যে ১১টি বন্দিদের থাকার ভবন। নিরাপত্তা জোরদারে পুরো কারাগারের চারপাশে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ দেয়াল নির্মিত হয়েছে।
নবনির্মিত কারাগারের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে রয়েছে ফাঁসির মঞ্চ, যা দেশের ‘সবচেয়ে আধুনিক ফাঁসির মঞ্চ’ বলে দাবি করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
খুলনা সিটি বাইপাস (রূপসা ব্রিজ রোড) সংলগ্ন ৩০ একর জমির ওপর নির্মিত নতুন কারাগার কমপ্লেক্সের প্রাথমিক বাজেট ছিল ১৪৪ কোটি টাকা। ২০১১ সালে একনেক প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় এবং ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়।
পরবর্তীতে সময়সীমা ও বাজেট দুবার সংশোধনের পর প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়ায় ২৮৮ কোটি টাকায়। কারাগারটির মোট ধারণক্ষমতা ৪ হাজার বন্দির হলেও বর্তমানে ২ হাজার বন্দি রাখার উপযোগী অবকাঠামো প্রস্তুত রয়েছে।
৫৮ দিন আগে
সরকারি কর্মকর্তাদের নির্বাচন পর্যন্ত বিদেশি সফর এড়ানোর নির্দেশ সরকারের
আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত সরকারি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ এড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
সম্প্রতি বিদেশ ভ্রমণ সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রতিপালন নিয়ে পরিপত্র জারি করেছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।
এ পরিপত্রের কপি সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব ছাড়াও মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সব উপদেষ্টার একান্ত সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বিদেশ ভ্রমণ সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এর আগের পরিপত্র এবং অর্থ বিভাগের গত ৮ জুলাইয়ের এক চিঠিতে বিদেশ ভ্রমণ সীমিতকরণসহ বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, পরিপত্রগুলোতে জারি হওয়া নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ না করে বিদেশ ভ্রমণের ঘটনা ঘটছে। মন্ত্রণালয়গুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ও সচিব একই সময়ে বৈদেশিক সফরে যাচ্ছেন।আবার একই মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তাও একসঙ্গে বিদেশে যাচ্ছেন।
এ ধরনের প্রস্তাব প্রায়ই প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রেরণ করা হচ্ছে, যা আগের দেওয়া নির্দেশনাগুলোর পরিপন্থি বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়।
একারণে এর আগে জারি করা সব বিদেশ ভ্রমণ সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রতিপালন এবং এখন থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত একান্ত অপরিহার্য কারণ ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করার নির্দেশনা দেওয়া হয় নতুন পরিপত্রে।
৫৮ দিন আগে