বাংলাদেশ
কুমিল্লায় যুবককে কুকুর লেলিয়ে নির্যাতন, তিন নিরাপত্তাকর্মী গ্রেপ্তার
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের দেবপুর এলাকার সাকুরা স্টিল মিলে চুরির অভিযোগে আটক এক যুবককে কুকুর লেলিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় মিলের তিন নিরাপত্তাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ও পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন— মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী থানার আড়িয়াল গ্রামের মো. জুলহাস মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ শান্ত ইসলাম (২৮), মুন্সিগঞ্জ সদর থানার মুরমা গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিন শেখের ছেলে আলামিন ওরফে লিপু(৩৬), এবং বরিশাল জেলার উজিরপুর থানার মালিকান্দা গ্রামের মো. ফারুক হাওলাদারের ছেলে মো. সজিব হাওলাদার (২৬)। তারা সবাই ওই মিলের নিরাপত্তা কর্মী।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) র্যাব-১১ সিপিসি-২ কুমিল্লা ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
তিনি বলেন, `একজন মানুষকে কুকুর লেলিয়ে নির্যাতন করার মতো অমানবিক ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
নির্যাতনের শিকার যুবকের নাম জয় চন্দ্র সরকার (৩০)। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানার শীতলপুর গ্রামের শ্রী বিষ্ণুচন্দ্র সরকারের ছেলে।
এ ঘটনায় শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে বুড়িচং থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হক।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার তিন নিরাপত্তাকর্মীকে আদালতে পাঠানো হবে। ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, দুটি কুকুর মিল প্রাঙ্গণে আটক জয় চন্দ্র সরকারকে আক্রমণ করছে এবং কয়েকজন ব্যক্তি লাঠি দিয়ে তাকে আঘাত করছে। কুকুরের কামড় ও লাঠির আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তিনি প্রাণ বাঁচানোর জন্য চিৎকার করতে থাকেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাকুরা স্টিল মিলে প্রায়ই শুক্রবার জুমার নামাজের সময় চুরির ঘটনা ঘটত। এ জন্য কিছু নিরাপত্তাকর্মী ও শ্রমিক নামাজে না গিয়ে চোর ধরার জন্য প্রস্তুত ছিল। জয় চন্দ্র সরকার মিলের ভেতরে প্রবেশ করলে তাকে ধরে কুকুর লেলিয়ে দেওয়া হয় এবং পরে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।
১০০ দিন আগে
বাংলাদেশে প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের সব ক্রয়প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হবে: যুক্তরাষ্ট্র
প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের ক্ষেত্রে সব ধরনের ক্রয়প্রক্রিয়া পুরোপুরি উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে সাবেক সরকারের অধীনে চলমান সব সরাসরি দরকষাকষি বা আলোচনাকে স্থগিত করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা প্রতিবেদন ২০২৫- এ তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের আর্থিক স্বচ্ছতা উন্নত করতে ওই প্রতিবেদনে বিভিন্ন পদক্ষেপের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আইন বা বিধির মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের জন্য চুক্তি ও লাইসেন্স দেওয়ার মানদণ্ড ও প্রক্রিয়া নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশের সরকার। কার্যক্ষেত্রে সেসব বিধিমালা অনুসরণ করা হচ্ছে বলেও মনে করে ওয়াশিংটন। তবে সরকারি ক্রয়চুক্তি সম্পর্কিত সীমিত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সরকার পরিবর্তনের কারণে দেশের সর্বোচ্চ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারের হিসাব নিরীক্ষা করেনি, তবে সংক্ষেপে কিছু ফলাফল প্রকাশ করেছে, যেগুলো যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। তবে ওই নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক মান অনুসারে স্বাধীন নয় বলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা সম্মেলনের লক্ষ্য রাজনৈতিক সমাধান: মৌনির সাতৌরি
বাংলাদেশের আর্থিক স্বচ্ছতা আরও বাড়াতে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো— অর্থবছর শেষে যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা; বাজেট নথি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নীতিমালা অনুযায়ী প্রস্তুত করা; বাজেটে নির্বাহী দপ্তরগুলোর ব্যয় খাত আলাদাভাবে উপস্থাপন করা; সরকারের আয়-ব্যয়ের পূর্ণাঙ্গ চিত্র বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা; সর্বোচ্চ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী স্বাধীনতা প্রদান এবং যথেষ্ট সম্পদ ও সময়োপযোগী পূর্ণাঙ্গ বাজেট নথিতে প্রবেশাধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া; নিরীক্ষা প্রতিবেদনে সুপারিশ, বিশ্লেষণ ও পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা প্রকাশ করা; প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের জন্য চুক্তি ও লাইসেন্স প্রদানের তথ্য প্রকাশ করা এবং সরকারি ক্রয়চুক্তির তথ্য জনসমক্ষে আনা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পর্যালোচনাকালীন সময়ে বাংলাদেশে অরাজনৈতিক অন্তর্বর্তী সরকার আগের সরকারকে প্রতিস্থাপন করেছে। তারা আগের সরকারের বাজেট সুপারিশ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছে এবং আর্থিক স্বচ্ছতা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার শুরু করেছে।
আগের সরকার তাদের নির্বাহী বাজেট প্রস্তাব ও অনুমোদিত বাজেট জনসমক্ষে প্রকাশ করেছিল, অনলাইনেও তা পাওয়া যেত। তবে অর্থবছর শেষে প্রতিবেদন নির্ধারিত সময়ে প্রকাশ করা হয়নি। বাজেটের তথ্য সাধারণভাবে নির্ভরযোগ্য হলেও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নীতিমালা অনুযায়ী বাজেট নথি তৈরি করা হয়নি বলে অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ঋণসংক্রান্ত তথ্য জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল। বাজেট নথিতে পরিকল্পিত আয় ও ব্যয়ের চিত্র ছিল, যার মধ্যে প্রাকৃতিক সম্পদের আয়ও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে নির্বাহী দপ্তরগুলোর ব্যয় আলাদা করে দেখানো হয়নি এবং পূর্ণাঙ্গ আয়-ব্যয়ের চিত্রও বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি। যদিও বাজেট নথিতে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দ ও আয়ের তথ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হচ্ছেন ৪ রাজনীতিবিদ
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, আর্থিক স্বচ্ছতা কার্যকর সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি বাজারে আস্থা তৈরি করে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে শক্তিশালী করে এবং মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য সমান প্রতিযোগিতার সুযোগ তৈরি করে।
তিনি আরও বলেন, আর্থিক স্বচ্ছতা সরকারকে আরও জবাবদিহিমূলক করে তোলে কারণ এতে সরকারের বাজেট ও ব্যয়ের স্বচ্ছতা জনসমক্ষে উন্মুক্ত হয়। বার্ষিক এই স্বচ্ছতা মূল্যায়ন মার্কিন করদাতাদের অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতেও সহায়ক বলেও মনে করেন তিনি।
২০২৫ সালের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ১৪০টি সরকার ও সংস্থার মধ্যে ৭১টি ন্যূনতম আর্থিক স্বচ্ছতার মানদণ্ড পূরণ করেছে। বাকি ৬৯টি মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তবে এদের মধ্যে ২৬টি সরকার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ অর্থবছরের পররাষ্ট্র কার্যক্রম ও সংশ্লিষ্ট কর্মসূচি বরাদ্দ আইন অনুযায়ী ২০২৫ সালের প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে ২০১৪ সালের অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা প্রতিবেদনে চিহ্নিত দেশ ও সংস্থাগুলো এবং গত এক বছরে ন্যূনতম আর্থিক স্বচ্ছতা মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ দেশগুলোকে মূল্যায়ন করা হয়েছে।
এ ছাড়াও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাজেট নথি, চুক্তি ও লাইসেন্স প্রকাশের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা কতটুকু নিশ্চিত হয়েছে এবং যেসব দেশ ন্যূনতম মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ, তারা এই সময়কালে কতটা অগ্রগতি করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বাজেট নথির প্রাপ্যতা, পূর্ণতা, নির্ভরযোগ্যতা এবং সরকারি চুক্তি ও লাইসেন্স প্রদানের প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা মূল্যায়ন করেছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
১০০ দিন আগে
নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা সম্মেলনের লক্ষ্য রাজনৈতিক সমাধান: মৌনির সাতৌরি
আসন্ন নিউইয়র্ক সম্মেলন রোহিঙ্গা সংকটের রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে সহায়ক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান মৌনির সাতৌরি।
সম্প্রতি, ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।
মৌনির সাতৌরি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র দীর্ঘমেয়াদি সমাধান মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং বাস্তুচ্যুত জনগণের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা। ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) এই লক্ষ্য সমর্থন করে বলে জানান তিনি।
সাতৌরি বলেন, তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে এই সংকটের রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে পেতে সহায়ক হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।
২০১৭ সালে মিয়ানমারে সামরিক দমনপীড়নের কারণে পালিয়ে আসা ১৩ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বর্তমানে আশ্রয় দিচ্ছে বাংলাদেশ। তবে শরণার্থী শিবিরগুলোতে অতিরিক্ত ভিড়, সীমিত সম্পদ ও চলমান মানবিক চ্যালেঞ্জের কারণে পরিস্থিতি দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে।
অন্যদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান
অর্থায়ন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে সাতৌরি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটে এখন ইইউ প্রধান দাতায় পরিণত হয়েছে। তবে তহবিল সংকট মোকাবিলায় অন্য দাতাদের, বিশেষ করে আঞ্চলিক দাতাদের সম্পৃক্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন বন্ধের ভার বাংলাদেশের বহন করা সম্ভব নয়, আবার সেটি স্বাভাবিকও নয়। তবে আপাতত শরণার্থীরা বাংলাদেশেই আছে এবং তাদের প্রয়োজন মেটাতে হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে।
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেখানে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একই সঙ্গে এটি বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টা স্বীকার ও প্রশংসা করার একটি রাজনৈতিক বার্তাও।
তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই প্রশংসা করি এবং স্বাগত জানাই যে বাংলাদেশ গত আট বছর ধরে দশ লাখেরও বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু এই বিশাল প্রচেষ্টা অনেক সময় অবহেলিত থেকে গেছে।’
বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতে সহায়তা করছে ইইউ: রাষ্ট্রদূত মিলার
ইইউ বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকটে অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি অব্যহত রেখেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জাতিসংঘে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ৩০ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের সংকট নিয়ে উচ্চপর্যায়ের প্লেনারি বৈঠক করবে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে অংশ নেবেন।
এই বৈঠকের উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক মনোযোগ ধরে রাখা, বাস্তব পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং একটি কার্যকর, সময়সীমাবদ্ধ পরিকল্পনা প্রস্তাব করা যাতে টেকসই সমাধানসহ বাস্তুচ্যুত জনগণের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা যায়।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে অংশ নিতে ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে পৌঁছাবেন অধ্যাপক ইউনূস।
সম্প্রতি কক্সবাজারে ‘স্টেকহোল্ডার্স ডায়ালগ’-এ বক্তব্য রাখতে গিয়ে অধ্যাপক ইউনূস সাত দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন, যেখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রোহিঙ্গাদের দ্রুত, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ, স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য একটি কার্যকর রোডম্যাপ প্রণয়নের আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা কেবল কথার জালে বন্দি থাকতে পারি না। এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার উপযুক্ত সময়।’
পড়ুন: জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হচ্ছেন ৪ রাজনীতিবিদ
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকট শুধু বাংলাদেশের নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও দায়িত্ব। সমাধান নিয়ে ভাবা এবং বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখা সবার কর্তব্য।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু ও এর টেকসই সমাধানকে অবশ্যই বৈশ্বিক এজেন্ডায় রাখতে হবে। কারণ তাদের প্রত্যাবাসনের আগ পর্যন্ত সহায়তার প্রয়োজন থাকবে।
১০০ দিন আগে
১৮ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে ইসি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আগামী ১৮ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তালিকায় ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১৮ বছর পূর্ণ করা নতুন ভোটাররাও অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
ইসি জানায়, খসড়া ভোটার তালিকা আগামী ১ নভেম্বর প্রকাশ করা হবে। এ সময় আপত্তি ও সুপারিশ গ্রহণের পর ১৮ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
সম্প্রতি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাঠানো এক চিঠিতে ইসি সচিবালয় উল্লেখ করেছে, খসড়া ভোটার তালিকা নিয়ে আপত্তি, দাবি ও সংশোধনের আবেদন থাকলে তা ১৭ নভেম্বরের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হবে। এরপর ১৮ নভেম্বর প্রকাশ পাবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা।
বর্তমানে দেশের মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৫০৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪১ লাখ ৪৫৫ জন, নারী ভোটার ৬ কোটি ২২ লাখ ৫ হাজার ৮১৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১ হাজার ২৩০ জন।
১০১ দিন আগে
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা জাতীয় নির্বাচনে কাজে লাগবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও নিরাপদভাবে অনুষ্ঠানে কাজে লাগবে।’
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘ইতোমধ্যে ডাকসু ও জাকসু নির্বাচন নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিগগিরই রাকসু ও চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
‘আজকের সভায় ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টর ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে, তাই এ নির্বাচনগুলো দেখে আমাদের কিছু অভিজ্ঞতা হচ্ছে। সে অভিজ্ঞতা জাতীয় নির্বাচনে কীভাবে প্রয়োগ করা যায়, সেটা শেয়ারের জন্য আজকের এ সভা হয়েছে।’
‘তাছাড়া যেহেতু ইতোমধ্যে দুইটা ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সে দুইটা নির্বাচনের ছোটখাটো ভুলগুলো কীভাবে সমাধান করা যায়— সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আজকের সভায় নির্বাচন বিষয়ে যেসব ভালো পরামর্শ এসেছে, তা আমরা ভবিষ্যতে কাজে লাগাব। নির্বাচনের বিষয়ে যেসব পরামর্শ এসেছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা নির্ধারণ, ভোট গণনার প্রক্রিয়া নির্ধারণ, কালি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে, ইত্যাদি। তাছাড়া নির্বাচনের ফলাফল দ্রুত ঘোষণার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ, ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের ছবি যুক্ত আইডিকার্ড, স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘রাকসু ও চাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রতিষ্ঠানদুটির কোনো উদ্বেগ নেই। দুটি নির্বাচনই সুষ্ঠু, নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণভাবে হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে সব পক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানান উপদেষ্টা। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুরোধ করেন এবং সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
ব্রিফিং অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার উপস্থিত ছিলেন।
১০১ দিন আগে
নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি করা জেনারেটরসহ যুবক গ্রেপ্তার
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের নুরাল পাগলের দরবার থেকে চুরি করা জেনারেটর উদ্ধার ও মিজানুর রহমান (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সদর থানার মিজানপুর ইউনিয়ন থেকে ডিবি এবং গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের যৌথ দল অভিযান পরিচালনা করে চুরি যাওয়া জেনারেটর উদ্ধারসহ তাকে গ্রেপ্তার করে।
মিজানুর রহমান রাজবাড়ী সদর উপজেলার লক্ষীকোল সোনাকান্দর এলাকার হারুনুর রশিদের ছেলে। এই নিয়ে মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মোঃ শরীফ আল রাজীব।
এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে নুরাল পাগলের বাড়ি ও দরবার ইস্যুতে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের এস আই সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে প্রায় তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। দায়েরকৃত এই মামলায় মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অপরদিকে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা, কবর থেকে লাশ উত্তোলনের পর ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় দরবারে ভক্ত নিহত রাসেল মোল্লার বাবা সাবেক ইউপি সদস্য আজাদ মোল্লার বাদী হয়ে ৮ সেপ্টেম্বর প্রায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার জনকে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় মিজানুর রহমানসহ এখন পর্যন্ত মোট ৯জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
দুটি মামলায় মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শরীফ আল রাজীব বলেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর গোয়ালন্দের নুরাল পাগলের দরবারে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলা ও ভাঙচুরের সময় সেখানে লুটপাট চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় মিজানুর রহমান নামের এক ব্যক্তি জেনারেটর চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে জেনারেটর চুরি করে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তি মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছি। তাকে নুরাল পাগলের দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো ও হত্যার ঘটনায় ভক্ত রাসেলের বাবা সাবেক ইউপি সদস্য আজাদ মোল্লার দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার মিজানুরকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে রাজবাড়ীর বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।
১০২ দিন আগে
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত গেল ১২০০ কেজি ইলিশ
শারদীয় দূর্গাপুজা উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রথম চালানে ১ হাজার ১৯২কেজি ইলিশ মাছ ভারতে রপ্তানি হয়েছে। এ বন্দর দিয়ে প্রায় ৯০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে ২টি পিকআপে করে মাছগুলো ত্রিপুরা রাজ্যের
আগরতলা স্থলবন্দরে প্রবেশ করে। প্রতি কেজি ইলিশের দাম ধরা হয়েছে সাড়ে ১২ মার্কিন ডলার।
এসব ইলিশ ভারতে রপ্তানী করেছে যশোরের বেনাপোলের মাহতাব এন্ড সন্স। মাছের আমদানীকারক আগরতলার পরিতোষ বিশ্বাস।
উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম বলেন, মাছের তাপমাত্রাসহ অন্যান্য বিষয় তারা পরীক্ষা করে দেখেছেন। মাছ রপ্তানিযোগ্য মনে হওয়া সেই অনুযায়ি ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বাকি প্রক্রিয়া বন্দরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ করবেন।
এবার দুর্গাপূজা উপলক্ষে শর্তসাপেক্ষে বাংলাদেশ থেকে এক হাজার ২০০টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। মোট ৩৭টি প্রতিষ্ঠান এসব ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছে।
প্রতি কেজি সাড়ে ১২ ডলার হিসেবে দাম পড়েছে ১৫২৫ টাকা। একেকটি ইলিশ প্রায় এক কেজির মতো ওজন।
স্থলবন্দরের মাছ রপ্তানীকারক মোঃ নেছার উদ্দিন ভূইয়া বলেন, ২টি পিকআপে ৫৩টি বক্সে ১ হাজার ১৯২ মাছ পাঠানো হয়েছে।
আজ বিকালে আরও কিছু ইলিশ পাঠানোর কথা রয়েছে।
১০২ দিন আগে
আমি যে কাজ করেছি তা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো দিন হয়নি: উপদেষ্টা আসিফ নজরুল
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘সরকার আইন ও বিচার সম্পর্কিত যে পরিবর্তন করে দিয়েছি তা পরবর্তী সরকার অব্যাহত রাখলে দেশের সাধারণ মানুষ সঠিক বিচার পাবে।
তিনি বলেন, এমন আরোও অনেক কাজ করা হয়েছে যার ফল পরবর্তীতে পাওয়া যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মহানগরীর গ্র্যান্ড সিলেট হোটেলে জারিকৃত আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বাধ্যতামূলক বিধান কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
আসিফ নজরুল বলেন, আমরা প্রায়ই শুনি, আপনি কি করেছেন? শহীদের রক্তের উপর আপনি এখানে বসেছেন? আমরা আপনাকে এখানে বসিয়েছি? আমি বলতে চাই, আমি তো ফুটবল খেলোয়াড় বা মঞ্চের অভিনেতা না যে, আমি যা করছি তা দেখতে পারবেন। আমি কি করছি তা আমার কাজের মধ্য দিয়ে দেখতে পারবেন। আমি অনেক কাজ করেছি যা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনদিন হয়নি।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এই মাধ্যমে অনেকের মামলা ছাড়া কম সময় ও কম খরচে বিরোধ সমাধান হচ্ছে। মামলা করার আগে বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার কার্যক্রমের দারস্থ হতে হবে। পরে চাইলে মামলায় যেতে পারবেন।’
জাতীয় নির্বাচন: ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যাবে বিএনপি
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আইনগত সহায়তা সম্প্রসারণ ও আরও গতিশীল করতে ইতিমধ্যে আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ জারি করা হয়েছে। অধ্যাদেশের আওতাভুক্ত বিষয়গুলো—যেমন পারিবারিক বিরোধ, পিতামাতার ভরণপোষণ, বাড়ি ভাড়া, অগ্রক্রয়, বন্টন, যৌতুক ইত্যাদি—এখন থেকে মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার আওতায় আনা হচ্ছে।
প্রথম ধাপে এই বাধ্যতামূলক বিধান ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের ১২ জেলায় কার্যকর হতে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে সিলেটের গ্র্যান্ড সিলেট হোটেলে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা।
১০২ দিন আগে
জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হচ্ছেন ৪ রাজনীতিবিদ
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হচ্ছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এ তথ্য জানান।
এ অধিবেশনে যোগদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলটি আগামী ২২ সেপ্টেম্বর একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে নিউইয়র্কে পৌঁছাবে। ২৩ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের উচ্চপর্যায়ের সাধারণ বিতর্ক ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তাদের।
প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠক হবে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এখন পর্যন্ত প্রতিনিধি দলের আলোচ্যসূচির মধ্যে যেগুলো ঠিক হয়েছে, এর মধ্যে কিছু যোগও হতে পারে আবার কিছু বাদও হয়ে যেতে পারে।
এখন পর্যন্ত আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে: ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মহাপরিচালক, জাতিসংঘ মহাসচিব, জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ইতালি, তুরস্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, কসোভো, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের প্রতিনিধি দলের প্রধানের সঙ্গে বৈঠক।
জাতিসংঘের অধিবেশনের এবারের প্রতিপাদ্য ‘বেটার টুগেদার: এইটি ইয়ারস অ্যান্ড মোর ফর পিস, ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’।
এবারের জাতিসংঘ অধিবেশনে এলডিসি গ্রাজুয়েশন পেছানোর ব্যাপারে কোনো প্রস্তাব দেবে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এলডিসি গ্রাজুয়েশন পেছানোর ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পেছাতে চাইলেই যে হয়ে যাবে এমন কিন্ত নয়, এর সঙ্গে অনেক বিষয়াদি যুক্ত থাকে।’
সফরে নিরাপত্তা শঙ্কা নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিদেশে কোনো দলের আন্দোলন দমানোর মতো ক্ষমতা সেদেশের সরকারেরও নেই। আমরা ধরে নিচ্ছি সেখানে প্রটেস্ট (আন্দোলন) হবে। তবে, আমরা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত নই।’
২২ সেপ্টেম্বর এবার উচ্চপর্যায়ের সভার মধ্য দিয়ে জাতিসংঘের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনের অনুষ্ঠান শুরু হবে।
ফেব্রুয়ারিতে উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণ ও স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে: প্রধান উপদেষ্টা
২৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে বিতর্ক পর্ব। ওই দিন থেকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা সাধারণ বিতর্কে অংশ নেবেন। জাতিসংঘের তিনটি মূল স্তম্ভ— শান্তি ও নিরাপত্তা, উন্নয়ন এবং মানবাধিকার সবই সমানভাবে এবারের অধিবেশনে গুরুত্ব পাবে।
পররাষ্ট উপদেষ্টা বলেন, এ বছরের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এবার ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির সভাপতিত্বে ‘হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য সিচুয়েশন অফ রোহিঙ্গা মুসলিম এন্ড আদার মাইনরিটিজ ইন মায়ানমার’ শীর্ষক একটি উচ্চপর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। রোহিঙ্গা সঙ্কটকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এমন একটি উচ্চ-পর্যায়ের সভার আয়োজন এবারই প্রথম বলে জানান উপদেষ্টা।
২৬ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতিসংঘ অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন। তিনি তার বক্তব্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষার পরিপ্রেক্ষিতে বিগত এক বছরে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সংস্কার ও আগামী দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় বিশ্বদরবারে তুলে ধরবেন বলে আশা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তৌহিদ হোসেন বলেন, জাতিসংঘের এবারের অগ্রাধিকার ইস্যুগুলোর প্রত্যকটিই বাংলাদেশের জন্য সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই ইস্যুগুলোর ওপর যেসব ইভেন্ট আছে, বাংলাদেশ তার সব কটিতেই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করছি। বাংলাদেশ জাতিসংঘসহ বহুপাক্ষিক কূটনীতিকে জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসাবে মনে করে।
সার্বিক বিবেচনায় এবারের অধিবেশনে উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে বিস্তৃত ও সুদৃঢ় করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
১০২ দিন আগে
ফেব্রুয়ারিতে উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণ ও স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের জন্য অন্তবর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, পরিষ্কার, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। কিছু শক্তি এখনও নির্বাচন স্থগিতের চেষ্টা করলেও অন্তর্বর্তী সরকার নির্ধারিত সময় অনুযায়ী তা নিশ্চিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মৌনির সাতুরির নেতৃত্বাধীন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের (এমইপি) একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারের বরাতে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করেছি। রমজানের ঠিক আগে ফেব্রুয়ারির শুরুতে এটি অনুষ্ঠিত হবে।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তিন দশকেরও বেশি সময় পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংগঠনের নির্বাচন শুরু হওয়ায় জনসাধারণের মধ্যে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উৎসাহ বাড়ছে।’
তরুণ ভোটাররা রেকর্ড সংখ্যায় ভোট দেবেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘১৫ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো তাদের মধ্যে অনেকে ভোট দেবেন।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ একটি নতুন সূচনা প্রত্যক্ষ করবে। এটি আমাদের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় চিহ্নিত করবে– জাতির জন্য একটি নতুন যাত্রা।’
ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা ও প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক উত্তরণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অব্যাহত সমর্থন এবং চলমান রোহিঙ্গা মানবিক সংকট নিয়ে মতবিনিময় করেন।
কোনো সরকার নাগরিকের মৌলিক অধিকার বঞ্চিত করতে পারে না: অধ্যাপক ইউনূস
সফররত আইনপ্রণেতারা আশা করেন, আসন্ন নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হতে পারে। একজন আইনপ্রণেতা গত ১৪ মাসে প্রধান উপদেষ্টা এবং তার দলের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
১০৩ দিন আগে