বাংলাদেশ
মহেশখালী-মাতারবাড়ি বাংলাদেশের পরবর্তী বাণিজ্যিক কেন্দ্রে রূপান্তরিত হবে: প্রেস উইং
মহেশখালী-মাতারবাড়ি সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্প (মিডা) সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যিক কেন্দ্রে রূপান্তরের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে প্রকাশিত মিডা স্ট্র্যাটেজিক ভিশনের তথ্য অনুযায়ী, এই প্রকল্পটির মাধ্যমে লজিস্টিকস, শক্তি ও বিদ্যুৎ, উৎপাদন এবং মৎস্য শিল্পকে এক স্থানেই একীভূত করা হবে।এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো গভীর সমুদ্রবন্দর সুবিধা, এনার্জি টার্মিনাল, বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোকে সংযুক্ত করা, যাতে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো জ্বালানী উৎস ও লজিস্টিকসের কাছাকাছি অবস্থানে থেকে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে।
বেশ কিছু সুবিধার কারণে মাতারবাড়ি-মহেশখালী এলাকাকে এই বহুমুখী প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। সুবিধাগুলো হলো— সমুদ্রবন্দরের জন্য প্রয়োজনীয় গভীরতা, জ্বালানি, বিদ্যুৎ, উৎপাদন ও ভারী শিল্প, মেরিন ও মৎস্য খাতের জন্য উপযুক্ত স্থলভাগ।
এই অর্থনৈতিক কেন্দ্রটির লক্ষ্য আন্তর্জাতিক শিপিং লাইনের সরাসরি প্রবেশের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টি করা।
জাইকার একটি গবেষণা অনুযায়ী, আগামী ২০-৩০ বছরের মধ্যে এই প্রকল্পে ৬ হাজার থেকে সাড়ে ৬ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ আসবে, যার মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ৭০০ থেকে ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার বেসরকারি বিনিয়োগ এবং ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)।
সম্পূর্ণ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের মোট জিডিপিতে প্রায় ১৫ হাজার কোটি ডলারের প্রভাব পড়বে, যার মধ্যে সরাসরি জিডিপি প্রভাব হবে প্রায় ৭ হাজার থেকে সাড়ে ৭ হাজার কোটি ডলার।
প্রকল্পটি দীর্ঘমেয়াদে দেড় লাখ সরাসরি ও প্রায় ২৫ লাখ পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।
এই অঞ্চল কক্সবাজারের অর্থনীতির জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। পর্যটকদের সংখ্যা বর্তমানে থেকে দেড় গুণ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই উদ্যোগের চারটি প্রধান স্তম্ভ রয়েছে: বন্দর ও লজিস্টিকস, উৎপাদন, বিদ্যুৎ ও শক্তি, এবং মৎস্য খাত।
মিডা স্ট্র্যাটেজিক ভিশনের আলোকে ভৌগোলিক সুবিধাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য এই স্তম্ভগুলো নিয়ে সংশোধন ও পরামর্শ চলছে।
চারটি স্তম্ভকে ধরে রাখার জন্য শারীরিক ও সামাজিক অবকাঠামোর পাশাপাশি মাতারবাড়িতে একটি পর্যটন অঞ্চলও সমর্থন করা হবে।প্রতিটি স্তম্ভেরই সংক্ষিপ্ত ও দীর্ঘমেয়াদী কৌশল রয়েছে, পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রভাব, যা নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।
এই উদ্যোগের প্রথম স্তম্ভ হলো গভীর সমুদ্রবন্দর এবং এর সংযুক্ত লজিস্টিক্স সিস্টেম। প্রকল্পটির এই অংশটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেই সুবিধা বাংলাদেশের বাকি বন্দরগুলোতে নেই— বাল্ক কার্গো ও কনটেইনার উভয়ই পরিচালনা করবে।
পড়ুন: সমুদ্রই হবে বিশ্বের পথে আমাদের মহাসড়ক: প্রধান উপদেষ্টা
বন্দর ও লজিস্টিকস স্তম্ভের আওতায় মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর গড়ে তোলা হবে, যা বাংলাদেশে অন্যান্য বন্দরগুলোর চেয়ে বৃহত্তর এবং আধুনিক ধাঁচের। এই বন্দর প্রায় ১৮.৫ মিটার গভীর, যার ফলে বড় বড় জাহাজ সরাসরি বন্দরে নোঙর করতে সক্ষম হবে। এটি চট্টগ্রাম বন্দরের তুলনায় বড় ধরণের সুবিধা।
চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে পণ্য খালাসে ছোট জাহাজের প্রয়োজন হয় এবং পণ্য বহন করতে কয়েকটি ধাপ পার করতে হয়।কয়েকধাপের জটিলতা কমায় অর্থ সাশ্রয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই সাশ্রয় অন্যান্য আবশ্যকীয় পণ্যের খরচেও প্রভাব ফেলবে। উদাহরণস্বরূপ, শিপিং খরচ কমার ফলে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম প্রায় ৫০ টাকা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
সমুদ্রের প্রাকৃতিক গভীরতার সুবিধা নিয়ে মাতারবাড়ি বাংলাদেশের মোট বাল্ক কার্গোর ২৫ শতাংশ এবং কন্টেইনার কার্গোর ৪৫ শতাংশ বহন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সামগ্রিক বন্দর সক্ষমতা আগামী ৩০ বছরে প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়বে।
এছাড়া, বৃহৎ আকারের পণ্যগুলোর জন্য আরও খুচরা কার্গো স্টেশন, চার লেন সড়ক, চকরিয়ায় ইন্টারমডাল কনটেইনার ইয়ার্ড থেকে ঢাকা পর্যন্ত ডাবল-লাইন রেল সংযোগের পরিকল্পনাও করা হয়েছে।
মাতারবাড়ির গভীর সমুদ্র বন্দর থেকে বাল্ক ও কন্টেইনারাইজড পণ্যের ক্ষেত্রে খরচ প্রতিযোগিতামূলক হওয়ায় বড় পরিসরের জাহাজ নির্মাণ, পুনর্ব্যবহার এবং ইস্পাত উৎপাদনের সুযোগগুলোও বিবেচনায় আনা হচ্ছে। উৎপাদন কেন্দ্রের এ ধরনের সমন্বয় স্বাভাবিকভাবে সৃষ্টি হবে।
মাতারবাড়ি বন্দরের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ শিল্পজাত পণ্য বাণিজ্য করা হবে, যা প্রস্তুতকারকের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল হিসেবে কাজ করবে।
তিন ধাপের যাচাই-বাছাই শেষে ইস্পাত, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, অটোমোবাইল, ইলেকট্রনিক্সসহ নয়টি উপযুক্ত শিল্প নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া রপ্তানি বৈচিত্র্যের জন্য ফার্মাসিউটিক্যালস ও এপিআই, সিন্থেটিক ফাইবার এবং জাহাজ নির্মাণকেও নির্দিষ্ট করা হয়েছে।দীর্ঘমেয়াদে প্রায় ৬০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ পেমেন্ট ব্যালেন্স সাশ্রয় অর্জন সম্ভব।
গভীর সমুদ্র লজিস্টিক্স এবং নিজস্ব ব্যবহারের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ একটি প্যাকেজ ডিলের মাধ্যমে সঠিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করে। এই কেন্দ্র আগামী ৩০ বছরে বাংলাদেশের মোট উৎপাদনের প্রায় ১০ শতাংশের সরাসরি অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তৃতীয় স্তম্ভ তৈরির ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ চাহিদার গড় বার্ষিক বৃদ্ধির হার প্রায় ৬.৭ শতাংশ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
আমদানি নির্ভরশীলতা ও বিশ্ববাজারের মূল্য ওঠানামার প্রভাবিত হওয়া বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদে চাহিদার ৯০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায়।
এই লক্ষ্য অনুসারে একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যেখানে প্রচলিত এবং নতুন শক্তির উৎসের সমন্বয়ে দ্রুত গড়ে তোলা হবে।
১১৬ দিন আগে
সমুদ্রই হবে বিশ্বের পথে আমাদের মহাসড়ক: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘শুধু গভীর সমুদ্র বন্দর নয়, আমাদের একটা ব্লু ইকনোমি গড়ে তোলার ভিশন নিয়ে কাজ করতে হবে। ওই এলাকা শুধু একটা ফ্যাসিলেটিং জোন হিসেবে না, বরং সেখানে একটা নতুন শহরের জন্ম হবে। সেখান থেকে আমাদের আন্তর্জাতিকভাবে কানেক্টিভিটি তৈরি হবে। সমুদ্রই হবে বিশ্বের পথে আমাদের মহাসড়ক।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নবগঠিত মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (মিডা) সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সময় তিনি এ কথা বলেন।
মিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের নেতৃত্বে সাক্ষাৎ করেছেন মিডার সদস্যরা।
প্রধান উপদেষ্টা গভীর সমুদ্র নিয়ে গবেষণার ওপর বিশেষভাবে জোর দিয়েছেন। মহেশখালী অঞ্চলে একটি আন্তর্জাতিক মানের ট্রেইনিং ফ্যাসিলিটি গড়ে তোলার ওপরেও জোর দেন তিনি। এক্ষেত্রে বিশ্বে যারা বিশেষজ্ঞ আছেন প্রয়োজনে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রফেসর ইউনূস।
পড়ুন: বাংলাদেশের প্রধান খাতগুলোতে বিনিয়োগে আগ্রহী চীনা ব্যবসায়ীরা: বিডা
তিনি বলেন, ‘আমরা সমুদ্র জগতে কখনো প্রবেশ করিনি। ওটা নিয়ে চিন্তাও করিনি। এ বিষয়ে গবেষণা, ফাইন্ডিংস নেই। এর সম্পর্কিত কী কী গবেষণা আছে, অন্য দেশের গবেষণাপত্র যেটা আমাদের সাথেও মিলবে ভালো সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে এবং নিজস্ব গবেষণা করতে হবে। এজন্য প্রতিষ্ঠান দরকার। একাডেমিয়া গড়ে তুলতে হবে, ওশান ইকনোমি নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স আয়োজন করতে হবে।’
এর পাশাপাশি, পরিবেশ সংরক্ষণের ওপরেও জোর দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে ইকো-ট্যুরিজম পার্ক করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সেখানকার বনভূমি এখন কী অবস্থায় আছে, ভবিষ্যতে আমরা বনভূমিগুলোকে কী অবস্থায় দেখতে চাই সেই পরিকল্পনাও করতে হবে।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মিডার সদস্য কমোডর তানজিম ফারুক ও মো. সারোয়ার আলম এবং প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. সাইফুল্লাহ পান্না।
বৈঠকে মহেশখালী-মাতারবাড়ী প্রকল্পের ওপর একটি প্রেজেন্টেশন দেন মিডার চেয়ারম্যান। মিডার আগামী চার মাসের কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন তিনি।
আশিক চৌধুরী জানান, প্রকল্পটি তিন ধাপে সম্পন্ন হবে—প্রথম ধাপ ২০২৫ থেকে ২০৩০, দ্বিতীয় ধাপ ২০৩০ থেকে ২০৪৫, এবং তৃতীয় ধাপ ২০৪৫ থেকে ২০৫৫ পর্যন্ত। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রায় ২৫ লাখ লোকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান হবে এবং জিডিপিতে দেড়শ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যুক্ত হবে বলে জানান তিনি।
১১৬ দিন আগে
ডেঙ্গুতে আরও দুইজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৪৫
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। আর এ সময়ে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৪৪৫ জন রোগী।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এসব মৃত্যু হয়েছে বলে আজ বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
পড়ুন: ডেঙ্গুতে তিনজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৭৩
নতুন করে আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪৬ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৯৯জন।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৫ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৪ দশমিক ৯ শতাংশ নারী।
এতে আরও জানানো হয়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩২ হাজার ৯৪৬ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক ৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ২ শতাংশ নারী।
১১৭ দিন আগে
এক লাখ শিক্ষার্থীকে ডিজিটাল স্কিলস প্রশিক্ষণ দেবে সরকার
আইসিটি থেকে এক লাখ শিক্ষার্থীকে ডিজিটাল স্কিলস প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রংপুরে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল’র আঞ্চলিক কার্যালয়ে জুলাই যোদ্ধাদের কম্পিউটার ফান্ডামেন্টাল এবং ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ভার্চুয়ালি উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, এআই ও জেনারেটেড এআই সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে না পারলে আমরা দেশ ও আন্তর্জাতিকভাবে পিছিয়ে যাব। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে আইসিটি থেকে এক লাখ শিক্ষার্থীকে ডিজিটাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণার্থীদের পরামর্শ নিয়ে আমরা এই প্রশিক্ষণকে সময়োপযোগী করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, রংপুরের মানুষের আত্মত্যাগের কথা আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। তাই আমরা রংপুর থেকে এই প্রশিক্ষণ শুরু করেছি।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, আমরা মোবাইল আইসিটি ল্যাবের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এ গাড়িতে প্রশিক্ষণের সুবিধা থাকবে। মানুষ যেখানে অবস্থান করবে সেখানে গিয়ে ট্রেনিং দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বিগত রাজনৈতিক সংস্কৃতির কারণে রংপুর পিছেয়ে পড়েছে। তাই প্রযুক্তিতে এ অঞ্চলকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আইসিটির করণীয় নির্ধারণের পাশাপাশি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে সঙ্গে নিয়ে কিভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়, তা ভাবা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
প্রশিক্ষণ আয়োজন বিষয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের নিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে পাশাপাশি পাইলট প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। স্কুল কলেজে প্রথম ধাপে ৪২ ঘণ্টার আইসিটি বিষয়ক প্রশিক্ষণ হবে এ প্রশিক্ষণের লার্নিং নিয়ে দ্বিতীয় ধাপে উন্নততর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। পর্যায়ক্রমে এ প্রশিক্ষণে মাদরাসাগুলোকে যুক্ত করা হবে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০টি আরআইসি ল্যাব স্থাপন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গবেষণা করার সুযোগ তৈরি হবে।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল আয়োজিত রংপুর বিভাগের জুলাই যোদ্ধাদের জন্য ৭দিনব্যাপী আইসিটি প্রশিক্ষণে প্রথম পর্যায়ে ২০ জনকে কম্পিউটার ফান্ডামেন্টাল এবং ২০ জনকে ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে এ প্রশিক্ষণ দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
এর আগে চলতি বছরের ১৬ আগস্ট থেকে টাঙ্গাইলের গোরস্থান জামিয়া ইসলামিয়া দারুস-সুন্নাহ মাদরাসার ১৬০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে।
পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও টাঙ্গাইল জেলার মোট ৭৪০ জন মাদরাসা শিক্ষার্থী এই কর্মসূচির আওতায় প্রশিক্ষিত হবে।
১১৭ দিন আগে
নাটোর হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ, আক্রান্ত দেড় শতাধিক
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে নাটোর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন মহল্লার দেড় শতাধিক বাসিন্দা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে নাটোর সদর হাসপাতালে এখনো ভর্তি রয়েছেন শতাধিক রোগী।
পানিবাহিত কারণে এসব এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে কিনা- তা তদন্ত করতে পৌরসভার বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা এলাকাগুলো পরিদর্শন করে পৌরসভার সরবরাহকৃত পানির নমুনা সংগ্রহ করেছেন।
আক্রান্তরা জানান, গতকাল (২ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাত থেকে হঠাৎ করে পৌর এলাকার ঝাউতলা, কাঠালবাড়িয়া, চৌকিরপাড়, ডোমপাড়া, উলুপুর মহল্লার বাসিন্দাদের মধ্যে পাতলা পায়খানা ও বমি শুরু হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত রাত থেকে একের পর এক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী সদর হাসপতালে আসতে থাকে। রোগীর চাপ সামলাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে বলে জানান হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স সুমি খাতুন।
তিনি বলেন, সব রোগীই ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসছে।
নাটোর পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর উদয় কুমার সরকার জানান, আমরা পানির নমুনা সংগ্রহ করেছি। প্রাথমিকভাবে এটি পানিবাহিত বলে মনে হচ্ছে না। তবে নমুনা পরীক্ষার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগে পাঠানো হবে।
নাটোর পৌরসভার ওয়াটার সুপারভাইজার রবিউল ইসলাম জানান, আমরা সরেজমিনে আক্রান্ত এলাকাগুলো ঘুরে সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি, পানি পরীক্ষা করেছি। প্রাথমিকভাবে পানিতে জীবানুর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
পড়ুন: যৌথ ব্যবস্থাপনায় চলবে ঢাকা, রাজশাহী ও সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতাল
তিনি বলেন নাটোর পৌরসভার ১২টি পাম্পের সাহায্যে একযোগে পানি উত্তোলন করে ইন্টার কানেকশনের মাধ্যমে পুরো পৌর এলাকায় সরবরাহ করা হয়। পানি খেয়ে এমন হলে পুরো নাটোর পৌর এলাকার মানুষ— যারা সাপ্লাই পানি পান করেন সবার আক্রান্ত হওয়ার কথা।
অতি গরমের কারণে খাবার থেকেও হতে পারে বলে ধারণা তার।
এদিকে সিভিল সার্জন ডা. মুক্তাদির আরেফিন হাসপাতাল পরিদর্শন করে জানান, বিষয়টি অনুসন্ধানে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন ও নমুনা সংগ্রহ এবং যাচাই-বাছাই করে কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে।
১১৭ দিন আগে
নির্বাচনের আগে নিয়োগ-পদোন্নতির মাধ্যমে পুলিশে যুক্ত হবে ৪ হাজার এএসআই: আইজিপি
নির্বাচনের আগে নতুন করে নিয়োগ ও পদোন্নতি দিয়ে পুলিশে আরও চার হাজার এএসআই যুক্ত হবেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। তিনি বলেন, নতুন এএসআইয়ের অর্ধেক সরাসরি নিয়োগ এবং বাকি অর্ধেক পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হবে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর পুলিশ মহাপরিদর্শক সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, 'পুলিশের একটি প্রতিনিধি দল এসেছিলেন, পুলিশ রেগুলেশনের দুই একটি সংশোধনের মাধ্যমে তাদের বড় ধরনের নিয়োগ চলছে। নিয়োগটা যাতে দ্রুত হয়, সেজন্য একসঙ্গে বসে আমরা মিটিং করলাম। আমরা যদি আজকে অর্ডারটা করে দিতে পারি, তাহলে এএসআই-সহ অন্যান্য যে নিয়োগ চলছে সেগুলো দ্রুত হবে।'
পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, 'চার হাজার এএসআই নিয়োগ দেওয়া হবে। এরমধ্যে অর্ধেক হবে পদোন্নতি এবং বাকি অর্ধেক হবে সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে। সেই বিষয়ে আজকে আমরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এসেছিলাম। বিধিতে কিছু সংশোধনের প্রয়োজন ছিল ওনারা করে দিচ্ছে। এতে আমাদের নিয়োগের পথটা একটু সুগম হলো।'
এটা কি আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'জি, আপনারা জানেন প্রধান উপদেষ্টা কিছুদিন আগে বেশ কিছু ফোর্সের নিয়োগের বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছেন। সেগুলোই আসলে আমরা ওয়ার্ক আউট করছি।'
মোখলেস উর রহমান বলেন, 'অর্থ মন্ত্রণালয়, লেজিসলেটিভ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমরা এই পদগুলো (এএসআই-সহ যেসব পদে নিয়োগ হচ্ছে) সৃজন করেছি। এখন এই পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু বিধিমালা ছিল, সেগুলো কিছু কিছু জায়গায় সংশোধন হয়েছে। নির্বাচনের মাঠে প্রথম যে বাহিনী থাকে সেটি পুলিশ, আনসারও থাকে।'
জনপ্রশাসন সচিব আরও বলেন, পুলিশের একদিকে নিয়োগ, অন্যদিকে ট্রেনিং চলছে। সিপাহী এবং আরেকটু ওপরে পর্যন্ত পুলিশ সুপাররাই নিয়োগ করে থাকে। সেগুলো চলছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই যাতে এ বাহিনী প্রস্তুত হতে পারে সেই কাজটি আমরা গতিশীল করলাম।'
১১৭ দিন আগে
চবিতে সংঘর্ষের ঘটনায় ৮ জন আটক
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ৩ জন এজাহারভুক্ত আসামি, বাকি পাঁচজন তদন্ত থেকে প্রাপ্ত আসামি।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে।
আটক এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন— এমরান হোসেন (৩৫), হাসাঈন (২২) ও রাসেল (৩০)। আর তদন্ত থেকে প্রাপ্ত আসামিরা হলেন— মো. আলমগীর (৩৫), মো. নজরুল ইসলাম (৩০), মো. জাহেদ (৩০), মো. আরমান (২৪) ও দিদারুল আলম (৪৬)। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন জোবরা গ্রামের ফতেপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
আজ দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) কাজী মোহাম্মদ তারেক আজিজ। তিনি জানান, মঙ্গলবার মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আটজনকে আটকের পর তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গ্রেপ্তার সবাইকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
পড়ুন: এখনও অচল চবি ক্যাম্পাস, এক হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হাটহাজারী মডেল থানায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ৯৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরও প্রায় এক হাজারজনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মামলার বাদী হন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা প্রধান আব্দুর রহিম।
এ ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তর থেকে ১৩০টি দেশীয় অস্ত্র চুরি হওয়ার ঘটনায় অন্য একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করে কর্তৃপক্ষ।
১১৭ দিন আগে
নির্বাচনে কোনো কর্মকর্তা পক্ষপাতিত্ব করলে প্রত্যাহার, প্রশাসনিক ব্যবস্থা: জনপ্রশাসন সচিব
কোনো ব্যক্তি বা দলের প্রতি মাঠ প্রশাসনের ভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা পক্ষপাতিত্ব করলে তাকে প্রত্যাহার করে প্রচলিত আইনের আওতায় এনে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিনিয়র সচিব এ কথা জানান।
তিনি বলেন, 'এবার কেউ এতটুকু যদি এদিক-ওদিক কারো পক্ষে বা কোনো দলের পক্ষে করেন, তারপরও যদি আমরা এরকম বুঝি, তাকে আমরা উইথড্র (প্রত্যাহার) করব, প্রচলিত আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তবে এখন পর্যন্ত এতটুকু জানি সেই রকম নেই।'
মোখলেস উর রহমান বলেন, 'মাঠ প্রশাসন বলতে আমি যাদেরকে বুঝি বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)- ওনারা নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার-ভূমি) এবং অন্যান্য অফিসাররা ওই সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ডিউটি করে। এটা হল ম্যাজিস্ট্রেসি ডিউটি।'
তিনি বলেন, 'আমাদের প্রধান উপদেষ্টা যেটা বলেছেন, গতকালকেও ওনার প্রেস সেক্রেটারি শক্তভাবে বলেছেন- নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় নেই, এখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে কোনো দ্বিধাদ্বন্দ নেই।'
পড়ুন: ডিসি নিয়োগে ঘুষ নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন 'ভুয়া': সচিব মোখলেসুর
মোখলেস উর রহমান আরও বলেন, 'সিভিল সার্ভিসের গত তিনটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা, এখান থেকে তাদের জন্য শক্ত বার্তা। তাদের মধ্য থেকে করা রিটার্নিং অফিসার হচ্ছে- সেটা নির্ধারিত হবে তফসিল ঘোষণার পর। ওই সময় সরাসরি যে নির্দেশনা যাবে এর বাইরে কোনো ডিসি কাজ করতে পারবেন না বা করবেন না। সকলেই দেশপ্রেমিক মানুষ, সবাই চায় একটা মডেল নির্বাচন। এমন একটা নির্বাচন হোক, যা নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি।'
গত তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনের পর আগামী নির্বাচন আপনাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সিনিয়র সচিব বলেন, 'আমরা এই চ্যালেঞ্জটাকে মেনে নিয়েই অনেক ধরনের যাচাই-বাছাই করে আগে যারা এগুলোর সঙ্গে জড়িত ছিল বা প্রো-অ্যাকটিভ ছিল, ওভার অ্যাকটিভ ছিল। তারা কেউই তালিকার মধ্যে নেই, এবং থাকবে না।'
১১৭ দিন আগে
নারী শিক্ষার্থীকে ধাক্কা, জাবিতে রাজধানী পরিবহনের ২৫ বাস আটক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে রাজধানী পরিবহনের বাসের হেলপারের ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগে ওই পরিবহনের ২৫টি বাস আটক করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক-সংলগ্ন (ডেইরি গেট) ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক থেকে বাসগুলো আটক করা হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হালিমা আক্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীরা জানান, সন্ধ্যায় টিউশনি শেষে সাভার থানা স্ট্যান্ড থেকে রাজধানী পরিবহনের একটি বাসে উঠতে গেলে হেলপার তাকে উঠতে বাধা দেন। পরে জোর করে উঠলেও বাসচালক ও হেলপার তাকে অশোভন গালিগালাজ করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে নামার সময় হেলপার হালিমাকে ধাক্কা দিলে তিনি রাস্তায় পড়ে আহত হন।
এ ঘটনার পর প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে হালিমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর এক সহপাঠী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি গেইটের মতো কোলাহলপূর্ণ একটা জায়গায় এভাবে একজন শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দিতে পারে— এমনটা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি।’
তিনি বলেন, ‘যে হেলপার আপুকে ধাক্কা দিয়েছে তাকে ক্ষমা চাইতে হবে এবং পরিবহন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণ না করা হয়। পাশাপাশি আমরা হালিমার চিকিৎসার ক্ষতিপূরণও চাই।’
আরও পড়ুন: ঢাবিতে নারী শিক্ষার্থীকে 'গণধর্ষণের' হুমকির প্রতিবাদে জাবি ছাত্রদলের 'অবস্থান কর্মসূচি'
রাজধানী পরিবহনের এক কর্মকর্তা জানান, আমাদের একটি বাসের হেলপারের সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। শিক্ষার্থীরা কয়েকটি বাস আটকে রেখেছে। আমরা ইতোমধ্যে জড়িত হেলপারকে শনাক্তের চেষ্টা করছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে একটি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। বিষয়টি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। একজন মানুষকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া এমন ঘটনা কারো কাম্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘আগামীকাল (আজ বুধবার) বাস মালিকপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
১১৭ দিন আগে
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতই থাকছে, ৯ সেপ্টেম্বরই ডাকসু নির্বাচন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতই রেখেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনে আর কোনো বাধা রইল না।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে রায়ে বলা হয়েছে।
এদিন আদালতে ঢাবির পক্ষে মোহাম্মদ শিশির মনির, রিটের পক্ষে অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এবং ডাকসুর জিএস প্রার্থী এসএম ফরহাদের পক্ষে ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিকী শুনানি করেন।
ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট মনোনীত ছাত্র শিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বামজোট মনোনীত প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বিএম ফাহমিদা আলম এ রিট দায়ের করেন।
রিটে অভিযোগ করা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে এস এম ফরহাদ ‘ছাত্রলীগের কমিটিতে’ ছিলেন। এরপরও তিনি কীভাবে ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্যানেলে প্রার্থী হলেন— এমন প্রশ্ন তুলে তার প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করা হয়।
আরও পড়ুন: ডাকসু নির্বাচন ভন্ডুলের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার
এরপর গেল সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ডাকসু নির্বাচন প্রক্রিয়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকার কার্যক্রম ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি এস কে তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে কোন প্রক্রিয়ায় ডাকসু নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়ন, বাছাই ও চূড়ান্ত করা হচ্ছে এবং ভোটের প্রস্তুতির প্রক্রিয়া কী— এ বিষয়েও জানতে চান চাওয়া হয়।
তবে তার এক ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের আদালত ওই স্থগিতাদেশ দেন।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় পুনরায় মামলাটির বিষয়ে গতকাল (২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন নিয়ে চেম্বার জজ আদালতে গেলে এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) শুনানির জন্য মামলার দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল।
জানা গেছে, নির্বাচনি তফসিল অনুযায়ী আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন নির্ধারণ করা হয়। নির্বাচনে কেন্দ্রীয় এবং হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আরও পড়ুন: ডাকসু নির্বাচন: ‘৩৬ জুলাইয়ের’ সঙ্গে মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের ইশতেহার ঘোষণা
চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯ জন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ১২ জন, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে ১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে সদস্য পদে। এবার ১৩টি সদস্য পদের বিপরীতে মোট ২১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
১১৭ দিন আগে