রাজনীতি
বিএনপি কোনো অবস্থাতেই পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে বিশ্বাসী নয়: এ জেড এম জাহিদ হোসেন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, বিএনপি কোনো অবস্থাতেই পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে বিশ্বাসী নয়। যারা আজ পিআরের কথা বলছেন, তারা জনগণের কাছে গিয়ে দেখতে পারেন জনগণ কি চায়। কোনো অবস্থাতেই দলীয় স্বার্থ হাসিলের জন্য একটি পদ্ধতিকে জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায় না।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে রংপুর শিল্পকলা একাডেমিতে রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকুর স্মরণ সভায় যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ হোসেন বলেন, যারা নতুন নতুন কথা বলে নির্বাচন ও গণতন্ত্রকে প্রলম্বিত করার বাহানা খুঁজছেন, তারা খুঁজতেই পারেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ বিগত ৫৪ বছর ধরে সরাসরি ভোট দেওয়ার অভ্যস্ত। বাংলাদেশের সংবিধানে রয়েছে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করার বিধান। এতেই জনগণ বিশ্বাস করে।
তিনি আরও বলেন, পিআরের কথা যারা বলছেন, তারা চাইলে নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহারে তা উল্লেখ করতে পারেন। দেশের জনগণ যদি তাদের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেয়, তখন তারা পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে পারেন। তবে বিগত ৬০ বছরের ইতিহাসে তাদের কতজন প্রতিনিধি সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল ছিলেন, তা জনগণ ভালোভাবে জানে। বিএনপি মনে করে, বর্তমান পরিস্থিতিতে চলমান পদ্ধতিতে নির্বাচন করা উচিত।
তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে তিনি বলেন, খুব শিগগিরই তিনি দেশে ফিরবেন। তিনি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন। তাই নির্বাচনের আগে জননেতা তারেক রহমান দেশে ফিরবেন।
নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণার বিষয়ে ডা. জাহিদ বলেন, বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। জনগণের আস্থাভাজন হাজার হাজার প্রার্থী রয়েছে। দলের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে পার্লামেন্টারি বোর্ড যথাসময়ে দলীয় মনোনয়ন দেবেন। নির্বাচন কমিশন যখন নির্বাচনী সময়সূচি ঘোষণা করবে, তার আগে বা পরে সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী মহল প্রার্থী ঘোষণা করবে। জনগণের আগামী বাংলাদেশ গড়ার নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য যাদের প্রয়োজন মনে হবে, তাদের নাম যথাসময়ে ঘোষণা করা হবে।
নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের জন্য মধ্য ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগে তার ঘোষণা দিয়েছেন। পরে নির্বাচন কমিশনও রোড ম্যাপ প্রকাশ করেছেন। বিএনপি বিশ্বাস করে, মধ্য ফেব্রুয়ারির মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সহযোগিতা করবে।
এনসিপির প্রতীক নিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেল বলেন, অন্যরা প্রতীকের জন্য দাবি জানাতে পারে। তবে জনগণ ইতিমধ্যে প্রথাগত প্রতীক নিয়ে ভোট দিয়েছে, তাই নতুন প্রতীকের প্রতি আপত্তি শোভনীয় নয়।
রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি একটি জনপ্রিয় দল। একটি আসনে এমপি হওয়ার যোগ্যতা রাখে এমন ১০–১২ জনও প্রার্থী থাকতে পারে। দল যাকে যোগ্য মনে করবে, তাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে।
রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় বক্তব্য দেন রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামছুজ্জামান সামুসহ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
৮০ দিন আগে
আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সরকার বদ্ধপরিকর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকালে ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় বঙ্গবন্ধু রোডে বোধিজ্ঞান ভাবনা (বৌদ্ধ বিহার) কেন্দ্রে কেঠিন চিবরদান উৎসবে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই দাবি করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, দেশে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি বর্তমানে উন্নতি হয়েছে, যা ঢাকার এক সাংবাদিকও স্বীকার করেছেন।
উপদেষ্টাদের নিরাপদে প্রস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেকে অনেক কথা বলতে পারেন, কিন্তু প্রশ্ন তো আর থামানো যায় না।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষু মহাসভার উপ-সংঘনায়কের সভাপতি রতনশ্রী মহাথেরের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এইএস এর এমডি শুভাশীষ চাকমা, আশুলিয়ার আলিফ গার্মেন্টসের চেয়ারম্যান আকতার হোসেন রানা, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল দিদারুর আলম, বি.আর.জে. মোঃ তানভীর ইকবাল, সাবেক অতিরিক্ত সচিব প্রশান্ত ভুষণ বড়ুয়া এবং ঢাকায় নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার ধর্মপাল বিরাককোড প্রমুখ।
৮০ দিন আগে
‘সেফ এক্সিট’ খুঁজছি না, বাকি জীবন দেশেই কাটাব: রিজওয়ানা
‘উপদেষ্টাদের অনেকে সেইফ এক্সিট খুঁজছেন’ বলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার প্রতিক্রিয়ায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, তিনি কোনো ‘এক্সিট’ খুঁজছেন না। বরং জীবনের বাকিটা দেশেই কাটাতে চান তিনি।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন। তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের (নিরাপদ প্রস্থান) কথা ভাবছেন।
আজ (বুধবার) এক সাংবাদিক এ বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘নাহিদ ইসলাম কারা কারা এক্সিট খুঁজছেন, তা বলেননি। আলোচনার প্রসঙ্গও খোলাসা করেননি। তাহলে আমি কীভাবে মন্তব্য করব?’
তিনি বলেন, ‘আমার চোখে যা দেখা যাচ্ছে তা হলো, নবগঠিত রাজনৈতিক দলটির (এনসিপি) সঙ্গে সরকারের একটি ভালো ওয়ার্কিং রিলেশনশিপ রয়েছে। এখন উনি (নাহিদ ইসলাম) এই মন্তব্য করেছেন অভিমানে নাকি কোনো অসন্তোষ থেকে, সেটা পরিষ্কার করতে হবে। সেটা পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত সরকারের অবস্থান নেওয়ার সুযোগ নেই।’
নাহিদ ইসলামের মন্তব্য নিয়ে সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘গণতন্ত্রে সবার মতপ্রকাশের অধিকার আছে। কিন্তু প্রতিটি অনানুষ্ঠানিক বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখাতে গেলে আমাদের মন্ত্রণালয়গুলো চালানো কঠিন হয়ে যাবে। সরকার তখন প্রতিক্রিয়া নয়, কাজের জায়গায় পিছিয়ে পড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে অভিযোগটি (সেফ এক্সিট খোঁজা) তোলা হয়েছে, সেটি প্রমাণসহ স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করার দায়িত্ব নাহিদ ইসলামের। আমি কেন সেটি খণ্ডন করব? সরকারকেও সুনির্দিষ্ট তথ্য না দেওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো সম্ভব নয়।’
এ সময় নিজ অবস্থান স্পষ্ট করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমি একদম কোনো এক্সিট খুঁজছি না। এর আগেও বহু ঝড়-ঝঞ্ঝা এসেছে। প্রতিটি সঙ্কটের মধ্যে থেকেও আমি দেশে ছিলাম, কাজ করেছি। ইনশাআল্লাহ বাকিটা জীবনও বাংলাদেশেই কাটিয়ে দেব, আপনাদের সঙ্গেই।’
৮২ দিন আগে
একটি বিশ্ব মোড়ল ও দুটি আঞ্চলিক শক্তি দেশে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে: সালাহউদ্দিন
একটি বিশ্ব মোড়ল ও দুটি আঞ্চলিক শক্তি দেশে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে যে বিষয় নিয়ে কথা বলা উচিত তা হচ্ছে, পৃথিবীতে তিনটি শক্তি আমাদের এখানে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে। দুটি আঞ্চলিক শক্তি, পরাশক্তিও বটে তারা এবং একটি বিশ্ব মোড়ল। সবাই এখানে একটা হেজিমনি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। প্রত্যেকের ইন্টারেস্ট আলাদা আলাদা। কিন্তু আমাদের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে তিনটির দ্বারা একইভাবে।’
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানান।
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নির্যাতনে নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ‘মত প্রকাশ থেকে মৃত্যু: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফ্যাসিবাদের বিস্তার ও প্রতিরোধ' শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে।’
আবরার ফাহাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘নির্বাসিত জীবনে এই একটি ঘটনায় এত বেশি ব্যতীত হয়েছিলাম, চিন্তা করেছিলাম বাংলাদেশের মেধাবী ছাত্ররা, যারা বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে, জনগণের পক্ষে, দেশের পক্ষে কথা বলে, তাদের সংখ্যা তো নেহায়েত কম নয়!’
‘সেদিন বুঝতে পেরেছিলাম, এভাবে বাংলাদেশে হয়তো শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলা যেত কোনো না কোনোভাবে। হয়তো তাকে জেলে যেতে হতো, নির্যাতিত হতে হতো, গুম হতে হতো। কিন্তু ভারতীয়দের বিরুদ্ধে কথা বললে তাকে জীবন দিতে হতো, এটা আমরা তখন বুঝেছি। সেই কারণে আবরারকে হত্যা করা হয়েছে, যাতে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা না বলতে পারে। উচ্চকণ্ঠ না হতে পারে।’
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণ অভ্যুত্থান পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতি ও সংগ্রাম একইসূত্রে গাঁথা বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। বলেন, ‘আমরা ২০২৪ সালের গণ অভ্যুত্থানের সিঁড়ি নির্মাণ করেছি আবরারের মতো শহীদদের রক্ত দিয়ে। ৪২২ জনের বেশি ছাত্র, যুব, বিএনপি নেতাকর্মীর রক্ত এই সিঁড়ির ভিত্তি। এই সংগ্রাম শুধু কোনো দলীয় নয়, বরং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলন।’
‘সবার আগে বাংলাদেশ’ নীতিতে এক থাকার আহ্বান জানিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘সবার আগে বাংলাদেশ— এই নীতি আমরা এ জন্যই ঘোষণা করেছি যে এই তিনটা শব্দের মধ্যে সারা বাংলাদেশ জীবিত থাকবে। সারা বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ নিহিত থাকবে। এই তিনটা শব্দের মধ্যেই আমরা উজ্জীবিত হবো স্বাধীনতার মূল মন্ত্রে। যদি আমরা এ নীতিতে একমত হই, তাহলে জাতি আর পথভ্রষ্ট হবে না।’
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে হলে ছাত্রসমাজকে মেধা, তাত্ত্বিক জ্ঞান ও দেশপ্রেমে সমৃদ্ধ হতে হবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, ছাত্র সংগঠনগুলো মেধাবীদের নেতৃত্বে আসুক। যারা কলম দিয়ে, চিন্তা দিয়ে, প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বার্থ রক্ষা করবে। যদি শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেম ও তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণ দেয়া যায়, তাহলে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দৃঢ়ভিত্তি গড়ে তুলবে।’
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ থেকে আজ পর্যন্ত স্বাধীনতার স্বার্থে অসংখ্য মানুষকে রক্ত দিতে হয়েছে, কিন্তু ভবিষ্যতে যেন আর রক্ত দিতে না হয়, সে লক্ষ্যেই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
‘আমরা চাই না মুক্তির মন্দিরে নতুন প্রাণ বলিদান হোক। কিন্তু যদি গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা বিপন্ন হয়, তাহলে আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত। তবে সেই পরিস্থিতি যেন আর না আসে, সেজন্যই আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
৮২ দিন আগে
নারীবান্ধব নির্বাচন আয়োজন ও সহিংসতা থেকে নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতের আহ্বান
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে নারীবান্ধব করে তুলতে এবং ভোটের আগে-পরে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নারী নেত্রীরা। তাদের মতে, নির্বাচনি সহিংসতার সময় নারীরাই সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকেন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ড. ফওজিয়া মোসলেম বলেছেন, নির্বাচনের আগে ও পরে সংঘবদ্ধ সহিংসতা ও নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এসব বিষয়ের ওপর বিশেষ নজর দিলে নারীরা নিজেদের বেশি নিরাপদ মনে করবেন।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে (ইসি) নারী নেত্রীদের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) নির্বাচনি সংলাপে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। এতে ১৬ জন নারী প্রতিনিধি অংশ নেন।
ড. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘শুধুমাত্র সিইসি জেন্ডার ফ্রেন্ডলি নির্বাচন আশা প্রকাশ করলে তা হবে না। নির্বাচন জেন্ডার ফ্রেন্ডলি করতে হলে যে স্টেকহোল্ডার আছেন তাদের মানসিকতাকে জেন্ডার ফ্রেন্ডলি করতে হবে। আমরা পুরো করতে পারব না হয়তো, কিন্তু বেশি যারা নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত আছে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেন্ডার ফ্রেন্ডলি নির্বাচন করার ক্ষেত্রে প্রথমে আমার যে কথা মনে আসে তা হলো— আমরা যখন ভোট দিতে যাই, তখন আমরা প্রার্থী দেখি। এই প্রার্থী বাছাইয়ের আপনাদের নজর রাখতে হবে। যারা নারী বিদ্বেষী, যারা সাম্প্রদায়িক, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে; প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এ তিনটা পয়েন্ট নজর রাখতে হবে আপনাদের।’
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক বলেন, ‘দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও সংসদে আসন বৃদ্ধি হয়নি। আমরা বলেছি ৩০০ আসনের পরিবর্তে ৬০০ আসন করতে হবে। একটি নির্বাচনের আসনে দুটি আসন থাকবে। যেখানে একটিতে শুধু নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। আরেকটিতে নারী পুরুষ যে কেউ করতে পারবে।’
পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতির প্রতি সমর্থন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
৮৩ দিন আগে
ভারত স্বৈরাচারকে আশ্রয় দিয়ে বিরাগভাজন হলে বিএনপির কিছু করার নেই: তারেক রহমান
ভারত যদি স্বৈরাচারকে আশ্রয় দিয়ে দেশের মানুষের বিরাগভাজন হয় তাহলে বিএনপির কিছু করার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ সাক্ষাৎকারে অংশ নেন। দুই পর্বের এই সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় ও শেষ পর্বটি মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে।
বিবিসি বাংলার তরফে প্রশ্ন ছিল, পাঁচই আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এবং আপনিও জানেন যে, শেখ হাসিনা দিল্লিতে গেছেন এবং সেখানে আছেন। ভারতের সঙ্গে একটা সম্পর্কের শীতলতা দেখা গেছে, গত এক বছর ধরে। যেমন ধরুন সেটি যাওয়া আসার ক্ষেত্রে ব্যবসার ক্ষেত্রে নানা রকম, সেই ক্ষেত্রে কি কোনো পরিবর্তন আপনার সরকারে আসলে হবে বা পরিবর্তনের ব্যাপারে উদ্যোগ নেবেন, এমন কোন চিন্তা কি আপনাদের আছে?
জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘এখন তারা যদি স্বৈরাচারকে সেখানে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের বিরাগভাজন হয়, সেখানে তো আমাদের কিছু করার নেই। এটা বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তাদের সঙ্গে শীতল থাকবে। সো, আমাকে আমার দেশের মানুষের সঙ্গেই থাকতে হবে।’
বিগত সরকারের সময় বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে যে সম্পর্ক ছিল, সেটা নিয়ে অনেক সমালোচনা রয়েছে। তো ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে আপনাদের নীতি কী হবে?— এমন প্রশ্নের জবাবে তারেক জানান, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভারতসহ সব প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেবে।
তার ভাষ্যে, ‘সবার আগে বাংলাদেশ। এখানে তো আপনি পার্টিকুলার (সুনির্দিষ্ট) একটি দেশের কথা বলেছেন। এখানে ওই দেশ বা অন্য দেশ তো বিষয় না। বিষয় তো হচ্ছে, ভাই, বাংলাদেশ আমার কাছে আমার স্বার্থ; আমি আগে আমার দেশের মানুষের স্বার্থ দেখব, আমার দেশের স্বার্থ দেখব। ওটাকে আমি রেখে, আপহোল্ড করে, যা যা করতে পারব, আমি তা-ই করব।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘অবশ্যই আমি আমার পানির হিস্যা চাই। অবশ্যই আমি দেখতে চাইনা না যে, আরেক ফেলানী ঝুলে আছে। অবশ্যই আমরা এটা মেনে নেব না।’
বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে তার কাছে প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশের স্বার্থের প্রসঙ্গে আপনি বলছেন যে, পানির হিস্যা চাওয়া এবং সীমান্ত হত্যার বিষয়টি নিয়ে আপনারা সোচ্চার থাকবেন?
এই প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘না না, আমি উদাহরণ দিয়ে বললাম। দুটো উদাহরণ দিয়ে বুঝালাম আপনাকে যে, আমাদের স্ট্যান্ডটা কী হবে। আমরা আমাদের পানির হিস্যা চাই। অর্থাৎ আমার দেশের হিস্যা, মানুষের হিস্যা আমি চাই, হিসাব আমি চাই। আমার যেটা ন্যায্য সেটা আমি চাই। অবশ্যই ফেলানী হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আমি বুঝাতে চেয়েছি যে, আমার মানুষের ওপরে আঘাত আসলে অবশ্যই সেই আঘাতকে এভাবে আমি মেনে নেব না।’
৮৩ দিন আগে
ভেদাভেদ ভুলে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে তারেক রহমানের আহ্বান
রাজনৈতিক মতভেদ ভুলে সবাইকে দেশের স্বার্থে একটি জায়গায় আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সংঘাতের ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের কল্যাণে প্রতিযোগিতা করে, দেশের মানুষের দৈনন্দিন সংকট সমাধান এবং বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ইতিবাচক রাজনীতিতে অংশ নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (৬ অক্টোবর) পিরোজপুরের প্রবীণ বিএনপিকর্মী মোতালেব আকনের সঙ্গে ভার্চুয়াল সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, ‘বহু আন্দোলন হয়েছে দেশে, বহু সংগ্রাম হয়েছে, বহু মানুষ শহীদ হয়েছে। অনেক হয়েছে। আসুন, আমরা সবাই মিলে একটা জায়গায় আসি। মতভেদ-ভেদাভেদ কমিয়ে নিয়ে আসি। আমরা কথা বলি।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন আদর্শ থাকতেই পারে, সেটাই থাকাটা স্বাভাবিক। আমরা বহুদলীয় রাজনীতিতে বিশ্বাস করি, এখানে বিভিন্ন রকম মত থাকবে—এটাই স্বাভাবিক। পৃথিবীতে সব গণতান্ত্রিক দেশেই এটা আছে। কিন্তু আসুন, আমরা সেই ঝগড়া-ফ্যাসাদ থেকে কিছুটা হলেও সরে আসি।’
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘অনেক আন্দোলন হয়েছে। এবার আসুন, দেশের মানুষের মৌলিক সমস্যাগুলো একটু একটু করে কমিয়ে আনি। আসুন, আমরা প্রতিযোগিতা করি, সেই পরিকল্পনাগুলো গ্রহণ করি। শুধু পরিকল্পনা নয়, দেশের মানুষ যাদের সুযোগ দেবে তারা যেন সেই পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করতে পারে। এই হোক আমাদের আগামীদিনের রাজনীতি।’
যোগ্যতাভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা এমন পরিকল্পনা নিচ্ছি যাতে দেশের প্রতিটি তরুণ-তরুণী নিজে উপার্জন করতে পারে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে এবং মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে পারে।
রাজনৈতিক হামলায় আহত হয়ে বর্তমানে হুইলচেয়ারে থাকা মোতালেব আকনের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এমন হতে হবে, যেখানে রাজনৈতিক মতভেদের কারণে একজন মানুষকে শারীরিকভাবে আঘাত করতে না হয়, কেউ যেন আঘাতপ্রাপ্ত না হয়।’
তিনি বলেন, ‘আজ মোতালেব সাহেব তার সন্তানকে দেখালেন, এ রকম সন্তানের সংখ্যা বাংলাদেশে আরো লক্ষ-কোটি আছে। আমরা বলেছি, আগামী দিনে আমরা মেধার ভিত্তিতে দেশ ও জাতিকে গড়ে তোলার কথা বলেছি। স্বাভাবিকভাবেই মেধা যেখানে থাকবে, প্রতিযোগিতাও সেখানে থাকবে। আজকের তরুণ আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকবে। মেধা একেকজনের একেক রকম হয়। সবাইকে এক জায়গায় আমরা দিতে পারব না।’
‘মেধার রেসে (দৌড়ে) যে এগিয়ে থাকবে, সে-ই সেখানে যাবে। কিন্তু যারা যেতে পারবে না তাদের জন্যও আমাদের ব্যবস্থা করতে হবে। আগামী দিনে দেশের লক্ষ-কোটি তরুণ যারা আছে, নারী-পুরুষ, প্রত্যেকে যাতে বেঁচে থাকার যুদ্ধে টিকে থাকতে পারে সেই ভাবে আমরা পরিকল্পনাগুলো গ্রহণ করছি। যাতে মোতালেব সাহেবের সন্তানরা ভবিষ্যতে নিজে সৎপথে উপার্জনের ব্যবস্থা করে নিতে পারে।’
এ সময় তারেক রহমান মোতালেব আকনের সুস্থতা কামনা করেন এবং জনগণের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি। আমাদের মূল শক্তি বাংলাদেশের জনগণ। কাজেই বাংলাদেশের জনগণই আমাদের অনুপ্রেরণা। এ দেশের মানুষ স্বাধীনভাবে যতবার ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে, তারা ততবারই বিএনপির পক্ষে রায় দিয়েছে। কাজেই এটাই প্রমাণ করে বাংলাদেশের মানুষই বিএনপির আস্থার প্রতীক।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ। লক্ষ-কোটি কৃষক বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তার পরও তারা হাল ছেড়ে দেন না। তারা মাঠে থেকে কৃষিকাজ করছেন বলেই বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষ খেয়ে বেঁচে আছে। এই কৃষকদের পাশে কিভাবে দাঁড়ানো যায় সেই পরিকল্পনা করছি। বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে থাকা লক্ষ-কোটি মা-বোনদের কিভাবে আরেকটু স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা যায়, তাদের কিভাবে অর্থনৈতিকভাবে, শিক্ষার আলোকে গড়ে তোলা যায় সেই পরিকল্পনা আমরা গ্রহণ করছি।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পিরোজপুর জেলা বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও প্রবীণ নেতা মোতালেব আকন তারেক রহমানের সঙ্গে সরাসরি দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করে আসছিলেন। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত এক বিশেষ প্রতিবেদনে তার এই দীর্ঘদিনের ইচ্ছার কথা উঠে এলে বিষয়টি তারেক রহমানের নজরে আসে।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে তারেক রহমান ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনকে নির্দেশ দেন মোতালেব আকনের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। এরপরই শুরু হয় ভার্চুয়াল সাক্ষাতের প্রস্তুতি। এরপর আজ (সোমবার) সন্ধ্যায় লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রবীণ এ নেতা মোতালেব আকনের সঙ্গে যুক্ত হন তারেক রহমান।
৮৪ দিন আগে
নির্বাচন ভালো না হওয়ার সুযোগ নেই: সিইসি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘ভালো না হওয়ার’ কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলনকক্ষে প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘এই নির্বাচনটা কিন্তু দেশের ভবিষ্যত নির্ধারণ করে দেবে। নির্বাচন ভালো না হওয়ার কোনো সুযোগ জাতি হিসেবে আমাদের কাছে নেই। সুতরাং, সবাই মিলে নির্বাচনটা করতে হবে। এটা একটা জাতীয় নির্বাচন এবং জাতীয়ভাবেই আমরা করতে চাই। নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে এককভাবে সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না।’
গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা মানুষের মতামত তৈরি করার কারিগর। আমরা সেই সুযোগটা নিতে চাই। এই নির্বাচন অবাধ-নিরপেক্ষ করতে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে চাই; মিডিয়াকে পার্টনার হিসেবে পেতে চাই। কারণ আপনারা মিস ইনফর্মেশন ও ডিসইনফর্মেশনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।’
এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষ করে ফেলেছি। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে ফেলেছি। ২১ লাখের বেশি মৃত ভোটার চিহ্নিত করেছি, যাদের অনেকে ভোট দিয়ে যেতো, মিডিয়ায় এমন নিউজ দেখেছি। ৪৩ লাখের বেশি ভোটাযোগ্যদের তালিকাভুক্ত করতে পেরেছি। নারী-পুরুষের ব্যবধান ৩০ লাখ ছিল। এখন ১৮ লাখে নেমে এসেছে। মানুষ বিশেষ করে নারীরা যে ভোটার হতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল আমরা আলোড়ন সৃষ্টি করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, ‘বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রবাসীদের জন্য আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করছি। এটা এতদিন আইনে ছিল, কিন্তু বাস্তবে ছিল না। এটা করা কঠিন ছিল। অনলাইনে আমরা রেজিস্ট্রেশন করাবো। তারপর ভোট হবে পোস্টালে।’
‘ভোটের দায়িত্বে যারা থাকেন প্রায় ১০ লাখ লোক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে, সরকারি চাকরিজীবী, হাজতিদের ভোটের আওতায় আনব। আমরা এবার এটা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি, আইনে আগেও ছিল। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন করতে পারব না।’
সিইসি বলেন, আমরা একটা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্যে এগিয়ে যেতে চাই। একবারে স্বচ্ছভাবে, আয়নার মতো করে নির্বাচন করতে চাই। এর জন্য আপনাদের সহায়তা চাই। আপনাদের পরামর্শ আমরা চাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা একটা রেগুলার ট্রান্সপারেন্ট (স্বচ্ছ) ওয়েতে এগোতে চাই। তাই আমাদের সচিব, কমিশনারদের বলা আছে যাতে তারা নিয়মিত ব্রিফিং করেন।
ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজের সঞ্চালনায় সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির অন্যান্য কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
৮৪ দিন আগে
৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে পূর্ণ নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জামায়াত: গোলাম পরওয়ার
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার মাধ্যমে পূর্ণ নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
তিনি বলেন, ‘জামায়াতের প্রতিটি কর্মীকে এখন নির্বাচনী মাঠে নেমে পূর্ণ শক্তিতে কাজ করতে হবে।’
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকালে খুলনার আল ফারুক সোসাইটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির খুলনা মহানগর শাখা আয়োজিত সদস্য পুনর্মিলনী (১৯৭৭–২০২৫) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘দ্বীনকে সংসদে পাঠানোর জন্য এ সময়টিই সবচেয়ে উপযুক্ত। যারা একসময় ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাদের সবাইকে এখন আবার সক্রিয় হয়ে দেশের জন্য ভূমিকা রাখতে হবে।’
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম।
‘সম্প্রীতির টানে শিকড়ের পানে’— এ স্লোগানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেন।
তিনি খুলনার শিবির নেতা আমিনুল ইসলাম বিমান, মুন্সি আব্দুল হালিম, আমানুল্লাহ আমান, রহমত আলী, আবুল কাশেম পাঠান ও সাংবাদিক শেখ বেলাল উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘তাদের ত্যাগ ও অবদান আমাদের রাজনীতির ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায়।’ এ সময় মিলনায়তনে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
খুলনা মহানগর ছাত্রশিবির সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি রাকিব হোসাইনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মহানগর আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হোসাইন, মহানগর নায়েবে আমির অধ্যাপক নজিবুর রহমান, মহানগর সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, সাবেক সভাপতি ও সেক্রেটারিবৃন্দ, বিভিন্ন সময়ে দায়িত্ব পালনকারী নেতৃবৃন্দ।
অন্যান্যের মধ্যে নড়াইল জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান বাচ্চুসহ জামায়াত ও শিবিরের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
৮৭ দিন আগে
নওগাঁয় মাদরাসা ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে উপজেলা জামায়াত আমির বহিষ্কার
নওগাঁয় মাদরাসা ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে সদর উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মোনায়েম হোসাইনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গত রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে আয়োজিত এক জরুরি সভায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নৈতিক স্খলনজনিত কারণে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে জেলা জামায়াতে ইসলামী। একই সঙ্গে তাকে নওগাঁ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদের দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ বহিষ্কারের তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন জেলা জামায়াতের আমির খ. মো. আব্দুর রাকিব।
এর আগে নওগাঁ সদর উপজেলার ইনায়েতপুর মাদরাসার দশম শ্রেণির ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে এবং তদন্ত শেষে ইনায়েতপুর দাখিল মাদরাসার শিক্ষক ও সদর উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মোনায়েম হোসাইনের বিরুদ্ধে তা প্রমাণিত হয়।
২৩ সেপ্টেম্বর বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা তার পোস্টার সম্বলিত ছবিতে জুতার মালা পরিয়ে প্রতিবাদ জানান। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ে এ ঘটনার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, ১৫ সেপ্টেম্বর বৃষ্টির দিন দুপুরে শ্রেণিকক্ষে একা ছিলেন তিনি। ওই সময়ে সেখানে ক্লাস নিতে এসে মাওলানা মোনায়েম হোসাইন তাকে বোরকার হিজাব খুলতে বলেন। এক পর্যায়ে বাধা দিলেও তিনি শোনেননি। পরে তিনি শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় স্পর্শ করেন। পরবর্তীতে ওই ছাত্রীকে আবারও একা পেয়ে জোরপূর্বক চুম্বন করেন তিনি।
পরে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী এ ঘটনা সহপাঠীদের জানালে একইভাবে আরও বেশ কয়েকজন যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে জানান। পরে ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। ২২ সেপ্টেম্বর এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত মোনায়েম হোসাইনকে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি করেন ওই মাদরাসার আরেক শিক্ষক সালেক রহমান।
পুরো এ ঘটনার ১৩ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে সেখানে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের কোনো সদুত্তর দিতে দেখা যায়নি অভিযুক্ত মোনায়েম হোসাইনকে।
ওই দিন রাতে ভিডিও ধারণকারী ওই শিক্ষকের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল করে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন মোনায়েম হোসাইন।
নওগাঁ জেলা জামায়াতের আমির খ. মো. আব্দুর রাকিব বলেন, মোনায়েম হোসাইনের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো ওঠার পরপরই ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। দ্রুততম সময়ে এ কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। যেখানে মোনায়েম হোসাইনের নৈতিক স্খলন হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন থেকে মোনায়েম হোসাইনের সঙ্গে জামায়াতের কোনো সম্পর্ক নেই।
৯০ দিন আগে