রাজনীতি
বিষাক্ত রাজনীতি এড়াতে দলগুলোর পারস্পরিক বোঝাপড়ার আহ্বান ফখরুলের
একে অন্যকে দোষারোপ করার সংস্কৃতি বাদ ও তিক্ততা এড়াতে রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক বোঝাপড়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া থাকা উচিত। এখন আমরা আমরা কেবল একে অন্যকে দোষারোপ করার সংস্কৃতি দেখতে পাচ্ছি। গণতন্ত্রে কিছু দোষারোপ চলতেই পারে, কিছু কঠোর কথাবার্তাও হয়—কিন্তু এরও একটা সীমা থাকা দরকার। সীমা না মানলে তিক্ততা তৈরি হয়—যার ফলে ধীরে ধীরে রাজনীতির পরিবেশ আরও কলুষিত হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, দেশ এখন একটি সংকটময় সময় পার করছে। এ সময়ে সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি হওয়া জরুরি। যদি আমরা সবাই মিলে, বোঝাপড়ার ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে পারি, তাহলে তার উপকার পাবে দেশের মানুষ। তারা তাদের প্রতিনিধি ও একটি সঠিক সরকার পাবে। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সব সমস্যা মিটে যাবে, তা না। কিন্তু একটা রাস্তা তৈরি হবে, যে রাস্তার মধ্যদিয়ে আমাদের এবং জনগণের কথাগুলো সেই সরকারের কাছে পৌঁছাতে পারবে।
এরমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলো ১২টি মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাকি বিষয়গুলোতে ঐক্য তৈরির কাজ চলছে। প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা করে বৈঠক হচ্ছে। অনেকগুলো বিষয় আছে, যেগুলো আমরাও ঠিক বুঝি না, তারা করতে চান।
পড়ুন: নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই হবে, একদিনও দেরি হবে না: শফিকুল আলম
বিএনপি মহাসচিব জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে জটিল বিষয়গুলো বাদ দিয়ে মূল অমীমাংসিত বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দিতে বলেন। এগুলোকে বাদ দিয়ে যে মৌলিক বিষয়গুলো আছে, সেই বিষয়গুলো সমাধান করে আমার মনে হয়, অতিদ্রুত লন্ডনের বৈঠক অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্য নির্বাচনটা হওয়া দরকার।
তিনি বলেন, ‘যদি এটা সম্ভব হয়, তাহলে আমি বিশ্বাস করি, আমাদের অনেক সংশয় ও বিভ্রান্তি দূর হবে এবং আমরা একটি সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে এগোতে পারব।’
ফখরুল হতাশা প্রকাশ করে বলেন, অর্ন্তবর্তী সরকার এখন পর্যন্ত গণঅভ্যুত্থানের সময় নিহত ও আহতদের পরিবারকে সহায়তা কিংবা পুনর্বাসনের জন্য কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
তিনি বলেন, ‘আজ যখন এক বোনের কথা শুনছিলাম, (যিনি তার স্বামীকে হারিয়েছেন) তখন মনে হলো—রাষ্ট্র বলতে আমরা কী বুঝি? রাষ্ট্র কার জন্য? যারা রাষ্ট্র চালাচ্ছেন, তারা কি একটি বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও এই মানুষগুলোকে খুঁজে পাননি? একটা সঠিক তালিকা তৈরি করে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে পারেননি?’
আলোচনার এক পর্যায়ে গণঅভ্যুত্থানে আহত এক শিশুর প্রসঙ্গ টেনে আবেগপ্রবণ হন তিনি, ‘গতকাল (বুধবার) এক ছোট ছেলে—হয়তো ছয়-সাত বছরের—আমার কাছে এসে হঠাৎ জড়িয়ে ধরল। বলল, ‘আমার মাথা নাই।’ মানে, তার মাথায় গুলি লেগেছিল, পরে ডাক্তাররা অপারেশন করে একটা প্লাস্টিকের কৃত্রিম খুলি বসিয়েছেন। এর চেয়ে বড় ত্যাগ আর কী হতে পারে?’
তিনি বলেন, ‘যদি আমরা এই ত্যাগকে যথাযথভাবে সম্মান না জানাতে পারি—যদি এই শিশুদের, এই বোনদের, এই মায়েদের প্রতি সুবিচার না করি—তাহলে নিঃসন্দেহে আমরা জাতির সঙ্গে এক ভয়াবহ বিশ্বাসঘাতকতা করব।’
তবে বিএনপি নেতা আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমরা এখনো একটি সুন্দর ও উন্নত বাংলাদেশের দিকে এগোতে পারব।’
১৫০ দিন আগে
জুলাই অভ্যুত্থানে শিবিরের নির্দেশে কাজ করার তথ্য মিথ্যা: নাহিদ ইসলাম
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা থেকে একক নেতৃত্ব দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এ সময়ে শিবিরের নেতৃত্বে কাজ করার তথ্যকেও ‘মিথ্যাচার’ বলে আখ্যায়িত করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, শিবির নেতা সাদিক কায়েম সম্প্রতি একটি টকশোতে বলেছেন, ছাত্রশক্তির গঠনপ্রক্রিয়ায় শিবির যুক্ত ছিল। শিবিরের নির্দেশে আমরা কাজ করতাম— এটা মিথ্যাচার।
‘সাদিক কায়েম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সমন্বয়ক ছিলেন না। কিন্তু ৫ আগস্ট থেকে এই পরিচয় তিনি ব্যবহার করেছেন। অভ্যুত্থানে শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে সাদিক কায়েমকে প্রেস ব্রিফিংয়ে বসার সুযোগ দেওয়া হয়।’
অভ্যুত্থান শিবিরের একক ছিল না দাবি করে তিনি বলেন, ‘সাদিক কায়েমরা অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে ঢালাও প্রচারণা চালিয়েছে যে, এই অভ্যুত্থানে ঢাবি শিবিরই নেতৃত্ব দিয়েছে, আমরা শুধু সামনে পোস্টার ছিলাম। অভ্যুত্থানে শিবিরের ভূমিকা কেউ অস্বীকার করেনি। কিন্তু এই অভ্যুত্থান শিবিরের একক ছিল না, শিবিরের নির্দেশ বা নেতৃত্বও ছিল না। আমরা সব পক্ষের সাথে যোগাযোগ করেই সিদ্ধান্ত নিতাম। আর কারা ক্ষমতার ভাগ–বাঁটোয়ারা করতে চাইছে, গোষ্ঠীস্বার্থ রক্ষা করতে চাইছে— সে বিষয়ে অন্যদিন বলব।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘গুরুবার আড্ডা’ পাঠচক্রের সাথে জড়িত একটি অংশ এবং ঢাবি ছাত্র অধিকার থেকে পদত্যাগ করা একটি অংশ মিলে ছাত্রশক্তি গঠিত হয়। সঙ্গে জাবির একটি স্টাডি সার্কেলও যুক্ত হয়। একটি নতুন ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুবার আড্ডা পাঠচক্রে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করা হয়েছে।
‘আমরা ক্যাম্পাসে আট বছর রাজনীতি করেছি। ফলে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব সংগঠন ও নেতৃত্বকে আমরা চিনতাম এবং সব পক্ষের সাথেই আমাদের যোগাযোগ ও সম্পর্ক ছিল। সেই কারণে ঢাবি শিবিরের সাথেও যোগাযোগ ছিল। তবে যোগাযোগ, সম্পর্ক বা কখনো সহযোগিতা করা মানেই এই নয় যে তারা আমাদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল।’
আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সুযোগ পায়নি ইসলামী ছাত্রশিবির। তবে জামায়াতে ইসলামীর এ ছাত্র সংগঠন যে গোপনে সক্রিয় ছিল, তা প্রকাশ্যে আসে চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাদিক কায়েম ২১ সেপ্টেম্বর এক ফেসবুক পোস্টে জানান, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি।
সমন্বয়কের তালিকায় নাম না থাকলেও জুলাই মাসে চলা ছাত্র আন্দোলনে সামনের কাতারেই ছিলেন সাদিক কায়েম। তালিকাভুক্ত সমন্বয়কদের সঙ্গে বিভিন্ন ছবিতেও তাকে সে সময় দেখা যায়।
সম্প্রতি একটি টেলিভিশনের আলোচনা অনুষ্ঠানে সাদিক কায়েম বলেন, ২০১৭ সাল থেকে লম্বা সময় ধরে যখন তার যে পদ ছিল, নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমরা তা জানতেন।
সাদিক কায়েম বলেন, পরিচয় জেনে কো-অর্ডিনেশন করে আমরা সবাই মিলে একসাথে কাজ করেছি। সুতরাং এখানে পরিচয় গোপন করার কিছু নেই। ওই সময়ে পরিচয় ঘোষণা দিয়ে কাজ করার মতো পরিস্থিতি ছিল না। সে কারণে শিক্ষার্থীদের সব দাবির সঙ্গে ছিলাম, কিন্তু ঘোষণা দিয়ে কাজ করার মতো অবস্থা ছিল না। কারণ, আমাদের মেরে ফেলা বৈধ ছিল।
১৫০ দিন আগে
জুলাই সনদ একটি সামাজিক চুক্তি, কোনো পক্ষ এটি ভাঙবে না: সালাহউদ্দিন
ঢাকা, ৩০ জুলাই (ইউএনবি): জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ একটি মহান বাধ্যতামূলক সামাজিক চুক্তি হিসাবে বর্ণনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কোনো দল এটি অমান্য করার সাহস করবে না, কারণ এটি একটি স্বচ্ছ জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং পরবর্তী সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা আবশ্যক।
বুধবার (৩০ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন (এনসিসি) আয়োজিত দ্বিতীয় দফা সংলাপের ২২তম অধিবেশনে চা বিরতির সময় সালাউদ্দিন সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল কি এটি ভঙ্গ করার সাহস করবে? কোনো দল কি সেই ঝুঁকি নেবে? আমি মনে করি না এর চেয়ে বড় ঐকমত্য, সমঝোতা স্মারক বা সামাজিক যোগাযোগ বা চুক্তি হতে পারে। এটি জাতি, জনগণ, রাজনৈতিক দল এবং সকল অংশীদারদের মধ্যে একটি চুক্তি। এবং আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে এটি বাস্তবায়নের একমাত্র স্থান হলো জাতীয় সংসদ।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সনদের তাৎক্ষণিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য একটি আইনি কাঠামোর দাবির বিষয়ে বিএনপির অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন এটি একটি আইনি দলিল হওয়া উচিত। কিন্তু আমি বলব এই পুরো প্রক্রিয়াটি—দীর্ঘ, স্বচ্ছ, সরাসরি সম্প্রচারিত আলোচনায় অনেক রাজনৈতিক দলকে জড়িত করা—একটি উন্মুক্ত আদালতের বিচারের মতো। জাতি দেখেছে কে কী বলেছে। এখন যখন প্রধান উপদেষ্টা, সংস্কার কমিশনের প্রধান, এনসিসির সদস্য, জাতীয় নেতা এবং সকল দলের প্রতিনিধিদের সই নিয়ে একটি সনদ প্রস্তুত করা হয়—এবং এটি অনলাইনে এবং সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়—তখন কি কোনো দল এটি লঙ্ঘনের সাহস করতে পারে? আমি তা মনে করি না।’
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র অভ্যুত্থানের পর সনদ জাতির সম্মিলিত চেতনাকে প্রতিফলিত করে। ‘কোনো রাজনৈতিক দল কি জাতির আকাঙ্ক্ষা এবং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক নেতাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি উপেক্ষা করতে পারে... আমি বিশ্বাস করি না যে এটি সম্ভব,’ বলেন তিনি।
পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারকে ভুল পদক্ষেপ, গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্তের বিষয়ে সতর্ক করলেন তারেক
সালাউদ্দিন জোর দিয়ে বলেন, বিএনপি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছে এবং সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন করা উচিত সে বিষয়ে এনসিসির প্রস্তাবগুলোর সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জাতীয় সংসদই এই সনদ বাস্তবায়নের একমাত্র স্থান।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, সনদের একটি ধারা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে সম্মত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে। ‘আমরা সেই অনুভূতি এবং প্রস্তাবের সাথে শতভাগ একমত।’
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, সনদ সই হওয়ার আগেই অধ্যাদেশ এবং উপদেষ্টা পর্যায়ের পদক্ষেপের মাধ্যমে অনেক সংস্কার বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে।
বিএনপি সংস্কার গ্রহণ করে না এমন অভিযোগের বিষয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কমিশনের মোট ৮২৬টি প্রস্তাবের মধ্যে আমরা মাত্র ৫১টির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছি। এত বিশাল ঐকমত্য গঠনের প্রক্রিয়ার পরে কেউ কীভাবে বলতে পারে যে বিএনপি সংস্কারের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়?’
১৫১ দিন আগে
ছাত্র উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে, পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে: নাহিদ
অন্তর্বর্তী সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টা এনসিপির কেউ নয়—তারা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি। তাদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করে, পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকালে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে নরসিংদী পৌরসভার সামনে এনসিপির দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা শেষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) অ্যাডভোকেট শিরিন আক্তার শেলী।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সামান্তা শারমিন, আব্দুল্লাহ হিল লিমন, আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল প্রমুখ।অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
সারা দেশে জুলাই পদযাত্রায় হামলা ও বাধা সৃষ্টি করে এনসিপিকে থামানো যাবে না উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামী নির্বাচনে দেশের জনগণের সমর্থনে এনসিপি জয়লাভ করবে।
এর আগে পথসভায় মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, আগামী ৩ আগষ্ট ঢাকায় এনসিপির সমাবেশ ঘিরে যারা নেতাকর্মীদের উপর হাত তুলবে, তাদের জবাব দেওয়া হবে।
পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারকে ভুল পদক্ষেপ, গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্তের বিষয়ে সতর্ক করলেন তারেক
নাসিরুদ্দিন আরও বলেন, এখন ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজদের ভয়ে আতঙ্কে থাকেন। এনসিপি ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা চায় না। দেশের ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চায়। এসময় তিনি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চব্বিশের ছাত্র জনতার আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিএনপি-জামায়াতসহ অন্যান্য দলগুলোর ক্ষোভ ভুলে আবারো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। পথসভায় দলটির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
এর আগে নরসিংদী ক্লাবে জুলাই-আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন এনসিপি নেতারা। এ সময় তারা প্রতিটি শহীদ পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান।
বিকালে ঢাকা-সিলেট সড়কের জেলখানা মোড় (শহীদ তাহমিদ চত্ত্বর) থেকে শুরু হয়ে পদযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নরসিংদী পৌরসভা প্রাঙ্গনে অস্থায়ী মঞ্চে গিয়ে মিলিত হয়।
১৫১ দিন আগে
জামায়াত আমির ডা. শফিকুরের হার্টে ব্লক, দেশেই করবেন বাইপাস সার্জারি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের হার্টে ব্লক ধরা পড়েছে। চিকিৎসকরা বাইপাস সার্জারির নির্দেশনা দিয়েছেন। বুধবার (৩০ জুলাই) রাতে জামায়াত আমিরের ব্যক্তিগত সহকারী নজরুল ইসলাম ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘জামায়াত আমিরের হার্টে মেজর তিনটি ব্লক ধরা পড়েছে। বর্তমানে তিনি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আগামীকাল চিকিৎসকরা তার চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
এছাড়া ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ধানমন্ডি থানা জামায়াতের আমির হাফেজ রাশেদুল ইসলাম তার ফেসবুক পোস্টে জামায়াত আমিরের অসুস্থতার কথা জানান।
ডা. শফিকুর রহমানের পরিবার ও তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দেশের বাইরের হাসপাতালে বাইপাস সার্জারি করার পরমর্শ দিলে তিনি তাতে সম্মত হননি।
দেশেই তিনি সার্জারির সিন্ধান্ত নিয়েছেন বলে পোস্টে উল্লেখ করেন রাশেদুল ইসলাম।
এর আগে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের জাতীয় সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য দেওয়ার সময় ডা. শফিকুর রহমান দুবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত তিনি বসেই সমাবেশের বক্তব্য শেষ করেন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। তখন থেকে তার শারিরীক ধারাবাহিক পরীক্ষা-নীরিক্ষা চলছিল।
পড়ুন: আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে জামায়াত: ডা. শফিকুর রহমান
১৫১ দিন আগে
অন্তর্বর্তী সরকারকে ভুল পদক্ষেপ, গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্তের বিষয়ে সতর্ক করলেন তারেক
অন্তর্বর্তী সরকারের যেকোনো ভুল সিদ্ধান্ত দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রাকে মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলতে পারে এবং ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ ও মৌলবাদের উত্থানের পথ উন্মুক্ত করে দিতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘সরকারের যেকোনো ভুল পদক্ষেপ গণতন্ত্রের যাত্রাকে সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে। ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ এবং মৌলবাদ মাথা উঁচু করতে পারে। তাই, আমাদের সকলকে, বিশেষ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।’
আশুলিয়ার শ্রীপুরে দারুল ইহসান মাদরাসা মাঠে বুধবার (৩০ জুলাই) বিএনপির ঢাকা জেলা শাখা আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে ভার্চুয়াল ভাষণে তারেক রহমান এই মন্তব্য করেন।
২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় আশুলিয়ায় নৃশংস ঘটনার শিকারদের স্মরণে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আন্দোলনের সময় আশুলিয়া থানার কাছে শহীদদের লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
পড়ুন: খালেদা জিয়া সুস্থ, নির্বাচনে অংশ নেবেন: আবদুল আউয়াল মিন্টু
ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের উল্লেখ করে তারেক বলেন, জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করে আশা করেছিল তাদের অধিকার পুনরুদ্ধার হবে।
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ কেউ দেশের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে না দিয়ে, তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে কাজ করার পরিবর্তে খারাপ কৌশল অবলম্বন করতে পারে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘নির্বাচনী অগ্রাধিকার নির্ধারণে প্রয়োজনীয় প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা অন্তর্বর্তী সরকার প্রদর্শন করছে কিনা তা নিয়ে জনগণের মধ্যে একটি গুরুতর উদ্বেগ ও প্রশ্ন রয়েছে।’
তারেক আরও সতর্ক করে বলেন, পরাজিত ও পলাতক ফ্যাসিবাদী শক্তিগুলো তাদের রাজনৈতিক ফায়দার জন্য সরকারের কোনো ভুলের অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি অন্তর্বর্তী সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই যে, শত শত শহীদের রক্তপাতের পরও পতিত, পলাতক, পরাজিত এবং ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদী শক্তিগুলো ছায়ায় লুকিয়ে আছে, ফিরে আসার সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি সকল রাজনৈতিক দলকে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে বিভেদ তৈরি না করার আহ্বান জানান, যাতে দেশের গণতন্ত্র আবার বাধাগ্রস্ত না হয়।
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে রাজনৈতিকভাবে অনেক কিছু বলা এবং ব্যাখ্যা করা হচ্ছে এবং গণতন্ত্রে এটি স্বাভাবিক। কিন্তু এমন কিছু করবেন না— যা আবারও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ক্ষতি করতে পারে।’
পড়ুন: দেশে জনগণের প্রতিনিধিত্বের সরকার খুবই জরুরি: মির্জা ফখরুল
বিএনপি নেতা আরও সতর্ক করে বলেন, ছোটখাটো বিষয়ে অপ্রয়োজনীয় বিরোধ ‘ফ্যাসিবাদী হাসিনার প্রত্যাবর্তন’র পথ প্রশস্ত করতে সাহায্য করতে পারে।
তিনি দ্রুত তাদের মতপার্থক্য ভুলে এবং দেশে গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সকল রাজনৈতিক শক্তির ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।
ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার, আমাদের বিদ্যমান সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করার এবং একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে আসার আহ্বান জানাই। আসুন একটি সত্যিকারের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করি।’
সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বাংলাদেশের মানুষ ও মাটির সন্তানদের জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে—এমন ঘটনায় তিনি গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন।
বিএনপির এই নেতা হতাশা প্রকাশ করেন যে, সরকার এখনও গণঅভ্যুত্থানের সময় নিহত ও আহতদের পরিবারের জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে পারেনি।
ক্ষমতায় থাকার জন্য নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পথ বেঁছে নেওয়ার অভিযোগ করে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।
তিনি বলেন, জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ছাত্র ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করে শেখ হাসিনা যে নৃশংসতা চালিয়েছেন—তার জন্য তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
১৫১ দিন আগে
খালেদা জিয়া সুস্থ, নির্বাচনে অংশ নেবেন: আবদুল আউয়াল মিন্টু
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন এবং তিনি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। তিনি বলেন, নির্বাচনে ফেনীর অতীত ইতিহাস সবাই জানে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এখানে বিএনপি জয়লাভ করবে। নির্বাচন নিয়ে ফেনীতে কোনো চিন্তা নেই।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে ফেনী শহরের গ্র্যান্ড সুলতান কনভেনশন হলে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
মিন্টু বলেন, দেশের বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় জানুয়ারিতেও নির্বাচন হয়ে যেতে পারে। কারণ সুপ্রিম কোর্টে কেয়ারটেকার সরকার নিয়ে একটি মামলা চলমান। যদি কেয়ারটেকার সরকার পুনঃপ্রবর্তন হয়—তাহলে এ অন্তবর্তী সরকার কেয়ারটেকার হবেন। কেয়ারটেকার সরকারে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার কথা বলা আছে। আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, লন্ডনে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে অন্তর্বর্তী সরকার যৌথ বিবৃতি দিয়েছিল। আমরা সেটিতে আস্থা রাখতে চাই যে, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে।
আরও পড়ুন: জরুরি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মধ্যরাতে হাসপাতালে খালেদা জিয়া
সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না থাকলে ভালো কাজ করবে না উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, গত ১৯ বছর আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে আসছি। কেউ যদি বলে আমরা হঠাৎ করে নির্বাচন চাচ্ছি বিষয়টি সঠিক নয়। বরং ২০০৬ সাল থেকে আমরা নির্বাচন চেয়ে আসছি। একটি দেশের সরকার যদি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ না থাকেন—তাহলে তারা কখনো ভালো কাজ করবে না। তাই আমরা চাচ্ছি নির্বাচনটি হোক।
মিন্টু আরও বলেন, আমরা বলে আসছি ২০০৮ সালে যে নির্বাচন হয়েছে, সেটি অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। ২০০৬ সাল থেকে দেশে কোনো নির্বাচনকালীন সরকার নেই। দুই যুগ ধরে যদি নির্বাচিত সরকার না থাকে— তাহলে মানুষের অর্থনৈতিক বা জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হবে না। নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত থাকে একটি সরকার, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকে।
১৫১ দিন আগে
৩ আগস্ট শহীদ মিনারের বদলে শাহবাগে সমাবেশ করবে ছাত্রদল
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অনুরোধে আগামী ৩ আগস্টের ছাত্র সমাবেশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শাহবাগে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
তিনি বলেন, ‘একই দিনে একই স্থানে সমাবেশ করতে চায় এনসিপি। পরে তাদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা শাহবাগে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
রাকিব বলেন, শহীদ মিনারে সমাবেশের জন্য তারা পূর্বেই অনুমতি পেয়েছিলেন এবং সাধারণ মানুষের কোনো দুর্ভোগ সৃষ্টি না করতেই সে স্থানটি নির্বাচন করেছিলেন। তবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের স্বার্থে কর্মসূচি শাহবাগে সরিয়ে নিতে তারা সম্মত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ৫ আগষ্টের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র: নাহিদ ইসলাম
শাহবাগ একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক মোড় হওয়ায় এতে যানজটের আশঙ্কা রয়েছে উল্লেখ করে রাকিব বলেন, ‘রাজধানীর ব্যস্ত সড়কে যদি কোনো ধরনের ভোগান্তি তৈরি হয়, এই অনিচ্ছাকৃত সমস্যার জন্য আমরা নগরবাসীর কাছে অগ্রিম দুঃখ প্রকাশ করছি।’
জুলাই অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে ছাত্রদলের ধারাবাহিক কর্মসূচির একটি প্রধান অংশ ছিল ৩ আগস্টের এই ছাত্র সমাবেশ।
রাকিব জানান, তারা জুন মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে শহীদ মিনারে সমাবেশের জন্য আবেদন করে এবং লিখিত অনুমতিও পান। পরবর্তীতে একই দিনে এনসিপির ‘জুলাই মিছিল’ কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠান শহীদ মিনারে আয়োজনের কথা জানানো হয়।
তিনি বলেন, ‘এনসিপির পক্ষ থেকে ছাত্রদল ও বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমাবেশ স্থান পরিবর্তনের অনুরোধ জানানো হয়। তাদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা শাহবাগে সমাবেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
ছাত্রদলের এই অবস্থান গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক ধারার ছাত্ররাজনীতির প্রতীক হিসেবে ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেন রাকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই উদারতা অন্য রাজনৈতিক শক্তির জন্যও পথপ্রদর্শক হবে।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনসহ ক্যাম্পাসে সক্রিয় উপস্থিতি সত্ত্বেও ছাত্রদলের ভূমিকা প্রায়ই উপেক্ষিত হয় বা খাটো করে দেখা হয়, যা হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি। ছাত্রদল সভাপতি বলেন, ‘আমরা উসকানির বিপরীতে শান্তি ও সহাবস্থানের বার্তা দিলাম।’
এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক পরিপক্বতা এবং দেশের সব ক্যাম্পাসে সম্মানজনক ছাত্র রাজনীতির আহ্বান হিসেবে দেখা হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
১৫২ দিন আগে
নাটোরে দোকানে তালা লাগিয়ে চাঁদা দাবির বিষয় অস্বীকার জেলা জামায়াতের
নাটোরের বড়াইগ্রামে ১১টি কোকানে তালা লাগিয়ে দখল চেষ্টার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া জামায়াত নেতা রুহুল আমিনসহ ৪ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) অভিযুক্তদের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুর রহমান সুমনের আদালতে হাজির করে জামিনের আবেদন জানালে শুনানি শেষে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন কোর্ট পুলিশের উপ পরিদর্শক আলমগীর হোসেন।
এদিকে মঙ্গলবার(২৯ জুলাই) বিকালে শহরের একটি কনফারেন্স সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা জামায়াত।
এতে জেলা জামায়াতের আমির ড. মীর নুরুল ইসলাম দাবি করেন, দীর্ঘদিন ধরে বেহাত হওয়া পৈত্রিক সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য চেষ্টা করেছেন রুহুল আমিন ও তার পরিবার। এখানে রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার ও চাঁদাবাজির কোনো বিষয় ছিল না। তবে দোকানে তালা লাগানোর বিষটি ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেন জেলা আমির।
পড়ুন: বিচার-সংস্কার, নির্বাচন পাশাপাশি হতে হবে: জামায়াত আমির
তিনি জানান, বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে সালিস ডাকা হলেও প্রতিপক্ষ সেখানে হাজির জননি। এ অবস্থায় রুহুল আমিন ও তার ভাইয়েরা মিলে দোকানগুলোতে তালা লাগিয়ে দেয়। বিষয়টি কেন্দ্রীয় জামায়াত পর্যবেক্ষণ করছে। এ ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দলীয় পরিচয়ে ক্ষমতার অপব্যবহারের কোনো প্রমাণ পেলে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করা হবে বলেও জানান মীর নুরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাদেকুর রহমান, নায়েবে আমির অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন, সহকারি সেক্রেটারি আতিকুল ইসলাম রাসেলসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে সোমবার(২৮ জুলাই) বিকালে স্থানীয় জামায়াত নেতা রুহুল আমিন ও তার ভাই বিএনপি নেতা হায়দার আলীসহ স্বজনরা গিয়ে উপজেলার আহম্মদপুর বাজারের ১১টি দোকান নিজেদের দাবি করে। পরে তারা সেসব দোকানে তালা লাগিয়ে দিলে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা সেনাবাহিনীর সহায়তা চাইলে সেনা সদস্যরা গিয়ে কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে তালাবদ্ধ দোকানগুলোর তালা খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে এবং তালা লাগানোর সঙ্গে জড়িত জামায়াত নেতা রুহুল আমিন তার ভাই হায়দার আলী, অপর ভাই আজিম উদ্দিন ও তাদের বাবা মজিবর রহমানকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও দখল চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম। পরে আটককৃত ৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ আদালতে পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেন বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারোয়া হোসেন।
১৫২ দিন আগে
৫ আগষ্টের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র: নাহিদ ইসলাম
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ৯০ এর গণ অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দলগুলো জনগণ ও ছাত্রদের সঙ্গে প্রতারণা করেছিল। জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া এসেছে। আমরা বলেছি, এতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য থাকতে হবে। জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে এবং এর আইনি ভিত্তি থাকতে হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচিত যেই সরকারে আসুক, তাকে এই সংস্কার বাস্তবায়নে বাধ্যবাধকতা থাকবে। আমরা আশা করি, ৫ আগষ্টের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে জুলাই ঘোষণাপত্র দেবে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকালে জেলা শহরের রাজবাড়ী সড়কে আয়োজিত পদযাত্রা শেষে গাজীপুর মহানগর ও জেলা এনসিপি আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পড়ুন: পুরোনো আইনে বাংলাদেশকে আর চলতে দেবো না: নাহিদ ইসলাম
অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, শেখ হাসিনার সরকার সেনাবাহিনীকে রাজমিস্ত্রীতে পরিণত করেছিলেন। পুলিশকে রাজনৈতিক লাঠিয়ালে পরিণত করেছিলেন। এখন পুলিশ সংস্কার হচ্ছে, যাতে কেউ পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে না পারে। সেনাবাহিনীকে আধুনিক করতে নানা উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দিয়ে বলেন, আমরা এনসিপি সুযোগ পেলে সেনাবাহিনীকে সমৃদ্ধ করব।
এনসিপির সংগঠক সারজিস আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আর বক্তব্য দেন, অ্যাডভোকেট আলী নাসের খান, এম এম সোহাইব, এম এম মুহিত, নাহিদা সারওয়ার নিভা প্রমুখ। অন্যান্যদের মধ্যে ডা. তাসনিম জারা, শামান্তা শারমিনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের লড়াই শেষ হয় নাই। আমাদের একটি নতুন বাংলাদেশ হিসেবে লড়াই চলমান আছে। আজকেও দেখেছেন গাজীপুরের সন্ত্রাসীরা টহল দিচ্ছে মহড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। ভয় দেখিয়ে নাগরিক পার্টি জাতীয় গণঅভুত্থানের শক্তিকে তারা রুখে দেবে।
তিনি আরও বলেন, গোপালগঞ্জেও আমাদের বাঁধা দিয়ে রাখা যায় নাই। আমরা গোপালগঞ্জের মাটিতে গিয়েছি। আমরা গাজীপুরের মাটিতেও এসেছি। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় আমরা গিয়েছি, যাবো। আমরা ঘোষণা করেছি বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ইঞ্চি মাটি থেকে আমরা মুজিববাদ বিতাড়িত করব। মুজিববাদদের আমরা বিচারের আওতায় আনব।
জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, গণঅভুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন তাদের সঙ্গে থাকবেন তাদের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।
এসময় স্থানীয় এনসিপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শ্রীপুরের মাওনায় আয়োজিত পদযাত্রায় নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা ঘোষণা করেছি বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ইঞ্চি মাটি থেকে আমরা মুজিববাদ বিতাড়িত করব। মুজিববাদদের আমরা বিচারের আওতায় আনব।
১৫২ দিন আগে