রাজনীতি
উপদেষ্টা পরিষদ বাংলাদেশকে কল্যাণধর্মী রাষ্ট্র বানাতে ব্যর্থ: মেজর হাফিজ
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ বাংলাদেশকে একটি কল্যাণধর্মী রাষ্ট্রে পরিণত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে ভোলার লালমোহন উপজেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, ‘বর্তমান সরকারের প্রধান ড. ইউনূস একজন দেশবরেণ্য ব্যক্তি। বিদেশে তার অনেক সুনাম আছে। আমাদের দলসহ সব রাজনৈতিক দলই তাকে সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তার কাছ থেকে আমরা যে প্রত্যাশা করেছিলাম— তিনি ও উপদেষ্টা পরিষদ তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘যারা জুলাই মাসে আহত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন, তাদের দেখতে যাওয়ার সময় পর্যন্ত উপদেষ্টাদের নেই।’
সংস্কার প্রস্তাব প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নানা ধরনের আতেলরা মনের মাধুরী মিশিয়ে সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছে। তার একটি হলো পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি। অথচ মানুষ প্রার্থীর চেহারা দেখতে চায়, একজন ব্যক্তির গুণাগুণ বিচার করে, অতীত কর্মকাণ্ড দেখে শুনে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে চায়। কোনো কুচক্রী মহলের কথায় আমরা কান দেব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, এই উপদেষ্টা পরিষদ নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে। তাদের গোপন অভিপ্রায়—এই সরকার যেন পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে পারে। কিন্তু দেশের অর্থনীতি ক্রমেই নিচের দিকে যাচ্ছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো উপায় নেই। জনগণ যাদের ভোট দেবে, আমরা তাদের মেনে নেব।’
লালমোহন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তাহারাত হাফিজ আর্কের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বরিশাল বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আ.ক.ন কুদ্দুস রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ভোলা জেলা সমন্বয়ক আবু নাছের রহমত উল্লাহ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর, যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউর রহমান কিরণ, সদস্য সচিব রায়সুল আলমসহ স্থানীয় নেতারা।
সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে সাবেক ও বর্তমান নেতারা বক্তব্য দেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে নতুন কমিটি গঠনের জন্য কাউন্সিলরদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে মো. জাফর ইকবালকে সভাপতি এবং বাবুল পঞ্চায়েতকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
১৫৫ দিন আগে
কয়েক দিনের মধ্যে নির্বাচন তারিখ ঘোষণা করতে পারেন ড. ইউনূস: মোস্তফা হায়দার
আগামী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (২৬ জুলাই) এমন তথ্যই জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার।
রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে ১২টি রাজনৈতিক দলের নেতাদের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্ট করে বলেছেন যে তিনি চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করবেন।’
এই ঘোষণার প্রত্যাশাকে ‘জাতির জন্য এক আনন্দবার্তা’ হিসেবে অভিহিত করেন হায়দার।
তিনি বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার সমাধানে একটি জাতীয় নির্বাচনই একমাত্র বাস্তবসম্মত উপায়।
পড়ুন: ভাড়াটে লোক দিয়ে দেশ চালানো যাবে না: ফখরুল
‘নির্বাচনের মাধ্যমে অনেক সমস্যারই সমাধান হবে। এটি চলমান অস্থিরতা নিরসনে সহায়ক হবে।’
হায়দার আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায় হলো নির্বাচন।
‘তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, আগামী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই নির্বাচনের একটি নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হবে।’
এর আগে দুই দফায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপর আজ বিকেলে আরও ১৪টি দল–জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
১৫৫ দিন আগে
ভাড়াটে লোক দিয়ে দেশ চালানো যাবে না: ফখরুল
জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিই সংস্কারের পূর্বশর্ত উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশ ও বিদেশ থেকে ভাড়াটে লোক এনে দেশ পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘দেশ-বিদেশ থেকে কিছু লোক ভাড়া করে কি একটা দেশ চালানো যায়? না, যায় না। এটিই সহজ সত্য, আমাদের তা বুঝতে হবে।’
শনিবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জুলাই অভ্যুত্থান: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। জিয়া পরিষদের আয়োজনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত বছরের অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচিটি পালন করা হয়, যা শেখ হাসিনার ‘ফ্যাসিবাদী শাসনের’ পতনের সূচনা বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ ভাবছেন, কয়েকটি বৈঠক করলেই সংস্কার হয়ে যাবে। এটা ঠিক নয়। সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, তা একদিনে হয় না।’
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সরকার যদি মনে করে আগামীকাল থেকে পুলিশ ঘুষ খাওয়া বন্ধ করে দেবে, তাহলে তা হবে না। তাকে এমন একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে, যেখানে ঘুষ খাওয়ার প্রবণতা নিরুৎসাহিত করা হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান আমলাতন্ত্র দেশের উন্নয়নের পথে প্রধান প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি নেতিবাচক একটি আমলাতন্ত্রে পরিণত হয়েছে। এটি পরিবর্তন করে ইতিবাচক আমলাতন্ত্রে রূপান্তর করতে হবে। আর তা করতে হলে জনগণকে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত জনগণের কাছে ফেরা, তাদের চাহিদা জানা এবং সেই চাহিদার ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করা।’
পড়ুন: নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়: ফখরুল
নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দাবিকে কেন্দ্র করে সমালোচনার জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলা শুরু করলেই বলা হচ্ছে বিএনপি শুধু ভোট চায়। কিন্তু কেউ কি ভেবে দেখেছে, আমরা কেন নির্বাচন চাই?’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমেই প্রকৃত জন-প্রতিনিধি নির্বাচিত করা সম্ভব। আর যদি প্রতিনিধি না থাকে, তাহলে তারা সংসদে যাবে কীভাবে? আর যদি নির্বাচিত সংসদ না থাকে, তাহলে জনগণের শাসন কিভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে?’
আংশিক প্রতিনিধিত্বমূলক (পিআর) নির্বাচনী পদ্ধতি নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘এই পদ্ধতির সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা এই পদ্ধতির পক্ষে জোরালো সুরে কথা বলছে। কিন্তু পিআর নির্বাচন কী—সাধারণ মানুষ তা বোঝে না।’
তিনি বলেন, ‘দেশে এই পদ্ধতি নিয়ে একধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষ যে পদ্ধতিতে অভ্যস্ত, সেটি হলো—রাজনৈতিক দল প্রার্থী মনোনয়ন দেবে, প্রতীক হবে ধানের শীষ, পাল্লা, হাতপাখা ইত্যাদি; আর ভোটাররা গিয়ে ভোট দেবে। এখন হঠাৎ করে বলা হচ্ছে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে।’
পিআর পদ্ধতির ব্যাখ্যায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই পদ্ধতিতে জনগণ ব্যক্তিকে নয়, দলকে ভোট দেয়। এরপর দল যাকে ইচ্ছা তাকে সংসদ সদস্য মনোনয়ন দেয়। ফলে জনগণের পছন্দের, নিজেদের এলাকার কোনো নেতাকে তারা আর সংসদে পাঠাতে পারবে না।’
পড়ুন: পুরোনো আইনে বাংলাদেশকে আর চলতে দেবো না: নাহিদ ইসলাম
এই কারণেই বিএনপি জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনকে সমর্থন করে না বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক গভীর সংকটে রয়েছে। আমরা অপেক্ষা করছি, কখন গণতন্ত্রের পথে ফিরব। দেশ বর্তমানে রাজনৈতিক শূন্যতা এবং ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। আমাদের এখান থেকে বেরিয়ে একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যা জনগণের কল্যাণে কাজ করবে।’
আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিবাদী শক্তি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘তারা যে ক্ষতি করেছে তা পূরণ করা সহজ হবে না। তারা বিচার বিভাগ, প্রশাসন, স্বাস্থ্য খাত, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোকেও ধ্বংস করেছে।’
বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কিছু পত্রিকায় যেসব অপকর্মের খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি জিয়াউর রহমানের গড়া দল। এই দলের নেতৃত্ব ও কর্মীদের সততাই প্রধান ভিত্তি। সততা ছাড়া বিএনপি জনগণের সামনে দাঁড়াতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘আজকাল পত্রপত্রিকায় যেসব খবর ছাপা হচ্ছে, সেগুলো বিএনপির আদর্শ বা জিয়াউর রহমানের মূল্যবোধের সঙ্গে মেলে না। তাই যারা বিএনপির রাজনীতি করছেন, তাদের জিয়াউর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে এবং অবশ্যই সৎ হতে হবে।’
১৫৫ দিন আগে
পুরোনো আইনে বাংলাদেশকে আর চলতে দেবো না: নাহিদ ইসলাম
মৌলভীবাজার, ২৬ জুলাই (ইউএনবি): জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, পুরোনো সিস্টেমের পুরোনো আইনে বাংলাদেশকে আর চলতে দেবো না।
শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে মৌলভীবাজারের বেরিরপাড়ে জুলাই পথযাত্রা কর্মসূচির শেষে পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, অভ্যুত্থানের পরে নানা শক্তি দেশকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করতে চাই।
তিনি বলেন, পুলিশ হত্যাকে সামনে তুলে ধরে এর দায় অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতাকে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা ৩ আগস্ট এক দফায় স্পষ্ট করেছি, আমাদের লড়াই শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে। আমাদের যে দমন-পীড়ন করা হয়েছে, আমরা বাধ্য হয়েছিলাম প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। আমাদের লড়াই ছিল ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও ফ্যাসিস্ট বাহিনীর বিরুদ্ধে।
পড়ুন: নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়: ফখরুল
‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অনেক দাবি ছিল। কিন্তু আমাদের সব দাবিকে নির্বাচনের দাবিতে রূপান্তর করে ফেলা হয়েছে। আমরা বলেছি, আমরা নির্বাচন চাই, আমরা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, ভোটাধিকারের পক্ষে লড়াই করা শক্তি,’ বলেন নাহিদ।
সংবিধান প্রসঙ্গে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আমরা বলেছি, আমাদের নতুন সংবিধান প্রয়োজন—যেই সংবিধানে বাংলাদেশের মানুষের অধিকারের কথা লেখা থাকবে, সব ঐতিহাসিক লড়াইয়ের স্বীকৃতি থাকবে, সকল জাতি-ধর্ম-বর্ণের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হবে।
এর আগে শহরের শহীদ মিনার থেকে এনসিপির জুলাই পদযাত্রাটি বের হয়। শহরের কোর্ট রোড ও শাহ মোস্তফা সড়কে পথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সর্বস্তরের মানুষ যোগদান করেন।
মৌলভীবাজার জেলার প্রধান সমন্বয়কারী ফাহাদ আলমের সভাপতিত্বে পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার, জাতীয় যুব শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক মারুফ আল হামিদ, জাকারিয়া ইমন প্রমুখ।
১৫৫ দিন আগে
সিলেটের জুলাই শহিদ পরিবারের সঙ্গে এনসিপি প্রধানের সাক্ষাৎ
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে সিলেটের ১৬ শহিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে সিলেট মহানগরের একটি অভিজাত হোটেলের হলরুমে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় শহিদদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এনসিপি আহ্বায়ক তাদের গভীর সমবেদনা জানান এবং শহিদদের বিচার ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এনসিপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদের তত্ত্বাবধানে এবং জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের নিয়ে কাজ করা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা নুরুল ইসলাম ও আলী আব্বাস শাহীনের সহযোগিতায় আয়োজিত এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে আসা শহিদদের স্বজনরা তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। এর মধ্যে একটি শহিদ পরিবারে বেকারত্বের হার বেশি এবং একটি পরিবার এখনো সরকারি সঞ্চয়পত্র পাননি বলে জানায়।
এছাড়া গোলাপগঞ্জের ৭ শহিদ পরিবারের দাবি, এই ৭ বীরের নামে স্থানীয় পৌরশহর এলাকায় একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত ওই ৭টি পরিবার সরকারিভাবে কোনো সুযোগ-সুবিধা পায়নি বলেও অভিযোগ করে।
আরও পড়ুন: জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র নিশ্চিত করা হবে: নাহিদ
সব অভিযোগ ও দাবির জবাবে নাহিদ ইসলাম আশ্বাস দেন, এসব বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হবে এবং এনসিপির পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
সাক্ষাতে এনসিপি সিলেট জেলা ও মহানগরের শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে দলের পক্ষ থেকে শহিদ পরিবারের সদস্যদের জন্য আপ্যায়নের আয়োজন করেন সিলেট জেলার প্রধান সমন্বয়ক নাজিম উদ্দিন শাহান।
১৫৫ দিন আগে
নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত না করে এবং একটি সঠিক গণতান্ত্রিক কাঠামো জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা না করে কোনও প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) এক আলোচনাসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি তাদের সমালোচনা করেন যারা মনে করেন, সংস্কার রাতারাতি বা কয়েকটি বৈঠকের মধ্য দিয়েই হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘সংস্কার একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করতে হয়। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।’
বিএনপি নেতা বলেন, যদি সরকার মনে করে যে, তারা চাইলেই কাল থেকে পুলিশ ঘুষ নেওয়া বন্ধ করে দেবে, তাহলে সেটা হবে না। ‘আপনাকে এমন একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে যেখানে ঘুষ নেওয়াকে নিরুৎসাহিত করা হয়।’
জিয়া পরিষদ এই আলোচনাসভার আয়োজন করে, যার শিরোনাম ছিল ‘জুলাই অভ্যুত্থান: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’। এটি গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়।
ফখরুল দেশের উন্নয়নে বাধা হিসেবে বিদ্যমান আমলাতন্ত্রকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের আমলাতন্ত্র উন্নয়নের একটি বড় বাধা। এটি একটি নেতিবাচক আমলাতন্ত্র এবং এটিকে একটি ইতিবাচক কাঠামোয় রূপান্তর করতে হবে। তা করতে হলে মূলত জনগণকে এই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত জনগণের কাছে ফিরে যাওয়া, তাদের চাহিদা বোঝা এবং সেই চাহিদাকে রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রতিফলিত করা।
আরও পড়ুন: পাইলট তৌকিরের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানালেন ফখরুল
নির্বাচন চাওয়ার কারণে বিএনপিকে ঘিরে চলমান সমালোচনার প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলা শুরু করতেই বলা হলো, বিএনপি শুধু নির্বাচন চায়। কিন্তু কেউ কি ভেবে দেখেছে, আমরা কেন নির্বাচন চাই?’
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, নির্বাচন ছাড়া প্রকৃত জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা যায় না। ‘আর যদি প্রতিনিধি না থাকে, তাহলে তারা কীভাবে সংসদে যাবে? আর যদি নির্বাচিত সংসদ না থাকে, তাহলে কীভাবে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে?’
ফখরুল বলেন, ‘আপনি দেশ চালাতে বাড়ি ও বিদেশ থেকে কয়েকজন লোক ভাড়া করে আনতে পারেন না। এটি সম্ভব নয়।’
১৫৬ দিন আগে
ভোটারদের আস্থা ফেরানো ও নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ: সিইসি
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং তাদের ভোটকেন্দ্রে ফিরিয়ে আনা বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। বিশেষ করে নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাকেই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে নির্বাচন কমিশন।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন করার চ্যালেঞ্জ তো বহুবিধ। নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে দেখা দিচ্ছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, মানুষের আস্থা ফেরানো। নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে, নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা জরুরি।’
‘দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করা। ভোট দিতে না পেরে মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তাই নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা চাই, সবাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে আসুক। বিশেষ করে নারী ভোটারদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমরা বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছি।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার হচ্ছে উল্লেখ করে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনের আগে যথাসম্ভব সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে প্রযুক্তির অপব্যবহার। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্রিস্টাইলে যাচাই-বাছাই না করে ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।’
‘এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) পদ্ধতি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে হুবহু নকল করা হচ্ছে একজনের বক্তব্য। এজন্য দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। আধুনিক যুগে এটি অস্ত্রের চেয়েও ভয়াবহ। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এটি একটি বড় সমস্যা।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে সন্ত্রাস দমন এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলবে। আমরা চাই স্বচ্ছ নির্বাচন। রাতের আঁধারে কোনো কার্যক্রম নয়, দিনের আলোতেই সব কিছু করতে চাই যাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যায়। আমরা জাতিকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই।’
সব অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য মিডিয়াকর্মীদের সার্বিক সহযোগিতা চেয়ে সিইসি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা ওয়াদাবদ্ধ। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে। একটি নির্বাচনে বহুবিধ চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং ভোটারদের ফিরিয়ে আনার জন্যই আমরা কাজ করছি।’
মতবিনিময় সভায় খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
১৫৬ দিন আগে
পাইলট তৌকিরের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানালেন ফখরুল
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষে দেখা করে সমবেদনা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) ফখরুল বিকাল ৪টার দিকে ঢাকা সেনানিবাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অফিসার্স মেসে গিয়ে তৌকিরের স্ত্রী আকসা হোসেন নিঝুমের সঙ্গে দেখা করেন। এসময় তার বাবা ও মাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম, মা সালেহা খাতুন, স্ত্রী নিঝুম এবং অন্যান্য আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলেন।
এসময় ফখরুল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এই কঠিন সময়ে পরিবারের প্রতি দলের পূর্ণ সমর্থন এবং সংহতির আশ্বাসও দেন তিনি।
ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন বিমান ও সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা হলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল (অবসরপ্রাপ্ত) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল (অবসরপ্রাপ্ত) ফখরুল আজম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ফজলে এলাহী আকবর, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) একেএম শামসুল ইসলাম শামস এবং কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) শামসুজ্জামান খান।
পড়ুন: বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছিলেন স্বৈরাচার হাসিনা: রিজভী
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও এই সফরে উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার(২১ জুলাই) উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে একজন দক্ষ পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম প্রাণ হারান। পরে তাকে রাজশাহীর নিজ গ্রাম সপুরায় দাফন করা হয়।
সাগর নামেও পরিচিত তৌকির রাজশাহী ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। পরে তিনি পাবনা ক্যাডেট কলেজে পড়াশোনা করেন এবং ২০১৭ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন।
মাত্র এক বছর আগে তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক নিঝুমকে বিয়ে করেছিলেন।
বিএনপি নেতারা পৃথকভাবে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এর আগে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের সোহাগপুর গ্রামে স্কুল শিক্ষিকা মাসুকা বেগম নিপুর কবর জিয়ারত করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে গিয়ে তিনি মারা যান।
অ্যানি তার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং সেখানে ফাতেহা পাঠ করে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
বিএনপি নেতৃত্বের পক্ষ থেকে সমবেদনা জানাতে তিনি মাসুকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও দেখা করেন।
এদিকে, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বুগুলাগাড়ি গ্রামে শিক্ষিকা মেহেরিন চৌধুরীর কবর জিয়ারত করেন।
শ্রেণিকক্ষে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে গিয়ে মেহেরিন মারা যান। আফরোজা খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
পড়ুন: উত্তরায় যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় নিহত ৫ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ, সমবেদনা জানালেন ফখরুল
নীলফামারী এবং লালমনিরহাটের মহিলা দলের নেতারাও পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর একই বিমান দুর্ঘটনায় নিহত তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত জাহান আনিকার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন।
তিনি রাজধানীর দিয়াবাড়ী এলাকায় নুসরাতের বাড়িতে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, এ জেড জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু এবং যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও দুর্ঘটনায় নিহতদের বাড়িতে গিয়ে দলের এবং দলের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে সমবেদনা জানিয়েছেন।
১৫৬ দিন আগে
জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র নিশ্চিত করা হবে: নাহিদ
বিচার, সংস্কার ও নতুন বাংলাদেশ গঠনে ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সবাইকে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র নিশ্চিত করা হবে।
তিনি বলেন, আগামীর নতুন বাংলাদেশে সিলেট এনসিপির অন্যতম দুর্গ হবে। সিলেটবাসী আজ তা দেখিয়ে দিয়েছেন।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকালে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এনসিপির জুলাই পদযাত্রা শেষে পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, যুগযুগ ধরে সিলেট বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এবং বাংলাদশের স্বাধীনতার পক্ষে সিলেট বুক চিতিয়ে লড়াই করেছে। জনগণের মুক্তির লড়াইয়ে সিলেট ছিল অগ্রগামী। ৪৭ সালে সিলেটবাসী পূর্ববঙ্গের সঙ্গে থাকার রায় দিয়েছিলেন। কিন্তু সিলেটবাসীকে সেই ব্রিটিশ থেকে শুরু করে পাকিস্তান এবং আওয়ামী লীগ আমলেও ঠকানো হয়েছিল। গ্যাস, বালু পাথরসহ সিলেটের খনিজ সম্পদ থেকে সিলেটবাসীকেই বঞ্চিত করা হয়েছে।
তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সিলেটবাসীর মূল্যবান অবদানের কথা স্বীকার করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, সাংবাদিক এটিএম তুরাবসহ এই সিলেট জেলার ১৭ জন মানুষ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন। আমরা সেইসব শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে এসেছি এই সিলেটে।
পড়ুন: মাইলস্টোনের ঘটনাকে পুঁজি করে আ. লীগ পুনর্গঠিত হচ্ছে: হাসনাত আব্দুল্লাহ
তিনি বলেন, লন্ডনে বাঙ্গালিদের অধিকাংশই হচ্ছেন সিলেটী। আপনারা যেমন লন্ডনকে জয় করেছেন তেমনি জয় করেছেন এই সিলেটকে। আমাদের প্রবাসী ভাইদের ঘামে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরে। আমরা তাদের ভোটাধিকারের জন্য কথা বলছি। আমরা বিশ্বাস করি প্রবাসীরা বাংলাদেশের নীতি নির্ধারণের অংশী হবেন।
বিচার, সংস্কার ও নতুন বাংলাদেশ গঠনে ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সবাইকে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বলেন, সেখান থেকে জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র নিশ্চিত করা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, 'এনসিপি বিএনপিবিরোধী বলে যে প্রচার করা হচ্ছে —তা ঠিক নয়। তবে বাংলাদেশে চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট চলতে দেওয়া হবে না।'
তিনি বলেন, 'সিলেটের চা বাগানের শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের ঠিকমতো মজুরি দেওয়া হয় না। চা বাগানের লাভ শুধু মালিক নয়, শ্রমিকদের দেওয়ার ব্যবস্থা করবে এনসিপি।'
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, 'আমাদের দেশ কখনো প্রশাসনের, কখনো ব্যবসায়ীর, আবার কখনো সেনাবাহিনীর হয়েছে, জনতার হয়নি। আমরা জনতার বাংলাদেশ গঠন করতে চাই।'
আওয়ামী লীগের সুবিধা নিয়ে যারা লেখক হয়েছেন, যারা আওয়ামী লীগ আমলে মিডিয়া খুলেছে—তাদের দিকে বিশেষভাবে নজর রাখতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, 'এনসিপি কোনো চাঁদাবাজ দল নয়। আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টার ক্লোজ করে এনসিপি ওঠে এসেছে।'
এর আগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকাল ৫টায় সিলেট নগরীর চৌহাট্টা থেকে পদযাত্রা শুরু করে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গরমের কারণে নির্ধারিত পদযাত্রার পথ কিছুটা সংক্ষিপ্ত করে পুনরায় চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে তারা পথসভায় মিলিত হন।
উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সঞ্চালনায় পথসভায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর, যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়, যুগ্ম আহ্বায়ক এহতেশামুল হক, যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন, কেন্দ্রিয় সমন্বয়ক গোলাম মর্তুজা সেলিমসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
১৫৬ দিন আগে
ভোটকেন্দ্রে ১০ মিনিটের বেশি থাকতে পারবেন না সাংবাদিকরা, লাইভ সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা
ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের অবস্থান ও লাইভ সম্প্রচারের বিষয়ে নতুন নীতিমালা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী সাংবাদিকরা ভোটকেন্দ্রের বুথে ১০ মিনিটের বেশি অবস্থান করতে পারবেন না। একই সঙ্গে বুথের ভেতর বা সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ সম্প্রচার করাও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত সপ্তাহে প্রকাশিত ‘নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংবাদিক বা গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য নীতিমালা ২০২৫’ অনুযায়ী, ইসির ইস্যুকৃত বৈধ পরিচয়পত্র থাকলে সাংবাদিকরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে কেন্দ্রে ঢুকে সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসারকে জানিয়ে তবেই খবর সংগ্রহ, ছবি তোলা বা ভিডিও ধারণ করতে হবে।
নীতিমালায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, গোপন বুথে ছবি বা ভিডিও তোলা নিষিদ্ধ। বুথে একসঙ্গে দুইটির বেশি গণমাধ্যমের সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারবেন না এবং কেউ ১০ মিনিটের বেশি অবস্থান করতে পারবেন না। বুথের ভেতর কোনো ভোটার, এজেন্ট বা কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার নেওয়া যাবে না।
লাইভ সম্প্রচার সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বুথের বাইরে নিরাপদ দূরত্বে থেকে লাইভ করা যাবে, তবে তা যেন ভোট গ্রহণ কার্যক্রমে বিঘ্ন না ঘটায়। ভোট গণনার ঘরে সাংবাদিকরা ঢুকে পর্যবেক্ষণ ও ছবি তুলতে পারবেন, তবে লাইভ সম্প্রচার করতে পারবেন না।
পড়ুন: আমি নিজেই এখনো নির্বাচনের তারিখ জানি না: সিইসি
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে— বুথে কোনো নির্বাচনী উপকরণ স্পর্শ বা সরানো যাবে না, কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে প্রচারমূলক বা উসকানিমূলক কিছু করা যাবে না, প্রিজাইডিং অফিসারের আইনগত নির্দেশনা মেনে চলতে হবে, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি হয়—এমন কোনো কাজও করা যাবে না।
যদি কেউ এই নির্দেশনা লঙ্ঘন করেন—তাহলে তাদের গণমাধ্যম পাস বাতিল করা হতে পারে এবং নির্বাচনী আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২০২৩ সালের নীতিমালার মতো এবারো ‘আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও ‘স্থানীয় সংবাদ সংস্থার নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। এই নীতিমালা জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন—দুই ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।
নীতিমালা আরও বলা হয়েছে, ‘একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশ ও নির্বাচনী এলাকা থেকে সংবাদ সংগ্রহের সুযোগ দিতে এই নীতিমালা জারি করা হয়েছে।’
১৫৬ দিন আগে