রাজনীতি
দেশে নতুন করে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম দেখা যাচ্ছে: নাহিদ ইসলাম
জুলাই গণঅভ্যুত্থান চাঁদাবাজ ও লগি-বৈঠার বিরুদ্ধে ছিল উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দেশে আবার নতুন করে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম দেখা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা যখন খুলনায় পদযাত্রা নিয়ে আসছি, তখন রাজধানী ঢাকায় চাঁদার দাবিতে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। এমন প্রত্যাশা নিয়ে জুলাই আন্দোলন হয়নি। সুতরাং জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল নতুন বাংলাদেশ গড়ার একটি স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে খুলনা মহানগরীর শিববাড়ি মোড়ে পথসভায় বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, খুলনায় মিল-কল-কারখানা বন্ধ করে আওয়ামী লীগ খুলনা শিল্প নগরীর ঐতিহ্য ধ্বংস করেছিল। সুন্দরবন ধ্বংসের জন্য রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করেছিল। এসবের বিরুদ্ধে আবারও সোচ্চার হতে হবে। শিল্প গড়তে হবে, সুন্দরবন রক্ষা করতে হবে।
পড়ুন: হাসিনা অধ্যায় শেষ, আ. লীগ কখনো ফিরবে না: হাসনাত আব্দুল্লাহ
নাহিদ ইসলাম বলেন, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে আবারো প্রস্তুতি নিতে হবে আন্দোলনের। তিনি আগামী ৩ আগষ্ট ঢাকায় জুলাই ঘোষণাপত্র অনুষ্ঠানে যোগ দিতে খুলনাবাসীর প্রতি আহবান জানান তিনি।
যশোর থেকে সড়ক পথে পদযাত্রা সহকারে নাহিদ ইসলামসহ এনসিপি নেতারা সন্ধ্যায় খুলনায় পৌঁছান। মাগরিবের পর শুরু হওয়া এ পথসভা শেষ হয় রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে। এসময় এনসিপি নেতারা বক্তব্য দেন। মঞ্চে ছিলেন, জুলাই শহীদদের পরিবারের সদস্যরা। পথসভা হলেও মূলত: সেটি একটি সমাবেশে রূপ নেয়।
‘খুলনার মাটিতে পরিবর্তনের ডাক - জুলাই পদযাত্রায় জাতীয় নাগরিক পার্টি’ এবং ‘পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির জুলাই পদযাত্রা’ শ্লোগানে অনুষ্ঠিত পদযাত্রার এ পথসভায় বক্তব্য দেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, এনসিপি নেতা নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সংগঠক হাসানাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম, নুসরাত তাবাসসুমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
বক্তারা আগামী নির্বাচনে খুলনার ছয়টি আসনেই জাতীয় নাগরিক পার্টির(এনসিপি) পক্ষ থেকে প্রার্থী দেওয়া হবে—এমন ঘোষণা দিয়ে বলেন, নির্বাচনে এনসিপির প্রার্থীদের বিজয়ী করে নতুন বাংলাদেশ গড়া হবে ইনশাআল্লাহ।
বক্তারা বলেন, মুজিববাদী সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান গড়তে গবে। কেননা মুজিববাদী সংবিধান রাতের ভোট বন্ধ করতে পারে না, বাকশাল রোধ করতে পারে না। সুতরাং ৫ আগষ্টের আগেই জুলাই ঘোষণাপত্র দাবি করেন বক্তারা।
এনসিসিপি নেতারা আরও বলেন, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে খুলনাবাসী অতীতেও সোচ্চার ছিল, এখনও আছে ভবিষ্যতেও থাকবে।
এর আগে সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে পদযাত্রা সহকারে এনসিপি নেতারা খুলনার শিববাড়ি মোড়ের হোটেল টাইগার গার্ডেনে পৌঁছান। সেখান থেকে মাগরিব বাদ পথসভামঞ্চে পৌঁছালে জাতীয় পতাকা এবং ফুল দিয়ে তাদেরকে স্বাগত জানানো হয়। শিববাড়ির পথসভা রূপ নেয় সমাবেশে। পরে নেতারা শিল্পাঞ্চল খালিশপুরের পিপলস গোল চত্বরে যান এবং সেখানে অপর একটি সমাবেশে যোগ দেন।
পড়ুন: রাজনৈতিক দলগুলো গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: নাহিদ
১৭০ দিন আগে
আমরা জুলাই শহীদদের ভুলতে দেবো না: ড. মাহমুদুর রহমান
জুলাই শহীদদের দেশের সম্পদ উল্লেখ করে আমারদেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, আমরা জুলাই শহীদদের ভুলতে দেবো না। তাদের বীরত্বের কাহিনী প্রচার করব।
তিনি বলেন, ‘খুনি শেখ হাসিনা নিজেই গণহত্যার নির্দেশদাতা। আমি আশা করব, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত তার বিচারের কাজ সম্পন্ন করবে।’
ভারত সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, খুনি শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছেন, অনতিবিলম্বে তাকে বাংলাদেশে পাঠান।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জুলাই বিপ্লব-২৪’র শহীদ পরিবারের সদস্য, পঙ্গুত্ববরণকারী ও আহতদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী উত্তর এই মতিবিনিময় সভার আয়োজন করে।
পড়ুন: হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করলেন মাহমুদুর রহমান
দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, শহীদদেরকে নিয়ে দলীয়করণ করবেন না, তারা আমাদের সম্পদ। জুলাই যোদ্ধাদের নিয়ে এমন আয়োজনের জন্য জামায়াতকে ধন্যবাদও জানান তিনি।
ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, জুলাই শহীদেরা রক্ত দিয়ে মুক্ত পরিবেশ তৈরি করেছে বলে আমি বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছি, মায়ের জানাজায় অংশ গ্রহণ করতে পেরেছি। আমারদেশ পত্রিকা শহীদদের নিয়ে নিয়মিত ধারাবাহিক নিউজ করছে। আমরা জুলাই শহীদদের ভুলতে দিবো না। তাদের বীরত্বের কাহিনী প্রচার করব।
তিনি ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের দোসর ও শেখ হাসিনার মতো ফ্যাসিবাদ যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান।
এতে ঢাকা মহানগরী উত্তর এলাকার শহীদ পরিবারের সদস্য, পঙ্গুত্ববরণকারী ও আহত পাঁচ শতাধিক জুলাই যোদ্ধা মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন ও বেশ কয়েকজন বক্তব্য দেন।
পড়ুন: চলতি মাসেই ‘জুলাই সনদ’ সম্ভব: আলী রীয়াজ
সভাপতির বক্তব্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল চব্বিশ নিয়ে টিপ্পনী কাটে, যা দু:খজনক। আপনাদের আস্ফালন জুলাই যোদ্ধাদের সামনে টিকবে না। অবিলম্বে ৫ আগস্টের মধ্যে সকল জুলাই শহীদ পরিবারকে পুনর্বাসন করা, তাদের সুরক্ষা আইন, আহতদের প্রয়োজনে বিদেশে চিকিৎসা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।
দলটির কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা, মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিমুদ্দিন মোল্লা, ডা.ফখরুদ্দিন মানিক, ইয়াসিন আরাফাত প্রমুখ।
১৭০ দিন আগে
‘জুলাই সনদকে’ সংবিধানের মূল নীতির স্বীকৃতি দেওয়ার পদক্ষেপের নিন্দা রিজভীর
সংবিধানের মূল নীতি হিসেবে জুলাই সনদ অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বানকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ইতোমধ্যে জুলাই সনদের অনেক বিষয় মেনে নিয়েছে। কিন্তু কেন এটিকে সংবিধানের মৌলিক নীতির অংশ করা হবে?’
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও আব্দুল কুদ্দুসের সুস্থতা কামনা করে জিয়া পরিষদ আয়োজিত নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নামাজের জায়নামাজ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এই মন্তব্য করেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সংস্কার সারা দেশে এবং সব সময় অব্যাহত থাকবে। ‘সংস্কার কোনো পর্বতমালার মতো স্থির কিছু নয়। এটি একটি গতিশীল প্রক্রিয়া।’
তিনি বলেন, গণতন্ত্র, রাষ্ট্র বা জনগণের স্বার্থে যখন প্রয়োজন হয়, তখন সংস্কার করা উচিত এবং উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করা উচিত।
রিজভী বলেন, ‘এটাই একটি গণতান্ত্রিক সংবিধানের বৈশিষ্ট্য। কিন্তু সংস্কার আগে করতে হবে এবং এটি (জুলাই সনদ) সংবিধানের মৌলিক নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, এই দাবি বিভ্রান্তিকর। এটি মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। কেন আপনারা এভাবে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন?’
বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার পরিবর্তে জনগণের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দিকে মনোনিবেশ করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান রিজভী।
পড়ুন: শিল্পী ফরিদা পারভীনের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান খালেদার
তিনি বলেন, স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনা ১৬ বছর ধরে গণতন্ত্রের দরজা বন্ধ করে জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছেন। ‘আমাদের এখন সেই বন্ধ দরজাটি আবার খুলতে হবে এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে সরকার গঠন করে জনগণের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, তাদের দল কখনও সংস্কারের বিরুদ্ধে কথা বলেনি এবং বাস্তবে সর্বদা এটিকে সমর্থন করেছে। ‘আপনি সংস্কারের নামে যে বিষয়গুলোর কথা বলছেন, তার অনেকগুলো ইতোমধ্যেই বিএনপির ৩১-দফা সংস্কার রূপরেখায় প্রতিফলিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে একটি বৃহত্তর আদর্শের জন্য লড়াই করে আসছে - ন্যায়বিচার, সাম্য, আইনের শাসন এবং প্রকৃত গণতন্ত্র। ‘এই লড়াই রাষ্ট্রের উপর জনগণের মালিকানা পুনরুদ্ধারের জন্য। যখন সেই মালিকানা অস্বীকার করা হয়, তখন এটি ফ্যাসিবাদের পথ খুলে দেয়।’
রিজভী উল্লেখ করেন, জনগণের সরকারকে প্রতিটি পদক্ষেপে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। ‘সেই জবাবদিহিতা এখন নেই। আমরা বিশ্বাস করি যে অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সমর্থন এবং সকল রাজনৈতিক দলের সমর্থন নিয়ে গঠিত হয়েছে— আওয়ামী লীগ ও তার কয়েকটি মিত্র ছাড়া।’
রিজভী বলেন, ‘আমরা সকলেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে সমর্থন করে চলেছি। কিন্তু এটাও সত্য যে আমরা যদি দুর্ভিক্ষের লক্ষণ দেখতে এবং শুনতে শুরু করি—তাহলে জনগণ আমাদেরও ছাড় দেবে না।’
অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, যার ফলে মানুষ বেকার হয়ে পড়ছেন। ‘মানুষ যদি খাবার কিনে খেতে না পারে, তাহলে এটি দুর্ভিক্ষের স্পষ্ট লক্ষণ। যদি এই ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়—তাহলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না— তখন পতিত ফ্যাসিস্টরা আনন্দে হাততালি দেবে।
পড়ুন: জামায়াতের সঙ্গে জোটের সুযোগ নেই, তবে এনসিপির জন্য আলোচনার দরজা খোলা: সালাহউদ্দিন
বিএনপি নেতা বলেন, সরকার চাইলে, আওয়ামী লীগের যেসব সহযোগী দেশ ছেড়ে বিপুল অর্থ পাচার করে পালিয়ে গেছেন, তাদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য প্রশাসক নিয়োগ করতে পারে এবং কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়া বন্ধ করতে পারে।
‘অর্থনীতির ভয়াবহ অবস্থার কারণে কারখানা বন্ধ করা উচিত নয়। এটি কেবল একটি বক্তব্যই নয় - মানুষ এখন গুরুত্ব সহকারে ভাবছে যে, সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরের মধ্যে দেশ দুর্ভিক্ষে পতিত হয় কিনা,’ সতর্ক করেন রিজভী।
১৭০ দিন আগে
শিল্পী ফরিদা পারভীনের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান খালেদার
লোকসংগীতশিল্পী ও লালন সঙ্গীতের প্রতীক ফরিদা পারভীনের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
তিনি রাজধানীর আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফরিদা পারভীনের স্বাস্থ্যের বিষয়েও খোঁজখবর নেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
তিনি বলেন, বিএনপি প্রধান বুধবার(৯ জুলাই) রাতে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সকে প্রবীণ শিল্পীর স্বাস্থ্যের খবর জানতে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন।
শায়রুল বলেন, ‘তিনি (খালেদা) সরকারের কাছে এই গুণী গায়িকার জরুরি ভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়েছেন।’
তিনি বলেন, বিএনপি প্রধান অসুস্থ ও প্রখ্যাত গায়িকা ফরিদা পারভীনের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।
পড়ুন: শিল্পী ফরিদা পারভীনের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতে ড. ইউনূসের হস্তক্ষেপ কামনা ফখরুলের
লালন সঙ্গীত এবং বাংলাদেশের লোকসংগীতের প্রতি তার আজীবন নিবেদিত থাকার জন্য ফরিদা পারভীন সর্বজনীনভাবে প্রশংসিত।
৭০ বছর বয়সী এই প্রখ্যাত গায়িকা ৫ জুলাই থেকে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।
ফরিদা পারভীন দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন।
১৭০ দিন আগে
জামায়াতের সঙ্গে জোটের সুযোগ নেই, তবে এনসিপির জন্য আলোচনার দরজা খোলা: সালাহউদ্দিন
দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনি জোট গঠনের সম্ভাবনা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচন ঘিরে যে দাবিদাওয়া তুলছে, তা তাদের বৃহত্তর কৌশলের অংশ। পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেই আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনাকে দ্রুত শেষ করার তাগিদ দিয়ে তিনি সতর্ক করেছেন যে, অপ্রয়োজনীয় দীর্ঘসূত্রতা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘জামায়াত ইসলামীকে নিয়ে নির্বাচনি জোটের কোনো সম্ভাবনা আমি দেখছি না। অতীতে কৌশলগত কারণে আমরা জামায়াতের সঙ্গে জোট করেছি, কিন্তু এবার তাদের সঙ্গে জোট গঠনের প্রয়োজন অনুভব করছি না।’
তিনি জানান, বিএনপি এখন মূলত সেই দলগুলোর সঙ্গে জোট ও জাতীয় সরকার গঠনে মনোযোগী, যারা একযোগে আন্দোলনে এবং গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশ নিয়েছে। তার কথায়, ‘এখন এর বাইরে কিছু ভাবা হচ্ছে না।’
এনসিপির সঙ্গে সম্ভাব্য জোট গঠন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত রাজনৈতিক জোট নিয়ে আলোচনা চলবে। কী হয় তা সময়ই বলে দেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সব গণতান্ত্রিক দলই নির্বাচনের আগে নানা কৌশল গ্রহণ করবে। বিএনপি শেষ পর্যন্ত কী কৌশল অবলম্বন করে এবং কার সঙ্গে জোট করে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ আলোচনার প্রতি অসন্তোষ জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমার মনে হয়, এই আলোচনা অপ্রয়োজনীয়ভাবে দীর্ঘায়িত হচ্ছে। যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যেই আলোচনা শেষ হওয়া উচিত ছিল।’
‘ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক পরিচালনায় কিছু ঘাটতি রয়েছে, যা পুরো প্রক্রিয়াকে সময়সাপেক্ষ করে তুলছে। আশা করি, এই আলোচনা আর বেশি দিন চলবে না। এখন একটা সারসংক্ষেপ ও সিদ্ধান্তে পৌঁছানো দরকার।’
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কার্যত পুনর্প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন কেবল সুপ্রিম কোর্টের রিভিউ রায়ের অপেক্ষা। আমরা আশা করি, আপিল বিভাগ রিভিউ আবেদনে ইতিবাচক রায় দেবে।
বাংলাদেশের জনগণ নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন চায় জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এই কাঠামোর রূপ কিংবা সাবেক প্রধান বিচারপতিকেই প্রধান উপদেষ্টা রাখার বিষয়টি নিয়ে এখনো বিতর্ক রয়েছে। এই বিষয়ে বিকল্প নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। বিএনপিসহ অন্যান্য দল এবং সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাব দেবে। যদি আরও ভালো কোনো বিকল্পে একমত না হওয়া যায়, তবে বর্তমান কাঠামোই বহাল থাকবে।’
আসন্ন নির্বাচনে অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাবের বিরোধিতা করে এই রাজনীতিক বলেন, বাংলাদেশে এই ব্যবস্থার জন্য উপযোগী রাজনৈতিক, সামাজিক ও নির্বাচন সংস্কৃতি নেই।
বিষয়টির তিনি ব্যাখ্যা করেন এভাবে, ‘পিআর ব্যবস্থায় ভোটাররা সরাসরি তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন, ভোটদানে নিরুৎসাহিত হন এবং সংসদে স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’
‘আমাদের ভোটাররা তাদের পরিচিত ও স্থানীয় প্রার্থীকে ভোট দিতে পছন্দ করেন। কিন্তু পিআর ব্যবস্থায় এমনও হতে পারে যে, একটি এলাকায় কোনো দল বেশি ভোট পেলেও অন্য এলাকার কাউকে নির্বাচিত করা হয়। এটি জনগণের রায়কে প্রতিফলিত করে না, বরং গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দেয়।’
‘যেসব দেশে পিআর ব্যবস্থা কার্যকর, সেখানে স্থানীয় সরকারগুলোও শক্তিশালী। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। এখানে সংসদ সদস্যরা সরাসরি উন্নয়ন প্রকল্পে যুক্ত থাকেন। তাই এখানে পিআর কার্যকর হবে না।’
তার মতে, বাংলাদেশে এমন একটি রাজনৈতিক কাঠামো দরকার, যেখানে জনগণ সরাসরি প্রার্থীকে ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে। বাংলাদেশ পিআর ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুত নয়। এটি কখনো এখানে প্রয়োগ হয়নি; জনগণও এই পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত নয়।
এই নির্বাচন পদ্ধতির আরেকটি সমস্যা তুলে ধরে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘পিআর ব্যবস্থায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনের সুযোগ হারাবেন। কেউ যদি খুব জনপ্রিয়ও হন, কিন্তু কোনো দলে না থাকেন, তাহলে তিনি নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পাবেন না। এটি অন্যায় এবং অগণতান্ত্রিক।’
তার মতে, ছোট দলগুলো পিআর চায়, কারণ এতে তারা কম ভোট পেয়েও বেশি আসন পেতে পারে। কিন্তু এর ফলে দুর্বল জোট সরকার গঠিত হয় এবং দেশে শক্তিশালী নেতৃত্ব গড়ে ওঠে না।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় বিএনপির প্রতিনিধিত্ব করা এই নেতা বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন কোনো অবস্থাতেই বিএনপি মেনে নেবে না।’
‘কিছু দল বিভিন্ন দাবি করছে। কেউ সংস্কার চায়, কেউ বলছে বিচার ছাড়া নির্বাচন নয়, কেউ পিআর চায়। এসব বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বলা হচ্ছে। তবে আমরা আত্মবিশ্বাসী, সংবিধান অনুযায়ী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন হবে। কথা বলার অধিকার সবাই রাখে, তবে সেসব বক্তব্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতও হতে পারে।’
আরও পড়ুন: অধস্তন আদালত বিকেন্দ্রীকরণে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্মান করি এবং তাদের জন্য শুভকামনা রাখি। কিন্তু প্রকৃত রাজনৈতিক ওজন আসে জনসমর্থন থেকে। ছোট ছোট কিছু দল বড় বড় কথা বললেও তারা খুব অল্পসংখ্যক মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। রাজনীতিতে জনমতের মূল্য সবচেয়ে বেশি।’
বিএনপির জোটসঙ্গী দলগুলোর মধ্যেও মতপার্থক্য দেখা দিতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি আসলে দর কষাকষির কৌশলেরই অংশ হতে পারে, যেমন ধরুন আসন ভাগাভাগি।’
আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মতে, আওয়ামী লীগ আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়। তারা বহু আগেই তাদের আদর্শ ও চরিত্র হারিয়েছে। তারা এখন একটি অগণতান্ত্রিক, ফ্যাসিবাদী শক্তিতে, এক ধরনের মাফিয়া সংগঠনে পরিণত হয়েছে। ১৯৭৫ সালের আগ থেকে আজ পর্যন্ত তাদের ইতিহাসে কখনো গণতন্ত্র চর্চা হয়নি। গণতন্ত্র তাদের রক্তে নেই।’
আরও পড়ুন: জুলাই ঘোষণাপত্র প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন: সংবিধান কোনো ‘সাহিত্য’ নয়
১৭১ দিন আগে
আমরা আ.লীগের চ্যাপ্টার ক্লোজ করে দিয়েছি: হাসনাত আবদুল্লাহ
যশোরের বাঘারপাড়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সংক্ষিপ্ত পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাত ৮টার দিকে এনসিপি নেতারা বাঘারপাড়া উপজেলা সদরে পৌঁছান। উপজেলার চৌরাস্তা মোড়ে এ পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
গাড়ি বহরে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত থাকলেও মঞ্চে তাদের পক্ষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন দলটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাসনাত আবদুল্লাহ।
আরও পড়ুন: হাসিনা অধ্যায় শেষ, আ. লীগ কখনো ফিরবে না: হাসনাত আব্দুল্লাহ
শুক্রবার যশোরের সমাবেশে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এ সময় হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টার ক্লোজ করে দিয়েছি। আওয়ামী লীগ যশোরসহ সারা দেশে নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছে।’
উপজেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তা মোড়ে এ পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পাঁচ মিনিট অবস্থান শেষে গাড়ি বহরসহ যশোর শহরের উদ্দেশে রওনা দেন এনসিপি নেতারা।
আজ (শুক্রবার) দুপুরে যশোর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহের পাশে এনসিপির উদ্যোগে পথসভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
১৭১ দিন আগে
শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে অন্তর্বতী সরকারকে আহ্বান ফখরুলের
যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা বাংলাদেশি পণ্যের উপর সম্প্রতি ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের বিষয়ে দেশটির সঙ্গে আলোচনা করার জন্য সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পণ্যের উপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য হলো তৈরি পোশাক। যদি এই খাতটিতে এত বেশি শুল্কারোপ করা হয়, তাহলে এটি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়তে পারে এবং ঘুরে নাও দাঁড়াতে পারে। এতে আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে।’
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ছাত্র ও জনতার জুলাই অভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
ফখরুল বলেন, মার্কিন শুল্কারোপের বিষয়টি দেশ ও আমাদের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। ‘অন্তর্বর্তী সরকার এতে কতটা মনোযোগ দিয়েছে— তা আমি নিশ্চিত নই। তাদের আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত ছিল এবং সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের আমেরিকার সঙ্গে আলোচনার জন্য অন্তর্ভুক্ত করা উচিত ছিল।’
পড়ুন: অধ্যাপক ইউনূসের নির্দেশে দ্রুত নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে ইসি, আশা ফখরুলের
তিনি মনে করেন, সময় এখনও ফুরিয়ে যায়নি। শিল্প রক্ষা, বিশেষ করে নারীদের চাকরির সুরক্ষা এবং অর্থনীতির আরও ক্ষতি রোধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির এই নেতা।
বিএনপি মহাসচিব সীমান্ত হত্যা এবং পুশ-ইনের ঘটনাগুলোর বিষয়টিও তুলে ধরেন। সাংবাদিক এবং গণমাধ্যমকে এই বিষয়গুলোকে আরও গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা সীমান্ত হত্যা এবং পুশ-ইনের বিষয়গুলোকে যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি না। সংবাদপত্রে ছোট ছোট অংশে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। আমি সকল সাংবাদিক এবং গণমাধ্যম পেশাদারদের অনুরোধ করছি, তারা যেন এই বিষয়গুলোকে তাদের প্রাপ্য গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করুন। এগুলো কোনো ছোটখাটো বিষয় নয়। সীমান্তের বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিতই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে।’
ফখরুল অন্তর্বর্তী সরকারকে ভারতের সঙ্গে এই বিষয়গুলো জোরালোভাবে উত্থাপন করারও আহ্বান জানিয়েছেন। ‘ভারতের সঙ্গে যথাযথ কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এই বিষয়গুলো আলোচনার একটি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে আসা উচিত,’ বলেন তিনি।
ফেনীতে সাম্প্রতিক বন্যার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতের সঙ্গে অভিন্ন নদীগুলোর ন্যায্য পানি বণ্টনের অমীমাংসিত বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি।
ফখরুল বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে পানি বণ্টনের বিষয়টি মীমাংসা হয়নি। ফেনীতে ইতোমধ্যেই বন্যা শুরু হয়ে গেছে। বর্ষা অব্যাহত থাকায় আরও বন্যা হতে পারে। পানির সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই জোরালোভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।’
তিনি গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার জন্য জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিয়ে বলেন, সহনশীলতা এবং অনুশীলন ছাড়া প্রকৃত গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা প্রয়োজন। কিন্তু সেই ঐক্য কোথায় থাকা উচিত? আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় এটি থাকা উচিত। আমি আপনার সঙ্গে একমত নাও হতে পারি, তবে আপনার মতামত প্রকাশের অধিকার রক্ষার জন্য আমি আমার জীবন উৎসর্গ করব—জাতীয় ঐক্যের অর্থ এটাই।’
তিনি বলেন, গণতন্ত্র অর্জনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন মতামতের প্রতি সহনশীলতা অপরিহার্য। ‘দুঃখের বিষয়, বাংলাদেশে আমরা কখনও সেই চেতনায় গণতন্ত্র অনুশীলন করিনি। গণতন্ত্র একটি সংস্কৃতি এবং এটি অনুশীলন না করে আমরা কীভাবে এটি অর্জনের আশা করতে পারি?’ সেই প্রশ্নও রাখেন তিনি।
পড়ুন: বাংলাদেশে গণতন্ত্র খুব একটা চর্চা হয়নি: মির্জা ফখরুল
তিনি তরুণদের সত্যিকারের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নিজেদের প্রস্তুত করার আহ্বান জানান। বলেন, ‘আমরা বারবার লড়াই করেছি। এখন, একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক জাতি গঠনে সফল হওয়ার জন্য আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত থাকতে হবে।’
১৭১ দিন আগে
অধ্যাপক ইউনূসের নির্দেশে দ্রুত নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে ইসি, আশা ফখরুলের
জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে নতুন নির্দেশনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আশা প্রকাশ করেছেন যে, নির্বাচন কমিশন দ্রুত তাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পন্ন করবে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমি এই অনুষ্ঠান থেকে অধ্যাপক ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। কারণ তিনি ডিসেম্বরের মধ্যে সমস্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন। এটি একটি অত্যন্ত ইতিবাচক বিষয়।’
ফখরুল বলেন, ‘আমরা আশা করি নির্বাচন কমিশন খুব দ্রুত এই কাজ সম্পন্ন করবে এবং নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবে।’
তিনি বলেন, আমাদের দল চায় নির্বাচন কমিশন এমনভাবে কাজ করুক—যাতে এটি জাতিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারে। ‘আমরা আশা করি তারা সেভাবেই কাজ করবে।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
নির্বাচন সময়মতো অনুষ্ঠিত তা নিয়ে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন মির্জা ফখরুল। তবে নির্বাচন নিয়ে কিছু মহল যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে—তা উড়িয়ে দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘কেন নির্বাচন হবে না? এ দেশের মানুষ নির্বাচন চায়। তারা নির্বাচনের জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেছে। তারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সংসদ চায়।’
ফখরুল বলেন, নির্দিষ্ট একটি মহল বিএনপিকে সংস্কারের বিরোধিতাকারী দল হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করচে। কিন্তু বাস্তবতা হলো বিএনপিই বাংলাদেশে সকল বড় সংস্কার শুরু করেছে।
তিনি বলেন, ‘সংস্কার আমাদের রক্ত ও ডিএনএতে আছে। আমরা সংস্কারের মাধ্যমেই জন্মগ্রহণ করেছি।’ তাই, এটা বলা অন্যায্য যে বিএনপি সংস্কারের বিরুদ্ধে। বিএনপি সংস্কারে বাধা দিচ্ছে দাবি করার চেয়ে সত্যের বিকৃতি আর কিছু হতে পারে না।’
তবে বিএনপির এই নেতা বলেন, সংস্কারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জনগণই নেবে। ‘এই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে আমরা কেন সবকিছু আশা করব?’
জুলাই সনদ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে ফখরুল বলেন, বিএনপি এর আগে সরকারের কাছ থেকে খসড়া পাওয়ার পর বুধবার রাতে তাদের মতামত জানিয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে। ‘তাহলে, সমস্যা কোথায়?’
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্ন ভিন্ন মতামত থাকতে পারে, কিন্তু দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে তাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা উচিত।
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের বিরোধীদের কথা বলার সময় বা সমালোচনা করার সময় সতর্ক ও সম্মানজনক ভাষা ব্যবহার করার আহ্বান জানান—যাতে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির ঐক্য সম্পর্কে মানুষ ভুল বার্তা না পায়।
জামায়াত নেতা সকল গণতন্ত্রপন্থী দলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাদের মধ্যে যেকোনো অনৈক্য ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থানে সাহায্য করতে পারে।
সাংবাদিকদের সভ্যতার ব্যারোমিটার হিসেবে বর্ণনা করে তিনি গণমাধ্যমকে ন্যায্য ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা অনুশীলন করে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের অনুরোধ করেন।
পরওয়ার অভিযোগ করেন, কিছু গণমাধ্যম গণতান্ত্রিক শক্তির মধ্যে বিভেদ তৈরির জন্য জামায়াত, বিএনপি এবং অন্যান্য দল সম্পর্কে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. এ জেড এম জাহিদ বলেন, আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা উৎখাতে ভূমিকা পালনকারী তরুণ নেতাদের মানসিকতা ও মনোভাবের কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় তিনি বাকস্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
তরুণ নেতাদের আরও সংযম ও ধৈর্য প্রদর্শনের আহ্বান জানান তিনি। বলেন, তাদের কাজে ও কথায় অহংকার এড়াতে হবে। ‘আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে, যাতে আপনাদের কথা ও কাজে ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারীদের মানসিকতার প্রতিফলন না হয়।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সংস্কার প্রস্তাবনা সম্পর্কে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় কোনো বড় অগ্রগতি হয়নি।
তবে, নির্বাচনকে সামনের রেখে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য তিনি প্রধান উপদেষ্টার প্রশংসা করেন।
মান্না সতর্ক করে বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। যেকোনো বিলম্ব দেশকে অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিতে পারে। ‘একটি সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হলে গণঅভ্যুত্থান সফল হবে,’ বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: শিল্পী ফরিদা পারভীনের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতে ড. ইউনূসের হস্তক্ষেপ কামনা ফখরুলের
১৭১ দিন আগে
হাসিনা অধ্যায় শেষ, আ. লীগ কখনো ফিরবে না: হাসনাত আব্দুল্লাহ
জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, মধ্য এশিয়ার টেরোরিষ্ট হচ্ছে গুজরাটের কসাই নরেন্দ্র মোদি। আরেক টেরোরিষ্ট হাসিনাকে প্রশয় দিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। হাসিনা নিজে টেরোরিষ্ট এবং ছাত্রলীগও টেরোরিষ্ট।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের আকাশে আজ কালো মেঘের ঘনঘটা। দেশকে নিয়ে দেশে বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ভারতে বসে হাসিনা জুলাই বিপ্লবীদের হত্যার ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, আ’লীগের প্রেতাত্মরা ভারত ও লন্ডনে বসে যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, বাংলাদেশে হাসিনা চ্যাপ্টার ক্লোজড, আ’লীগ উইল নেভার কাম ব্যাক।
বুধবার(৯ জুলাই) রাতে ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ও দেশ গড়ার নতুন প্রত্যয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা শেষে এক সমাবেশে হাসনাত আব্দুল্লাহ এসব কথা বলেন।
সমাবেশে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, নাসির উদ্দীন পাটোয়ারি, ডা. তাসনীম জারা, সারজিস আলম, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রেজা, শহীদ রাকিবের মা হাফিজা খাতুন ও শহীদ সাব্বিরের পিতা আমোদ আলী বক্তব্য দেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বিচার ও সংস্কারের আগে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। আমাদের যুদ্ধ বাংলাদেশ বির্নিমাণের যুদ্ধ। আগে বিচার ও সংস্কার শেষ হোক, তারপর নির্বাচন হবে। নির্বাচিত সরকার বিচার ও সংস্কার করবে কি করবে না এই অনিশ্চয়তার মধ্যে আমরা থাকতে চাই না। আমরা হাসিনার বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত হয়েই নির্বাচনে যেতে চাই। তাই গণতন্ত্র উত্তরণের পথে যাতে কেউ বাধা হয়ে না দাঁড়ায় সে দিকে সজাগ থাকতে হবে।
সাংবাদিকদের বেতন দেওয়া হয়না বলে হাসনাত আব্দুল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, দেশের বেশির ভাগ সাংবাদিকদের হাতে বুম ও পরিচয়পত্র ধরিয়ে দিয়ে বলা হয় এলাকায় যেয়ে খেটে খাও।
সমাবেশে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিএসএফ পাখির মতো বাংলাদেশীদের হত্যা করছে। তিনি বিএসএফকে একটি খুনি বাহিনী হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তারা মানবতা বিরোধী অপরাধ করছে। এখনই তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে। তিনি বলেন, সংস্কার, হাসিনা ও আ. লীগের বিচার, নতুন সংবিধান রচনা ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করেই ঘরে ফিরবো ইনশাল্লাহ।
১৭২ দিন আগে
নতুন বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তর হবে বৈষম্যহীন: সেলিম উদ্দিন
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, নতুন বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তর হবে বৈষম্যহীন, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত সমৃদ্ধ জনপদ।
তিনি বলেন, ‘এই জনপদে মানুষের অধিকার নিশ্চিতে কারো কাছে ধর্না দিতে হবে না। জনপ্রতিনিধিরা শাসক নয় হবে খাদেম। জামায়াত সে ধরনের সমাজ কায়েমে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে।’
১৯ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফার্মগেটে মিছিল পরবর্তী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সেলিম উদ্দিন বলেন, জামায়াত ঘোষিত ৭ দফা আদায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ নতুন একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে জাতীয় সমাবেশ বাস্তবায়নে ইউনিট দায়িত্বশীল সমাবেশ ও গণসংযোগ করেন তিনি। পরে মিছিল নিয়ে ফার্মগেটে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন সেলিম উদ্দিন।
দেশবাসীকে বিশেষ করে রাজধানীবাসীকে ১৯ জুলাইয়ের জাতীয় সমাবেশে যোগদানের আহবান জানান তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য হেমায়েত হোসেন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার-মিডিয়া সেক্রেটারি আতাউর রহমান সরকার, মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য জিল্লুর রহমান, আহসান উল্লাহ, ইউসুফ আলী মোল্লা, কলিম উল্লাহ, আবু সাঈদ মন্ডল ও এস এম মনির আহমেদ প্রমুখ।
১৭২ দিন আগে