রাজনীতি
ভোটাধিকার হরণের মুখে দাঁড়িয়ে আছেন তরুণরা: বিএনপি
তরুণদের ভোটাধিকার হরণ একটি জাতীয় সংকট হিসেবে আখ্যায়িত করে বিএনপি বলছে, ‘আজও আমরা সেই একই সংকটে দাঁড়িয়ে আছি। এটি শুধু একটি সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের বিষয় নয়, বরং একটি প্রজন্মকে রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণের মৌলিক সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার নিষ্ঠুর উদাহরণ।’
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এক সংবাদ বিবৃতিতে দলটি বলছে, ‘অতীতেও এই দেশের তরুণরাই ভোটের অধিকার ছিনিয়ে এনেছিল। তারা রাজপথে লড়েছে, রক্ত দিয়েছে, অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে।
৩১ দফা রূপরেখার আলোকে তরুণ সমাজকে নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় যুক্ত করতে মাসব্যাপী কর্মসূচি বুধবার (২৮ মে) ঢাকার নয়াপল্টনে তারুণ্যের সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হওয়ার পর এই বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, দেশজুড়ে কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা শুধু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের একটি জাতীয় ঐক্যের ইঙ্গিত পাইনি, বরং স্পষ্টভাবে দেখতে পেয়েছি নতুন প্রজন্মের সেই লড়াইয়ের পুনর্জাগরণ—যেখানে তরুণরা নিজেদের অধিকার রক্ষায় আবারও সংগঠিত হচ্ছে, কথা বলছে, এবং নিজ অবস্থান থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।’
‘তারা জানে, ভোটাধিকার শুধু ভোট দেওয়ার বিষয় নয়—এটি ভবিষ্যৎ নির্মাণের শক্তি। এই জাগরণই একদিন একটি ন্যায়ভিত্তিক, গণতান্ত্রিক এবং রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি রচনা করবে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের সঙ্গে সংস্কার ও আ.লীগের বিচার মেলানোর সুযোগ নেই: বিএনপি
নগরবাসীর দুর্ভোগের জন্য দুঃখপ্রকাশ
ঢাকায় এবং অন্যান্য শহরে বিএনপির সমাবেশে লাখো মানুষের উপস্থিতির ফলে নগরবাসীর যে দুর্ভোগ হয়েছে—বিশেষ করে যানজটের কারণে—সেই জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে বিবৃতিতে।
এতে বলা হয়, ‘ঢাকার সমাবেশ শেষে তারেক রহমানের নির্দেশে তিনটি সংগঠন যৌথভাবে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালিয়ে স্থান ত্যাগ করে। এ কাজে সহায়তা করায় পরিচ্ছন্নকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে।’
২১৪ দিন আগে
বাংলাদেশে আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা
জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে যেকোনো সময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (২৮ মে) জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাপান-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী লিগের সভাপতি তারো আসোকের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানান, ‘অধ্যাপক ইউনূস তারো আসোকে বলেছেন, নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি ছয় মাসের সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন এবং এই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন হবে।’
তিনি জানান, ‘সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা। জুন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ হিসেবেও কাজ করবে।’
‘অধ্যাপক ইউনূস স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তিনি জুনের পর একদিনও ক্ষমতায় থাকবেন না।’
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার একাধিক ক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে—অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা হয়েছে, প্রশাসনিক ও আইনি সংস্কার চলছে এবং নির্বাচন কমিশনকে ঘিরে প্রস্তুতি এগিয়ে যাচ্ছে।
রাজনৈতিক সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য ও মতপার্থক্য চিহ্নিত করেছেন।
আগামী জুনের শুরুতে কমিশনের দ্বিতীয় দফা আলোচনা শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার আশা করছে, রাজনৈতিক দলগুলো দ্রুত সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্যে পৌঁছাবে এবং জুলাইয়ের মধ্যেই সংস্কারের গতি বাড়বে।’
তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূস তিনটি বিষয়কে সামনে রেখে এগোচ্ছেন—সংস্কার, ফ্যাসিস্ট শক্তির বিচার এবং নির্বাচন। সব প্রস্তুতি শেষ হলেই তিনি নির্দিষ্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন।’
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচনের আগে সংসদীয় আসনের সীমানা বদলে বড় উদ্যোগ ইসির
সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো অস্থিরতা আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক অস্থিরতা বা প্রশাসনিক অনিশ্চয়তা অনুভব করছি না। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলমান প্রক্রিয়ার অংশ এবং সব দলই প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে আস্থা প্রকাশ করেছে।’
এর আগে বুধবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস জাপানের রাজধানী টোকিওতে পৌঁছান। তিনি ৩০তম নিক্কেই ফোরাম: ফিউচার অব এশিয়ায় যোগ দেওয়ার পাশাপাশি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে বৈঠক করবেন।
হোটেলে ফিরে প্রধান উপদেষ্টা তারো আসোর সঙ্গে বৈঠক করেন, যার মাধ্যমে তাঁর টোকিও সফর শুরু হয়।
প্রেস সচিব জানান, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর সরকারের গৃহীত সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তারো আসো জানান, তিনি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিবর্তন ও অগ্রগতির বিষয়ে অবগত এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী।
প্রেস সচিব জানান, ‘বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব গড়ে তুলতে আন্তরিক প্রয়াস চালাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। তারো আসোও যত দ্রুত সম্ভব দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদারে গুরুত্বারোপ করেছেন।’
প্রধান উপদেষ্টা জানান, ‘অর্থনীতিতে তিনটি বড় সংস্কার—ব্যাংক খাতকে সক্রিয় করা, বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং বিদ্যুৎ ও অন্যান্য খাতে বকেয়া পরিশোধ—বাস্তবায়নের ফলে দেশের অর্থনীতি এখন অনেক ভালো অবস্থায় রয়েছে।’
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্যাম্পে রোহিঙ্গা তরুণ প্রজন্ম হতাশার মধ্যে বেড়ে উঠছে। “তাদের আশার আলো দেখাতে হবে যেন তারা স্বদেশে ফিরে গিয়ে উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।”
তিনি রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে জাপানের সহায়তা কামনা করেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ।
২১৪ দিন আগে
নির্বাচনের সঙ্গে সংস্কার ও আ.লীগের বিচার মেলানোর সুযোগ নেই: বিএনপি
নির্বাচনের সঙ্গে সংস্কার ও আওয়ামী লীগের অপরাধের বিচার মেলানোর কোনো যৌক্তকতা নেই বলে দাবি করেছেন বিএনপি নেতারা। নির্বাচনের পর ক্ষমতায় গেলে বিএনপিই এসব করবে বলে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ ছাড়া শেখ হাসিনার পতনে সবচেয়ে বড় অবদান খালেদা জিয়ার বলেও দাবি করা হয়েছে।
বুধবার (২৮ মে) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে বক্তারা এসব মন্তব্য করেন। এছাড়া ডিসেম্বরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ার প্রতিও জোর দিয়েছে বিএনপি।
সমাবেশে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কোনো হেলাফেলা চলবে না। সংস্কার এবং বিচারের কথা বলে নির্বাচনের রোডম্যাপ পেছানোর কোনো সুযোগ নাই। বিএনপির আগে কেউ সংস্কারের কথা বলেনি। সবার আগে খালেদা জিয়া জাতির সামনে সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরেছেন।’
‘দুই বছর আগে বিএনপিই ২৭ দফা সংস্কারের দাবি জানিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশের জনগণ। ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে এ সংস্কার হবে না,’ যোগ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের বিচার প্রসঙ্গে খসরু বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতনে সবচেয়ে বড় অবদান খালেদা জিয়ার। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি থেকেছেন আপসহীন, আর তারেক রহমান তার নিরলস কাজের মাধ্যমে এই আন্দোলনে স্বৈরাচার পতনের পথ খুলে দিয়েছেন।’
‘বিএনপির মতো এত কঠিন সময় কেউ অতিক্রম করেনি, বিএনপির নেতাকর্মীদের মতো এতটা ক্ষতিগ্রস্থ কেউ হয়নি। আওয়ামী লীগের বিচার যদি করতে হয়, সেই বিচার বিএনপি করবে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচন পিছিয়ে দিতে টালবাহানা শুরু হয়েছে: তারেক রহমান
এ সময়ে নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, কারও পদত্যাগ চাইনি বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘আমরা ডিসেম্বরে নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, কারও পদত্যাগ চাইনি। পদত্যাগের নাটক দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ। গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য কথা বলা যদি অপরাধ হয়, সেই অপরাধ বিএনপি বারবার করতে পারবে।’
‘ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা চলছে। অত্যন্ত সুকৌশলে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে। দেশে পরস্পরের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে ষড়যন্ত্রকারীরা ফ্যাসিবাদ ফিরিয়ে আনতে চায়।’
অন্তর্বর্তী সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার ছিল দেশের মানুষের আস্থা এবং আকাঙ্ক্ষার সরকার। কিন্তু এই নয় মাসে সরকার থেকে অবজ্ঞা ছাড়া আমরা আর কিছু পাইনি। সরকার দেশের মানুষকে অবজ্ঞা করছে। এই সরকার একটি ঔপনিবেশিক সরকার। যারা সরকারে আছেন, তাদের ৯০ ভাগই এ দেশের নাগরিক না।’
‘নয় মাসে যে সংস্কার সরকার করতে পারেনি; নয় বছরেও—এমনকি নব্বই বছর সময় দিলেও তারা পারবেন না। সরকারে এখন উচিত দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে জনগণের প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। সরকার যেভাবে দেশ চালাচ্ছে, তাতে করে আওয়ামী লীগ যা ক্ষতি করেছে—তার থেকে দেশের অনেক বেশি ক্ষতি হয়ে যাবে,’ বলেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেন, দেশে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয় নাই। তারা নির্বাচনকে বিলম্বিত করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। না হলে সংস্কার আর বিচারের সঙ্গে নির্বাচন মেলানোর কোনো কারণ দেখি না। এই সরকারের কাছে আমাদের কোনো প্রত্যাশা ছিল। সরকার জনগণের সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি।
২১৪ দিন আগে
কেবল মার্কা দেখে ভোট দিলে দেশে পরিবর্তন আসবে না: সারজিস
জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে প্রতীক দেখে ভোট দিলে খুব বেশি পরিবর্তন আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা একবারও বলছি না যে, আপনারা আমাদের এনসিপির নেতাদেরকেই ভোট দিন। শুধু নেতা ভালো হলে হবে না, ভোটারদেরও ভালো হতে হবে।’
বুধবার (২৮ মে) বিরল উপজেলায় এক পথসভায় সারজিদ আলম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সামান্য কিছু টাকা ও সুবিধার জন্য খারাপ মানুষের কাছে নিজেদেরকে বিক্রি করে দেবেন না। যদি তা করেন; তাহলে সুন্দর বাংলাদেশ গঠন সম্ভব হবে না। তাই, আগামী নির্বাচনে দল কিংবা মার্কা দেখে নয়, সৎ এবং যোগ্যদের বেছে নিতে হবে।
দুই দিনের সফরে প্রথম দিনে মঙ্গলবার ঘোড়াঘাট উপজেলায় প্রথম পথসভা করেছেন তিনি। এ সময়ে হাকিমপুর, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, ফুলবাড়ী, পার্বতীপুর উপজেলায় পৃথক পৃথক পথসভায় বক্তব্য দিয়েছেন এনসিপি নেতা সার্জিস। দ্বিতীয় দিনে বিরল ছাড়াও বোচাগঞ্জ, কাহারোল, বীরগঞ্জ, খানসামা, চিরিরবন্দর এবং সর্বশেষ রাত ৯টায় জেলা সদরে জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সূচি রয়েছে তার।
জুলাই আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘যে মানুষটা টাকা ছাড়া আপনার কথা বলে, আপনার কাজ করে দেন, তাদেরকেই আগামীর বাংলাদেশে আপনাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে হবে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও যদি আপনারা মার্কা দেখে ভোট দেন, তাহলে এই দেশের পরিবর্তন আসবে না। তাই, মানুষ দেখে-চিনে ভোট দেন, তাহলে বাংলাদেশের পরিবর্তন হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসনে যারা ভালো কাজ করছেন, তাদের সুনাম এবং যারা মন্দ কাজ করছেন, তাদের বদনাম সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দিয়ে পোস্ট করুন। সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।’
‘অনেকে মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানি করছে, থানায় ও ভূমি অফিসে এখনও ঘুষ নিচ্ছে। দেশের জনগণকে আওয়াজ তুলতে হবে। তা নাহলে জুলাই আন্দোলন যে চেতনা থেকে হয়েছে; তা সফল হবে না,’ বলেন সারজিস।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এই নেতা আরও বলেন, ‘যে জুলুম করে তার উপরও জুলুম নেমে আসে, যার বড় প্রমাণ শেখ হাসিনা। যারা মাদক কারবারি করছে, চাঁদাবাজি করছে, তারা কোনো না-কোনো রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় এই কাজ করছে।’
আরও পড়ুন: জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে: এনসিপি
‘কিন্তু তারা শেখ হাসিনার চেয়ে শক্তিশালী না। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। আর আপনাদের মতো দুয়েকজন পাতি মাস্তান-চাঁদাবাজকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া যাবে। শেখ হাসিনা একদিনে নয়, ১৫ বছরে দেশের সিস্টেমগুলো নষ্ট করেছে। তেমনি দেশ গঠনে সিস্টেমগুলোকে ঠিক করতে সময় লাগবে,’ যোগ করেন তিনি।
পথসভায় এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আবু সাঈদ লিয়ন ও সাদিয়া ফারজানা দিনা, কেন্দ্রীয় সদস্য ইমামুর রশিদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দিনাজপুর জেলার আহ্বায়ক একরামুল হক আবির, এনসিপির শ্রমিক ইউনিয়নের জেলা কমিটির আহ্বায়ক রেজাইল ইসলামসহ স্থানীয় নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
২১৪ দিন আগে
নির্বাচন পিছিয়ে দিতে টালবাহানা শুরু হয়েছে: তারেক রহমান
আগামী জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া নিয়ে এরইমধ্যে টালবাহানা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বুধবার (২৮ মে) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে ভার্চ্যুয়ালি দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে মনে হয় এরইমধ্যে টালবাহানা শুরু হয়েছে বা চলছে। কথিত অল্প সংস্কার আর বেশি সংস্কারের অভিনব শর্তের আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে আগামী জাতীয় নির্বাচন ভবিষ্যৎ।’
এ সময়ে নেতাকর্মীদের আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতেও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এরআগে নির্বাচন নিয়ে হেলাফেলা করা চলবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। নির্বাচন নিয়ে হেলাফেলা চলবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আজ তরুণদের সুনামি হয়েছে, তারা গণতন্ত্র ও নির্বাচনের বার্তা দিচ্ছে। সংস্কারের কথা বলে নির্বাচনের রোডম্যাপ পেছানোর কোনো সুযোগ নাই। বিচারের কথা বলে নির্বাচনের রোডম্যাপ পেছানোর কোনো সুযোগ নাই।’
‘সাত বছর আগে ভিশন ২০৩০ জাতির সামনে তুলে ধরেছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দুই বছর আগে ২৭ দফা দিয়েছিলেন তারেক রহমান,’ যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সংস্কারের কথা বলে নির্বাচনের রোডম্যাপ পেছানোর সুযোগ নেই: আমীর খসরু
সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের ফলাফল নিয়েও মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। তিনি বলেন, ‘এখন বলা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ে নাকি ঐকমত্য হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য না হয়ে থাকলে সেটা করবে জনগণ। ভোট ও ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার সেই সংস্কার করবে।’
বিচার অসম্পূর্ণ থাকলে সেই দায়িত্ব বিএনপি পালন করবে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘কারণ আমাদের মতো এতো কঠিন সময় কেউ পার করেনি। আমাদের মতো এতো ত্যাগ কেউ করেনি। ৫ আগস্ট না হলে রাষ্টর পরিচালনায় যারা আছেন তাদের অনেকে বিদেশে থাকতেন। আর আমাদের হয় জেলে, না হয় ফাঁসির কাষ্ঠে থাকতে হতো। সুতরাং বিচারকাজ বাকি থাকলে সেটা বিএনপি করবে, তোমাদের ওপর কোনো ভরসা নাই।’
২১৪ দিন আগে
সংস্কারের কথা বলে নির্বাচনের রোডম্যাপ পেছানোর সুযোগ নেই: আমীর খসরু
সংস্কারের কথা বলে নির্বাচনের রোডম্যাপ পেছানোর কোনো সুযোগ নেই বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। নির্বাচন নিয়ে হেলাফেলা চলবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার (২৮ মে) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশ থেকে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আজ তরুণদের সুনামি হয়েছে, তারা গণতন্ত্র ও নির্বাচনের বার্তা দিচ্ছে। সংস্কারের কথা বলে নির্বাচনের রোডম্যাপ পেছানোর কোনো সুযোগ নাই। বিচারের কথা বলে নির্বাচনের রোডম্যাপ পেছানোর কোনো সুযোগ নাই।’
‘সাত বছর আগে ভিশন ২০৩০ জাতির সামনে তুলে ধরেছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দুই বছর আগে ২৭ দফা দিয়েছিলেন তারেক রহমান,’ যোগ করেন তিনি।
সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের ফলাফল নিয়েও মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। তিনি বলেন, ‘এখন বলা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ে নাকি ঐকমত্য হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য না হয়ে থাকলে সেটা করবে জনগণ। ভোট ও ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার সেই সংস্কার করবে।’
বিচার অসম্পূর্ণ থাকলে সেই দায়িত্ব বিএনপি পালন করবে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘কারণ আমাদের মতো এতো কঠিন সময় কেউ পার করেনি। আমাদের মতো এতো ত্যাগ কেউ করেনি। ৫ আগস্ট না হলে রাষ্টর পরিচালনায় যারা আছেন তাদের অনেকে বিদেশে থাকতেন। আর আমাদের হয় জেলে, না হয় ফাঁসির কাষ্ঠে থাকতে হতো। সুতরাং বিচারকাজ বাকি থাকলে সেটা বিএনপি করবে, তোমাদের ওপর কোনো ভরসা নাই।’
এদিকে সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। বেলা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে জনসমাগম। এতে কাকরাইল থেকে আরামবাগ জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।দুপুর ২টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের এই সমাবেশ শুরু হয়। কার্যালয়ের বিপরীতে সমাবেশ মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল এই সমাবেশ আয়োজন করেছে।
সরেজমিনে সমাবেশ ঘুরে দেখা যায়, আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই ঢাকাসহ গাজীপুর, নারায়াণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, সিলেট, ফরিদপুর থেকে পিকআপ ও বাসে করে দলটির নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে জড়ো হয়েছেন।
ছাত্রদল, যুবদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা মাথায় লাল, সবুজ ও হলুদ রঙের দলীয় লোগোযুক্ত ক্যাপ ও ব্যানার হাতে সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। জাতীয় সংগীত ও দলীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়।
সমাবেশের কারণে কাকরাইল থেকে পল্টন ও আশপাশের এলাকায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। গাজীপুর থেকে আসা যুবদল কর্মী সুমন শিকদার বলেন, ‘এই সমাবেশের মূল আকর্ষণ তরুণদের প্রতি তারেক রহমানের বক্তব্য। বর্তমান রাজনীতি তরুণদের, তারা আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি রাজনীতি সচেতন। বিএনপিও তরুণদের নিয়ে আলাদা করে ভাবছে এবং এই প্রজন্মকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ঢাকায় বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠনের তারুণ্যের সমাবেশ আজ
২১৪ দিন আগে
ঢাকায় বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠনের তারুণ্যের সমাবেশ আজ
বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠন— ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের তারুণ্যের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে আজ। এই সমাবেশে ১৫ লাখ তরুণ-তরুণী জমায়েত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বুধবার (২৮ মে) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানি জানিয়েছেন, সমাবেশে ঢাকাসহ সিলেট, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহের তরুণ-তরুণীরা অংশ নেবেন।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি দেশের যুবসমাজের উদ্দেশে দলের রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা ও ভবিষ্যৎ কৌশল তুলে ধরবেন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় হতাশ বিএনপি
এ ছাড়া খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদসহ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও উপস্থিত থাকবেন।
এর আগে, সোমবার (২৬ তারিখ) এক সংবাদ সম্মেলনে জিলানি বলেন, চট্টগ্রামে আমাদের সমাবেশে তরুণদের বিপুল সমাগম হয়েছে। খুলনা ও বগুড়ায়ও আমাদের লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। এতে আমরা সমাজের সব স্তরের তরুণদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছি।
ঢাকার সমাবেশে ১৫ লাখ তরুণ অংশ নিয়ে আগের সব রেকর্ড ভেঙে দেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সেচ্ছাসেবক দলের এই শীর্ষ নেতা বলেন, সমাবেশে অংশ নিতে তরুণরা উদগ্রীব হয়ে আছে। তাদের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন এই সমাবেশ সফল করবে। সেখানে ১৭ বছর ধরে ভোটাধিকার-বঞ্চিত যুবকরা গণতন্ত্র পুনর্প্রতিষ্ঠার প্রধান দাবি উত্থাপন করবে।
তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার চলমান আন্দোলনে এই সমাবেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে, গত ২৯ এপ্রিল দেশের ১০টি বিভাগের তরুণদের নিয়ে চারটি সেমিনার ও চারটি সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় বিএনপির এই তিন অঙ্গসংগঠন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনুসের নেতৃত্বে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের আশা তারেক রহমানের
৯ মে তারিখে চট্টগ্রাম থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয় এবং আজ (বুধবার) ঢাকায় তা শেষ হবে। এর মধ্যে খুলনা ও বগুড়ায় সেমিনার ও সমাবেশ করেছে দল তিনটি।
২১৫ দিন আগে
নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় হতাশ বিএনপি
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করার পর এখন পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচনের স্পষ্ট কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা না করায় গভীর হতাশা প্রকাশ করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (২৭ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন দলের এ হতাশার কথা জানান।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকের পর যে বিবৃতি উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে—সেটি অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর।
বিএনপিরি এই নেতা বলেন, ‘আমরা কখনোই প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করিনি, এখনো করছি না। তবে আমরা শুরু থেকেই ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে আসছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব একটি নির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।’
রাজনৈতিক উত্তেজনা ও নানা জল্পনা-কল্পনার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার(২৫ মে) তার সরকারি বাসভবন যমুনায় আলাদাভাবে বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বৈঠক করেন।
পরের দিন তিনি আরও ২০টি রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনুসের নেতৃত্বে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের আশা তারেক রহমানের
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক বৈঠকের প্রতিক্রিয়া জানাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটি এই সংবাদ সম্মেলন করে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন,‘ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনের চেতনা ধারণ করে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার গঠন করা, যা মানুষের গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে।’
‘অন্যথায়, জনগণের দল হিসেবে বিএনপির পক্ষে এই সরকারের সাথে সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হবে,’ বলেন, বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বর নির্বাচন আয়োজনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এর পর রমজান, বর্ষা ও এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার মতো বিষয়গুলো রয়েছে, যা নির্বাচনকে ব্যাহত করতে পারে। আমরা সম্প্রতি এটি বলছি তা নয়, বেশ কিছুদিন ধরেই আমরা বলছি।’
বিএনপির নেতা অভিযোগ করেন, নির্বাচন বিলম্বিত করার জন্য বিভিন্ন অজুহাত দেওয়া হচ্ছে—যেমন সংস্কার কার্যক্রম, বিচার প্রক্রিয়া ইত্যাদি। তিনি বলেন, ‘সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া, তাই এটি নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সমান্তরালভাবেই চলতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচারী শক্তি ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচার চলবে, তবে তা স্বাধীন বিচার বিভাগের অধীনে হওয়া উচিত।
তিনি সমালোচনা করে বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ এনইসি বৈঠকের পর যে বিবৃতি দিয়েছে, সেটি অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর। আমরা শুরু থেকেই উপদেষ্টা পরিষদকে তাদের দায়িত্ব পালনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছি।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনী রোডম্যাপ দাবিকে ‘মহাপাপ’ মনে করছেন কিছু উপদেষ্টা: রিজভী
তিনি আরও বলেন, ‘পরাজিত শক্তি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রের উসকানি ও বিদেশি শক্তির ষড়যন্ত্রের কারণে সরকার তার দায়িত্ব পালনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা বলছি, কেবল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনই পারে এসব ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করতে।’
তিনি বলেন, সরকারের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবিলম্বে অনুষ্ঠানের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিৎ- এর কোনো বিকল্প নেই।’
বিএনপি আশা প্রকাশ করে বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকার যেন জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে দেশ চালায়, যাতে করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নাগালের মধ্যে থাকে এবং বিনিয়োগ, ব্যবসা ও বাণিজ্যে গতি আসে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সরকারের নিরপেক্ষতার অভাব এবং শাসনব্যবস্থার দুর্বলতা জনমনে স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহ ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিগুলোর মধ্যে বিভাজন রোধে এবং সরকারের নিরপেক্ষতা রক্ষায় বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ জরুরি।’
মোশাররফ বলেন, ‘মানুষ রক্ত দিয়েছে ফ্যাসিবাদ হটিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে, কিন্তু সরকারের সাম্প্রতিক কিছু কর্মকাণ্ড জনমনে আবারও প্রশ্ন তুলেছে।’
ইশরাক হোসেনের শপথে বিলম্বের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের পক্ষে আদালতের রায় এলেও সরকার এখনও তার শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা নেয়নি। ‘আমরা আশা করি, সরকার আর দেরি না করে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে আশ্বাস পায়নি বিএনপি বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও হাফিজউদ্দিন আহমেদ।
২১৫ দিন আগে
আমরা ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় ছিলাম: জামায়াত আমির
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দীর্ঘদিন আমরা এমন একটি সুবিচারপূর্ণ রায়ের জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক মামলার বিচার পরিচালনার সময় আন্তর্জাতিক আইন ও দেশের অভ্যন্তরীণ আইনের কোনোটি অনুসরণ না করে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দিয়ে রায় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘সেসময় সংবিধান কোনো বিষয় ছিল না, আইন কোনো বিষয় ছিল না। যাদের ইশারায় কোর্ট পরিচালনা করা হতো, তাদের ইচ্ছাই ছিল আইন; সেটা বৈধ হোক কিংবা অবৈধ হোক।’
মঙ্গলবার (২৭ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের মুক্তিযোদ্ধা হলে এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের আমির এসব কথা বলেন।
জামায়াতের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম আপিল বিভাগের রায়ে খালাস পাওয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানাতে দলটি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: দেশের স্বার্থ যেখানে বিঘ্নিত হবে, সেখানে ‘নো’: জামায়াত আমির
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘গোটা বিচার প্রক্রিয়ার সময় দুটি টর্চার সেল গঠন করা হয়েছিল। একটার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘সেইফ হোম’, আরেকটার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘সেইফ হাউজ’। সেইফ হোমে ভিকটিম নেতাদেরকে নিয়ে নির্যাতন করে নাজেহাল করা হতো। সেখানে উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় সেইফ হোমে রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন তাদের উপর অত্যাচার চালানো হয়েছে।’ অন্যদিকে সেইফ হাউজে এনে রাখা হতো যাদের সাক্ষী করা হতো। এসব মিডিয়ায় উঠে এসেছে।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সংগঠন এই বিচার প্রক্রিয়ার নিন্দা জানিয়েছে। তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা তা আমলে নেয়নি। কারণ, তারা জানতো স্বচ্ছ বিচার হলে খুন করা যাবে না।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘আমরা গণঅভ্যুত্থানের পর আমাদের শহীদ, আহত ও পঙ্গু ভাই বোনদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। অনেক সীমাবদ্ধতার কারণে আমরা পুরো কর্তব্য আদায় করতে পারিনি। আপনারা আমাদের ক্ষমা করবেন আমাদের কোনো আচরণে এবং কোনো কথা ও কাজের মাধ্যমে কষ্ট পেয়ে থাকলে যখন যেভাবে হোক। কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়, দল হিসেবেও আমরা দাবি করি না আমরা ভুলের ঊর্ধ্বে। এ সংগঠনের কোনো নেতাকর্মী বা সহকর্মীদের দ্বারা যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, কষ্ট পেয়েছেন, সবার কাছে বিনা শর্তে ক্ষমা চাই। আপনারা আমাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন।’
জামায়াতপ্রধান বলেন, ‘জামায়াত বিগত শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে ভয়ংকর জুলুমের শিকার হয়েছিল। আমাদের ১১ জন শীর্ষ নেতাকে মিথ্যা, সাজানো, ও পাতানো মামলায় এবং মিথ্যা সাক্ষীর মাধ্যমে কার্যত জুডিসিয়াল কিলিং করা হয়েছে।’
জামায়াত আমির বলেন, স্বৈরশাসনের আমলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন, বিডিআর সদস্যরা এবং সাধারণ প্রতিবাদী জনগণ যাদেরকে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে। চব্বিশের বিপ্লবের সময় যাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের শহীদ হিসেবে কবুলের জন্য দোয়া করেন তিনি।
তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আমাদের রিভিউ আবেদন শুনানির পর এটিএম আজহারুল ইসলামকে তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার কাছে দুই রোডম্যাপ চেয়েছে জামায়াত
তিনি আরও বলেন, জাতির এই সংকটময় মুহূর্তে আমাদের নেতারা বেঁচে থাকলে তাদের প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা-অভিজ্ঞতা দিয়ে এই জাতিকে পথ দেখাতে পারতেন। ক্যাঙ্গারু কোর্ট তাদের হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, এই মামলাগুলো পরিচালনা করতে গিয়ে সীমাহীন জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। সাবেক বিচারপতি এসকে সিনহা স্বীকার করেছেন কিভাবে পরিকল্পনা মাফিক, ঠান্ডা মাথায় এই নেতাদের খুন করতে হবে—তার ছক তৎকালীন বিচার বিভাগ ও সরকার মিলে তৈরি করেছিলেন। স্কাইপ কেলেঙ্কারির ঘটনা গোটা বিশ্ববাসীর নিকট নিন্দিত হয়েছে, তিরষ্কৃত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নেতারা তাদের সবটুকু যোগ্যতা উজার করে দিয়ে তারা বাংলাদেশে সুস্থ ধারার রাজনীতি করতে চেয়েছিলেন। দলের দুজন শীর্ষ নেতা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সততা এবং দক্ষতার সঙ্গে পালন করেছেন বলে জানান তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, পরিবারের মানুষকে খুনের অভিযোগে নেতাদের ট্রায়াল চলছে সেই পরিবারের কারো সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি। সাক্ষ্য দিতে আসলে সাদা পোশাকের পুলিশ সুখরঞ্জনবালিকে অপহরণ ও নির্যাতন করে ভারতের মাটিতে ফেলে রেখেছিল। জেল খেটে দীর্ঘদিন পর তিনি দেশে ফিরেছেন।
জামায়াত আমির বলেন, আদালত আমাদের নেতাদের উপর জুলুম করে, জোর করে যা নয়- তা স্বীকার করানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এমনকি রায় বাস্তবায়নের আগেও ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তারা ফাঁসির কাষ্ঠে দাঁড়িয়েছেন, কিন্তু অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেন নাই।তিনি বলেন, ব্রিটেনের আদালত এই বিচারকে বলেছিল জেনোসাইড টু দ্যা জাস্টিস। আজকে আমাদের আপিল বিভাগ বলেছে মিসক্যারেজ অব দ্যা জাস্টিস। ন্যায়ভ্রষ্ট রায়, অন্যায় রায়।
আরও পড়ুন: আপিল বিভাগের রায়ে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পেলেন জামায়াত নেতা আজহার
এর আগে সাজা দেওয়া হয়েছিল দলটির সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযম, সাবেক নায়েবে আমির শায়খ আবুল কালাম মোহাম্মদ ইউসুফ, সাবেক আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লা, সাবেক নায়েবে আমির আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সাবেক কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলী, সাবেক নায়েবে আমির সাবেক এমপি মাওলানা আব্দুস সোবহান, সাবেক কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুল খালেক মন্ডল।
জামায়াত আমির বলেন, আমরা প্রতিশোধ নেইনি, আমরা ন্যায়বিচার চাই। এ রায়ের মধ্য দিয়ে পরিষ্কার হয়ে গেছে যে এই রায় ছিল ইচ্ছাকৃত; গণহত্যার মাধ্যমে নেতৃত্ব শূন্য করা। একটা দেশ ও দলের নেতৃত্ব শূন্য করার মানেই হচ্ছে জনগণকে অন্ধকারের মাঝে ঠেলে দেওয়া। সত্যকে চেপে রাখা যায় না। সত্য মেঘের আড়াল ভেদ করে আলোর ঝলক নিয়ে আসে— সে সত্যটাই আজ প্রমাণিত হলো।
সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন দলটির নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, মাওলানা মোয়ায্যম হোসাইন হেলাল, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, নুরুল ইসলাম বুলবুল, সেলিম উদ্দিন, এটিএম আজহারুল ইসলামের ছেলে তাসনিম আজহার সুমন প্রমুখ।
২১৫ দিন আগে
জাতীয় নির্বাচনের আগে সংসদীয় আসনের সীমানা বদলে বড় উদ্যোগ ইসির
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩০০টি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণে বড় ধরনের পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ প্রক্রিয়ায় ২০০১ সালের সীমানা ফিরিয়ে আনার দাবিকে ঘিরে আসা ৪০০টির বেশি আবেদন যাচাই করছে কমিশন।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এখন পর্যন্ত ৬৬টি আসনের সীমানা পরিবর্তনের দাবিতে ৪১৬টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ আবেদনেই ২০০১ সালের সীমানা পুনর্বহালের দাবি করা হয়েছে।
পিরোজপুর-২ (কাউখালী, ভাণ্ডারিয়া ও নেছারাবাদ) আসনের জন্য জমা পড়েছে সর্বোচ্চ ১০৩টি আবেদন। এরপর রয়েছে কুমিল্লা-১০ (সদর দক্ষিণ, লালমাই ও নাঙ্গলকোট) আসন, যার জন্য জমা পড়েছে ৯২টি আবেদন।
এ ছাড়া মানিকগঞ্জে একটি নতুন আসনের দাবিতে ৩৮টি এবং চাঁদপুরে অতিরিক্ত একটি আসনের দাবিতে ৯টি আবেদন জমা পড়েছে।
সম্প্রতি সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ জারির পর ইসি সীমানা পুনর্নির্ধারণের উদ্যোগ নেয়। এ প্রক্রিয়ায় জনগণের আবেদন, সর্বশেষ আদমশুমারি এবং প্রশাসনিক ও ভৌগোলিক ঐক্যতানকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার শনিবার ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা আবেদনগুলো খতিয়ে দেখছি। যেটির যুক্তি গ্রহণযোগ্য হবে, সেটি বিবেচনায় নেওয়া হবে। তবে সব আসনের সীমানা বদলাবে এমন নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যৌক্তিক আবেদন ছাড়াও আদমশুমারির তথ্য ও প্রশাসনিক বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শহরাঞ্চলের আসন কমে গ্রামীণ এলাকায় বাড়তে পারে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের কিছু আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হতে পারে।
খসড়া সীমানা গেজেট আকারে প্রকাশ করে আপত্তির সুযোগ দেওয়া হবে। আপত্তির নিষ্পত্তির পর চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করবে কমিশন। ২০০৮ সালের পর এবারই সবচেয়ে বড় পরিসরে সীমানা পরিবর্তন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আ. লীগকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত আমাদের নয়, সরকার-নির্বাচন কমিশনের: মঈন খান
ওই বছর ১০০টির বেশি আসনের সীমানা বদলানো হয়েছিল। তবে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে খুব সামান্য পরিবর্তনই হয়।
সাবেক স্থানীয় সরকার সচিব আবু আলম শহীদ খান বলেছেন, ‘আলোচনার ভিত্তিতে কাজটি না হলে আদালতে রিট হতে পারে, যা নির্বাচনে বিলম্ব ঘটাতে পারে।’
উল্লেখযোগ্য ৬৬টি আসনের মধ্যে রয়েছে— সাতক্ষীরা-৩ ও ৪, রংপুর-১, বরগুনা-১ ও ২, পিরোজপুর-১ ও ২, কিশোরগঞ্জ-২, মানিকগঞ্জ-১, ২ ও ৩, মুন্সিগঞ্জ-১, ২ ও ৩, ঢাকা-১, ২, ৩, ৭ ও ১২, গাজীপুর-৩ ও ৫, নারায়ণগঞ্জ-১ থেকে ৫, রাজবাড়ী-১ ও ২, ফরিদপুর-৪, শরিয়তপুর-২, সিলেট-৩, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩, কুমিল্লা-১, ২, ৬, ৯ ও ১০, চাঁদপুর-১ থেকে ৫, ফেনী-২ ও ৩, নোয়াখালী-১ থেকে ৪, চট্টগ্রাম-৪, ৫, ৭ ও ৮, গাইবান্ধা-৩, সিরাজগঞ্জ-২, ৫ ও ৬, যশোর-২, ঝালকাঠি-২ এবং বরিশাল-৩।
২১৬ দিন আগে