রাজনীতি
মেহেরপুরে সম্মেলন নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০
মেহেরপুরে ইউনিয়ন কাউন্সিল সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসানসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৩ মে) বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়ট পর্যন্ত সদর উপজেলার আমঝুপি বাজারে সংঘর্ষের ঘটনাগুলো ঘটে।
এসময় সদস্য সচিবের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসসহ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। আহতদের মধ্যে সদস্য সচিব কামরুল হাসানের অনুসারী ৬জন ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের তিন সমর্থক আহত হয়েছেন।
আহতদের উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরমধ্যে বিএনপি নেতা মুকুল ও তৌহিদুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির পক্ষ দুইটি পরস্পরকে দোষারোপ করছে।
মেহেরপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে আমঝুপি গ্রামের গন্ধরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে আমঝুপি ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো।
আরও পড়ুন: অস্থিরতা এড়াতে ড. ইউনূসকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আহ্বান বিএনপির
তিনি বলেন, এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমিসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা সম্মেলনে অংশ নিতে মেহেরপুর শহর থেকে রওনা হই। আমঝুপি বাজারের সড়ক দিয়ে গন্ধরাজপুরে যেতে চাইলে সাইফুল ইসলামের অনুসারীরা আমাদের গাড়িবহরে বাধা দেয়।’
এ নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে মেহেরপুর সেনাবাহিনীর ক্যাম্প থেকে একটি টিম ও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এক পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ভিন্ন পথে পাঠায়।
পরে কামরুল হাসানের গাড়িবহরটি আমঝুপি সামিউল টাওয়ারের সামনের গলি দিয়ে গন্ধরাজপুরে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সাইফুল ইসলাম পক্ষের নেতাকর্মী তাদের উপর হামলা চালায়।
পরে সেনাবাহিনীর সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি দল তাদের ধাওয়া দিলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে ওই গাড়িবহরটি গন্ধরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছায়। আহত ৬ জনকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়।
এরপর হামলাকালীদের থামাতে সাইফুল ইসলাম পক্ষের ৩ নেতাকর্মীকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷ এসময় আটকদের ছাড়িয়ে নিতে সাইফুল ইসমাম পক্ষের নেতাকর্মীরা মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়ক আমঝুপি বাজারে অবরোধ করে। এতে বন্ধ হয়ে যায় সকল প্রকার যানবাহন চলাচল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই তিন নেতাকর্মীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। পরে তারা রাস্তা অবরোধ তুলে নেন।
অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান অভিযোগ করেন, কোনো কারণ ছাড়াই সাইফুল ইসলামের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। তিনি বলেন, বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত মেহেরপুরের আহ্বায়ক কমিটিকে মেনে না নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে ।
পাল্টা অভিযোগ করে সাইফুল ইসলাম বলেন, বেআইনিভাবে তারা আমঝুপি ইউনিয়নের সম্মেলন করতে চাইলে আমরা বাধা দিয়েছি। তবে কামরুল হাসানের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলেও পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দীন বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের বিষয়ে এখনও কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।
২১৯ দিন আগে
অস্থিরতা এড়াতে ড. ইউনূসকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আহ্বান বিএনপির
আগামী সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ায় দেশে অস্থিতিশীলতা বাড়ছে উল্লেখ করে বিএনপি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যদি অপমানজনকভাবে পদত্যাগ করেন—তাহলে তার দল ব্যথিত হবে।
শুক্রবার (২৩ মে) একটি প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ফারুক বলেন, ‘দেশে অস্থিরতার ঢেউ বইছে বলে মনে হচ্ছে। এই অস্থিরতার পিছনে মূলত দায়ী কারা? নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা কারা করছেন? আপনার (ড. ইউনূসের) মতো একজন সম্মানিত ব্যক্তির কাছ থেকে আমরা এই বিষয়গুলো জানতে চাই।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ফারুক বলেন, সরকার যদি একটি স্পষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ দিত—তাহলে শেখ হাসিনার আমলে যারা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছেন এবং অসংখ্য মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন—তারা গঠনমূলকভাবে জড়িত হয়ে নির্বাচনমুখী হতেন।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু আপনি (ড. ইউনূস) এখনও কোনো রোডম্যাপ দেননি। যদি এই অস্থিরতা আপনার তৈরি হয়—তাহলে জেনে রাখুন, বিএনপি কখনই এর দায় নেবে না।’
সরকারকে অবিলম্বে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানান সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ফারুক।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করুন—দেশের জনগণের পক্ষে দাঁড়ান’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’।
আরও পড়ুন: ঈদে ঢাকার পরিচ্ছন্নতায় দুই সিটিকে সহযোগিতার অঙ্গীকার ইশরাকের
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সম্ভাব্য পদত্যাগ সম্পর্কে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে ফারুক বলেন, ‘যদি আপনার মতো একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্বকে অপমানজনকভাবে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়—তাহলে তা আমাদের ক্ষতি হবে।’
তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করে যেভাবে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদের নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে, ঠিক সেভাবে আপনার নামও লেখা থাকুক। দিনের আলোতে ভোটদানের সুযোগ দিয়ে আমাদের ভোটাধিকার রক্ষা করলে... এমন উত্তরাধিকার ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
বিএনপি নেতা প্রধান উপদেষ্টাকে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক উত্তরণ নিশ্চিত করে একটি উদাহরণ সৃষ্টির আহ্বান জানান, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জাতির একজন গ্রহণযোগ্য ও সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে তাকে নিয়ে গর্ব করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাকে আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছি, আপনি অবিলম্বে আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া, মাহফুজ আলম এবং খলিলুর রহমান—এই তিন ব্যক্তিকে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য অনুরোধ করে চিঠি দেন। অন্যথায়, তাদের অপসারণের দায় আপনার উপর বর্তাবে।’
ফারুক বলেন, সংস্কার অবশ্যই করা উচিত, কিন্তু এমনভাবে নয়—যাতে মিয়ানমারের সঙ্গে একটি করিডোর তৈরি হয় বা চট্টগ্রাম বন্দর অন্যদের হাতে চলে যায়।
ষড়যন্ত্রকারীদের নির্বাচন বিলম্বিত করা ও অধ্যাপক ইউনূসের সরকারকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিতে পারে—এমন যেকোনা সংস্কারের বিষয়ে সতর্কও করেন তিনি।
এই অস্থিতিশীলতা দূর করতে অধ্যাপক ইউনূসকে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি জানান ফারুক।
২১৯ দিন আগে
ঈদে ঢাকার পরিচ্ছন্নতায় দুই সিটিকে সহযোগিতার অঙ্গীকার ইশরাকের
হাইকোর্টে দায়ের করা রিট খারিজ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে শপথ নেওয়ার আইনি পথ সুগম হয়েছে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের। এরপরই নগরবাসীর পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (২৩ মে) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে নিজেকে ‘জনতার মেয়র’ হিসেবে অভিহিত করেছেন ইশরাক। সেইসঙ্গে আসন্ন ঈদুল আজহায় ডিএনসিসির পাশাপাশি ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নতায়ও সহযোগীতার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে ইশরাক হোসেন বলেছেন, শপথ কেবল একটি ফরমালিটি (আনুষ্ঠানিকতা)। জনতার মেয়র হিসেবে আগামী কোরবানির ঈদের আগে যাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পর্যাপ্ত প্রস্তুতি থাকে, তার ওপর আমার দায়িত্ব বর্তায়।
তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকাবাসীকে নিশ্চিত করছি, উত্তরে মেয়র না আসা পর্যন্ত সেখানকার প্রশাসন ও পরিচ্ছন্ন কর্মীদের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করব।… বিকালের মধ্যে (১৬ ঘণ্টায়) একটা স্বস্তিদায়ক পরিবেশ তৈরি করার উদ্যোগ গ্রহণ করব।’
আরও পড়ুন: কাকরাইলের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করলেন ইশরাক
ইশরাক জানান, দক্ষিণ সিটিতে সাবেক কাউন্সিলর ও বিগত নির্বাচনের প্রার্থীদের সমন্বয়ে জোনভিত্তিক মনিটরিং টিম গঠনের অনুমোদন দেওয়া হবে। নিজেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সঙ্গে মাঠে থাকার ঘোষণা দেন তিনি।
ওই পোস্টের কমেন্ট বক্সে পিন করে রাখা একটি কমেন্টে আগামী সিটি নির্বাচনে নিজের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন বিএনপির এই নেতা।
সেখানে লিখেছেন, টানা ১০ বছর বিএনপি গ্রেটার (বৃহত্তর) ঢাকা চালিয়েছে। ৯০টির মধ্যে ৭০টির বেশি ওয়ার্ড কমিশনার আমাদের (বিএনপির) ছিল। এখন অনেকে মারা গিয়েছেন কিন্তু একাধিক বিকল্প প্রার্থী আছেন। তাদের কাজে লাগিয়ে পরবর্তী নির্বাচনে ঢাকা সিটির জন্যে প্রাথী বাছাই করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা একটি রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
বিকেলে এ সংক্রান্ত আদেশ প্রকাশ হয়। ফলে ইশরাকের শপথ গ্রহণে আর কোনো আইনি বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
আরও পড়ুন: রাস্তা না ছেড়ে আরও জোরদার আন্দোলনের আহ্বান ইশরাকের
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে পরাজিত হন বিএনপি প্রার্থী ইশরাক হোসেন। পরবর্তীতে নির্বাচনি ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। চলতি বছরের ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম তৎকালীন ফলাফল বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। এরপর নির্বাচন কমিশন গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে তাকে ডিএসসিসির নতুন মেয়র হিসেবে ঘোষণা দেয়।
২২০ দিন আগে
দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বিএনপি, অন্তর্বর্তী সরকারকে অসহযোগিতার হুঁশিয়ারি
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দাবি করেছে বিএনপি। কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, অবিলম্বে রোডম্যাপ ঘোষণা না করা হলে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হতে পারে তারা।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানায় বিএনপি।
নিরপেক্ষতা ও সুনামের স্বার্থে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও নবগঠিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে যেসব উপদেষ্টা ‘বিতর্কিত’—তাদের অবিলম্বে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হলো জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুসারে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা—যাতে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, মানবাধিকার ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাই, আমরা ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ গঠনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ অবিলম্বে ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।’
মোশাররফ বলেন, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য হওয়া উচিত— জনগণের সর্বোচ্চ আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা, যা একটি বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন। অন্যথায়, জনগণের দল হিসেবে বিএনপির পক্ষে এই সরকারকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। জোর দিয়ে বলেন, রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট ব্যক্তিদের উপদেষ্টার ভূমিকায় রাখা সরকারের ভাবমূর্তি ও জনসাধারণের আস্থা উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।
তিনি বলেন, ‘সবাই জানেন ও বোঝেন যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু উপদেষ্টা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে একটি নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত। উপদেষ্টা পরিষদে তাদের উপস্থিতি সরকারের নির্দলীয় পরিচয়কে ক্রমাগত প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তাই, সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষা করার জন্য তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের
ড. মোশাররফ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের বুধবারের মন্তব্য নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সরকারের নিরপেক্ষতা রক্ষার জন্য, তাকেও তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। আমরা অতীতে বহুবার ফ্যাসিবাদের সহযোগী কিছু উপদেষ্টার অপসারণের দাবি তুলেছি।’
দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ড. আব্দুল মঈন খান ও সালাহউদ্দিন আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।
২২০ দিন আগে
প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের
সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকালে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নির্বাহী কমিটির জরুরি বৈঠকে তিনি এই আহ্বান জানান।
বৈঠকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিষদ আলোচনা করা হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান দেশের বর্তমান উদ্ভুত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ ইউনূসকে একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: জামায়াত নির্বাচনমুখী দল, আর্ত-মানবতার মুক্তি চায়: ডা. শফিকুর রহমান
২২০ দিন আগে
কাকরাইলের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করলেন ইশরাক
রাজধানীর কাকরাইল মোড়ের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। আদালরে রায় পক্ষে থাকলেও তার সমর্থকরা অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আন্দোলনস্থলে ট্রাকের ওপর স্থাপিত অস্থায়ী মঞ্চ থেকে তিনি এই ঘোষণা দেন। আদালতের রায় দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকারকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলেও জানান এই নেতা।
ইশরাক বলেন, হাইকোর্টের রায় শোনার পর আমাদের দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাই আপাতত আমরা অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত রাখব।
তবে সরকারের কর্মকাণ্ড আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী কার্যক্রমের নির্দেশনা আসবে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ইশরাককে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছিল বুধবার(২১ মে) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে।
আরও পড়ুন: রাস্তা না ছেড়ে আরও জোরদার আন্দোলনের আহ্বান ইশরাকের
আজ তারা রাজধানীর কাকরাইল মোড়, মৎস্য ভবন মোড় ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়ে ‘অবস্থান কর্মসূচি’ পালন করেন। ফলে রাজধানীজুড়ে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
আদালতের রায়ের মাধ্যমে ইশরাকের দাবি আদায় হলেও তার সমর্থকরা অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবি জানান।
চলমান আন্দোলনের ফলে নগরবাসীর দুর্ভোগের জন্য ক্ষমাও চান ইশরাক হোসেন। বলেন, ‘এটি আমাদের পরিকল্পনার অংশ ছিল না। বর্তমান সরকার আমাদের অধিকারবঞ্চিত করতে গিয়ে এমন পর্যায়ে নিয়ে যায়। বাধ্য হয়ে এ ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হয়।’
আরও পড়ুন: ইশরাকের শপথ নিয়ে আদালতের রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে: মির্জা ফখরুল
এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর থাইল্যান্ড থেকে ফোনে ইউএনবিকে তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগের উচ্চ আদালত তারা আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে যেটি হওয়া উচিত, সেই ধরনের রায় তারা দিয়েছেন। এই রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে। এতে নিঃসন্দেহে গণতন্ত্রের আরেকটি বিজয় হয়েছে।’
ইশরাক হোসেনের শপথ নেওয়ার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান রেখে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করব, মন্ত্রণালয় আর কোনো সমস্যা তৈরি না করে দ্রুত তারা ইশরাক হোসেনের শপথের ব্যবস্থা করবেন এবং পরিস্থিতিকে সহজ করে তোলবার চেষ্টা করবেন।’
অবস্থঅন কর্মসূচির স্থগিতের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা শেষে জুলাই আন্দোলনে আহত কয়েকজনকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুন সংলগ্ন কাকরাইল মোড়ের ট্রাকের অস্থায়ী মঞ্চে ওঠানো হয়। সেখানে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায় ও এলাকার নেতারা বক্তব্য দেন। বিকাল সোয়া পাঁচটার দিকে ইশরাক কাকরাইল এলাকা ত্যাগ করেন। এরপর নেতা-কর্মীরাও চলে যেতে শুরু করেন। বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরের অন্যতম ব্যস্ত ওই সড়কটিতে যান চলাচল শুরু হয়।
২২০ দিন আগে
ইশরাকের শপথ নিয়ে আদালতের রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে: মির্জা ফখরুল
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণে হাইকোর্ট যে পথ খুলে দিয়েছে, তাকে ‘জনগণের বিজয়’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) থাইল্যান্ড থেকে ফোনে ইউএনবিকে তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগের উচ্চ আদালত তারা আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে যেটি হওয়া উচিত, সেই ধরনের রায় তারা দিয়েছেন। এই রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে। এতে নিঃসন্দেহে গণতন্ত্রের আরেকটি বিজয় হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি যে- যখন মেয়র নির্বাচন হয়, তখন সেটা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জবরদস্তি জোর করে এই ফলাফল কেড়ে নিয়ে গিয়েছিল। জনতার মেয়র হিসেবে ঢাকাবাসীসহ দেশের জনগণ ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেছিল।’
ইশরাক হোসেনের শপথ নেওয়ার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি আশা করব, মন্ত্রণালয় আর কোনো সমস্যা তৈরি না করে দ্রুত তারা ইশরাক হোসেনের শপথের ব্যবস্থা করবেন এবং পরিস্থিতিকে সহজ করে তোলবার চেষ্টা করবেন।’
আরও পড়ুন: হাইকোর্টে রিট খারিজ: ইশরাক হোসেনের শপথে বাধা নেই
এ সময় দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি মনে করি যেহেতু আদালতে এ বিষয়ে রায় হয়েছে, জনগণের বিজয় হয়েছে, তাই আর সড়ক অবরোধের প্রয়োজন নেই।’
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি সরকার এখন সংবেদনশীল আচরণ করবে এবং ইশরাকের শপথ নিশ্চিত করবে। আমাদের কর্মীদের উচিত এখন জনদুর্ভোগ এড়াতে সড়ক থেকে সরে আসা।
এর আগে, আজ (বৃহস্পতিবার) ডিএসসিসি মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণ ঠেকাতে করা একটি রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এতে মেয়র হিসেবে তার শপথ গ্রহণে আর কোনো বাধা রইল না।
নির্বাচনি রোডম্যাপ দেওয়ার আহ্বান
রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আবারও বলছি, বর্তমানে যে রাজনৈতিক সংকট, এই সংকট দূর করবার একটিমাত্র পথ তা হচ্ছে, অতি দ্রুত নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করা। এখানে অন্য কথা বলে লাভ নেই।’
আরও পড়ুন: রাস্তা না ছেড়ে আরও জোরদার আন্দোলনের আহ্বান ইশরাকের
সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটাও সুপারিশ করবে যারা জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনে আছে, তারা অতি দ্রুত যেগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে, সে গুলো তারা ঘোষণা করবেন। যেসব বিষয়ে ঐক্যমত্য করে সনদ তৈরি করবেন। সুতরাং এটি নিয়ে কোনো বাড়াবাড়ি করা, কিংবা টানাহেচড়া করা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলবে।’
‘সেই কারণে জনগণের প্রত্যাশা যে, অতি দ্রুত একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং চলমান যে সংস্কার প্রস্তাবগুলো, যেগুলোতে ঐক্যমত্য হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন করবেন। আর যেসব সংস্কার প্রস্তাবে ঐক্যমত্য হবে না, সেগুলো সনদের ভেতরে নিয়ে চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে রাখবেন।’
গত ১৪ মে চোখের অস্ত্রোপচারের জন্য বিএনপি মহাসচিব ব্যাংকক যান। পরদিন ব্যাংকক রুটনিন আই হসপিটালে তার বাম চোখে সফল অস্ত্রোপচার হয়। এরপর থেকে তিনি চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন।
২২০ দিন আগে
রাস্তা না ছেড়ে আরও জোরদার আন্দোলনের আহ্বান ইশরাকের
আদালতের রায়ে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার বাধা দূর হলেও বৃষ্টির মধ্যে রাজধানীর মৎস্যভবন মোড়ে অবস্থান নিয়ে আছেন তার সমর্থকরা। এদিকে আরও জোরালো আন্দোলন করতে সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) হাইকোর্টের রায়ের পর সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে ইশরাক বলেন, ‘আন্দোলনকারী ভাইদের বলবো— এইসব মূলা দিয়ে গাধা বস করা যায়; আমাদের না। দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টার পদত্যাগের খবর না আসা পর্যন্ত চলেছে, লড়াই চলবে। রাস্তা তো ছাড়বেন না—আরও বিস্তৃত করতে হবে।’
ইশরাকের পক্ষে হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরও কাকরাইল মসজিদ এলাকায় অবস্থান করে প্রতিবাদ সমাবেশ করছেন বিক্ষোভকারীরা। রায়ের খবর পেয়ে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা ব্যাপক আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
এ সময় স্লোগান দিয়ে নেতাকর্মীরা বলতে থাকেন, ‘এই মুহূর্তে খবর এলো, ইশরাক মেয়র হলো’, ‘এই মাত্র খবর এলো, জনগণের বিজয় হলো’।
তারা বলছেন, হাইকোর্টের রায় তাদের প্রাথমিক বিজয়। কিন্তু, তাদের নতুন আরেকটি দাবি আছে। সেটি হলো—সরকারের দুজন উপদেষ্টা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজকে পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। তারা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
ইশরাককে শপথ পড়ানোর পাশাপাশি দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে সড়কে অবস্থান করছেন তারা। যতক্ষণ না ওই দুই উপদেষ্টা পদত্যাগ করেন, তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
এর আগে, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কাকরাইল মোড়ে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন অবস্থান কর্মসূচিতে এসে ঘোষণা দেন, মেয়র পদে তাকে দায়িত্ব বুঝে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টে রিট খারিজ: ইশরাক হোসেনের শপথে বাধা নেই
পাশাপাশি তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি করেন। পরে সমর্থকদের সঙ্গে আন্দোলনস্থলে অবস্থান নেন তিনি।
এদিকে ইশরাকের মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার বাধা কাটায় ‘জনগণের বিজয়’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘বিচার বিভাগের উচ্চ আদালত তারা আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে যেটা হওয়া উচিত, সেই ধরনের রায় তারা দিয়েছেন। এই রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে।’
‘এটাতে নিঃসন্দেহে গণতন্ত্রের আরেকটা বিজয় হয়েছে। আমরা জানি যে যখন মেয়র নির্বাচন হয়, তখন সেটা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জবরদস্তি জোর করে এই ফলাফল কেড়ে নিয়ে গিয়েছিল। জনতার মেয়র হিসেবে ঢাকাবাসীসহ দেশের জনগণ ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেছিল,’ বলেন ফখরুল।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সবশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস।
ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে।
এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয় সেজন্য গত ১৪ মে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মামুনুর রশিদ।
অন্যদিকে ইশরাককে শপথ পড়ানোর দাবিতে ওইদিনই আন্দোলন শুরু করেন তার সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনে কার্যত অচল হয়ে পড়ে নগর ভবন। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
২২০ দিন আগে
তারেককে নিয়ে খলিলুরের মন্তব্যের নিন্দা বিএনপির, পদত্যাগ দাবি
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খালিলুর রহমানের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে তার বক্তব্য প্রত্যাহার ও পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে দলটি।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমানকে নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে দেশের মানুষ হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ফ্যাসিবাদের প্রতিভূ হাসিনা যেভাবে গণতন্ত্রের কফিন পেরিয়ে কথিত উন্নয়নের ইন্দ্রজাল সৃষ্টির জন্য জিয়া পরিবারকে নিয়ে কুৎসা রটাতেন, উপদেষ্টার এই মন্তব্য যেন তারই পুনরাবৃত্তি।’
‘আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, রাষ্ট্র নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ নেই। ড. খলিলুরকে অবিলম্বে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে দেশে-বিদেশে তার অবস্থান সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দেশের জনগণের সামনে হাজির করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ড. খলিলুর তার নিজের পক্ষে ওঠা প্রশ্নের জবাব না দিয়ে পলাতক স্বৈরাচারের মতো তারেক রহমানের বিপক্ষে প্রোপাগান্ডার পথ বেছে নিয়ে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করেছেন। জনগণ এসব মেনে নেবেন না।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিবের প্রশ্ন, ‘ফ্যাসিবাদের দেড় দশক ড. খলিলুর কোথায় ছিলেন? কীভাবে ছিলেন? কোন দেশে ছিলেন? বিদেশে তার স্ট্যাটাস কী ছিল? ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে তার ভূমিকা কী ছিল? অবশ্যই এ সব প্রশ্নের জবাব জনগণকে জানাতে হবে।’
আরও পড়ুন: বিদেশি নাগরিকত্ব থাকার দাবি প্রত্যাখ্যান খলিলুরের
তারেক রহমানকে নিয়ে ড. খালিলুর রহমানের বক্তব্য গণতন্ত্রের স্থায়ী সুরক্ষার জন্য ক্ষতিকর বলেও মন্তব্য করেন এই বিএনপি নেতা। বলেন, ‘এখনও যেন লোকসমাজে উজ্জ্বলতর তারেক রহমানের ভাবমর্যাদাকে বিনষ্ট করার জন্য প্রতিশোধের চোরা স্রোতে আঘাত হানার চেষ্টা চলছে—নানা মহল থেকে, নানা দিক থেকে।’
এর আগে, গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘কেবল আমি আমেরিকায় থেকেছি বলে আমাকে যদি বলা হয়— আপনি বিদেশি নাগরিক; তাহলে কালকে তারেক রহমান সাহেবকেও সে কথা বলতে হবে। আমাকে ঢিল নিক্ষেপ করলে সেই ঢিল কিন্তু অন্যের ওপর গিয়েও পড়তে পারে!’
তবে এ বিষয়ে রিজভীর বক্তব্য, “ড. খলিলুর রহমান (তারেক রহমানের) যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত জীবন প্রসঙ্গটি যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিমূলক। ‘ধান ভানতে শিবের গীত’ গাওয়ার মতো।”
২২১ দিন আগে
জনসাধারণের হৃদয়ের স্পন্দন বুঝুন, গণতান্ত্রিক উত্তরণ ত্বরান্বিত করুন: মঈন খান
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণ ত্বরান্বিত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, দেশের জনগণ দ্রুত অসহিষ্ণু হয়ে উঠতে পারে। একসময় যাদের প্রতি তারা শ্রদ্ধাশীল ছিল, তাদের বিরুদ্ধেও দাঁড়াতে পারে।
বিশ্ব গণমাধ্যমের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বুধবার (২১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স সোসাইটি ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় শহীদ জিয়ার ভূমিকা’ শীর্ষক অনুষ্ঠান প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মঈন খান বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছি। আমরা আশা করি সরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে গণতন্ত্রে উত্তরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।’
দেশের জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার চেষ্টা না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন।
তিনি বলেন, ‘আমি সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ আবেগপ্রবণ ও খুব দ্রুত অসহিষ্ণু হয়ে ওঠে। কারণ তারা কঠিন পরিস্থিতিতে বাস করে। জনগণের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য ও মনস্তত্ত্ব এমন যে, তারা আজ যাদের খুব প্রশংসা করে, তারা আগামীকাল তাদের পায়ের তলায় পিষে ফেলতে দ্বিধা করবে না। যারা এই সত্য বুঝতে ব্যর্থ হবে, তারা ইতিহাসের পাতায় পরাজিত হয়ে থাকবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, তার দলও মৌলিক রাষ্ট্রীয় সংস্কার চায়, তবে রাষ্ট্রের পুনর্গঠনের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করা উচিত নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। যতদিন পৃথিবী থাকবে, সংস্কার অব্যাহত থাকবে। কিন্তু সংস্কার এবং গণতন্ত্র পারস্পরিকভাবে একচেটিয়া বা ধারাবাহিক নয়—তারা একসঙ্গে এগিয়ে যেতে পারে। এটি মানব সভ্যতার ইতিহাস। আমি আশা করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই সত্যটি বুঝতে পারবে।’
ড. মঈন বলেন, বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো দেশের কল্যাণের জন্য ঐক্য। ‘আমাদের জাতির কল্যাণের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কিন্তু আমি বাকশালের পক্ষে কথা বলছি না—ঐক্যের মধ্যে বৈচিত্র্য থাকতে হবে।’
তিনি অভিযোগ করেন, একটি মহল মিথ্যা ও বানোয়াট প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা দাবি করছে যে, বিএনপি ক্ষমতায় এলে স্বৈরাচার ফিরে আসবে।
বিএনপি নেতা জোর দিয়ে বলেন, এই ধরনের মিথ্যা বর্ণনা দিয়ে দেশের ১৮ কোটি মানুষকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব হবে না। ‘বিএনপি অতীতে স্বৈরাচারী শক্তি হিসেবে কাজ করেছে—এমন উদাহরণ কেউ দিতে পারবে না।’
আরও পড়ুন: ভোট থেকে জনগণের মনোযোগ সরাতে ‘নাটক’ মঞ্চস্থ করা হচ্ছে: বিএনপির ফারুক
তিনি বলেন, যারা দলের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য, বিভ্রান্তি ও অপপ্রচার ছড়াচ্ছে—তাদের যথাযথ জবাব বিএনপিকে দিতে হবে।
ড. মঈন ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান। বলেন, তারা গর্বের এক নতুন অধ্যায় তৈরি করেছে। ‘কিন্তু আমি তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই যে, বাংলাদেশে এই ধরনের সম্মান বজায় রাখা কঠিন।’
বাংলাদেশের জনগণ অত্যন্ত রাজনীতি সচেতন উল্লেখ করে তিনি সতর্ক করে বলেন, একটি মাত্র অপকর্ম জনগণের চোখে শত শত ভালো কাজকে ম্লান করে দিতে পারে।
বিএনপি নেতা বলেন, জাতির দায়িত্ব নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। ‘যদি তারা পর্যাপ্ত প্রস্তুতি বা যোগ্যতা ছাড়াই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে—তাহলে জাতির ধ্বংস অনিবার্য।’
২২১ দিন আগে