বিশ্ব
যুদ্ধ শেষ হলেও মরণফাঁদে সিরীয়রা
সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের অবসান হয়েছে, বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন হয়েছে। কিন্তু দেশটির হতভাগা সাধারণ মানুষের আশেপাশে এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে মৃত্যুর বিভীষিকা। কে, কখন কীভাবে মারা যাবেন; তাও যে নিশ্চিত নয়। এখনও দেশটিতে প্রতিদিন কেউ না-কেউ প্রাণ হারাচ্ছেন বা মারাত্বকভাবে জখম হচ্ছেন, তাদের পায়ের তলায় এখনও মরণফাঁদ রয়ে গেছে।২১ বছর বয়সী এক তরুণ সুলায়মান খলিল, দুর্বার গতিতে ছুটে চলার বয়স এখন যার। চার মাস আগে দুই বন্ধুর সঙ্গে সিরিয়ার একটি বাগানে জলপাই তোলার কাজ করছিলেন তিনি। তাদের পায়ের নিচের মাটিতে তখনও যুদ্ধের ভয়াবহ স্মৃতি হিসেবে যে মারণাস্ত্র লুকিয়ে আছে তাতো জানতেন না তারা।
হঠাতই মাটিতে পড়ে থাকা একটি মাইন তাদের নজরে আসে। আতঙ্কিত খলিল ও তার বন্ধুরা সেখান থেকে পালাতে গেলেন, কিন্তু খলিলের বিধি বাম। একটি ল্যান্ড মাইনের (মাটিতে পুঁতে রাখা মাইন) ওপর পা রাখামাত্রই তা বিস্ফোরিত হয়।
ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বন্ধুরা অ্যাম্বুলেন্সের খোঁজে ছুটে গেলেন, কিন্তু ২১ বছরের খলিল ভেবেছিলেন, তারা তাকে ফেলে রেখে গেছেন।
আরও পড়ুন: সিরিয়াকে অস্থিতিশীল করে তুলছে ইসরায়েল: এরদোগান
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খলিল বলেন, ‘আমি হামাগুড়ি দিয়ে সরে যেতে শুরু করি, তখনই দ্বিতীয় ল্যান্ড মাইনটি বিস্ফোরিত হয়। প্রথমে মনে হয়েছিল, আমি মারা গেছি। বাঁচবো বলে আশা ছিল না।’
তিনি জানান, ‘প্রথম বিস্ফোরণে তার বাঁ পা গুরুতরভাবে ক্ষত-বিক্ষত হয়। পরের বিস্ফোরণে ডান পা হাঁটুর ওপর থেকে উড়ে যায়। তিনি নিজের শার্ট ছিঁড়ে কাটা স্থানে টুর্নিকেট (রক্ত বন্ধ করার জন্য) বাঁধেন আর চিৎকার করতে থাকেন। চিৎকার শুনে কাছাকাছি থাকা একজন সেনা এসে তাকে উদ্ধার করেন।’
খলিল সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশের বাসিন্দা। নিজের পা হারালেও প্রাণে বেঁচে গেছেন তিনি। একটি কৃত্তিম পায়ের অপেক্ষায় রয়েছেন এই তরুণ—যেন তিনি কাজে ফিরে যেতে পারেন এবং তার পরিবারকে সহায়তা করতে পারেন।
প্রায় ১৪ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের সময় বাসার আল-আসাদের সেনাবাহিনী, তাদের মিত্ররা ও বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো মাটির নিচে মাইন পুঁতে রাখতেন শত্রুপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় প্রতিশোধমূলক হামলায় নিহত ১ হাজার ছাড়াল
আসাদের পতনের পর বিস্ফোরক দিয়ে দূষিত ওই এলাকাগুলোতে সাধারণ মানুষের আনাগোনা শুরু হয়েছে। এসব মাইনগুলো বিস্ফোরিত হয়ে হতাহতের সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে বলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচএরডব্লিউ) এক প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
ত্রাণকর্মীদের সহায়তাদানকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএনএসওয়ের তথ্যমতে, গত ৮ ডিসেম্বর আসাদ সরকারের পতনের পর থেকে এসব ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৪৯ জন, যার মধ্যে ৬০ জন শিশু। আহত হয়েছেন প্রায় ৪০০।
মাইনগুলো সরানো সময়সাপেক্ষ কাজ
এইচএরডব্লিউয়ের সংকট ও সংঘাত বিষয়ক জ্যেষ্ঠ গবেষক রিচার্ড ওয়্যার বলেন, ‘জরুরিভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এই মাইনগুলো তুলে ফেলতে হবে। নাহলে এত বছর পর নিজেদের জমি ফিরে পেতে ফিরে আসা বাসিন্দাদের হতাহতের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।’
সিরিয়াজুড়ে বিশেষত ইদলিবের গ্রামীণ অঞ্চলগুলোতে এখনো মাটির নিচে কয়েক হাজার মাইন পুঁতে রাখা আছে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় এক সপ্তাহে নিহত অন্তত ৩৭০: জাতিসংঘ
সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই মাইনগুলো নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের আহমদ জোমা বলেন. ‘ঠিক কি পরিমাণ মাইন রয়েছে, তার সঠিক তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে এগুলো সরাতে বেশ সময় লাগবে।’
বাসিন্দাদের মানসিক অশান্তি
ইদলিবের গ্রামীণ অঞ্চলগুলোর বাসিন্দাদের জীবিকার প্রধান অবলম্বন কৃষি। কিন্তু এখন তারা প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকেন; কখন মাইন বিস্ফোরিত হয়। কয়েকদিন আগে জমিতে কাজ করা সময় ট্রাক্টরের নিচে পড়ে একটি মাইন বিস্ফোরিত হয়ে কয়েকজন কৃষক গুরুতর আহত হয়েছেন।
জোমা বলেন, ‘এখানের মাইনগুলো এমনভাবেই ডিজাইন করা হয়েছে যেন, সেটি কোনো ব্যক্তি বা হালকা কোনো যানবাহনের চাপেই বিস্ফোরিত হয়ে যায়।’
জোমা আরও বলেন, ‘এই মাইনগুলো নিষ্ক্রিয় করতে যে ধরনের আধুনিক সরঞ্জাম প্রয়োজন আমাদের কাছে তার স্বল্পতা রয়েছে। যেগুলো চোখে দেখা যায় তা নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে। বাকিগুলো খোঁজার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রয়োজন।’
মাইন নিষ্ক্রিয় করা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ কাজ করতে গিয়ে অনেক সেনাই নিজেদের অঙ্গ হারিয়েছেন।’
প্রতিদিনই কেউ না কেউ প্রাণ হারাচ্ছেন
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মাইন নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে প্রাণ হারান ৩৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ। তিনি সিরিয়ান রিপালিকান গার্ডের মাইন পুঁতে রাখা ও নিস্ক্রিয় করার প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত একজন সদস্য ছিলেন।
তার ভাই সালাহ জানান, ‘মা তাকে বারণ করেছিলেন মাইন নিস্ক্রিয় করার কাজে যেতে। তা সত্ত্বেও তিনি এই বলে গিয়েছিলেন— আমিও বা অন্যরাও যদি না যাই, তাহলে যাবে কে? প্রতিদিনই সেখানে কেউ না কেউ মারা যাচ্ছে।’
২৩ মিনিট আগে
বোমার ভয়ের চেয়েও ক্ষুধায় কাতর ফিলিস্তিনিরা
‘আমার নিজের সামান্য খাবার থেকে প্রায়ই আমার ছেলেকে ভাগ দিতে হয়, এই ক্ষুধাতেই আমি মারা যাবো—ধীরে ধীরে আমাকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’ বলছিলেন ৪৪ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হিকমাত আল মাসরি।
উপত্যকাটির শিশুরা গড়ে দিনে একবারেরও কম খাবার পাচ্ছে। দেখা যায়, বাবা-মা নিজের খাবারটুকু তুলে দিচ্ছেন সন্তানের মুখে। নিজেরা থাকছেন অভুক্ত। অনেক সময় সন্তানের মুখে তুলে দেওয়ার খাবারটুকুও পান না তারা। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এমন খবর দিয়েছে।ইসরায়েলের বোমার চেয়ে যেন ক্ষুধায় বেশি কাতর ফিলিস্তিনিরা। গত সাত সপ্তাহ ধরে গাজা উপত্যকায় খাদ্যসহ সব ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে গাজাবাসীর দুর্ভোগ চরম সীমায় পৌঁছেছে। হিকমাত বলেন, ‘আমাদের দুঃখ দুর্দশার কথা কেউ কল্পনাও করতে পারবে না, মৃত্যু আমাদের চারপাশ দিয়ে ঘিরে রেখেছে।’
গত ২ মার্চ গাজা উপত্যকায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এতে গাজাবাসীর জীবন অবর্ণনীয় কষ্ট ও হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা, চিকিৎসাকর্মী ও মানবাধিকার কর্মীরা।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৪৫ ফিলিস্তিনি নিহত
একদিকে ইসরায়েলের অবিরাম বোমাবর্ষণ, অন্যদিকে গাজার মানুষের কাছে না আছে খাবার, না পানি, না বিদ্যুৎ—জেনারেটরও শেষের পথে। অন্ধকারের অতলে পতিত হতে যাচ্ছে লাখ লাখ অসহায় মানুষ।
মানবিক সহায়তা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এবারের সংকট সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে মত দিয়েছেন অনেকে।
এরই মধ্যে অসহায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণ বাঁচাতে ছুটতে হচ্ছে এখান থেকে সেখানে। যদিও কোথাও তাদের নিরাপত্তা নেই। হাসপাতালের মতো বেসামরিক স্থাপনায় আবারও হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলের সেনারা। এদিকে খাদ্য, জেনারেটরের জ্বালানি, চিকিৎসা সরঞ্জাম সবই শেষের পথে। নতুন করে কিছু প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল।
গত ১৮ মার্চ একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে গাজার ওপর পুনরায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামাসের কাছে থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি না দিলে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে বারবার জানিয়ে আসছে ইসরায়েলের অনেক রাজনীতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।
ইসরায়েলের দাবি, নিরাপত্তার স্বার্থে গাজায় এই অবরোধ দিয়েছেন তারা, ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছেনা। যেটি একটি যুদ্ধাপরাধ।
আরও পড়ুন: গাজার ৫০ শতাংশ ইসরায়েলের দখলে, নিজ ভূমিতে পরবাসী ফিলিস্তিনিরা
আট সপ্তাহ হতে চলেছে গাজায় এই অবরোধ জারি রেখেছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন থাকায় তেমন কোনো আন্তর্জাতিক চাপ ছাড়াই এই অবরোধ বহাল রাখতে পারবে বলে আত্মবিশ্বাসী নেতানিয়াহু।
এদিকে গাজায় দীর্ঘমেয়াদে সেনাদের উপস্থিতি বজায় রাখা এবং ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে তাদের নিজভূমি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার আশঙ্কাও তীব্র হচ্ছে।
গাজায় নিরাপত্তা বাফার জোন তৈরির নামে মূলত ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে উপত্যকাটির ভূমি দখল করার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল— এমনই ধারণা বিশেষজ্ঞদের। পাশাপাশি গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর ব্যাপারটিও সেনাবাহিনী ও বেসরকারি ঠিকাদারদের হাতে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসরায়েলের।
এতে গাজায় সংকট আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনিরা এখন ইসরায়েলের বিমান হামলার চেয়ে বেশি দুর্ভিক্ষকে ভয় পাচ্ছেন।
যু্দ্ধবিরতির সময় যে খাদ্য সহায়তা এসেছিল তা প্রায় শেষ। উদভ্রান্তের মতো ত্রাণ দেওয়া তাঁবুগুলোতে খালি হাঁড়ি নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন গাজার মানুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক তথ্যমতে, যুদ্ধের সময় বাজারগুলোতে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে এক হাজার ৪০০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: গাজায় ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতালে ইসরায়েলের হামলা
অক্সফামের সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, ফিলিস্তিনের শিশুরা প্রতিদিন গড়ে এক বেলারও কম খাবার পায়। যদিও নতুন করে ইসরায়েলের আদেশে পায় ৪ লাখ ২০ হাজার বাসিন্দা সরে যেতে হচ্ছে অন্য আশ্রয়ের খোঁজে তাই সঠিক পাওয়াটা মুশকিল ছিল।
গাজার দেইর আল বালাহর চিকিৎসাকর্মী আমান্দে বাজেরোল জানান, উত্তর গাজা থেকে ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে ফিলিস্তিনিরা এই শহরে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ রাস্তায়, কেউবা ভাঙা বাড়িগুলোর মধ্যে তাঁবু টানিয়ে থাকছেন; যা যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে।তিনি বলেন, ‘এত মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার মতো জায়গা আমাদের নেই। বার্ন ক্লিনিকগুলোতে ১০টার মধ্যেই রোগীর ভর্তি নেওয়া বন্ধ করতে হয়। কারণ আমরা ঔষধের মজুত যত বেশিদিন সম্ভব টিকিয়ে রাখতে চাইছি।’
উত্তর গাজা ও দক্ষিণ গাজা রাফায় ব্যাপকভাবে অভিযান চালিয়ে বর্তমানে উপত্যকাটিতে পার্শ্ববর্তী মিসর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। জাতিসংঘের তথ্যমতে, ফিলিস্তিনের প্রায় ৭০ শতাংশ ভূমিই এখন ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে।
মানবাধিকার ও ত্রাণকর্মীরা বলছেন, তাদের কাজ করার পরিধি ক্রমেই সীমিত হয়ে আসছে। কারণ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ইসরায়েল নিয়ম-কানুন ভঙ্গ করে চলেছে। এরমধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে খান ইউনিসের আল নাসের হাসপাতাল ও গাজা শহরের আল-আহলি হাসপাতালে হামলার ঘটনা উল্লেখ করে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা হামাস যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে হাসপাতালে ওই হামলা চালিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ত্রাণকর্মী বলেন, ‘গাজার বাসিন্দারা আমাদের আশেপাশে থাকতে চায়। তাদের ধারণা, আমরা সঙ্গে থাকলে আইডিএফ কম হামলা চালাবে তাদের ওপর।’
তিনি বলেন, ‘শুরুর দিকে আমাদের দুই কিলোমিটার দূরত্বে হামলা চালানো হতো। ফলে আমরা সরে যেতে পারতাম। ধীরে ধীরে সেটি ৩০০ মিটারে নেমে আসে, এখন তো ৩০ মিটারে চলে এসেছে। একদম পাশেই হামলা চালানো হয়।’
ওই ত্রাণকর্মী আরও বলেন, ‘কখনো কখনো সরে যাওয়ার জন্য ২০ মিনিট সময় দেওয়া হয়, যা অসুস্থ রোগীদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য মোটেই পর্যাপ্ত নয়। আমাদের ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে।’
এ প্রসঙ্গে আইডিএফ জানায়, হামাস ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নিজেদের কার্যক্রম চালায়। আর বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েই তারা সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়, যেটি আন্তর্জাতিক আইন মেনেই করা হয়।
তাদের অভিযোগ, গাজাতে যে খাদ্য সহায়তা পৌঁছায় তার বড় একটি অংশ আত্মসাৎ করে হামাস। নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার পাশাপাশি বেসামরিক বাসিন্দাদের কাছে চড়াদামে এগুলো বিক্রি করতে তারা এই কাজ করে।
আরও পড়ুন: ইসরাইলকে এআই সরবরাহের প্রতিবাদ: মাইক্রোসফটের ২ প্রকৌশলী বরখাস্ত
গত সপ্তাহে ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সরিয়ে বেসরকারি ঠিকাদারদের দিয়ে গাজায় ত্রান পাঠাবে ইসরায়েল। তবে কবে নাগাদ এই কার্যক্রম শুরু হবে তার কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি।
এদিকে, শিগগিররই গাজায় মানবিক সহায়তা না পাঠানো হলে তীব্র মানবিক সংকট তৈরি হবে বলে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে।
এরই মধ্যে আরেকটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার চেষ্টা করে যাচ্ছে মধ্যস্ততাকারী দেশগুলো। তবে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ কিংবা ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহারের মতো মৌলিক বিষয়ে মতপার্থক্য থাকায় কোনো পক্ষই ছাড় দিতে রাজি নয়। তাই যুদ্ধবিরতি কার্যকরের সম্ভাবনা ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে উঠেছে।
৫ ঘণ্টা আগে
ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক চুক্তি কি তবে হতে চলেছে?
ইরানের পারমাণবিক শক্তি অর্জনের প্রচেষ্টা যেন পশ্চিমাদের ঘুম হারাম করে দিয়েছে। একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এরপরও যখন ইরানের সামরিক কর্মকর্তারা পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন, তখন পশ্চিমা মোড়ল যুক্তরাষ্ট্র একটি চুক্তি করতে আহ্বান জানিয়েছে, নাহলে আক্রমণ চালানো হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে একটি চুক্তি করতে দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে তেহরান। স্থানীয় সময় শনিবার (১৯ এপ্রিল) ইতালির রাজধানী রোমে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে গত শনিবার (১২ এপ্রিল) ওমানের রাজধানী মাস্কাটে প্রথম দফায় বৈঠক করে তেহরান ও যুক্তরাষ্ট্র।
হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয় মেয়াদে ফিরেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নানা পদক্ষেপ নিয়ে চলেছেন ইরানের বিরুদ্ধে। ইরান যাতে পারমাণবিক শক্তি অর্জন করতে না পারে, সে লক্ষ্যে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন তিনি। এমনকি বিভিন্ন সময় ইরানে সামরিক অভিযান চালানোর হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
এরপরও একটি চুক্তি করা যায় বলে মনে করেছেন ট্রাম্প। এজন্য ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে চিঠিও লিখেছেন তিনি। তবে খামেনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র হামলা করলে ইরানও বসে থাকবে না।
আরও পড়ুন: প্রথম দফার বৈঠক শেষ, আরও আলোচনায় সম্মত ইরান-যুক্তরাষ্ট্র
এমন পরিস্থিতিতে চুক্তি আদৌ হবে কিনা বা কী কী বাধা রয়েছে; দেশদুটির একটি চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার ক্ষেত্রে সে বিষয়ে একটু আলোকপাত করা যাক।
ট্রাম্প কেন খামেনিকে চিঠি লিখলেন?
ট্রাম্প গত ৫ মার্চ ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতাকে আলোচনায় আসার জন্য একটি চিঠি লেখেন। পরদিন টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এসে নিজেই বলেন, ‘আমি তাদের একটি চিঠি লিখেছি। চিঠিতে বলেছি, আপনারা আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসুন, নাহলে আমরা সামরিক হামলা চালাতে বাধ্য হব। সেটি কিন্তু খুব খারাপ হবে।’
এমন চিঠি ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদেও লিখেছিলেন। খামেনি বেশ রাগত স্বরেই সেই চিঠির জবাব দিয়েছিলেন। এবারের হুমকিও মুখেও কড়া জবাবই দিয়েছেন তিনি। খামেনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালালে ইরানও পাল্টা হামলা চালাবে।’ প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার লক্ষ্যে একটি চিঠি উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনকেও লিখেছিলেন। চিঠির জবাবে ট্রাম্পের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎও করেছিলেন। তবে পারমাণবিক কোনো চুক্তি কিন্তু হয়নি। এখনও উত্তর কোরিয়া নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েই যাচ্ছে।
প্রথম দফার বৈঠকে কি হলো
গত সপ্তাহে আরব দেশ ওমানে প্রথম দফায় বৈঠকে বসেছিলেন তেহরান ও যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। পরে মুখোমুখি আলাচনায় বসেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। এমনকি তারা পরবর্তী ধাপের আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যেতে সম্মতও হন।
আরও পড়ুন: ইরানে ভয়েস অব আমেরিকার সাবেক সাংবাদিকের ১০ বছরের কারাদণ্ড
বৈঠক শেষে এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে উইটকফ জানান, ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী, ইরান ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ উপাদান মজুদ রাখতে পারে। অথচ এই চুক্তি থেকেই ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে বের হয়ে গিয়েছিলেন।
এরপর এক বিবৃতিতে তিনি জানান, ‘ইরানের সঙ্গে তখনই একটি চুক্তি সম্ভব হবে, যদি সেটি ট্রাম্পের চুক্তি হয়।’
উইটকফের এই বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আসা এক ধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও দেশটির অন্যান্য নেতারা।
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিমাদের এত চিন্তা কেন?
কয়েক দশক ধরেই ইরান দাবি করে আসছে তারা শান্তিপূর্ণভাবেই পারমাণবিক কর্মসূচি চালাচ্ছে। দেশটি বর্তমানে ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়োম সমৃদ্ধ করেছে, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছাকাছি। পারমাণবিক অস্ত্র নেই এমন আর কোনো দেশের কাছে এই পর্যায়ে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম নেই বলে জানা যায়।
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী, ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ ও ৩০০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত মজুত রাখার অনুমতি রয়েছে ইরানের। তবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের কাছে বর্তমানে প্রায় ৮ হাজার ৩০০ কিলোগ্রামের মতো ইউরেনিয়াম মজুত রয়েছে এবং দেশটি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্যমতে, ইরান এখনও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি শুরু না করলেও তারা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
আয়াতুল্লাহ খামেনির এক উপদেষ্টা আলি লারিজানি বলেন, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা থাকলেও তারা সেটি করছে না। আইএইএর তদন্তেও দেশটির কোনো আপত্তি নেই। তবে এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল যদি তাদের ওপর হামলা চালাতে চায়, তাহলে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা ছাড়া তাদেরর উপায় থাকবে না বলেও সতর্ক করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক ইস্যুতে যদি আপনারা ভুল পদক্ষেপ নেন, তাহলে ইরানও সেই পথেই এগোবে। কারণ তাদেরও তো নিজেদের রক্ষা করতে হবে।’
ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এত খারাপ কেন?
এক সময় ইরান ছিল মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় মিত্র। ইরানের তৎকালীন শাসক শাহ মোহাম্মদ পাহলভির আমলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের স্বর্ণযুগ চলেছিল বলা যায়।
পাহলভি যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র কিনতেন, এমনকি ইরান থেকে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে নজরদারি করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থাকে (সিআইএ) গোপন তথ্যকেন্দ্র পরিচালনার অনুমতিও দিয়েছিলেন তিনি। সিআইএর সমর্থিত অভ্যুত্থানেই পাহলভির গদি পাকাপোক্ত হয়েছিল বলে বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়।এরপর ১৯৮৯ সালে গণবিক্ষোভের মুখে ক্যান্সার আক্রান্ত পাহলভি ইরান থেকে পালিয়ে যান। পরে আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খামেনির নেতৃত্বে ইসলামিক বিপ্লব সংঘটিত হয় এবং ইরানে ধর্মীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়।
ওই বছরের শেষের দিকে পাহলভিকে ফেরত পাঠানোর জন্য তেহরানের মার্কিন দূতাবাসে হামলা চালান ইরানের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ৪৪৪ দিনের জিম্মি সংকট তৈরি হয় এবং ওয়াশিংটন-তেহরানের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘টাইট’দেওয়া যায়, তা বের করতেই ভিয়েতনামে শি: ট্রাম্প এরপর ১৯৮০ সালে ইরান-ইরাক যুদ্ধে ইরাকের সাদ্দাম হোসেনকে সমর্থন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সে সময় একদিনের হামলায় ইরানের নৌশক্তি ধ্বংস করেন মার্কিন সেনারা। পরবর্তীতে একটি ইরানি বেসামরিক বিমান ভুলবশত যুদ্ধবিমান ভেবে গুলি করে ভূপাতিত করে যুক্তরাষ্ট্র, এতে ২৯০ জন নিহত হন।
এরপরে কয়েক দশক ধরেই দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা চলমান থাকে। এরই মধ্যে ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে বিশ্ব শক্তিগুলোর সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করে ইরান। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও তেহরানের মধ্যকার সম্পর্কের পারদ কিছুটা গলতে শুরু করে। তবে প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় এসে একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে সেই চুক্তি থেকে বের করে আনেন ট্রাম্প।
এখন আবার তিনিই একটি চুক্তি করতে চাইছেন। বলা চলে জোর করে চুক্তি করাতে চাইছেন, কারণ ইরান চুক্তিতে রাজি না হলে হামলা চালানোর হুঁশিয়ারিও দিয়ে আসছেন ট্রাম্প।
এ অবস্থায় আলোচনার ফলাফলে কি হবে সেটিই দেখার অপেক্ষায় অনেকে। কোন কোন শর্তে ট্রাম্প চুক্তি করতে চান আর ইরান সেগুলোর কতটুকু মান্য করে সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা।
১ দিন আগে
কঙ্গোতের নৌদুর্ঘনায় নিহত বেড়ে ১৪৮, নিখোঁজ শতাধিক
কঙ্গো নদীতে একটি ভয়াবহ নৌকা দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এতে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন শতাধিক মানুষ।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) দেশটির কর্তৃপক্ষ এসব হতাহত ও নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন মঙ্গলবারের ওই দুর্ঘটনার সময় নৌকাটিতে প্রায় ৫০০ জন যাত্রী ছিলেন।
তারা জানিয়েছেন, এদিন উত্তর-পশ্চিম কঙ্গোর এমবানডাকার কাছে এইচবি কঙ্গোলো নামের মোটরচালিত কাঠের নৌকাটিতে আগুন ধরে ও ডুবে যায়।
নদী কমিশনার কম্পেটেন্ট লয়োকোর জানায়, একজন নারী নৌকাটিতে রান্না করার সময় আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা গেছে। এরপর আতঙ্কের কারণে নারী ও শিশুসহ অনেক যাত্রী নদীতে ঝাঁপ দেন—যাদের অনেকেই সাঁতার জানতেন না।
নৌকাটিতে থেকে বেশ কিছু যাত্রীকে উদ্ধার করা হলেও বেঁচে যাওয়া অনেকে গুরুতর দদ্ধ হয়েছেন। রেড ক্রস এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহায়তায় দুর্ঘটনায় এখনো নিখোঁজ থাকাদের উদ্ধারে প্রচেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: পদ্মায় ঘুরতে গিয়ে নৌকাডুবি, নিখোঁজ স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার
ইকুয়েটুর প্রদেশের সিনেটর জিন-পল বোকেৎসু বোফিলি এই দুর্ঘটনার ভয়াবহতা উল্লেখ করে বলেন, ‘৫০০ যাত্রীর মধ্যে প্রাণহানির সংখ্যাটা বেশ বড়।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ১৫০ জনেরও বেশি দগ্ধ হওয়ায় জরুরি মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
নৌকা দুর্ঘটনা গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে দুঃখজনকভাবে প্রায়ই ঘটে থাকে। আর এসব দুর্ঘটনার জন্য অতিরিক্ত যাত্রী বহন, রাতে অনিরাপদ ভ্রমণ এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা নীতি শিথিলতা দায়ী। দুর্বল অবকাঠামো এবং সীমিত সড়ক যোগাযোগের কারণে অনেকে কঙ্গোর নদীপথে ভ্রমণের উপর নির্ভরশীল, যা ঝুঁকিকে বাড়িয়ে তোলে।
বোফিলি বলেন, ‘আমাদের সুন্দর কঙ্গো নদী এবং আমাদের দেশের হ্রদগুলো দুঃখজনকভাবে জনগণের জন্য গণমৃত্যুর কারণে পরিণত হয়েছে। এটি চলতে পারে না।’
১ দিন আগে
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৪৫ ফিলিস্তিনি নিহত
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও অনেকে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ইসরায়েলি বিমান হামলায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স।
সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেছেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরের বারাকা পরিবারের একটি আবাসিক বাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েলি বিমান। এতে ১০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া একটি নাপিতের দোকানে বিমান হামলার পর দুই শিশু ও এক নারীসহ আরও ৬জন নিহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘খান ইউনিসে একাধিক হামলায় ৮ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে আরও দুজন নিহত হয়েছেন।’
বাসাল বলেন, উত্তরে, তাল আল-জাতার এলাকায় মাকদাদ পরিবারের বাড়িতে বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। গাজা শহরের দুটি বাস্তুচ্যুত তাঁবুতে বিমান হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছেন।
সংবাদ বিবৃতিতে সিভিল ডিফেন্স সতর্ক করে দিয়েছে, জ্বালানি সংকটের কারণে আগামী দিনে তাদের জরুরি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতির জন্য তারা সাহায্য এবং জ্বালানি প্রবেশের উপর ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করেছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় আরও ১৯ ফিলিস্তিনি নিহত
ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আইডিএফ সৈন্যরা গাজায় সশস্ত্র সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে তাদের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের অবকাঠামো ধ্বংস করছে এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা করছে।
আইডিএফ আরও জানায়, ‘ইসরায়েলি বিমান বাহিনী গাজা জুড়ে প্রায় ৪০টি সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। এরমধ্যে সন্ত্রাসী, সামরিক কাঠামো এবং অস্ত্র সংরক্ষণাগার রয়েছে।’
২ দিন আগে
ইসরায়েলি হামলায় আরও ১৯ ফিলিস্তিনি নিহত
ইসরায়েলের বর্বর হামলায় গাজায় আরও ১৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে উপত্যকাটির সিভিল ডিফেন্স। তবে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৫ ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন ৮৯ জন।
স্থানীয় সময় বুধবার (১৬ এপ্রিল) ভোর থেকে চালানো ইসরায়েলি হামলায় ১৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাশাল।
তিনি জানান, বুধবার উত্তর গাজার আল-তুফফাহ এলাকায় একটি বাড়িতে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও ছিলো। এছাড়া, উত্তর গাজার জাবালিয়া এলাকায় তিন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরায়েলি সেনারা। এসময় আরও ৫ জন আহত হন।
বাশাল জানান, একই দিনে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকায় ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় দুই শিশুসহ অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছে। এছাড়াও মধ্য গাজায় একটি তাঁবুতে খাবার বিতরণ করার সময় বিমান হামলায় আরও এক ফিলিস্তিনি নিহত হন।
আরও পড়ুন: গাজার হাসপাতালে ফের ইসরায়েলি হামলা, চিকিৎসক নিহত
ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা সূত্রগুলোর তথ্যমতে, পূর্ব গাজা, উত্তর গাজার বেইত হানুন ও বেইত লাহিয়া অঞ্চলে বুধবার অবিরাম বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।
এদিকে, হামাসের সশস্ত্র শাখা কাশেম ব্রিগেড এক বিবৃতিতে জানায়, গাজার আল ওয়াফা হাসপাতালের কাছে ইসরায়েলের তিনটি ‘মারকাভা ৪’ ট্যাংকে হামলা চালিয়েছে তারা। তবে এই হামলার বিষয়ে কোনো প্রতিক্রয়া জানায়নি ইসরায়েলের সেনারা। বুধবারের পৃথক এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে হামলা চালানোর পর থেকে এ পর্যন্ত হামাসের ১১ জন উচ্চপদস্ত কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে তারা।
হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় বুধবার উপত্যকাটিতে ২৫ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এ সময় আহত হন আরও ৮৯ জন।
ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনে গাজা নগরী ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে নিহত ও আহতের সংখ্যা।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি নৃশংসতার প্রতিবাদে আজ ঢাকায় 'মার্চ ফর গাজা'
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে চালানো ইসরায়েলি হামলায় এক হাজার ৬৫২ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় মোট প্রাণ হারিয়েছেন ৫১ হাজারের বেশি মানুষ। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
৪ দিন আগে
গাজার হাসপাতালে ফের ইসরায়েলি হামলা, চিকিৎসক নিহত
গাজা উপত্যকার একটি ফিল্ড হাসপাতালের ফটকে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে প্রাণ হারিয়েছেন এক চিকিৎসক এবং আহত হয়েছেন আরও ৯ জন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) গাজার মুয়াসি এলাকার কুয়েতি ফিল্ড হাসাপাতালে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির মুখপাত্র সাবের মোহাম্মদ।তিনি জানান, ‘আহতরা সবাই রোগী ও চিকিৎসক। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা সংকটজনক।’ সাবের বলেন, ‘এই এলাকায় হাজারো বাস্তুহারা ফিলিস্তিনি তাঁবু গেড়ে বাস করেন।
তবে এই হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।
গত ১৮ মাসের যুদ্ধে গাজার বেশিরভাগ হাসপাতালই ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। এতে উপত্যকাটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
এর আগে রবিবার (১৩ এপ্রিল) গাজার ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতাল বা আল-আহলি আরব ফিল্ড হাসপাতালটি ইসরায়েলের হামলায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতালে ইসরায়েলের হামলা
গাজার সিভিল ডিফেন্স রেসকিউ টিম জানিয়েছে, হামলায় হাসপাতালের অপারেশনের ভবন, অক্সিজেন স্টেশন ও নিবির পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েলি সেনারা জানায়, হামাসের একটি কমান্ডকে লক্ষ্য করে ওই হাসপাতালে বিমান হামলা চালিয়েছে সেনাবাহিনী। যদিও এই বক্তব্যের সমর্থনে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি তারা।
এদিকে, ইসরায়েলের চলমান হামলায় কারণে ইদান আলেকজান্ডার নামে এক জিম্মির পাহারার থাকা হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে বলে জানান হামাসের এক মুখপাত্র। আলেকজান্ডারকে যে এলাকায় রাখা হয়েছিল ইসরায়েল সেখানে সরাসরি হামলা চালিয়েছে বলে জানান তিনি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে চালানো ইসরায়েলি হামলায় এক হাজার ৬০০ বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় মোট প্রাণ হারিয়েছেন ৫১ হাজারের বেশি মানুষ। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
আরও পড়ুন: ‘আত্মসমর্পণের’ শর্তে দেওয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখান করল হামাস
গাজায় চলমান এই ইসরায়েলি হামলায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। একদিকে খাদ্য, ঔষধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম কিংবা জ্বালানিসহ সব মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। অন্যদিকে অবিরাম বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
এই সংঘাত বন্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আরেকটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাঁখো। জিম্মিদের মুক্তি ও গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ করানোর জন্য যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার প্রতি জোর দেন তিনি।
এর আগে, গত সপ্তাহে চলতি বছর জুনের মধ্যে একটি ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট। ফিলিস্তিনে সংঘাত বন্ধে সৌদি আরবের আয়োজিত দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানে আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এর জবাবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছে, ‘ফ্রান্স যদি ফিলিস্তিনিকে স্বীকৃতি দেয়, সেটি হবে ‘সন্ত্রাসবাদের জন্য বড় পুরস্কার।’
৪ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৩১টির মধ্যে একটি শিশু অটিজম আক্রান্ত
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৩১টি শিশুর মধ্যে একটি অটিজমে আক্রান্ত বলে জানিয়েছে দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)। দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল শিশুর মানসিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করা এই রোগটি। এবার আক্রান্তের দিক থেকে নতুন মাত্রা পেয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে, ছয় মাসের মধ্যে অটিজমের কারণ নির্ণয় করে সেই ঝুঁকি নির্মূল করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সিডিসির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অটিজম আক্রান্তের হার বাড়ার এই তথ্য উঠে এসেছে। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ১৪টি অঙ্গরাজ্য এবং পুয়ের্তো রিকোর ৮ বছর বয়সী বাচ্চাদের উপাত্ত সংগ্রহ করে সিডিসি। ওই উপাত্তের ওপর ভিত্তি করেই এই তথ্য উঠে আসে।
সিডিসির তথ্যমতে, এর আগে ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৩৬ জনে একটি শিশু অটিজম আক্রান্ত ছিল, যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ জনে একজন।
এছাড়া, এশিয়ান বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপবাসী, আমেরিকান ইন্ডিয়ান বা আলাস্কার স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অটিজম আক্রান্ত শিশু দেখা যায় বলে সিডিসির গবেষণায় উঠে এসেছে। পাশাপাশি মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের মধ্যে এই সমস্যা আরও বেশি বলে জানা গেছে।
অটিজম আসলে কী
অটিজম হচ্ছে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যা। বিশেষজ্ঞরা একে অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার বলেন। অটিজমের অনেক ধরনের লক্ষণ আছে। সাধারণত ভাষা ও যেকোনো বিষয় শিখতে এসব বাচ্চাদের বিলম্ব হয়ে থাকে, সামাজিক যোগাযোগ, সামাজিক আচরণ, সামাজিক কল্পনা ইত্যাদি ক্ষেত্রসমূহে বেশ সমস্যা লক্ষ করা যায়, তাছাড়া রুটিনের প্রতি অস্বাভাবিক নির্ভরতা দেখা যায় এসব বাচ্চার।
কয়েক দশক আগেও কোনো শিশুর মধ্যে অটিজম আছে কিনা; তা নির্ণয় করা ছিল খুবই বিরল ঘটনা। শুধু যেসব শিশুর যোগাযোগ ও সামাজিকতার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সমস্যা হতো তাদেরই পরীক্ষা করে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করা হতো।
আরও পড়ুন: দেশে ৭১ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী অসংক্রামক রোগ
এতে আক্রান্তের হারও তখন কম ছিলো। সিডিসির তথ্যমতে নব্বইয়ের দশকে যুক্তরাষ্ট্রে ১০ হাজারে ১টি শিশুর অটিজম রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যেত। সে সময় থেকে অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার— এই শব্দগুচ্ছ পরিচিতি লাভ করতে থাকে। এখান থেকেই তীব্র আকারে সমস্যা দেখা না দিলেও সামান্য আকারে যদি অটিজমের দুয়েকটি লক্ষণ দেখা দেয় মানুষ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে শুরু করে। এতেই দেখা যায়, বিপদের জল অনেক দূর এগিয়েছে। ১০ হাজারে একজন আক্রান্ত থেকে সংখ্যাটি একলাফে একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে তা দেড়শো জনে একজন হয়ে দাঁড়ায়। আর ২০১৮ সালে আক্রান্তের হার বেড়ে হয় ৪৪ জনে একজন। এই সংখ্যা এরপর থেকে আর কমতে দেখা যায়নি বরং বেড়েছে।
অটিজম কেন বাড়ছে?
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, মূলত চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নতির ফলে অটিজম শনাক্ত বেশি হচ্ছে। তারা জানান, অটিজম নির্ণয় করার কোনো শারীরিক পরীক্ষা নেই। এমন না যে রক্ত বা অন্য কোনো পরীক্ষা করে বের করা যাবে।
একটি শিশু অটিজম আক্রান্ত কিনা তা বোঝা যায় মূলত শিশুটির আচরণ মূল্যায়নের মাধ্যমে। বর্তমানে এ সংক্রান্ত চিকিৎসা ও সহায়তার পরিধি অনেক বেড়েছে বলে জানান তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের টিকাবিরোধীরা মনে করতেন, শিশুদের জন্মের পর থেকে বিভিন্ন ধরনের টিকা দেওয়ায় অটিজম আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়ে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেনেডি জুনিয়রও এই টিকা বিরোধীদের দলে।
তবে টিকা দেওয়ার সঙ্গে অটিজম আক্রান্ত হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই বলে সিডিসি ও অন্যান্য স্বাস্থ্য গবেষকরা বেশ আগেই প্রমাণ করেছেন। পরবর্তীতে জিনগত সমস্যা, বাবার বয়স, মায়ের ওজন, ডায়াবেটিস এমনকি নির্দিষ্ট কিছু রাসায়নিকের সংস্পর্শে এলে অটিজম হতে পারে কিনা তা নিয়েও বিস্তর গবেষণা হয়েছে।
কিছু গবেষকদের মতে, বেশকিছু কারণের সমন্বয়ে এই সমস্যাটি দেখা দিতে পারে। উদাহরণস্বরুপ, জৈবিক সমস্যা রয়েছে এমন কেউ ক্ষতিকর কোনো পরিবেশের সংস্পর্শে আসলে সমস্যাটি প্রকট হয়ে উঠতে পারে। টিকা ও অটিজম বিতর্ক
স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেনেডি জুনিয়র ও অন্যান্য টিকাবিরোধীরা বলেন, শিশুদের বিভিন্ন রোগের টিকা দেওয়া হয়, এটি অটিজমকে প্রভাবিত করে। পাশাপাশি শিশুদের টিকায় ব্যবহৃত থিমেরোসল নামে একটি রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় বলে জানান তারা। এটির কারণে বাচ্চারা অটিজম আক্রান্ত হন বলে মত দেন তারা।
তবে এই রাসায়নিক এখন আর শিশুদের টিকায় ব্যবহার করা হয়না বলে নিশ্চিত করেছেন সিডিসির কর্মকর্তারা। পাশাপাশি টিকার সঙ্গে অটিজম হওয়া বা না হওয়ার কোনো সংযোগও তারা খুঁজে পাননি।
গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন কেনেডি জুনিয়র। সেখানে অটিজম আক্রান্তে সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেন। তিনি জানান, দেশটির স্বাস্থ্য ও মানবসেবা মন্ত্রনালয়ের তত্ত্বাবধানে অটিজমের কারণ জানতে বৃহৎ পরিসরে একটি গবেষণা করা হবে।
আরও পড়ুন: কৃমিজনিত রোগে গবাদিপশুর মৃত্যু: প্রতিকার ও প্রতিরোধ
কেনেডি জুনিয়র বলেন, ‘শতাধিক গবেষক এই গবেষণায় অংশ নেবেন। তারা ছয়মাসের মধ্যে অটিজম হওয়ার কারণগুলো খুঁজে বের করবেন। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো আমরা নির্মূল করবো।’
মজার ব্যাপার হলো, এমন এক ব্যক্তিকে এই গবেষণা কার্যক্রমের নেতৃত্বে নিয়োগ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, যিনি বারবার দাবি করে আসছেন টিকা ও অটিজমের মধ্যে সংযোগ রয়েছে।
ডেভিড গেইয়ার নামে ওই ব্যক্তি লাইসেন্স ছাড়াই এক শিশুর চিকিৎসা করেছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
৫ দিন আগে
সন্তানদের রক্ষায় নিজেরাই ঢাল হয়ে গেল হাতিরা
বিপদ টের পেলে সবার আগে বাচ্চাদের আগলে রাখার চেষ্টা করে মানুষ। নিজেদের প্রাণ গেলেও সন্তানদের রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন তারা। এ এক চিরন্তন মায়া, যার সঙ্গে অন্য কিছুর তুলনা হয় না। এবার মানুষের মতো সন্তানদের প্রতি অদ্ভুত ভালোবাসা দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একদল হাতি।
ঘটনাটি সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালের। পাঁচ দশমিক দুই মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সানদিয়াগো শহর। মাটিতে কম্পন শুরু হওয়ার সাথে সাথে বাচ্চাদের রক্ষায় তৎপর হয়ে ওঠে শহরটির চিড়িয়াখানার সাফারি পার্কের একদল হাতি।
পার্কের বাইরে থেকে তোলা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সকালের আলোতে দাঁড়িয়ে ছিল পাঁচটি আফ্রিকান হাতি। হঠাৎ কম্পন শুরু হলে তারা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করে।
এ সময়ে বয়স্ক তিন হাতি—এনডিলুলা, উমনগানি ও খোসি—সাত বছর বয়সী দুই বাছুর জুলি ও এমখায়াকে ঘিরে বলয় তৈরি করে ফেলে, যাতে কোনো বিপদ এসে তাদের ক্ষতি করতে না পারে। সম্ভাব্য ঝুঁকি থেকে সন্তানদের বাঁচাতে তারা ঢাল হয়ে গেল মুহূর্তেই।
বিপদ কেটে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বলয়ের মধ্যে কয়েক মিনিট তারা ঘেঁষাঘেঁষি করে ছিল। তখন বয়স্ক হাতিগুলো বাইরের দিকে তাকিয়ে ছিল, যেকোনো বিপদ মোকাবিলায় তারা যেন প্রস্তুত। তাদের প্রসারিত কান ঝাপটাচ্ছিল তখন।আরও পড়ুন: কর্ণফুলীতে বন্য হাতির তাণ্ডব দমনে ব্যর্থ প্রশাসন, সড়ক অবরোধ
সানদিয়াগো থেকে শুরু করে ১২০ মাইল দূরের লস অ্যাঞ্জেলেস থেকেও অনুভূত হয়েছিল এই ভূকম্পন। এতে সানদিয়াগো কাউন্টির সড়কগুলোতে পাথরের চাঁই আছড়ে পড়ে। ভূমিকম্পের উৎপাত্তিস্থলের কাছের ছোট্ট পাহাড়ি শহর জুলিয়ানে দোকানের তাক থেকে জিনিসপত্র নিচে পড়ে যেতে দেখা গেছে।
যদিও এতে বড় ধরনের হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। কিন্তু বাচ্চাদের জন্য হলেও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে হাতিরা। বিপদ মোকাবিলায় পাশাপাশি দাঁড়িয়ে যায় তারা।
সানদিয়াগো চিড়িয়াখানা সাফারি পার্কের স্তন্যপায়ী প্রাণীর কিউরেটর মিন্ডি অলব্রাইট বলেন, ‘বাছুরগুলোকে ঘিরে বলয় তৈরি করার পর বিপদ কোথা থেকে আসছে, তা উপলব্ধি করতে চেষ্টা করে হাতিরা।’
খুবই বুদ্ধিদীপ্ত ও সামাজিক প্রাণী বলা হয় বৃহত্তর স্থলচর এই প্রাণীকে। পায়ের মাধ্যমে তারা আওয়াজ অনুভব করতে পারে। যখন তারা বিপদ টের পেয়ে যায়, তখন সতর্কতামূলক পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি বৃত্তের মতো তৈরি করে দাঁড়িয়ে যায়। বাচ্চা হাতিরা ওই বলয়ের মাঝে থাকে, আর বিপদ মোকাবিলায় বাইরের দিকে থাকে বড়রা।
সোমবারের ভিডিওতে দেখা যায়, বয়স্ক হাতিদের মধ্যে আশ্রয় খুঁজতে দৌড়াচ্ছিল বাছুরগুলো। এই মা হাতিগুলোই বাচ্চাদের বড় করেছে। কিন্তু নিজের সাহস দেখাতে একমাত্র পুরুষ হাতিটি বৃত্তের কিনারে দাঁড়িয়েছিল। তখন স্ত্রী হাতি খোসি শুঁড় দিয়ে তার পিঠে ও মুখে চাপড় দিয়ে বলতে চাচ্ছিল, ‘সবকিছু ঠিক আছে। কিচ্ছু হবে না। তুমিও বৃত্তের মধ্যে চলে এসো।’
৫ দিন আগে
কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘টাইট’দেওয়া যায়, তা বের করতেই ভিয়েতনামে শি: ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রকে চাপে ফেলে ‘টাইট’ দিতেই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শুরু করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সফরের শুরুতে স্থানীয় সময় সোমবার (১৪ এপ্রিল) ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয় পৌঁছান শি। হ্যানয়ের বৈঠক শেষেই এ সম্পর্কে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান ট্রাম্প। চলতি সপ্তাহে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চীনের প্রতিবেশী ৩টি দেশে সফর শুরু করেন চীনের প্রেসিডেন্ট।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার তথ্যমতে, শি তার সফরে ১৪ থেকে ১৫ এপ্রিল ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ায় যাবেন এবং ১৫ থেকে ১৮ এপ্রিল কম্বোডিয়ায় যাবেন।
এমন একটি সময় শি এই সফর শুরু করেছেন, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কারোপ নিয়ে উত্তেজনা চলছে। এছাড়া ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়াও ট্রাম্পের শুল্কারোপে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
সফরের প্রথমদিনে ভিয়েতনামের শীর্ষ নেতা তো লামের সঙ্গে বৈঠক করেন চীনের প্রেসিডেন্ট। এ সময় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সুদৃঢ়করণসহ দেশ দুটির মধ্যে সরবরাহ শৃঙ্খল মজবুত করতে বেশকিছু সমঝোতা স্মারক সই করেন শি ও লাম।
আরও পড়ুন: চীন বাদে সব দেশের ওপর মার্কিন পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত
এর পরপরই হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে এই বৈঠক নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষতির উদ্দেশেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, ‘এখানে আমি চীনেরও দোষ দেখছি না, ভিয়েতনামেরও না। খুবই ভালো একটি বৈঠক হয়েছে, যেখানে আলোচনার বিষয় হলো—কীভাবে আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে টাইট দিতে পারি!’
বর্তমানে বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় একটি সংকট তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এই বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে, চীনের মাথার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ১৪৫ শতাংশ শুল্ক। অন্যদিকে, ভিয়েতনামের ওপর রয়েছে ওয়াশিংটনের ৪৬ শতাংশ শুল্ক। যদিও সেটি ৯০ দিনের জন্য সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন ট্রাম্প। তাই শঙ্কা এখনো কাটেনি। এককভাবে ভিয়েতনামের পণ্য রপ্তানির সবথেকে বড় বাজার হলো যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন: মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ চীনের, গুগলের বিরুদ্ধে তদন্তের ঘোষণা
এ কারণে শুল্ক কার্যকর হলে সেটি ভিয়েতনামের অর্থনীতিতে নিশ্চিতভাবে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। আবার চীনের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে হলে চীনেরও একটি বিকল্প বাজার দরকার। সে কারণে চীন এবার দক্ষিণ এশিয়ায় মনোযোগ দিচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চীনের প্রেডিডেন্ট আগেই তার এই সফরের পরিকল্পনা করলেও কাকতালীয়ভাবে ট্রাম্পের শুল্কারোপের পর এই সফর আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গণে বাড়তি উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে বলে মনে করেন অনেকে।
ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কারোপের বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের প্রভাব কমাতে দেশটির সঙ্গে আলোচনায় জোর দিয়েছে কোনো কোনো দেশ। চীন কিংবা কানাডার মতো কিছু দেশ আবার পাল্টা শুল্কও আরোপ করেছে।
এছাড়া, চীন নিজেদের একটি বিশ্বস্ত বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক সুসংহত করার চেষ্টা করছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রতি জোর দিয়েছেন শি জিনপিং।
ভিয়েতনামের সমাজতান্ত্রিক দলের পত্রিকা নিহানদানের একটি প্রতিবেদনে তিনি বলেন, ‘এই বাণিজ্যযুদ্ধে আসলে কেউই জয়ী হবে না। এই সুরক্ষাবাদ (শুল্কারোপসহ নানাভাবে বিভিন্নদেশ থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ করা) কোনোভাবেই সুফল বয়ে আনবে না।’
ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিনের সঙ্গে বৈঠকের পর শি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই অন্যায় শুল্কারোপের বিরুদ্ধে তাদের সোচ্চার হওয়া উচিত। এ সময় রেলসহ বিভিন্ন খাতে মোট ৪৫টি চুক্তি সই করা হয়েছে বলে চিন ও ভিয়েতনামের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়েছে। তবে চুক্তিগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানা যায়নি।’
শুধু ভিয়েতনামই নয়; দক্ষিণ এশিয়ার আরও অনেক দেশও চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে চাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি না করতে পেরে নিজেদের পণ্যগুলো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে রপ্তানি করতে পারে চীন। এই আশঙ্কা থেকেই মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও তাল মিলিয়ে আবার চীনকেও অখুশি না করে চলতে চাইছে দেশগুলো।
আরও পড়ুন: মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে শুল্কারোপ করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প
চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান উত্তেজনা বিশ্বের বৃহৎ দুটির অর্থনীতির মধ্যে সম্পর্ক পুরোপুরি নষ্ট করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ টিভিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, ‘দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। আবার সম্পর্ক টিকেও যেতে পারে। এছাড়া এক পর্যায়ে গিয়ে একটি বড় চুক্তি হতে পারে।’
কোনো চুক্তি হবে কিনা বা এই শুল্কারোপ আসলে কি ধরনের অবস্থা সৃষ্টি করবে; তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা। ট্রাম্প ও তার কর্মকর্তারা আগেই নিশ্চিত করেছেন, ৯০ দিনের জন্য শুল্কের স্থগিতাদেশ সাময়িক।
নিজের সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘কোনো দেশই এখনো এই শুল্কের আওতাধীন না, চীন তো একদমই না। তারা আমাদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি খারাপ করেছে।’
৫ দিন আগে