বিশ্ব
যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাহমুদ খলিলকে বের করে দেওয়া যেতে পারে: বিচারক
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদ করায় গ্রেপ্তার হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া যেতে পারে বলে রায় দিয়েছেন লুইজিয়ানার অভিবাসন আদালতের বিচারক জেমি কোমান্স।
গ্রেপ্তারের প্রায় মাসখানেক পরে স্থানীয় সময় শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এই রায় ঘোষণা করেন বিচারক। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন মাহমুদের আইনজীবীরা। আগামী ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত আপিলের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন বিচারক। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই এমন খবর দিয়েছে।
গত বসন্তে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে সংঘটিত বিক্ষোভে জড়িত থাকার কারণে এ বছরের ৮ মার্চ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা। এরপর থেকে লুইজিয়ানার জেনা শহরে একটি অভিবাসী আটককেন্দ্রে ছিলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইহুদিবিদ্বেষী বিক্ষোভ বন্ধের অভিযানের প্রথম শিকার ৩০ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি যুবক। মাহমুদ খলিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের শিক্ষার্থী। যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের গ্রিনকার্ড রয়েছে তার। গ্রেপ্তারের পরই তার গ্রিনকার্ড বাতিলের কথা জানায় ওয়াশিংটন।
আরও পড়ুন: আমি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বন্দি: মাহমুদ খলিল
শুক্রবারের এই রায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ফিলিস্তিন-সমর্থিত গ্রিনকার্ডধারী ও ভিসাধারীদের কণ্ঠরোধ ও দমনপীড়নের পথ প্রশস্ত করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
মাহমুদের আইনজীবী ও আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস-নিউ জার্সির নির্বাহী পরিচালক অমল সিনহা বলেছেন, ‘তাড়াহুড়ো করে দেওয়া আদালতের এই রায় পুরোপুরি ভিত্তিহীন। সরকার পক্ষ নিজেদের সমর্থনে তেমন কোনো প্রমাণই উপস্থাপন করতে পারেনি, আসলে তাদের কাছে কোনো প্রমাণই তো নেই মাহমুদের বিরুদ্ধে।’
এই রায়কে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মতামতের লজ্জাজনক অনুসরণ বলে অভিহিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটসের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ডিয়ালা শামাস।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ১৯৫২ সালের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের উদাহরণ দিয়ে রুবিও বলেছিলেন, ‘মাহমুদের কার্যকলাপ মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, এজন্য তাকে বিতাড়িত করা উচিত।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সেই যুবক এখন বিপাকে
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যকে অগ্রাহ্য করার এখতিয়ার তার নেই বলে জানিয়েছেন বিচারক কোমান্স। তাছাড়া মাহমুদকে বিতাড়িত করতে প্রশাসন তাদের যুক্তি প্রমাণ করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
খলিলের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, লুইজিয়ানার যে আদালতে মাহমুদের মামলার শুনানি হয়েছে, সেখানকার বিচারকরা ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে এই রায় দিয়েছেন।
তারা জানান, ১৯৫২ সালের অভিবাসন আইনের অধীনে নেওয়া সিদ্ধান্তের ‘যুক্তিসংগত কারণ’ সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বিচারকের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। বিচারক সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এদিকে, মাহমুদকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দিতে এই রায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য এই রায়কে উল্লেখযোগ্য বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কারণ গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসে ফিরেই ট্রাম্প অঙ্গীকার করেছিলেন, গত বছর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিপন্থি প্রতিবাদী আন্দোলনে জড়িত কিছু বিদেশি শিক্ষার্থীকে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেবেন। এই আন্দোলনকে তিনি ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে অভিহিত করেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যম জেটো নিউজের এক খবরে জানা যায়, রায় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে খলিল বলেন, ‘এই আদালত ঠিক সেটিই করেছেন, ঠিক যে উদ্দেশ্যে আমার পরিবার থেকে প্রায় এক হাজার মাইল দূরে আমাকে পাঠিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। আমি আশা করি যে দ্রুততার সঙ্গে আমার ঘটনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, একইরকম যেন মাসের পর মাস আটকে থাকা বন্দিদের বিষয়েও আদালত দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি অ্যাক্টিভিস্ট আটক: যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন
ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে গত বসন্তে বিক্ষোভ করায় খলিলের মতো আরও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছেন অভিবাসন কর্মকর্তারা। তাদেরও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মাহমুদকে গ্রেপ্তারের পর তার আইনজীবী কিংবা তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে না জানিয়েই তাকে লুইজিয়ানাতে স্থানান্তর করা হয়, যদিও তার মামলাটি নিউ জার্সির একটি আদালতে বিচারাধীন ছিল।
এর আগে তার গ্রেপ্তারের ঘটনাটি মার্কিন সংবিধানের প্রথম ও পঞ্চম সংশোধনীর আওতায় দেওয়া বাক্স্বাধীনতার সুরক্ষাকে লঙ্ঘন করছে কি না সে বিষয়ে হাবিয়েস পিটিশন করেছিল তার আইনজীবীরা।
শুক্রবারের রায় ঘোষণার পর মাহমুদ খলিলের আইনজীবীরা বলেন, ‘মাহমুদকে বিতাড়ন করা আটকাতে লড়াই এখনও শেষ হয়নি। তার পরিবারের কাছে তাকে ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।’
২৬১ দিন আগে
ওয়াকফ আইন পশ্চিমবঙ্গে বলবৎ হবে না: মমতা
ভারতের ওয়াকফ আইন পশ্চিমবঙ্গে বলবৎ করা হবে না বলে জানিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এই আইন রাজ্য সরকার সমর্থন করে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সামাজিকমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন। মমতা বলেন, ‘বাংলায় তা বলবৎও হবে না। তা হলে হিংসা কেন? যারা এই হিংসায় উসকানি দিচ্ছেন, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইনে এমন খবর দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সীমান্তে বিএসএফের হত্যাকাণ্ডকে 'নির্মমতা' বললেন ইউনূস
তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী বলেন, ‘সেই আইনটি কিন্তু আমরা করিনি। আইনটি কেন্দ্রীয় সরকার করেছে। তাই উত্তর যা চাওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চাইতে হবে।’
রাজনৈতিক দলের চক্রান্তের কথাও উল্লেখ করে মমতা, ‘কিছু রাজনৈতিক দল ধর্মকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইছে। তাদের প্ররোচনায় পা দেবেন না। আমি মনে করি, ধর্ম মানে মানবিকতা, সহৃদয়তা, সভ্যতা ও সম্প্রীতি।’ এ সময়ে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ভারতের ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে দেশটির নানা প্রান্তে তীব্র বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ হচ্ছে। পাশাপাশি দেশের শীর্ষ আদালতেও আইনটি বাতিল করার দাবিতে একাধিক পিটিশন জমা পড়েছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ আগামী সপ্তাহেই এই মামলাগুলো শুনবে।
অন্য দিকে উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ওই রাজ্যের হাজার হাজার বিতর্কিত ওয়াকফ সম্পত্তি চিহ্নিত করে তা বাজেয়াপ্ত করার জন্য উদ্যোগ শুরু করে দিয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। ভারতে সব চেয়ে বেশি ওয়াকফ সম্পত্তি আছে উত্তরপ্রদেশেই।
ওই একই রাজ্যের মুজফফরনগরে গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় হাতে কালো আর্মব্যান্ড পরে নতুন আইনটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তিন শতাধিক ব্যক্তিকে নোটিশ পাঠিয়ে মাথাপিছু ২ লাখ রুপি করে জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে গুন্ডা ঢোকানো হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে, দাবি মমতার
পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়ও আইনপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হচ্ছে। গেল বৃহস্পতিবার কলকাতায় এক বিশাল সমাবেশ থেকে ওয়াকফ আইন বাতিল করার দাবিতে কম করে এক কোটি মানুষের স্বাক্ষর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে মুসলিম সংগঠন জমিয়ত-ই-উলেমা হিন্দ।
২৬১ দিন আগে
গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদ: সেনাদের বরখাস্তের ঘোষণা ইসরায়েলের
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের সমালোচনা করে প্রকাশিত একটি খোলাচিঠিতে সই করা দেশটির বিমানবাহিনীর রিজার্ভ (অনিয়মিত বা খণ্ডকালীন সেনা) সেনাদের মধ্যে কর্তব্যরত সবাইকে বরখাস্ত করার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।
স্থানীয় সময় শুক্রবার ( ১১ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এক কর্মকর্তা।-খবর এসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি)।
এপিতে পাঠানো এক বিবৃতিতে আইডিএফের এক সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘রিজার্ভ সদস্যদের মধ্যে সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব থাকা সেনাসহ অন্য কারোরই অধিকার নেই সামরিক মর্যাদাকে কাজে লাগিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া।’
যুদ্ধে সক্রিয় থাকা অবস্থায় খোলা চিঠিতে সই করে সেনারা তাদের বাহিনীর কমান্ডার ও অধীনদের মধ্যকার শৃঙ্খলা ও আস্থা ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ করেন ওই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় গাজায় আরও ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বর্তমানে যুদ্ধে কর্তব্যরত রয়েছেন এমন যেসব সদস্য ওই খোলাচিঠিতে সই করেছেন, তাদের বরখাস্ত করা হবে। তবে ঠিক কতজন সদস্যকে বরখাস্ত করা হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে গাজায় হামলা শুরু করায় ইসরায়েল প্রশাসনের সমালোচনা করে দেশটির গণমাধ্যমে একটি খোলাচিঠি প্রকাশিত হয়। সেখানে অবসরপ্রাপ্ত সেনাসহ বিমানবাহিনীর রিজার্ভ সেনাদের মধ্যে প্রায় ১ হাজার সদস্যরা সই করেন।
ইসরায়েলে প্রশাসন রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে বলে তারা খোলাচিঠিতে অভিযোগ করেন। তাছাড়া হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্ত করতে প্রশাসনের ব্যর্থতারও সমালোচনা করা হয়। প্রয়োজনে যুদ্ধ বন্ধ করে হলেও জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার প্রতি জোর দেন তারা।
এমন এক সময়ে এই খোলাচিঠি প্রকাশিত হয়েছে, যখন হামাসের হাতে থাকা বাকি জিম্মিদের ফেরানোর অজুহাতে পুনরায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। উপত্যকাটিতে খাদ্য, জ্বালানিসহ জরুরি মানবিক সেবার প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে ইসরায়েল প্রশাসন।
আরও পড়ুন: চোখে সামনে যা পড়েছে, তা-ই হত্যা করেছি: ইসরায়েলি সেনাদের বিবরণ
হামাসের হাতে থাকা ৫৯ জিম্মির মধ্যে প্রায় অর্ধেকই মৃত বলে জানা গেছে। হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলাতেই তারা প্রাণ হারিয়েছেন। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে গাজায় পুনরায় ইসরায়েল হামলা শুরু করলে বাকি জীবিত জিম্মিদের প্রাণও ঝুঁকিতে পড়ার কথা জানায় হামাস।
তবে এতে ভ্রূক্ষেপ না করেই ভয়াবহ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। খোলাচিঠিতে সই করা সেনারা নিজেদের দায়িত্ব পালনে অপারগতার কথা না জানালেও গাজায় যা হচ্ছে তা নৈতিকতা বিরুদ্ধ বলে মন্তব্য করেন।
এই চিঠির নেতৃত্বে থাকা বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত পাইলট গাই পোরান বলেন, ‘ইসরায়েলি প্রশাসনের গাজায় এই হামলা শুরু করার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি অযৌক্তিক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন। এতে তারা জিম্মি ও ইসরায়েলের বহুসেনাসহ নিরাপরাধ ফিলিস্তিনিদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলেছে। অথচ এই হামলার সুস্পষ্ট বিকল্প কিন্তু প্রশাসনের হাতে ছিল।’
তবে চিঠিতে সই করা সেনাদের মধ্যে কাউকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে তার জানা নেই উল্লেখ করে গাই বলেন, ‘কেউ বরখাস্ত হয়েছে বলে শুনিনি আমি, তবে চিঠি প্রকাশের পর আরও অনেক সেনা এতে সই করছেন।’
এই চিঠি প্রকাশের ঘটনাকে তাচ্ছিল্য করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘বিদেশি কিছু এনজিওর অর্থায়নে এক ঝাঁক আগাছা এই কাজ করেছে। ডানপন্থি জোট সরকারের পতনের উদ্দেশ্যেই তারা এসব করছে।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনিদের ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করত ইসরায়েলি বাহিনী
সাধারণত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ইসরায়েলের সেনাদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ, তাই প্রশাসনের যেকোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে খুব কমই তাদের প্রতিবাদ করতে শোনা যায়। তবে বর্তমানে চিত্র বদলাচ্ছে।
২০২৩ সালে ৭ অক্টোবরের হামলার পর গাজায় যুদ্ধ চালানোর বিষয়ে সবাই একমত হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভিন্নমত বাড়ছে। গাজায় অব্যাহত হামলার সমালোচনা বেড়েই চলেছে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে। বিশেষত যুদ্ধে সেনাদের নিহতের সংখ্যা বাড়ার কারণে ও জিম্মিদের মুক্তিতে ব্যর্থতায় নেতানিয়াহু প্রশাসন সমালোচনার মুখে পড়েছে।
২৬১ দিন আগে
ফ্লোরিডায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত ৩
দক্ষিণ ফ্লোরিডায় একটি প্রধান মহাসড়কের কাছে একটি ছোট বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৩ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও একজন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে দক্ষিণ ফ্লোরিডায় একটি প্রধান আন্তঃরাজ্য মহাসড়কের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিমানটি বিধ্বস্ত হয় এবং একটি গাড়ি রেললাইনের উপর পড়ে যায়। এতে এসব হতাহত হয় বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
বোকা র্যাটন ফায়ার রেসকিউর সহকারী প্রধান মাইকেল লাসাল জানিয়েছেন, বিমান দুর্ঘটনায় তিনজনই নিহত হয়েছেন। বিমানটি মাটিতে পড়ার পর আগুনের কুণ্ডলির তৈরি হয়। এতে দুর্ঘটনাস্থলের পাশের গাড়িতে থাকা একজন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ২
লাসাল জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর বোকা র্যাটন বিমানবন্দরের কাছে ইন্টারস্টেট ৯৫-এর কাছে বেশ কিছু রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
দুর্ঘটনার শিকার সেসনা ৩১০ বিমানটিতে তিনজন আরোহী ছিলেন বলে জানিয়েছে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন।
সংস্থাটি একটি ই-মেইলে বলেছে, বোকা র্যাটন বিমানবন্দর থেকে টালাহাসির উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর সকাল ১০টা ২০ মিনিটে এটি বিধ্বস্ত হয়।
দমকল কর্মকর্তারা দক্ষিণ ফ্লোরিডা সান সেন্টিনেলকে জানিয়েছে, বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে একটি গাড়িকে রেললাইনের উপরে ধাক্কা দিয়েছে, যার ফলে লাইনটি বন্ধ হয়ে গেছে।
বোকা র্যাটনের মেয়র স্কট সিঙ্গার এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ‘আমরা গভীরভাবে দুঃখিত যে আজ আমাদের একটি বিমান দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এই মুহূর্তে আরও বিস্তারিত জানা যাচ্ছে। আমরা জরুরি উদ্ধারকারী এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত সকলের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি। তদন্ত চলাকালে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ধৈর্যধারণের অনুরোধ করছি এবং সহযোগিতা কামনা করছি।’
আরও পড়ুন: আলাস্কায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত ১০
এনটিএসবি’র নেতৃত্বে ঘটনাটির তদন্ত করছে এফএএ এবং জাতীয় পরিবহন সুরক্ষা বোর্ড।
জানুয়ারিতে ওয়াশিংটনের কাছে মাঝ আকাশে বিমানের সংঘর্ষে ৬৭ জন নিহত হন। ফেব্রুয়ারিতে সিয়াটল বিমানবন্দরে একটি বিমান আরেকটি বিমানকে ধাক্কা দেয়। মার্চ মাসে ডেনভারে অবতরণের পর আমেরিকান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে আগুন ধরে যায়—এতে আহত ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়
২৬১ দিন আগে
চীন বাদে সব দেশের ওপর মার্কিন পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত
চীন ছাড়া বাকি দেশগুলোর ওপর আরোপ করা পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার (১০ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে তার এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
তবে চীনের ওপর শুল্ক ১০৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (৯ এপ্রিল) ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তিনি পাল্টা শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন। এই সময়ে পাল্টা শুল্ক উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে, যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘চীন বিশ্বের বাজারগুলোর প্রতি শ্রদ্ধার যে ঘাটতি দেখিয়েছে, তার ভিত্তিতে আমি যুক্তরাষ্ট্রে চীনের পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ ধার্য করছি। এটা অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
এ প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘আশা করি নিকট ভবিষ্যতে চীন ও অন্যান্য দেশ উপলব্ধি করতে পারবে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণার দিন আর থাকবে না বা গ্রহণযোগ্য হবে না।’
ট্রাম্প লিখেছেন, ‘প্রকৃত অবস্থার ভিত্তিতে ৭৫টির বেশি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এসব প্রতিনিধির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ, অর্থ বিভাগ ও ইউএসটিআর (যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি) রয়েছে।’
‘দেশগুলো বাণিজ্য, বাণিজ্য বাধা, শুল্ক, মুদ্রা কারসাজি ও অশুল্ক বাধা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সমাধানে পৌঁছাতে সমঝোতা আলোচনার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে,’ বলেন তিনি।
২৬৩ দিন আগে
ভূমিকম্প: মিয়ানমারে তহবিল সংগ্রহে ‘সিংহ নাচ’
মিয়ানমারে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য ইয়াঙ্গুনের ব্যস্ততম চায়না টাউনের প্রাণকেন্দ্রে ‘সিংহ নাচ’ পরিবেশনের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করছেন দেশটির তরুণরা।
ফেং ই ড্রাগন ও লায়ন ড্যান্স অ্যাসোসিয়েশনের ৩০ জনেরও বেশি তরুণের একটি দল চলতি মাসের ৩ থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত অভিনব এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
এ কার্যক্রমে ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন বলে জানান তারা। ওই তরুনরা বলেন, অনেক পথচারীই তাদের নাচে আকৃষ্ট হয়েছেন এবং উৎসাহ দিয়েছেন।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে দলটি মিয়ানমারেরে মুদ্রায় ৫ মিলিয়ন কিয়াট (প্রায় ২ হাজার ৩৮০ মার্কিন ডলার) সংগ্রহ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তারা।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের ভূমিকম্পের পর ৮৯ আফটারশক অনুভূত
ভূমিকম্পে নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে দলটির সদস্যরা বলেন, সংগৃহীত অর্থ সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মান্দালয় ও সাগাইং শহরে বাসিন্দাদের সহায়তায় ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
লায়ন ড্যান্স অ্যাসোসিয়েশনের এক সদস্য মিয়ো মং মং মিন্ট (৩৫) বলেন, ‘তহবিল সংগ্রহ ও জরিপ শেষে বাসিন্দাদের সরাসরি সহায়তা করতে আমরা সেখানে যাবো। তাদের কি ধরনের সহায়তা প্রয়োজন বা কোনটি আগে প্রয়োজন সেটি জানতে আগেই একটি জরিপ করেছি আমরা।’
ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের এই অর্থ দিয়ে সহায়তার পাশাপাশি পুনর্বাসনের পরিকল্পনাও তাদের রয়েছে বলে জানান মিয়ো।
অ্যাসোসিয়েশনের আরেক সদস্য বলেন, ‘এভাবে তহবিল সংগ্রহ করা মোটেই সহজ কাজ নয়। বিশেষত রোদের মধ্যে সিংহ নাচের পোশাক পরে নাচ করা বেশ কঠিন। তবে আমরা এতে অভ্যস্ত।’
২৬৪ দিন আগে
ইসলামি শরিয়ায় ব্রিটিশ দম্পতির বিচার করবে তালেবান
আফগানিস্তানে গ্রেপ্তার হওয়া এক ব্রিটিশ দম্পতির বিচার শিগগিরই ইসলামিক শরিয়া অনুসারে হবে বলে জানিয়েছে তালেবান সরকার। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমদিকে পিটার রেনল্ডস ও বার্বি রেনল্ডস দম্পতিকে গ্রেপ্তারের পর এই প্রথম বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা হয়েছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এ বিষয়ে কথা বলেন তালেবান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদুল বাতেন। তিনি জানান, ওই দম্পতির অপরাধ তেমন গুরুতর নয়। দ্রুতই আফগানিস্তানের প্রচলিত ইসলামিক শরিয়া অনুযায়ী তাদের বিচারকাজ শেষ করা হবে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাজধানী কাবুলের মধ্য বামিয়ানের নিজ বাসভবন থেকে সত্তরোর্ধ রেনল্ডস দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে কি কারণে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা জানায়নি দেশটির প্রশাসন।
আরও পড়ুন: বাদী পক্ষে লড়তে আদালতে এআই-উকিল!
রেনল্ডস দম্পতি আফগানিস্তানে একটি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম পরিচালনা করতেন বলে জানিয়েছেন লন্ডনে বসবাসরত তাদের পরিবারের সদস্যরা। পিটার ও বার্বিকে গ্রেপ্তারের পর পুল-ই-চরকি কারাগারে রাখা হয়েছে, কি কারণে এটি করা হয়েছে তা জানানো হয়নি। এমনকি ওই কারাগারে পিটার ও বার্বির সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে বলেও তাদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন।
ওই দম্পতির মামলা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আদালতে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে এসোসিয়েট প্রেসকে (এপি) পাঠানো এক বার্তায় জানান মুখপাত্র মাতেন। তবে গ্রেপ্তারের কারণ ও তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
মাতেন বলেন, ‘আমি শুধু এতটুকুই বলতে পারি, বড় ধরনের কোনো অপরাধ করেননি তারা। ইনশাআল্লাহ, দ্রুতই শরিয়া আইনে রায় আসবে। সামান্য বিষয় এটি, চিন্তার কোনো কারণ নেই।’
এর আগে ওই দম্পতির সঙ্গে আটক হওয়া মার্কিন নাগরিক ফায়ে হল গত ৩০ মার্চ কাতারের মধ্যস্ততায় মুক্তি পেয়েছেন। বিনা অনুমতিতে ড্রোন ব্যবহার করার কারণে তাকে আটক করেছিল তালেবান সরকার। এ নিয়ে চলতি বছরে আফগানিস্তান থেকে চতুর্থ মার্কিনি মুক্তি পেয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২৬৪ দিন আগে
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় আরও ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত
গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সোমবার (৭ এপ্রিল) ভোর থেকে চালানো হামলায় তারা নিহত হন।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মোহাম্মদ বাশালের বরাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় সংবাদ মাধ্যম মিডল ইস্ট আই।
এর আগে নাসের হাসপাতালের কাছে সাংবাদিকদের তাবুতে ইসরায়েলি বোমা হামলায় তিন সাংবাদিক নিহত হন।
চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা নগরী ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। উপত্যকাটিতে ইসরায়েলের কড়াকড়ি আরোপের ফলে ৬ লাখ ২ হাজার শিশু পোলিও টিকা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় স্থায়ী স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে।
আরও পড়ুন: গাজার ৫০ শতাংশ ইসরায়েলের দখলে, নিজ ভূমিতে পরবাসী ফিলিস্তিনিরা
অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত রবিবার তুরমাস আইয়ায় ইসরায়েলি বাহিনী ১৪ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি-আমেরিকান কিশোর ওমর মোহাম্মদ রাবেয়াকে গুলি করে হত্যা করেছে।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় বড় আকারের বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করেছে। শুধু তাই নয় ক্রমাগতভাবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ সম্প্রসারণ করে চলেছে দখলদার ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত উপত্যকাটির ৫০ শতাংশ অংশ দখলে নিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। এতে নিজ ভূমিতে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছেন অধিকাংশ ফিলিস্তিনি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার ৬৯৫ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
সূত্র: বিভিন্ন এজেন্সি
২৬৫ দিন আগে
ইসরাইলকে এআই সরবরাহের প্রতিবাদ: মাইক্রোসফটের ২ প্রকৌশলী বরখাস্ত
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর কাছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রযুক্তি সরবরাহের প্রতিবাদ করায় দুই কর্মীকে বরখাস্ত করেছে আমেরিকান বহুজাতিক কোম্পানি মাইক্রোসফট।
গেল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের রেডমন্ড ক্যাম্পাসে কোম্পানিটির ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠান চলাকালে এই প্রতিবাদ করা হয়েছে।
সোমবার (৮ এপ্রিল) চাকরিচ্যুতির একটি চিঠিতে একজন কর্মীর বিরুদ্ধে মাইক্রোসফট অভিযোগ করেছে, ‘তার অসদাচরণের কারণে বাজে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবং এতে বহুল প্রত্যাশিত একটি অনুষ্ঠান সর্বোচ্চ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।’
আরেকজন কর্মী এরইমধ্যে তার পদত্যাগের ঘোষণা দিলেও পাঁচদিন আগেই তাকে চাকরি ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মাইক্রোসফট।
গেল শুক্রবার মাইক্রোসফটের এআই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুস্তাফা সুলেমান যখন নতুন পণ্য বাজারে নিয়ে আসার ঘোষণা দিচ্ছিলেন, তখন ইবতিহাল আবুসাদ নামের একজন সফটওয়্যার প্রকৌশলী মঞ্চের দিকে গিয়ে প্রতিবাদ শুরু করেন। অনুষ্ঠানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে মাইক্রোসফটের দীর্ঘমিয়াদি উচ্চাভিলাষের কথাও তুলে ধরা হচ্ছিল।
এ সময়ে তাকে উদ্দেশ্য করে চিৎকার করে আবুসাদ বলতে থাকেন, ‘মানুষের কল্যাণের জন্য আপনি এআই ব্যবহারের কথা বলে আসছিলেন। কিন্তু মাইক্রোসফট তার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অস্ত্র ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর কাছে বিক্রি করছে।’
তিনি যখন প্রতিবাদ করছিলেন, তখন রেডমন্ডে মাইক্রোসফটের ক্যাম্পাস থেকে এই অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছিল।
‘এখন পর্যন্ত পঞ্চাশ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। আমাদের অঞ্চলে গণহত্যায় মাইক্রোসফট মদত দিচ্ছে,’ বলেন এই সফটওয়্যার প্রকৌশলী।
তার প্রতিবাদের মুখে নিজের বক্তব্য কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখেন মুস্তাফা সুলেমান। অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে ছিলেন মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস ও সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তঅ স্টিফ বলমার।
মাইক্রোসফটের দাবি, ‘খুবই শান্তভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন সুলেমান।’ ওই নারীকর্মীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনার প্রতিবাদের জন্য ধন্যবাদ। আমি আপনার কথা শুনেছি।’
এ সময়ে আবুসাদ তার প্রতিবাদ অব্যাহত রাখেন। তিনি বলেন, ‘মাইক্রোসফটের সবার হাতে রক্ত লেগে আছে।’ মঞ্চের দিকে একটি কুফিয়া ছুড়ে মারেন তিনি। ফিলিস্তিনিদের সমর্থনের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে কুফিয়াকে। পরে তাকে অনুষ্ঠান থেকে ধরে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে প্রতিবাদ করেন বন্যা আগরওয়াল নামের এক নারী। পরে সোমবার মাইক্রোসফটের মানবসম্পদ বিভাগ থেকে ফোন করে ডেকে নিয়ে তাকে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করা হয়েছে।
টরোন্টোতে মাইক্রোসফটের কানাডীয় প্রধান কার্যালয়ে কাজ করতেন আবুসাদ। সোমবার কোম্পানির মানবসম্পদ বিভাগ থেকে তাকে তাৎক্ষণিক বরখাস্তের কথা জানানো হয়েছে।
নো অ্যাজুর ফর অ্যাপার্টহাইড নামের একটি অ্যাডভোকেসি গোষ্ঠী এমন তথ্য জানিয়েছে। মাইক্রোসফটের অ্যাজুর ক্লাউড কম্পিউটিং প্ল্যাটফর্ম ইসরাইলের কাছে বিক্রির প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে এই গোষ্ঠীটি।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে, গাজা ও লেবাননে সাম্প্রতিক যুদ্ধে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে বোমা হামলা চালাতে মাইক্রোসফট ও ওপেনএআইয়ের কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মডেল ব্যবহার করেছে আইডিএফ।
আবুসাদকে বরখাস্তের চিঠিতে মাইক্রোসফট জানিয়েছে, ‘গোপনে ব্যবস্থাপকের কাছে নিজের উদ্বেগের বিষয়টি জানাতে পারতেন তিনি। কিন্তু তার বদলে সুলেমান ও মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে বৈরী ও খুবই অযাচিত অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তার আচরণ এতটাই আগ্রাসী ও বিশৃঙ্খল ছিল যে তাকে জোর করে অনুষ্ঠান থেকে বাইরে নিয়ে যেতে হয়েছে।’
এদিকে চাকরি ছাড়তে দুই সপ্তাহের নোটিস দিয়েছিলেন বন্যা আগারওয়াল। আগামী ১১ এপ্রিল কোম্পানি থেকে তার বিদায় নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সোমবার এক ইমেইল বার্তায় মাইক্রোসফট তাকে জানিয়ে দিয়েছে, ‘তাৎক্ষণিকভাবে তার পদত্যাগপত্র কার্যকর করা হয়েছে।’
মাইক্রোসফটের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক নিয়ে এরআগেও কয়েকবার প্রতিবাদ করা হয়েছে। কিন্তু এটি ছিল খুবই প্রকাশ্য কোনো প্রতিবাদ, যা আগে কখনো হয়নি।
এরআগে গেল ফেব্রুয়ারিতে ইসরাইলের সঙ্গে মাইক্রোসফটের চুক্তি নিয়ে প্রতিবাদ করা হলে তখনকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সত্য নাদেলার সঙ্গে বৈঠক থেকে পাঁচকর্মীকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।
শুক্রবার এই বহুজাতিক কোম্পানি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা সব ধরনের মতামত শুনতে অনেক পথ খোলা রেখেছি। কিন্তু সেগুলো এমনভাবে করতে বলা হয়েছে, যাতে কোনো ব্যবসায়িক বাধা তৈরি না হয়।’
ইসরাইল সরকারকে এআই প্রযুক্তি সরবরাহে ‘নিমবা প্রকল্প’ নামে ১২০ কোটি মার্কিন ডলারের একটি চুক্তির প্রতিবাদ করায় গেল বছরে কয়েক ডজন গুগলকর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল।
২৬৫ দিন আগে
মেক্সিকোতে ক্লিনিকে বন্দুক হামলায় নিহত ৯
মেক্সিকোর একটি মাদকাসক্তি নিরাময় ক্লিনিকে সশস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ৯ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন।
সোমবার (৭ এপ্রিল) দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
স্থানীয় জননিরাপত্তা সচিবালয়ের মতে, সোমবার (৭ এপ্রিল) সকালে সশস্ত্র হামলাকারীরা উত্তর-পশ্চিম মেক্সিকোর সিনালোয়া রাজ্যের কুলিয়াকান পৌরসভার একটি ক্লিনিকে হামলা চালায়।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো রাজ্যে পার্কে বন্দুক হামলায় নিহত ৩
মুখোশধারী হামলাকারীরা ক্লিনিকের গেট খুলে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাইফেল দিয়ে রোগী ও কর্মীদের উপর গুলি চালায়।
৯১১ জরুরি হটলাইনে একাধিক ফোনের পর স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেখানে নিহত ও আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলেই ৮জন নিহত হন। আহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর আরেকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
গুলি চালিয়ে হত্যার ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়।
২৬৫ দিন আগে